Tumgik
#নবী নুরের না মাটির
khutbahs · 4 years
Link
সালাফী মানহাজ কি? এ সম্পর্কে আমাদের সবারই প্রায় অজানা। 
সালাফী কি? সালাফী শব্দ এসেছে সালাফে সলেহীন থেকে।সাহাবায়ে কেরাম (রা:) থেকে শুরু করে তাবে-তাবেঈন পর্যন্ত যারা ছিল । (প্রথম ৩ মুসলিম জেনারেশন ) যারা এই উম্মতের শ্রেষ্ঠ মানুষ তাদেরকে বা তাদের ঐ সময়কাল কে সালাফে সলেহীন বলে। অর্থাৎ বর্তমানেও যারা কোরআন ও সহীহ হাদীস সরাসরি মেনে চলে সাহাবা থেকে তাবে-তাবেঈনদের মত করে তাদেরকে সালাফী বলে। নবীজি (সা:) এর ওফাতের
প্রায় ৪৫০ বছর পর থেকে প্রচলিত মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে।
সালাফী কারা? সালাফী তারা যারা কোন ব্যক্তিকেই দলিল ছাড়া অন্ধঅনুস্বরন করে না। সালাফীরাই মুলত আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত। অধিকাংশ সালাফীরাই দাঈ। (যারা ইসলামের দাওয়াত দেয় তাদের দাঈ বলে) সালাফী নতুন কোন মাযহাব না বা কোন রাজনৈতিক দল না।
সালাফীদের দাওয়াত? সালাফীরা সাধারণত তাওহীদ ও তাযকিয়াহ (আল ইমরান ১৬৪)এর দাওয়াত দিয়ে থাকে। সালাফীদের দাওয়াতের লক্ষ্যঃ- ইসলাম সম্পর্কে মানুষকে সঠিক জ্ঞান দেওয়া। মানুষদেরকে কোরআন ও সহীহ হাদীসের পথে আহবান করা। বিদ'আত ,শিরক থেকে মানুষদেরকে সাবধান করা এবং তা থেকে মুক্ত করা। হাদীস কেন ও কিভাবে যঈফ ,জাল ও সহীহ হয় মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া। সকল মুসলিমদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত না হয়ে কোরআন ও সহীহ হাদীসের উপর আমল করার জন্য দাওয়াত দিয়ে থাকে।
সালাফীদের মুলনীতিঃ- ১।একমাত্র অনুস্বরনীয় ইমাম ও নেতা হচ্ছেন মুহাম্মদুর রাসু্লুল্লাহ (সাঃ)। ২।সকল প্রকার সমস্যার সমাধানে কোরআন ও সহীহ হাদীস অনুসারে করতে হবে। ৩। কোরআন ও সহীহ হাদীসে না পেলে সাহাবাগনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে। ৪।সাহাবাগনের সিদ্ধান্তে বা ইজমায় না থাকলে সে সকল বিষয়ে কোরআন ও হাদীস কে ভিত্তি করে আলেমগন ইজতিহাদ (শরীয়ত গবেষণা) করবেন, কোরআন বা সহীহ হাদীস বিরোধী ইজতিহাদ হলে চলবে না। ৫।কোনভাবেই ধর্মীয় ব্যাপারে দলিল ছাড়া কারো উক্তির অনুসরন করা চলবে না। সালাফীদের বৈশিষ্ট্যঃ- ১।তাদের নিকট কোন হাদিস পেশ করলে আগে তারা যাচাই করে সহীহ নাকি যঈফ না জাল হাদীস। ২।সব কিছুর উর্ধ্বে আল্লাহ ও তার রাসুল। ৩।মুহাম্মদুর রাসু্লুল্লাহ সাঃ শেষ নাবী ও রাসুল মানা কে ইমানের অন্যতম শর্ত ।
৪।রাসু্লুল্লাহ সাঃ নুরের তৈরী নন, মাটির তৈরী সর্বশ্রেষ্ট মানুষ ও রাসুল (সাঃ)। ৫।মুহাম্মদুর রাসু্লুল্লাহ সাঃ ছাড়া ভুলের উর্ধ্বে কেউ নয়। ৬।মুহাম্মদুর রাসু্লুল্লাহ সাঃ এর ৪ খলিফাকে খুলাফায়ে রাশেদীন বলে বিশ্বাস করা। ৭।আল্লাহ নিরাকর নয় বরং তাঁর আকার রয়েছেন(তার সদৃশ্য কিছু নেই, তিনি একক সত্তা অমুখপেক্ষি) ও আরশে সম্মুনোত। ৮।যত বড় জ্ঞানী বা শক্তিশালী ব্যাক্তি হোক না কেন কুরআন ও সহীহ হাদীসের বিপরীত হলে তার কথা মানে না আর কুরআন ও সহীহ হাদীসের পক্ষে হলে গোলামের কথাও মানে।
৯।ইমান বাড়ে ও কমে বলে বিশ্বাস করে। ১০।ইমাম আবু হানীফা (রহ),ইমাম মালেক (রহ),ইমাম শাফেয়ী (রহ),ইমাম আহম্মদ (রহ) সহ সকল ইমাম কে শ্রদ্ধা ও সম্মান করে। ১১।কারও তাকলীদ বা অন্ধ অনুসরন করে না। ১২।শুধু সহীহ হাদিসকেই আমলের যোগ্য মানে । ১৩।ইলমে গায়েবের খবর একমাত্র আল্লাহ জানেন বলে বিশ্বাস করে। ১৪।মির্জা গোলাম আহম্মেদ কাদিয়ানী ও তার অনুসারিদের কে অমুসলিম মানে। ১৫।এক সাথে ৩ তালাক দিলেও এক তালাক গন্য হবে। সালাফী সম্পর্কে ভুল ধারনাঃ- ১।অনেকে মনে করে এরা সালাফীরা শাফেয়ীদের অনুস্বরন করে যা ঠিক নয়।
২।অনেকে মনে করে সালাফীরা মাযহাব মানে না। অর্থাৎ লা মাযহাবী (নেই মাযহাব) হ্যাঁ সালাফীরা বানোয়াট মাযহাব মানে না । কারন ৪ ইমাম কখনই বলেননি তোমরা আমাদের কে অন্ধ ভাবে অনুসরন করো কিন্তু তারা বলে গেছেন নবী সাঃ কে অনুসরন করতে। আর প্রচলিত মাযহাব মানার কোন আদেশ পবিত্র কোরআন ও সহী হাদীসে নাই। ৩।অনেকে মনে করে মুহাম্মদ বিন আঃ ওহাবের শির্ক ও বিদআতের বিরুদ্ধে আন্দোলন। আর সালাফী এর মতবাদ আজ থেকে ২০০ শত বছর আগে সৃষ্টি হয়েছে। যা সঠিক নয়। সালাফীরা কি লা মাযহাবী? সালাফীরা মুসলিম। সালাফীরা ১০০% হানাফী,১০০% শাফেঈ,১০০% মালেকী,১০০% হাম্বলী।
সালাফীদের ভয়ঃ- সালাফীরা শিরিক ,বিদয়াত ও ইসলামের নিষিদ্ধ কাজ গুলোকে ভয় পায়, আর দুর্বল ও যঈফ হাদীস অনুযায়ী আমল করতে ভয় পায়। সালাফীদের অন্যতম বৈশিষ্টঃ- অধিকাংশ সালাফীরা ওয়াজ মাহফিলে বা কিছু বলতে গেলে কোরআন ও সহীহ হাদিসের দলিল সহকারে বলে থাকে। কোন সুরা কোন আয়াত কত নং হাদীস সহকারে বলে। সালাফীরা কি সমস্যা না সমাধান? ১।সালাফীরা সকলেই কোরআন ও সহীহ হাদীস পড়ে। এ জন্য কোন ওয়াজ মাহফিলে বা কোন অনুষ্ঠানে সালাফীরা গেলে কোন আলেম কোন যঈফ হাদীস বা জাল হাদীস বর্ননা করলে সালাফীরা তা ধরে ফেলে। ২। ইসলাম বহির্ভুত কোন বক্তব্য পেলে সালাফীরা প্রতিবাদ করে থাকে। ৩।অধিকাংশ সালাফীরা দাঈ (দাঈ যারা ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকে)
৪।সালাফীদের সহীহ হাদীসের আলোকে দাওতের কারনে অনেক আলেমদের পর্দা ফাস হয়ে যাচ্ছে (বিশেষ করে পীরপন্থি) এইদেশে অনেক বই আছে যাতে অনেক দুর্বল ও জাল হাদীস সহকারে ছাপা রয়েছে ফলে তাদের সকলের দোষ দেওয়া ঠিক না, অনেকেই সহিহ দাওয়াত পেয়ে সংশোধন হচ্ছে। ৫।সালাফীরা পীর বিরোধী কারন পীররা মুসলিমদেরকে ভিন্ন ভিন্ন দলে ভাগ করেছে। ৬।সালাফীরা কবর পাকা বা উচু করা বিরোধী ।কারন নবীজি সা: থেকে তা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ।(মুসলিম ১ম খন্ড ৩১২ পৃঃ ও মেসকাত ১৪৮ পৃঃ) সব মুসলিম কি সালাফী নই? আপনি কি নিজের পরিচয় দিবেন সালাফী বলে? নাকি মুসলিম বলে? নিশ্চয় মুসলিম পরিচয় দিবেন ,আর সালাফী পরিচয় দিবেন দাঈ হিসাবে। এটা একটি বৈশিষ্ঠ গত নাম মাত্র। কে চায় না কোরআন ও সহীহ হাদীস মেনে চলতে সাহাবা (রা:),তাবেঈন, তাবে- তাবেঈন (রহ:) দের মত করে? কে চায় না দাঈ হতে? কারন ইসলামের দাওয়াত না হলে ধ্বংস আর ইসলামের দাওয়াত দেওয়া ফরজ। কে চায় না আমলে সলেহ বা সঠিক আমল করতে? কে চায় না বাছাই করতে হাদীস জাল, যঈফ না সহীহ তা জানতে? কে চায় না জানতে ,সে ইসলামের কোন পথে আছে ঠিক পথে নাকি ভুল পথে? কে চায় না কোরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে নিজের জীবন গড়তে? যদি আপনি এগুলো চান বা মেনে চলেন
তাহলেতো আপনি সালাফী। যদি আপনি তাকলীদ বা গোড়ামী করেন আর অন্ধ অনুসরন করেন তাহলে আপনি সালাফী নন।
0 notes