কর্নফ্লাওয়ার অর্থ কি ? কর্নফ্লাওয়ার এর উপকারিতা | Benefits of Cornflower in Bengali
রান্নাঘরের অতি পরিচিত একটি সামগ্রী হল কর্নফ্লাওয়ার। নানা ধরনের মুখরোচক রান্না বিশেষ করে চায়নিজ খাবার তৈরি করতে এটি সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। শুধু রান্নার কাজে বা খাবার মুচমুচে করার ক্ষেত্রে নয় যে কোন ছোট খাটো সমস্যার সমাধান নিমিষেই করে দিতে পারে কর্নফ্লাওয়ার। এতে ২২ গ্রাম শর্করা, ৩ গ্রাম প্রোটিনে মোট ১১০ ক্যালরি উপস্থিত। এছাড়া ২৯ গ্রামের মধ্যে ২ গ্রাম ফাইবার এবং ১.৫ গ্রাম ফ্যাট ও এতে থাকে।
আরো পড়ুন: স্বাস্থ্য টিপস
কর্নফ্লাওয়ার অর্থ কি ? Meaning of Cornflour in Bangla
ভুট্টা চূর্ণ বা ভুট্টার গুঁড়োকে আমরা সাধারণভাবে কর্নফ্লাওয়ার বলে থাকি। কর্নফ্লাওয়ার ভুট্টার সম্পূর্ণ শাঁস থেকে নেয়া হয়, যাতে ফাইবার, প্রোটিন, স্টার্চসহ, ভুট্টার যাবতীয় পুষ্টিগুণে ভরপুর।
কর্নফ্লাওয়ার এর উপকারিতা ? কর্নফ্লাওয়ার এর ব্যবহার ( Benefits & Usage of Cornflour in Bangla )
তেলাপোকা জনিত ঝামেলা থেকে মুক্তি
তেলাপোকার যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় কমবেশি সকলকেই ।এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে সমান পরিমাণের কর্ণফ্লাওয়ার ও প্লাস্টার অফ প্যারিস এক সাথে মিশিয়ে নিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিয়ে তেলাপোকার লুকোনোর জায়গা গুলিতে কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে রাখলে পোকার উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া ঘরের মেঝেতে, দরজার কোণায় উপদ্রবকারী অন্যান্য পোকামাকড়ের বাসা থাকলে ,বাসার মুখ এই পেস্ট দিয়ে বন্ধ করে দিলে পোকা জনিত সমস্যার সমাধান হতে পারে।
জানলার কাঁচ পরিষ্কার ও ঝকঝকে করতে
জানালার কাঁচ পরিষ্কার রাখতে কর্ণফ্লাওয়ারের সঙ্গে খানিকটা জল মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করতে হবে। সেই মিশ্রণটি জানালার কাঁচে লাগিয়ে একটি শুকনো নরম কাপড় দিয়ে আলতো করে ঘষে মুছে ফেলতে হবে আর তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেললেই তফাত খুব সহজেই বোঝা যাবে। জানলার কাঁচ একেবারে ঝকঝকে-চকচকে আর পরিষ্কার দেখতে লাগবে।
কাপড়ে লাগা রক্তের দাগ দূর করতে
কাপড় থেকে রক্তের দাগ দূর করতে হলে কর্ণফ্লাওয়ার জলে মিশিয়ে পেস্টের মতো বানাতে হবে। এরপর তা কাপড়ে লাগা রক্তের দাগের উপর ঘষে লাগিয়ে দিতে হবে ও কিছু সময়ের জন্য রেখে একটি টুথব্রাশ দিয়ে ঘষে তুলে দিলে দাগ মিলিয়ে যায় । যদি দাগ খুব কঠিন হয়ে থাকে তাহলে আরো ১ বার একই ভাবে ওপরের পদ্ধতিটি পুনরায় প্রয়োগ করতে হবে আর তারপর কাপড় ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিলে দেখা যাবে কাপড়ে আর কোনো দাগ অবশিষ্ট নেই।
আরো পড়ুন: Health tips in bangla
তেলের দাগ তুলতে কর্নফ্লাওয়ারের ভূমিকা
পোশাকে তেলের দাগ লাগলে সেই স্থানে কর্নফ্লাওয়ার ছড়িয়ে দিলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর সাবান দিয়ে জায়গাটা ধুয়ে দিলেই দেখা যাবে সে দাগ উঠে গেছে । পোশাকে আরও কঠিন রকমের কিছু দাগ লাগলে খানিকটা কর্নফ্লাওয়ার জলের সাথে মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে দাগের জায়গায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। তারপর অল্প ভেজা থাকা অবস্থায় নরম টুথব্রাশ দিয়ে ঘর্ষণ করলে দেখা যাবে যে দাগ মিলিয়ে গেছে।
কাপড় থেকে কালির দাগ তুলতে
কাপড় থেকে কালির দাগ তুলতে কর্নফ্লাওয়ারের সাথে দুধ মিশিয়ে পেস্টের মতো তৈরি করে নিতে হবে। এরপর তা দাগের উপর লাগিয়ে রাখতে হবে কিছুক্ষণ। শুকিয়ে গেলে একটি টুথব্রাশ দিয়ে ঘষে তুলে নিলে কাপড় থেকে কালির দাগ খুব সহজেই উঠে যাবে।
শিশুর ডায়াপার র্যাশ দূর করার ক্ষেত্রে
ডায়াপার জনিত র্যাশ শিশুদের ক্ষেত্রে একটি খুব সাধারণ ব্যাপার ।তবে কর্ণফ্লাওয়ারের ব্যবহার, এ ক্ষেত্রে কিছুটা সুরাহা দেবে । ডায়াপার পরিবর্তনের সময় শিশুর দেহে কর্ণফ্লাওয়ার দিয়ে দিতে পারলে র্যাশ ওঠা বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়াও শিশুদের রোজকার স্নানের জলে এক চতুর্থাংশ কাপ কর্ণফ্লাওয়ার গুলে নিলেও সমস্যা সমাধান হতে পারে।
তরল পদার্থকে ঘনীভূত করতে
অনেক সময় তরকারির ঝোল বেশি পাতলা হয়ে গেলে এবং অনেক জ্বাল দিয়ে ও যখন ঝোল ঘন হয় না তখন ঝোল ঘন করতে তরকারি কে আঁচে বসিয়ে কিছুটা কর্ণফ্লাওয়ার দিয়ে দিলেই মুশকিল আসান! তরকারির ঝোল ঘন হয়ে যাবে এবং স্বাদও বাড়বে ।
তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী
তৈলাক্ত ত্বকে সাধারণ পাউডার ব্যবহার না করে যদি অল্প কর্ণফ্লাওয়ার ট্যালকম পাউডারের সাথে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারা যায় তাহলে ত্বক মসৃণ দেখতে লাগবে। কর্ণফ্লাওয়ার অতিরিক্ত তেল শোষণ করে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে ।
আরো পড়ুন: Ajker bangla khabar, আজকের রাজনৈতিক খবর
পুড়ে যাওয়া ত্বকের ক্ষেত্রে
রান্না করতে গিয়ে কোথাও পুড়ে গেলে ফার্স্ট ~এড হিসেবে কর্নফ্লাওয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। পুড়ে যাওয়া ত্বকের ঘরোয়া চিকিৎসার জন্য কর্ণফ্লাওয়ারের কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে । ৮ কাপ ঈষদুষ্ণ গরম জলে ১ টেবিল চামচ কর্ণফ্লাওয়ার ও ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডার মিশ্রণ তৈরি করে তাতে গজ বা পরিষ্কার কাপড় চুবিয়ে পুড়িয়ে যাওয়া অং���ে আধঘণ্টা লাগিয়ে রাখলে জ্বালা যন্ত্রণার উপশম হবে এবং আরাম ও মিলবে।তাছাড়া এটি পোড়াভাবের ফলে তৈরি হওয়া জ্বলুনি কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের মৃত চামড়া দ্রুত সরিয়ে ফেলতে ও কার্যকরী।
তৈলাক্ত চুলে কর্নফ্লাওয়ারের জাদু
আজকাল কর্মব্যস্ত জীবনে মানুষের সময়ের খুবই অভাব ।কোনো অনুষ্ঠানে বেরোবার আগে চুল তৈলাক্ত দেখতে লাগল মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। এমন সমস্যা তো হয়েই থাকে। আর এই সমস্যার চটজলদি সমাধান দিতে পারে একমাত্র কর্নফ্লাওয়ার । নির্দ্বিধায় চুলের উপর খানিকটা কর্নফ্লাওয়ার ছড়িয়ে চুল ভাল করে আঁচড়ে নিলেই চুলের তেলতেলে ভাব সম্পূর্ণ দূর হয়ে যাবে।তাই শ্যাম্পু করার সময় বা সুযোগ না থাকলে কর্নফ্লাওয়ারই চুলের একমাত্র ভরসা।
তাছাড়া, কর্নফ্লাওয়ারের শোষণ ক্ষমতা ও এক্সফলিয়েশন উপাদানের উপস্থিতির কারণে তৈলাক্ত চুলের ক্ষেত্রে এটি দারুণ কাজ করে থাকে । মাথার ত্বকে অতিরিক্ত খুশকির সমস্যা ও দূর করে থাকে যার জন্য কর্নফ্লাওয়ারের এত প্রসিদ্ধি ।
বাসনপত্রের কালচে ভাব দূর করতে
রূপার গয়না বা বাসনপত্রে কালচে ভাব দেখা দিলে জলের মধ্যে কিছুটা কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে ভাল করে গুলে তার মধ্যে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখতে হবে।তারপর নরম ব্রাশ দিয়ে হালকা ঘষে পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিলেই রূপার গয়না বা বাসনপত্রের কালচে ভাব উধাও হয়ে যাবে।
বিরক্তিকর ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি দিতে
কর্নফ্লাওয়ারের শোষণ ক্ষমতা এবং মৃত চামড়া( Dead Skin) দূর করার জন্য এক্সফলিয়েশন উপাদান যথাকার কারণে কর্নফ্লাওয়ার প্রাকৃতিকভাবেই মানবদেহের বিশেষ অঙ্গ থেকে ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সক্ষম।
পা ঘামার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে
গরমকালে জুতা মোজা পরলে অনেকেরই পা ঘেমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে । সেক্ষেত্রে জুতো পরার আগে কিছুটা কর্নফ্লাওয়ার পায়ে হালকা করে লাগিয়ে নিলে পা ঘামার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া জুতায় দুর্গন্ধ হলে জুতার মধ্যে কিছুটা কর্নফ্লাওয়ার ছড়িয়ে রাখতে পারলে এ ক্ষেত্রে উপকারী ফল পাওয়া যায় । সারারাত রেখে সকালে জুতো জোড়া ঝেড়ে নিলে আর দুর্গন্ধ থাকবে না।
আরো পড়ুন: Westbengal weather report
শাড়িতে মাড় দেওয়ার কাজে লাগে
চটজলদি শাড়িতে মাড় দিতে হলে জলের সাথে কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে গরম করতে হবে।মিশ্রণটি ঘন হয়ে গেলে সেটিকে মাড় হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পরে শাড়িটি শুকিয়ে গেলে ইস্ত্রি করে নিলে শাড়ি নতুনের মতো লাগবে।
গিঁট ছাড়াতে প্রয়োজন কর্নফ্লাওয়ার
কোনও অনুষ্ঠান বাড়ি যাওয়ার সময় অসতর্কতার কারণে যদি চেইন বা ব্রেসলেটে খুব বাজে ভাবে গিঁট লেগে যায় তাহলে গিট ছাড়াবার জন্য এলোমেলো টানাটানি না করে পরিবর্তে গিঁটের উপর কর্নফ্লাওয়ার ছিটিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তারপর যদি গিঁট খোলার চেষ্টা হয় তবে দেখা যাব যে সেটি সহজেই খোলা যাচ্ছে , আর সমস্যা থাকছে না। দড়ি বা ফিতের গিটের ক্ষেত্রেও এই একই পদ্ধতি প্রযোজ্য।
কর্নফ্লাওয়ারের গুণাবলির অন্ত নেই ।বহুল ব্যবহৃত এই উপাদানটি গ্রহণে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলেই স্বীকৃতি লাভ করেছে ।তাই কেবল রান্নার কাজেই নয়, দৈনন্দিন খুঁটিনাটির অনেক রকম সমস্যার সমাধানে কর্নফ্লাওয়ারের ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
0 notes
চিকেন খিচুড়ি, কি ভাবে তৈরি করবেন চিকেন খিচুড়ি
চিকেন খিচুড়ি, কি ভাবে তৈরি করবেন চিকেন খিচুড়ি
আপনি কি ভাবছেন কেন আমি ভুনি খিচুড়ির রেসিপির পরেই মুরগি খিচুড়ি ওরফে চিকেন খিচুড়ি রেসিপি শেয়ার করছি। কারনটি খুবই সাধারন। আজকাল আমরা প্রধানত এক-পাত্রের খাবারে জীবনযাপন করছি, বিশেষত এমন খাবার যা অল্প সময়ের মধ্যে প্রেসার কুকারে রান্না করা যায়। ম্যারাথন পুজো রান্নার পরে, আমি বিরতি নিচ্ছি। আমি বেশিরভাগই অফিস থেকে ফিরে সাধারণ খাবার রান্না করি। একটি সাধারণ মুরগির মঙ্গশোর খিচুড়ি সবচেয়ে ভাল কাজ করে…
View On WordPress
0 notes
বেগুন পােলাও
বেগুন পােলাও রেসিপি Eggplant Recipes Krishna Katamrita
(৬ জনের)
গাজর পােলাও গাজর কুচি এবং নারকেল কুচি মিশিয়ে এই অন্নটি প্রস্তুত করা হয়। কিশমিশ মিশিয়ে তাতে সামান্য মিষ্টিভাব আনা হয়। পরিবেশন করার আগে লবঙ্গ, গোলমরিচ এবং দারুচিনির টুকরোগুলাে বেছে অন্ন থেকে আলাদা করে নিলে ভাল; কারণ সেগুলি খাবার জন্য নয়। কোন ডাল, বা স্যালাড যােগে দুপুরের প্রসাদ বা রাত্রের প্রসাদ হিসাবে তা গ্রহণ করা যায়। এই পদটি দ্রুত প্রস্তুত করা যায়। এটি বর্ণময়, সুগন্ধিময় আর সব চেয়ে বড় কথা, তুষ্টি এবং পুষ্টিসাধক। রান্না করতে কম বেশি ২৫-৩৫ মিঃ সময় লাগবে।
উপকরণঃ এক কাপ বাসমতি চাল; বড় ২ চামচ ঘি; বড় দেড় চামচ তিল; ৬টা আস্ত লবঙ্গ; ৬টা গােলমরিচ; দেড় ইঞ্চি দারুচিনি; বড় ৩ চামচ তাজা ঝুনাে নারকেল কুচি; ২ কাপ জল; দেড় কাপ গাজর কুচি; ছােট এক চামচ লবণ; বড় ২ চামচ কিশমিশ।
প্রস্তুত প্রণালী : ১। চাল বেছে ধুয়ে কিছুক্ষণ ভেজান এবং জল ঝরিয়ে নিন।
২। একটা ভারী দেড় লিটার আয়তনের সসপ্যানে মাঝামাঝি তাপে এমনভাবে ঘি গরম করুন যাতে ঘি গরম হবে অথচ ধোঁয়া উঠবে না। একে একে তিল, লবঙ্গ, গােলমরিচ, দারুচিনি এবং নারকেল কুচি ঢেলে দিন। হালকা বাদামী করে ভাখুন। এবার চাল ঢেলে দিন এবং আরও কয়েক মিনিট ভাজুন।
৩। জল এবং অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে আঁচ চড়িয়ে দিন।
উপকরণ: বাসমতি কিংবা যে কোন ভাল চাল ১০০ গ্রাম; হলুদ ছােট এক চামচ; লবণ দু'চামচ; জল ৫৩০ মিলিলি; বেগুন ২৩০ গ্রাম (সমানভাৰে টুকরাে করা); সদি। তিল বড় তিন চামচ; গোল মরিচ ১২টা; ধনে বড় দেড় চামচ লবঙ্গ ৮ খানা; দারুচিনি ছােট সিকি চামচ ঘি বড় পাঁচ চামচ; কাজুবাদাম (দুফালি করা) আধ কাপ, আদাকুচি বড় আধ চামচ কাঁচা লঙ্কা কুচি ছােট দু'চামচ; কালাে সরিষা ছােট আধ চামচ; ছােট এলাচ ৪টি (সামান্য চূর্ণ করা); তাজা কারিপাতা ৬/৭ খানা; লেবুর রস বড় আধ চামচ; চিনি ছােট ১ চামচ ধনে পাতা কুচি বড় তিন চামচ।
প্রস্তুত পদ্ধতি : ১। প্রথমে ভাল করে চাল বেছে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন।
২। হলুদ, ছােট ১ চামচ নুন এবং বড় এক চামচ জল একটি গামলা-বাটির মধ্যে। এক সঙ্গে মিশিয়ে নিন। বেগুনের টুকরাগুলি তার মধ্যে ফেলে একটু নেড়েচেড়ে নিন।
৩। সাদা তিল, গােল মরিচ, ধনে এবং লবঙ্গ একটি ভারী কড়াইতে অল্প আঁচে ভেজে নিন। সাদা তিলগুলি যতক্ষণ পর্যন্ত বাদামীবর্ণ ধারণ না করছে, ততক্ষণ ভাঙ্গতে থাকুন। মাঝে মধ্যে নেড়ে দেবেন। ভাজা হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলিকে গুঁড়ো করে। নিন। সঙ্গে কাঁচা দারুচিনি মিশিয়ে একটু নেড়েচেড়ে রেখে দিন।
৪। মাঝারি আঁচে একটি দুই লিটার আয়তনের ভারী কড়াইতে ঘি গরম করুন। তাতে কাজুবাদামগুলি বাদামী বর্ণের করে ভেজে তুলে রাখুন। আবার সেই ঘি আরও একটু গরম করে আদা এবং লঙ্কার কুচি, কালো সরষে এবং এলাচ দিয়ে ফোড়ন দিন। সরষে ফুটে গেলে কারিপাতা এবং বেগুনের টুকরােগুলি ঢেলে দিন। বেগুনগুলি সামান্য বাদামী বর্ণ ধারণ না করা পর্যন্ত আরও একটু ভেজে নিন।
৫। চাল ঢেলে দিন। আরও ২ মিনিট ভাজুন। জল ঢালুন। মশলার পাউডার, অবশিষ্ট নুন, লেবুর রস, চিনি, ভাজা কাজুবাদাম এবং বড় দেড় চামচ ধনে পাতার কুচি - সব মিশিয়ে আঁচ পুৰ চড়া করে দিন। অল্প সময়ের মধ্যেই ভাত ফুটে উঠবে।
৬। ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে দিন। ভাল করে ঢাকনা চাপা দিন এবং প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট চুপচাপ বসিয়ে রাখুন। আগুন নিভিয়ে ভাত নামান। ৫ মিনিট ঢাকনা খুলে রাখুন। এতে ভাত আবার শক্ত হবে।
৭। পরিবেশনের কিছু আগে একটা কাঁটা চামচ দিয়ে ভাতটা আস্তে করে নেড়েচেড়ে ঝাঝনো করে নিন। সঙ্গে অবশিষ্ট ধনেপাতা মিশিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করুন।
http://krishnakatamrita.blogspot.com/2020/02/eggplant-recipes-krishna-katamrita.html
0 notes
শীতের সবজির শত উপকার
ফুলকপির উল্লেখযোগ্য পুষ্টি উপাদান, ক্যালসিয়াম, লৌহ ভিটামিন বি১ ও বি২। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে, মাংসপেশির সঙ্কোচনজনিত ব্যথা দূরীকরণে আর লৌহ রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। বাজারে উপস্থিত আরেকটি পছন্দের শস্যদানা জাতীয় সবজি হচ্ছে মটরশুঁটি। মটরশুঁটিতেও রয়েছে ফুলকপির মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন। প্রতি ১০০ গ্রাম ফুলকপি ও মটরশুঁটিতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ যথাক্রমে ৪০ মি.গ্রা. ও ২৬ মি.গ্রা. এবং লৌহের পরিমাণ উভয় ক্ষেত্রেই ১.৫ মি.গ্রা.। লালশাক ভিটামিন ‘এ’-তে ভরপুর। লালশাক নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং অন্ধত্ব ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। লালশাকের বিটাক্যারোটিন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করে। ক্যালরির পরিমাণ কম থ��কায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও লালশাক যথেষ্ট উপকারী। এ ছাড়াও এটি শরীরের ওজন হ্রাস, পরিপাকে সহায়তা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
গাজর রূপেগুণে অনন্য একটি সবজি। খাবার হিসেবে গাজরের ব্যবহারও নানাবিধ। কাঁচা ও রান্না করা উভয় অবস্থাতেই এটি গ্রহণ করা যায়। গাজরে রয়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিটাক্যারোটিন। প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে এই বিটাক্যারোটিনের পরিমাণ প্রায় ১৮৯০ মাইক্রোগ্রাম (সূত্র : বিদেশি ম্যাগাজিন) এবং ক্যালসিয়াম প্রায় ৮০ মি.গ্রা.। তাছাড়া গাজরে রয়েছে লাইকোপেন নামের উপাদান, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। গাজরের গুণ অনেক। গাজর ত্বক ও চুলকে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। তবে গাজর ত্বকে বা চুলে মেখে লাভ হবে না। গাজর কাঁচা খেতে হয় কিংবা অল্প সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে। গাজর মহিলাদের ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। চোখের ছানি, রাতকানা, হৃদরোগসহ কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধে গাজর ভূমিকা রাখে। এই সময়ের আরো একটি আলোচিত সবজির নাম টমেটো। প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে টমেটো ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। টমেটোর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান লাইকোপেন। এই লাইকোপেন দেহকোষ থেকে বিষাক্ত ফ্রি রেডিক্যালকে সরিয়ে প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। গবেষকরা বলেছেন, যারা সপ্তাহে অন্তত চারবার টমেটো খায় তাদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি ২০ শতাংশ কমে যায়, আর সপ্তাহে ১০ বার খেলে ঝুঁকি ৫০ শতাংশে নেমে আসে। তবে এই উপকার পেতে হলে তারা পাকা টমেটো এবং রান্না করা কিংবা সস করা টমেটো খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
শিমে অন্যান্য সবজির মতো প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হার্টের জন্য ভালো এবং প্রতিরোধ করে ক্যান্সারও। এ ছাড়া প্রচুর তন্তু থাকার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং কমায় রক্তের কোলেস্টেরল। তবে শিমের চেয়ে বীজ বেশি পুষ্টিকর। আমিষের পরিমাণ শিমের চেয়ে বীজে ছয় গুণ বেশি। খাদ্যশক্তি শিমের চেয়ে বীজে সাত গুণ বেশি। মোট খনিজ পদার্থ শিমের চেয়ে বীজে তিন গুণ বেশি। আয়রনের পরিমাণ শিমের চেয়ে বীজে দ্বিগুণ বেশি। শিমে আমিষের পরিমাণ কচুশাক, লালশাক ও মটরশুঁটি ছাড়া সব শাকসবজির চেয়ে বেশি আছে। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কচুশাক ও লালশাক ছাড়া সব শাকসবজির চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আছে। ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও মিনারেল-সমৃদ্ধ জনপ্রিয় শীতকালীন সবজি মুলা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মুলায় খাদ্যশক্তি কম, তন্তু বা ফাইবার বেশি এবং আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি থাকার কারণে চল্লিশোর্ধ্ব স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার হতে পারে। যারা ডায়েটিং করছেন তাদের জন্য মুলা একটি দরকারি খাবার। মুলার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট লিউটিন চোখের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে। ভিটামিন বি৬, রিবোফ্ল্যাভিন মুখের ঘা প্রতিরোধ করে। কাঁচা মুলা থেকে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড গ্রহণ করা সম্ভব, যা মাড়ির সুস্থতা রক্ষা করবে। আর ফলিক অ্যাসিড দেহের রক্ত বাড়ায়। ত্বকের সজীবতা রক্ষায় বিটাক্যারোটিন বিশেষভাবে সহায়তা করে। মুলার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট-ফ্ল্যাভনয়েডস হূিপণ্ডের রক্তনালী তথা হূদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া খাদ্য থেকে প্রাপ্ত কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে রক্তের কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে মুলা।
ডা. সজল আশফাক নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
0 notes