Tumgik
#মুহাম্মদ (সা.) সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী
khutbahs · 3 years
Photo
Tumblr media
তাওহীদের দিকে উম্মতকে আহ্বান করেছেন সকল নবী-রাসূলগণ
প্রথম মানুষ এবং প্রথম নবী আদম (আ থেকে শেষ নবী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল মুহাম্মদ (সা) পর্যন্ত সকল নবী ও রাসূলদের প্রধান আহ্বান ছিল আল্লাহর একত্ব/তাওহীদ এর দিকে। তাঁদের কালেমা ছিল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (কোনো উপাস্য নেই আল্লাহ ব্যতীত)। 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আদমু সফিউল্লাহ’, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ নুহুন নাজিউল্লাহ ’,’ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ ’,’ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ'। তাওহীদের কালেমা ছিল সকল নবী ও রসূলের মিশন, তাওহীদে বিশ্বাস ছাড়া কোনো ইবাদতেরই মূল্য নেই।https://www.youtube.com/watch?v=vuSZg0kYH1I&t=385s
0 notes
banglarchokhbdnews · 3 years
Text
আজ পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা
আজ পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা
বাংলার চোখ নিউজ : আজ ২৮ সফর পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা বা মহানবী (সা.) এর রোগমুক্তি দিবস। প্রতিবছর হিজরি সালের সফর মাসের শেষ বুধবার মুসলিম বিশ্বে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ স্মারক দিবস হিসেবে পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা উদযাপিত হয়। ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনে আখেরি চাহার শোম্বা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নবী করিম (সা.) ইন্তেকালের আগে এই দিনে কিছুটা সুস্থতা বোধ করেছিলেন।…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
paathok · 4 years
Photo
Tumblr media
New Post has been published on https://paathok.news/119352
আগামীকাল শুক্রবার ঈদে মিলাদুন্নবী
.
আগামীকাল শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) পালিত হবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে প্রতিবছরই বাংলাদেশে দিনটি পালন করেন মুসলিম সম্প্রদায়। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও দিনটি পালনে দেশব্যাপী নানা আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল মাসে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। আর ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি (সা.) ইহলোক ত্যাগ করেন।
মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস ১২ রবিউল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করা হয়। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর দিনটি বাংলাদেশে সরকারি ছুটির দিন এবং দেশের মুসলিমরা এদিন বিশেষ ইবাদত করে থাকেন। দিনটি উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল, আলোচনা ও কোরআনখানিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, মসজিদ ও মাদ্রাসা।
0 notes
khutbahs · 3 years
Text
তাওহীদের দিকে উম্মতকে আহ্বান করেছেন সকল নবী-রাসূলগণ
প্রথম মানুষ এবং প্রথম নবী আদম (আ থেকে শেষ নবী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল মুহাম্মদ (সা) পর্যন্ত সকল নবী ও রাসূলদের প্রধান আহ্বান ছিল আল্লাহর একত্ব/তাওহীদ এর দিকে। তাঁদের কালেমা ছিল 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' (কোনো উপাস্য নেই আল্লাহ ব্যতীত)। 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আদমু সফিউল্লাহ', 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' নুহুন নাজিউল্লাহ ',' লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ ',' লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ'। তাওহীদের কালেমা ছিল সকল নবী ও রসূলের মিশন, তাওহীদে বিশ্বাস ছাড়া কোনো ইবাদতেরই মূল্য নেই। https://www.youtube.com/watch?v=vuSZg0kYH1I&t=385s
0 notes
gnews71 · 6 years
Photo
Tumblr media
যেদিন প্রিয় নবী পৃথিবীতে এলেন জেনে নিন মহানবী (সা.) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। তাই তাঁর জন্মও শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। তাঁর জন্মকে কেন্দ্র করে অনেক আশ্চর্যজনক কাজের জন্ম হয়েছে, যা সব জাতিকে বিমোহিত করেছে। সৃষ্টিজগতের মধ্যে একমাত্র ব্যক্তি তিনি, যাঁর স্মরণ সব জাতি সব যুগে করেছে। তিনি সেই মহামানব, যাঁর নাম ইঞ্জিল ও তাওরাতে আছে। সেখানে তাঁর নাম হলো আহমদ। তাঁর প্রশংসা করবে আসমান ও জমিনবাসী। আর তাঁর নাম কোরআনে মুহাম্মদ। (তাফসিরে ইবনে কাসির, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩২৪) মহানবী (সা.)-এর জন্মের মাস কারো কারো মতে রমজান, কারো মতে রজব। তবে রবিউল আউয়ালই প্রসিদ্ধ মত। জন্মতারিখ নিয়েও আছে মত-দ্বিমত। নিম্নে তারিখ নিয়ে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরা হলো— এক. কেউ বলেন, রবিউল আউয়ালের দুই তারিখ। দুই. কেউ বলেন, রবিউল আউয়ালের আট তারিখ। বেশির ভাগ মুহাদ্দিসিন একে বিশুদ্ধ বলেছেন। তিন. কেউ কেউ ৯ রবিউল আউয়াল বলেছেন। চার. ইবনে ইসহাক বলেন, মহানবী (সা.) হাতির ঘটনার বছর ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছেন। (সিরাতে ইবনে হিশাম, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৫৮) বেশির ভাগ সিরাতপ্রণেতার কাছে এটাই প্রাধান্য মত। আর রহিকুল মাকতুম গ্রন্থে এসেছে : সায়্যিদুল মুরসালিন মক্কায় বনি হাশিমের ঘাঁটিতে সোমবার সকালে ৯ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন, যে বছর হাতির ঘটনা হলো। আর আনু শিরোয়ানের ক্ষমতা দখলের ৪০ বছর হলো, তা ২২ এপ্রিল ৫৭১ খ্রিস্টাব্দ মোতাবেক হয় (আর রাহিকুল মাকতুম, খণ্ড-১, পৃ. ৪৫) জন্মের অলৌকিকতা হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহর আমার প্রতি সম্মান হলো, আমি খতনাবিশিষ্ট অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছি। যাতে আমার লজ্জাস্থান কেউ যেন না দেখে। (মুজামে আওসাত, হাদিস : ৬১৪৮) হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত : এক ইহুদি মক্কায় ব্যবসা করত। যে রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন, সে রাতে সে কুরাইশের এক মজলিশে বলে, ‘হে কুরাইশদল! তোমাদের মধ্যে কি আজ রাতে কোনো সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে?’ তারা বলল, আল্লাহর কসম, আমরা জানি না। সে বলল—‘আল্লাহু আকবার, তোমরা না জানলে কোনো সমস্যা নেই; তবে তোমরা দেখো ও স্মরণ রাখো, আমি যা বলছি। আজ রাতে এই শেষ উম্মতের নবী জন্মগ্রহণ করেছেন। তাঁর দুই কাঁধের মাঝখানে একটি নিদর্শন থাকবে, সেখানে কিছু চুলের গুচ্ছ রয়েছে, তা দেখতে ঘোড়ার কাঁধের চুলের মতো, তিনি দুই রাত দুধ পান করবেন না। তার কারণ, এক জিন তার আঙুল তাঁর মুখে প্রবেশ করিয়েছে, তাই তিনি দুধ পান করবেন না। ’ তখন তারা তার মজলিস সমাপ্ত করল, আর তার কথা শ্রবণ করে আশ্চর্য বোধ করল। তারা যখন বাড়ি ফিরল, প্রত্যেকে নিজের পরিবারকে সংবাদ দিল। তারা বলল, আজকে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের এক সন্তান জন্মগ্রহণ করল। তারা তাঁর নাম মুহাম্মদ রাখল। কুরাইশ দল আবার একত্রিত হলো। তারা বলল, তোমরা কি ইহুদির কথা শ্রবণ করেছ, আর তোমরা কি জানো অমুখ বাচ্চার জন্মের কথা। তখন তারা ইহুদির কাছে গেল। আর তাকে তাঁর জন্মের সংবাদ দিল। তখন সে বলল, তোমরা আমাকে নিয়ে তাঁর কাছে যাও, তখন তারা তাকে আমিনার সেখানে প্রবেশ করাল, আর সে বলল, আপনার ছেলেকে আমাদের সামনে বের করুন, তখন তিনি বের করলেন, আর সে তাঁর পিঠ দেখল। তখন সেই নিদর্শন দেখতে পেল, সঙ্গে সঙ্গে ইহুদি বেহুঁশ হলো। তারা বলল, তুমি ধ্বংস হও! তখন সে বলল, আল্লাহর কসম! নবুয়ত বনি ইসরাইল থেকে চলে গেল; তাই তোমরা—হে কুরাইশ দল! শান্তি পেলে। আর আল্লাহর কসম! সে তোমাদের ওপর আক্রমণ করবে, তাঁর সংবাদ পূর্ব থেকে পশ্চিমে পৌঁছে যাবে। (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস : ৪১৭৭) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, একসময় শয়তান আসমানে যেতে পারত। গিয়ে ফেরেশতাদের গায়েবি সংবাদ শ্রবণ করত। তা তাদের গণকদের কাছে দিত। যখন ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করলেন, তখন তাদের তিন আসমান থেকে বিরত রাখা হলো। আর যখন মহানবী (সা.) জন্মগ্রহণ করলেন, তখন তাদের সব আসমান থেকে বিরত রাখা হলো। তাই তাদের কেউ যখন কিছু শ্রবণ করার জন্য যেত, তখন তাদের আগুনের স্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করা হতো। (তাফসিরে কবির, খণ্ড ১৯, পৃষ্ঠা ১৩০) হজরত ওসমান ইবনে আবিল আস বলেন, ‘আমাকে আমার মা বলেছেন, তিনি আমিনা বিনতে ওয়াহাবের জন্মের সময় ছিলেন। তিনি বলেন, তখন সব বস্তুকে নূর মনে হলো, আর আমি তারকারাজি দেখেছি, তারা অবনমিত হলো। মনে হয় আমার কোলে পড়বে। (দালাইলুন নবুয়্যাহ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১১১) যে রাতে মহানবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেন, সে রাতে কিসরার রাজপ্রাসাদে কম্পন ধরে। আর সেখান থেকে ১৪টি গম্ভুজ ভেঙে পড়ল। তা দ্বারা তাদের ১৪ জন ক্ষমতাবান হওয়া বোঝানো হলো। তাদের ১০ জন চার বছরে ক্ষমতায় এলো। আর বাকিরা ওসমান (রা.) শহীদ হওয়া পর্যন্ত ছিল। আর পারস্যের আগুন নিভে গেল, যা হাজার বছর ধরে নেভেনি। আর সাওয়ার ছোট নদীর পানি শুকিয়ে গেল (বায়হাকি, দালাইলুন নবুয়্যাহ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১২৬) আবু রবি ইবনে সালিম বলেন, বাকি ইবনে মাখলাদ তাঁর তাফসিরে লেখেন, নিশ্চয়ই ইবলিশ চারবার বড় আওয়াজে চিৎকার করেছে। একবার যখন তাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে। আরেকবার যখন তাকে দুনিয়ায় নামানো হয়েছে। আরেকবার যখন মহানবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেছেন। আরেকবার যখন সুরা ফাতিহা অবতীর্ণ করেছেন। (উইনুল আছার, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৪) কাজি আয়াজ বলেন, আবদুর রহমান ইবনে আওফের মাতা শিফা থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর ধাত্রী ছিলেন, আর তিনি বললেন, যখন তিনি তার হাতে এলেন আর চিৎকার করলেন—তখন এক ঘোষককে বলতে শুনেছেন : আল্লাহ তোমাকে রহম করুন। আর তার থেকে একটি নূর বের হলো, যা দ্বারা রোমের প্রাসাদ দেখা গেল। (তাফসিরে ইবনে কাসির, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩২৪) মহানবী (সা.)-এর জন্মের দিনে করণীয় প্রতি সোমবার রোজা রাখা মহানবী (সা.)-এর জন্মের কারণে মুস্তাহাব। হজরত আবু কাতাদাহ আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.)-কে একদিন রোজা ও একদিন ইফতার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো, তখন তিনি বলেন, তা আমার ভাই দাউদের রোজা। তাঁকে সোমবার রোজা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তখন তিনি বললেন, সেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি ও সেদিন আমি নবুয়ত পেয়েছি বা আমার ওপর ওহি অবতীর্ণ হলো। তারপর তিনি বললেন, প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা ও এক রমজান থেকে অপর রমজান পুরো জীবন রোজা রাখার সমান। আর তার থেকে আরাফার রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে। তখন তিনি বলেন, তাতে এক বছর আগের পাপ ও এক বছর পরের পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। তাঁর কাছে আশুরার রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে। তিনি বলেন, তা আগের এক বছরের পাপ মুছে দেয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৬২)
0 notes
khutbahs · 5 years
Link
রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) উত্তম আদর্শ নিয়ে ওয়াজ করলেন কবি আব্দুল হাই শিকদার।
আল্লাহ বলেন, রাসূলের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। (আল কুরআন)
আল্লাহ বলেন, রাসূলের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। (আল কুরআন) হযরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব ও শ্রেষ্ঠ রাসূল। তিনি ছিলেন শেষ নবী। বিশ্ব মানবের ইতিহাসে মহানবী (সা.)-এর স্থান সবার উপরে। তাঁর তাকওয়া, অনুপম ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র মাধুর্য্য আমাদের সকলের জন্য অনুসরণযোগ্য। রাসূল (সা.) ছিলেন আল্লাহর নবী একই সঙ্গে একজন মানুষ। এই উভয় পরিচয়ে তিনি সত্য ও সুন্দরকে ভালোবেসেছেন। তাঁর দৈনন্দিন জীবন আচরণ, অভ্যাসের মধ্যে আমরা চরিত্র গঠনের অনেক উপাদান খুঁজে পাই। আজ নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অনেক কথা বলা হ্েচ্ছ। ইসলাম নৈতিক শিক্ষার পাঠ দেয় পরিবার থেকেই। নবী জীবনে নৈতিক শিক্ষার চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। তিনি সালাম দেয়ার প্রচলন করেন। সালাম বিনিময় মুসলমানদের একটি সাধারণ রীতি। সালাম সম্ভাষণের মাধ্যমে আমরা একে অপরের শুভ কামনা করে থাকি। রাসূল (সা.) বলেন, ‘তোমরা সেইসব মুসলমানদের সালাম কর, যে তোমাদের নিকট পরিচিত। তাকেও সালাম কর, যে তোমার নিকট অপরিচিত।’ সালাম করার সময় বলতে হয়, ‘আসসালামু আলাইকুম।’ অর্থাৎ- ‘তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক’। যিনি সালামের জবাব দিবেন তিনি বলবেন, ‘ওয়াআলাইকুমুস সালাম’। অর্থাৎ ‘তোমার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক। হযরত আনাস (রা.) বর্ণনায় জানা যায়, ‘রাসূল (সা.) যখন শিশুদের পাশ দিয়ে যেতেন তিনি তাদের অভিবাদন করতেন। বলতেন, সালামু আলাইকুম।’-এ ছিল তার স্বভাব। সালাম দেয়া এমন একটি ভাল রীতি যা আনন্দঘন পরিবেশে কোন সুখী মানুষকে যেমন দেয়া যায় আবার তেমনি কষ্টকাতর কোন দুঃখী মানুষকেও সালাম দেয়া যায়। যা হয় অত্যন্ত সময় উপযোগী ও প্রাণবন্ত। শুভ কামনা করা হয় বলে সালাম আমাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে।  আমরা তার নামেই শুরু করবো। আবার শেষও করবো তাঁর প্রশংসা দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ্ (যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য) বলে। মনে রাখবে কোন অন্যায় কাজের শুরুতে ও শেষে বিসমিল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ বলা যাবে না। কেননা, এগুলো শয়তানের কাজ। আর আল্লাহর অনুগ্রহ কেবল ন্যায় ও সৎ কাজের সাথে থাকে। উল্লেখ্য, একটি বাংলা বাগধারা রয়েছে, ‘বিসমিল্লায় গলদ’-এ দ্বারা বুঝানো হয়ে থাকে কাজের শুরুতেই ভুল। আক্ষরিক অর্থ করলে দাঁড়ায় আল্লাহর নামে গলদ বা ভুল (না��জুবিল্লাহ)। একজন মুসলমান এ ধরনের কথা বলতে পারে না। আমরা না বুঝেই এরূপ বলি। আমাদের বোধ-বিশ্বাস ও ইসলামী পরিভাষার সাথে বাংলা এই বাগধারাটি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই এটি আমাদের কথায় ও লেখায় পরিহার করা উচিত। মুসলমানদের গৃহে প্রবেশের নিয়ম কত না শালীন ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। হাদিসে এসেছে, ঘরে প্রবেশের সময় প্রথমে বিসমিল্লাহ বলবে। অতঃপর পরিবার-পরিজনকে সালাম বলবে। অপরদিকে অন্য কারো গৃহে প্রবেশকালে অনুমতি প্রার্থনা করবে এবং দরজার বাইরে থেকে অনধিক তিনবার সালাম দিবে। অনুমতি না পেলে ফিরে যাবে এ সময় নিজের নাম বলা উত্তম। (মুসলিম/মেশকাত) মহানবী (সা.) দৈনন্দিন জীবনে কার্য উপলক্ষে অনেক দোয়া পড়েছেন এবং উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন। এসব মাসনুন দোয়ায় যেমন আল্লাহর স্মরণ রয়েছে, তেমনি চরিত্র গঠনের উপাদানও রয়েছে। আয়না দেখার সময় আল্লাহর রাসূল (সা.) শিখিয়েছেন, আয়নায় আপন চেহারা দেখে বলবে, “আল্লাহুম্মা আনতা হাসসানতা খালকী ফাহাসসিন খুলুকী।” অর্থ : “হে আল্লাহ আপনি আমার চেহারাকে সুন্দর করেছেন, অতএব আপনি আমার চরিত্রকেও সুন্দর করে দিন। বন্ধুরা! একটু গভীরভাবে খেয়াল কর এই দোয়ার ভিতর আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার ও চরিত্র গঠনের গুরুত্ব কত না সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। কেউ যদি এই দোয়াটি বুঝে আমল করে তবে সে কখনও আল্লাহর অকৃতজ্ঞ বান্দা হতে পারে না। চরিত্রহীন কোন কাজও করতে পারে না। রাসূল (সা.) এর জীবন ছিল ভব্যতা-সভ্যতা ও শিষ্টাচারের এক অপূর্ব সমাহার। তিনি (সা.) বলেছেন, “যারা আমাদের ছোটদের আদর করে না এবং বড়দের সম্মান করে না তাদের সাথে আমার সম্পর্ক নেই।” রাসূল (সা.) আরো বলেছেন, “কারো সাথে দেখা হলে একটু মিষ্টি করে হাসা উত্তম ছদকা।” আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আব্বা-আম্মাকে খুশি রাখার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সন্তানের প্রতি পিতা খুশি থাকলে আল্লাহও খুশি থাকবেন। পিতা খুশি না থাকলে আল্লাহ খুশি থাকবেন না। মা-বাবার প্রতি সদাচরণ ও ভাল ব্যবহার করার জন্য মহান প্রভু আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। নবী জীবনের একটি ঘটনা থেকে আমরা পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্যের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারি।* হে মুসলিম, আঁধার যুগের সমস্ত ধ্যান ধারনাকে ভুলে যাও, নব আলোকে পথ চলতে শিখো। আজ হতে অতীতের সব মিথ্যা সংস্কার, অনাচার ও পাপ প্রথা বাতিল হয়ে গেল। * মনে রাখবে- সব মুসলমান ভাই ভাই। কেউ কারো চেয়ে ছোট নয়। কারো চেয়ে বড় নয়। আল্লাহর চোখে সবাই সমান। * নারী জাতির কথা ভুলে যেও না। নারীর ওপর পুরুষের যেরূপ অধিকার আছে, পুরুষের ওপর নারীরও সেরূপ অধিকার আছে। তাদের ওপর অত্যাচার করো না। মনে রাখবে, আল্লাহকে সাক্ষী রেখে তোমরা তোমাদের স্ত্রীগণকে গ্রহণ করেছো। * প্রত্যেক মুসলমানের ধন-প্রাণ পবিত্র বলে জানবে। যেমন পবিত্র আজকের এই দিন, ঠিক তেমনি পবিত্র তোমাদের পরস্পরের জীবন ও ধন সম্পদ। * দাস-দাসীদের প্রতি সর্বদা সদ্ব্যবহার করবে। তাদের ওপর কোনরূপ অত্যাচার করবে না। তোম���া যা খাবে তাদেরকেও তাই খাওয়াবে। যা পরবে তাদেরকেও তাই পরাবে। ভুলোনা- ওরাও তোমাদের মত মানুষ। * সাবধান! পৌত্তলিকতার পাপ যেন তোমাদের স্পর্শ না করে। র্শিক করবে না। চুরি করবে না, মিথ্যা কথা বলবে না। ব্যভিচার করবে না। সর্ব প্রকার মলিনতা হতে নিজেকে মুক্ত করে পবিত্রভাবে জীবনযাপন করবে। চিরদিন সত্যাশ্রয়ী হয়ে থাকবে। * বংশের গৌরব করবে না। যে ব্যক্তি নিজ বংশকে হেয় মনে করে অপর এক বংশের নামে আত্মপরিচয় দেয়, আল্লাহর অভিশাপ তার ওপর নেমে আসে। (বোখারী-মুসলিম) তাই বলবো, এসো আমরা রাসূল (সা.) কে জানি। তার আদর্শে জীবন গড়ি। তবেই কেবল আমাদের জীবন থেকে সকল দুঃখ-ক্লেশ জরা কুহেলিকা, কুসংস্কার দূরীভূত হবে। নেমে আসবে শান্তির ফল্গুধারা।
0 notes
gnews71 · 6 years
Photo
Tumblr media
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। প্রিয় নবী (সা.)-এর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব বলে শেষ করা যাবে না। হাজার হাজার বছর ধরে যাঁদের অবদানে আলোকিত আমাদের এ পৃথিবী, তাঁদের শিক্ষা ও সংস্কার নিয়ে মাইকেল এইচ হার্টের অবিস্মরণীয় সংকলন—‘দ্য হানড্রেড’ গ্রন্থে শত মনীষীর তালিকার ‘এক নম্বর’ ব্যক্তিত্ব হলেন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। এটি তাঁর মর্যাদাকে করেছে চিরভাস্বর।
0 notes
gnews71 · 6 years
Photo
Tumblr media
মহানবী (সাঃ)- এর যে গুণগুলো মানুষকে আকৃষ্ট করেছে! মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হলেন বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী। যিনি সঠিক পথ প্রদর্শন কারী। তিনি হলেন মানবতার মহান শিক্ষক। তার জীবন চরিত্র মানবতার পথ প্রদর্শক। তিনি সর্বত্তোম চরিত্রের অধিকারী। তার যে গুণ বা চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে খোদ কাফেররাও তাকে সত্যবাদী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ‘মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল; তাঁর সহচরেরা কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদের রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবে। তাদের মুখমণ্ডলে থাকবে সিজদার চিহ্ন, তাওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপই এবং ইঞ্জিলেও। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যা থেকে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর তা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কাণ্ডের ওপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষির জন্য আনন্দদায়ক। এভাবে আল্লাহ মুমিনদের সমৃদ্ধি দিয়ে কাফিরদের অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎ কর্ম করে আল্লাহ তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের’ (সূরা ফাতহ : ২৯)। সব নবী-রাসূল যার রেসালত প্রকাশে অঙ্গীকারাবদ্ধ, যিনি কিতাবপ্রাপ্তদের কাছে দিবসের রোদের মতো স্পষ্ট এবং সুবিদিত, যিনি আদম সৃষ্টির বহু আগে নবী বলে প্রকাশিত, যিনি প্রথম মুসলিম এবং সর্বশেষ নবী, যিনি ইসলামের প্রদীপ্ত রাসূল, যিনি সব নবীর উম্মতের চেয়েও নিকটতম, যিনি মুমিনের আত্মার সুরভি এবং তার বিবিরা তাদের জন্মদাত্রী সমতুল্য, যিনি মহান রবের পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি বিশেষ অনুকম্পা, যিনি সৃষ্টির সেরা এবং মানবজাতির সর্দার, যার অনুসরণ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই আনুগত্য। যার রিসালাত বিশ্বজনীন এবং যিনি উম্মতের নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দু, যিনি নিষ্পাপ এবং নৈশযোগে ঊর্ধ্বলোকে গমনকারী, সব গুপ্তভাণ্ডারের চাবি ছিল যার আয়ত্তে। যার জামানা সব জামানার চেয়ে শ্রেষ্ঠ, যিনি সব নবীর ইমাম, যিনি চন্দ্র দ্বিখণ্ডকারী, যিনি সামনে এবং পশ্চাৎ যুগপৎ প্রত্যক্ষ করতে পারতেন, যার স্বপ্ন ছিল প্রকৃত বাস্তবের সম্যক দর্শন, যার পতাকাতলে সব নবী হবেন সমবেত, যিনি সর্বপ্রথম সুরক্ষিত জান্নাতের কড়া নাড়বেন। যিনি হবেন আল-ওয়াসিলাহ্ এবং আল ফাদিলাহ্ প্রাপ্ত, তার কুরসি থাকবে মহান আল্লাহ পাকের আরশের ডান পাশে। যাকে মাকামে মাহমুদ ও চিত্ত প্রশান্তকারী আল কাওসার দান করা হয়েছে, আল্লাহ পাক তাকে বহুমুখী শাফায়াতের ক্ষমতা দান করেছেন এবং তিনিই সর্বপ্রথম আপন উম্মতসহ পুলসিরাত পার হবেন। সর্বজ্ঞ আল্লাহ পাক যে নবীকে হাবিব হিসেবে গ্রহণ করেছেন, তাকে তিনি বিশ্ববাসীর সামনে রাসূল বলে প্রকাশ করাই যথার্থ মনে করেছেন। তাকে তিনি মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বাক্যের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন। নবী করীম সা:-এর বাহ্যিক গঠন ছিল অত্যন্ত সুন্দর এবং লাবণ্যময়। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাবলীল এবং ক্ষিপ্রগতি সম্পন্ন। সাধারণত সুশ্রী এবং কোমল তনুর কোনো মানুষ এতটা কর্মঠ এবং আলস্যহীন হয় না। আবু ইউনুস রহ: হজরত আবু হুরায়রা রা:-কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, ‘আমি নবী সা: অপেক্ষা অধিক সুন্দর ও সুশ্রী কোনো মানুষ দেখিনি। (তাঁর সৌন্দর্য এবং রূপ এমন ছিল) যেন কোনো সূর্য তাঁর ললাটের ওপর দিয়ে বিচরণ করছে। অনুরূপ আমি নবী সা: অপেক্ষা অধিক দ্রুত গতিতে পথ চলতে কাউকে দেখিনি। (তাঁর পথ চলাকালে মনে হতো) যেন ভূমিকে তার জন্য সঙ্কুচিত করে দেয়া হয়েছে। (শামায়েলে তিরমিজি) রাসূল সা:-এর চেহারা মোবারক এমন নিষ্পাপ এবং নিষ্কলঙ্ক ছিল যে শুভ্র বস্ত্রখণ্ডের ওপর কালিঝুলির দাগের মতো তার মেজাজের আবেগ উৎকণ্ঠা চেহারায় ভেসে উঠত। হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,‘রাসূল সা: পর্দানশিন কুমারী অপেক্ষাও অধিক লজ্জাশীলা ছিলেন। তিনি যখন কোনো কিছু অপছন্দ করতেন তা তাঁর চেহারা মোবারক দেখেই বোঝা যেত। হজরত আনাস ইবনে মালিক রা: বলেন, ‘নবী সা: কুমারী অপেক্ষাও লজ্জাশীলা ছিলেন।’ আল্লাহপাক রাসূলকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন একটি ন্যায়দর্শী সমাজ নির্মাণের জন্য। তিনি তাঁর জীবনের একটি মুহূর্তও অকাজে নষ্ট করেননি। অন্যায়ের আধিক্যে দিশাহীন হয়ে পাপাসক্ত পৃথিবীকে প্রচলিত নিয়মে পরিশুদ্ধ করার কাজে করেননি আত্মনিয়োগ। তিনি আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমা ও মার্জনার নীতিতে বিশ্বব্যবস্থা বদলে দেয়ার মহান আন্দোলনে নিয়োজিত হন। রাসূল সা: এরশাদ করেন, তাওরাতে আছে : আল্লাহ পাক বলেন, ‘(হে আমার প্রিয়নবী) যারা কিতাবপ্রাপ্ত নয় সেই মূর্খদের উৎসাহিত করুন। কারণ আপনি আমার বান্দাহ ও রাসূল। আমি আপনাকে মুত্তাওয়াক্কিল উপাধিতে ভূষিত করেছি। আপনি রূঢ় ও কর্কশভাষী নন, বাজারে বসে গালগল্প করেন না, আপনি অন্যায়কে অন্যায় দ্বারা প্রতিহত করেন না বরং তা ক্ষমা ও মার্জনা করেন। আর আপনাকে মহান আল্লাহ এই পৃথিবী থেকে উঠিয়ে নেবেন না, যতক্ষণ না দুর্বলদের মিলাত এভাবে গঠিত না হয় যে তারা তখন বলবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, তখন অন্ধের চোখ খুলে যাবে এবং কুফরির চাদরে ঢাকা অন্তরসমূহ আবরণমুক্ত হবে।’ রাসূল সা:-এর রিসালাত আল্লাহ প্রেরিত নবী-রাসূলদের পরম্পরাগত ধারাক্রমের চূড়ান্ত বিকাশ। সত্য দ্বীন প্রকাশের কার্যক্রমে প্রত্যেক নবীরই ছিল বিশেষ ভূমিকা। সব নবীরই মিশন ছিল বাতিল উৎখাত করে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহ পাক তার শেষ নবীর মাধ্যমে তার মনোনীত দ্বীন ইসলামকে পরিপূর্ণতা দান করেন। হজরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সা: এরশাদ করেন : আমার এবং আগেকার নবীদের দৃষ্টান্ত এরূপ যে, এক লোক একটি ইমারত নির্মাণ করল, সে ইমারতটি উত্তমভাবে তৈরি করার পর এটিকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করল। কিন্তু এক জায়গায় একটি ইট খালি রাখল। লোকেরা ইমারতটির চাকচিক্য এবং স্থাপত্��শৈলী ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগল। সবাই এর অনুপম গঠননৈপুণ্য এবং বিরল নান্দনিকতায় মুগ্ধ হলো। কিন্তু একটি প্রশ্ন ঘুরে ফিরে সবাই করতে লাগল- এই জায়গায় একখানা ইট বসানো হয়নি কেন। রাসূল সা: বলেন : আমিই সেই সর্বশেষ ইট এবং আমিই শেষনবী’ (বুখারি, মুসলিম)। রাসূল সা:-এর প্রচারিত দ্বীনকে যারা প্রত্যাখ্যান করেছে তাদের সামনে সঙ্গত কোনো যুক্তি ছিল না। মিথ্যা অহমিকা, অন্ধগর্ব এবং গোত্রদ্বন্দ্বের জাত্যাভিমানই তাদের এই মহান দ্বীন অস্বীকার করার প্রেরণা জুগিয়েছে। সুলতান ইবনে আসিম রা: থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন : রাসূল সা: একদিন মসজিদে নববীতে এক মজলিসে বসেছিলেন। তখন মসজিদের ভেতরে এক ব্যক্তি পায়চারী করছিল। হজরত সা: সেই ব্যক্তির দিকে অপলক চেয়ে হাসলেন। তারপর তাকে ডেকে বললেন : ওহে অমুক। সে ব্যক্তি জওয়াবে বললেন : লাব্বাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ, হে আল্লাহর রাসূল আমি আপনার খেদমতে হাজির। তিনি আর কোনো বাক্য ব্যয় না করে আবার শুধু উচ্চারণ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! হজরত সা: এরশাদ করলেন, ‘তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে আমি আল্লাহর রাসূল?’ তিনি জওয়াবে বললেন, না। হজরত সা: বললেন, ‘তুমি কি তাওরাত পড়ো?’ লোকটি জওয়াব দিলেন, জি হ্যাঁ। হুজুর সা: বললেন, ইনজিল পড়ো? তিনি বললেন, জি হ্যাঁ, পড়ি। হজরত সা: বললেন, পবিত্র কুরআন? তিনি বললেন, ‘যার হাতে আমার জীবন তার শপথ। আমি ইচ্ছে করতাম তবে পড়তে পারতাম।’ তারপর হুজুর সা: লোকটিকে শপথ করিয়ে বললেন : ‘তুমি কি আমাকে তাওরাত ও ইনজিলে পেয়েছ?’ লোকটি বললেন : ‘আমরা তাওরাত ও ইনজিলে আপনার আবির্ভাবের এবং আপনার আকার আকৃতির হুবহু বর্ণনা পেয়েছি। কিন্তু আমরা আশা করেছিলাম যে, আপনি আমাদের ইসরাইলি গোত্র থেকে আবির্ভূত হবেন। তারপর যখন প্রকৃতই আপনি আবির্ভূত হলেন, তখন আমরা আশঙ্কা করলাম যে আপনি হয়তো সেই ব্যক্তি হবেন। তারপর আমরা লক্ষ করলাম এবং দেখলাম যে আপনি সেই ব্যক্তি নন।’ হুজুর সা: জিজ্ঞেস করলেন : ‘কিভাবে তোমরা তা লক্ষ করলে?’ লোকটি জওয়াব দিলেন : ‘তাঁর সাথে তাঁর সত্তর হাজার এমন উম্মত থাকবেন যাদের কোনো হিসাবও হবে না, কোনো আজাবও হবে না। কিন্তু আপনার সাথে মুষ্টিমেয় কিছু লোক দেখা যায়।’ হুজুর সা: বললেন, ‘যে সত্তার হাতে আমার জীবন, তার কসম করে বলছি, নিঃসন্দেহে আমিই সেই ব্যক্তি। তোমার বর্ণিত গুণাবলিসম্পন্ন সেই সব লোক আমারই উম্মতভুক্ত এবং তারা সত্তর হাজার ও সত্তর হাজার অপেক্ষাও অনেক বেশি হবে’ (আজমাউজ যাওয়ারিদ)। হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর আবির্ভাবের অল্পকালের মধ্যেই একটি অতুলনীয় ইতিহাস সৃষ্টি করে ফেললেন। ইসলামি বিপ্লবী কলেমার অপ্রতিরোধ্য প্রচারের কারণে এশিয়া, ইউরোপ এবং অরণ্যময় আফ্রিকার নিভৃত জনপদে হৃদয় কাঁপানো সাম্য সভ্যতার বিস্তার ঘটতে লাগল। সুদূর আরবের মরুভূমি থেকে দিগি¦জয়ী অশ্বের পিঠে আরোহণ করে ইসলামের সুমধুর আহ্বান ছুটে চলল পৃথিবীর উন্মুক্ত প্রান্তরে। ইসলামের মহান নবীর সে কালজয়ী কীর্তি অনুধাবন করে খ্রিষ্টান ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুর বলেছেন : ‘মুহাম্মাদ সা: যে যুগে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন, তাকে শুধু সে যুগেরই একজন মনীষী বলা ঠিক হবে না, বরং তিনি ছিলেন সর্বকালের, সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মনীষী।’ নামকরা ঐতিহাসিক, সাহিত্যিক �� চরম ইসলাম বিদ্বেষী সমালোচক এইচ জি ওয়েলসের মুখেও মুহাম্মাদ সা:-এর স্তুতি দেখে অবাক না হয়ে পারা যায় না। তিনি তার বিদ্বেষপরায়ণ মনোভাব সত্ত্বে¡ও ইসলামের অনুপম বিশ্বাসের আলোকে প্রতিষ্ঠিত শান্তিময় সমাজব্যবস্থার প্রশংসা করেছেন অতলস্পর্শী বিবেচকের ভাষায়। তিনি বলেছেন : ‘মুহাম্মাদ সা: সেই আকর্ষণীয় বিশ্বাসগুলো মানবজাতিকে হৃদয়ঙ্গম করিয়েছিলেন। ইসলাম সৃষ্টি করেছিল এমন এক সমাজ, এর আগে দুনিয়ার অস্তিত্বশীল যেকোনো সমাজের তুলনায়, যা ছিল ব্যাপক নিষ্ঠুরতা ও সামাজিক অত্যাচার থেকে অধিকতর মুক্ত।’ মুহাম্মাদ সা: সম্পর্কে গুরু নানকের বিখ্যাত উক্তিটি স্মরণ করার মতো একটি দলিল। মানবরচিত সাড়া জাগানো বাহ্যিকতাসর্বস্ব মতবাদগুলোর অসারতা নিগূঢ়ভাবে খতিয়ে দেখে তিনি বলেছিলেন : ‘এখন দুনিয়াকে পরিচালিত করার জন্য কুরআনই একমাত্র গ্রন্থ। সাধু, সংস্কারক, গাজী, পীর, শেখ ও কুতুবরা অশেষ উপকার পাবেন যদি তারা পবিত্র নবীর ওপর দরুদ পাঠ করেন।’ লেখক : তমসুর হোসেন কবি ও লেখক
0 notes