পাহাড়ের কোলে ছবির মতো সাজানো রামধুরা
New Post has been published on https://sentoornetwork.com/tour-of-ramdhura/
পাহাড়ের কোলে ছবির মতো সাজানো রামধুরা
শান্তা শিকদার
প্রাত্যহিক ক্লান্তকর জীবন থেকে মাঝে মাঝে অবসর চায় মন। আর আমার কাছে অবসর মানেই পাহাড়। তুমুল ব্যস্ততা টিকিট জোগাড়ের। পেয়েও গেলাম। ৯.৪০-এর কলকাতা-গুয়াহাটি গরিবরথ ধরে পরদিন সকালে এনজেপি নামলাম। স্টেশন থেকে যখন বাইরে আসছি মন উৎফুল্ল হয়ে উঠল। আহা আবার কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখব! স্টেশন থেকে বাইরে বেরোতেই দেখি আমাদের হোম-স্টের মালিক গাড়ি নিয়ে আগে থেকে অপেক্ষা করছেন। আগেভাগেই ওঁর হোমস্টেতে বলে রেখেছিলাম। সময় নষ্ট না-করে গাড়িতে চেপে বসলাম। আমাদের গন্তব্য রামধুরা। কী মিষ্টি নাম! রামধুরা শুনলেই রামধনু মনে আসে। নামের মাঝেই এর সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে চলল আমাদের গাড়ি। যত যাচ্ছি তত রোমাঞ্চিত হচ্ছি! রামধুরা পৌঁছতে লাগল প্রায় দুপুর একটা। গাড়ি থেকে নামতেই শরীর জুড়ে ছড়িয়ে গেল ঠান্ডার শিরশিরানি। আমাদের আশ্রয়টি যেমন সুন্দর, তেমনই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। মালকিন বললেন, “দুপুরর খাবার তৈরি।” খিধে পেয়েছিল খুব। এদিক-ওদিক না-করে বসে পড়লাম খেতে। খাবার টেবিলে দেখলাম সাজানো আছে ভাত, ডাল, আলুভাজা, ডিম। যেন অমৃত।
দুপুরের খাওয়া শেষ করে একটু গল্পগুজব সেরে বিকেলে ধরলাম হাঁটাপথ। ছোট্ট সুন্দর এক গ্রাম। পাহাড়ের কোলে যেন নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে আমাদের জন্য। আমরা এসে দাঁড়ালাম পাহাড়ের ভিউ পয়েন্টে। এখান থেকে দেখলাম বিকেলের কাঞ্চনজঙ্ঘা। পরিষ্কার আকাশ। বিকেলের পড়ন্ত আলোয় কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন আরও রূপসি হয়ে উঠেছে। প্রচুর এক ছবি তুললাম। বসে রইলাম কাঠের বেঞ্চে। মুগ্ধতা যেন গ্রাস করেছে আমাদের সবাইকে।
অন্ধকার নামার আগেই ফিরে এলাম। কাঠ জ্বালিয়ে হালকা গা-গরমের আয়োজন করা হল। সঙ্গে গরম গরম চা, চিকেন পকোড়া। এরপর জমিয়ে আড্ডার পর ডিনার সেরে ঘুমিয়ে পড়লাম। স্বপ্নেও এল সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘা।
সূর্যের প্রথম আলো কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখব বলে বুকে ঘুম থেকে উঠলাম ভোর পাঁচটা নাগাদ। ঠান্ডা যাতে কাবু না-করে তেমন পোশাকপত্তর পরে এলাম সেই ভিউ পয়েন্টে। দেখলাম শুধু আমরা নই, অনেকেই হাজির হয়েছেন এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে। হঠাৎ চাপ পড়ল হাতে। তাকালাম সামনে। আহা কী দেখিলাম! জন্মজন্মান্তরেও ভুলিব না! প্রথম সূর্যকিরণে লাল কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে এল বরফাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা! মন ভরে গেল।
বাড়ি ফিরে চা আর লুচি-তরকারি খেলাম। প্রাতঃরাশ সেরে ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম সদলবলে। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে সরু আঁকাবাঁকা পথে হেঁটে পৌছালাম ইচ্ছেগাঁও । পাহাড়ের কোলে, নিরিবিলি একটা ছোট্ট গ্রাম। চারদিক রং-বাহারি ফুলে ঢাকা। দেওয়ালগুলোতে মনে হচ্ছে কেউ ফুলের কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছে। চারদিক থেকে ভেসে আসে পাখির কলতান। সামনের পাহাড়ে, হেঁটে ঘুরে দেখলাম জঙ্গল। অনেকরকম পাখি ধরা পড়ল ক্যামেরারলেন্সে।
গ্রামটির উচ্চতা ৫৮০০ ফিট এবং এখান থেকে খুব সুন্দর দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। আমরা সারাদিন কাঞ্চনজঙ্ঘাকে পাশে নিয়ে ঘুরেছি। তাই চোখে শুধুই কাঞ্চনজঙ্ঘা। ফিরে এলাম। স্নান সেরে বেরিয়ে পড়লাম কালিম্পঙের পথে। তবে রামধুরা আর ইচ্ছেগাঁও মনের কোণে পাকাপাকি ভাবে রয়ে গেল। বাড়ি ফিরে এসেও বেশ কয়েকদিন চোখে লেগে ছিল ওই সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয়।
Prev 1 of 9 Next
var prt_gal_img_1839372855 = ["https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/635cbfba-bd4c-4375-9dbd-ca4719d88ead.jpg","https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/947e08b8-61eb-42c1-b26a-6ef0bbd94296.jpg","https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/25311f0d-6057-433e-9715-4dbb0976456f.jpg","https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/a274da26-7ac1-4569-895c-4fca1a65343d.jpg","https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/DSCN0427-scaled.jpg","https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/DSCN0450-scaled.jpg","https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/e5cd5372-15f7-4c3e-bc9d-df2e1ac912cc.jpg","https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/e881aeb5-3121-4ca8-b7f1-ae93519fff0b.jpg","https:\/\/sentoornetwork.com\/wp-content\/uploads\/2020\/06\/f445f1b2-058e-4037-b55e-a35abc45df55.jpg"]; var prt_gal_cap_1839372855 = ["","","","","","","","",""];
ছবি: তন্ময় ভট্টাচার্য এবং চন্দন সেনগুপ্ত
আরও পড়ুন: মন ভাল করা ছোট্ট দুই পাহাড়ি গ্রামের রূপ-সৌন্দর্যের কাহিনি
0 notes