খাদি কাপড় ও রসমালাইয়ের জন্যে বিখ্যাত কুমিল্লা জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা। শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা প্রাচীন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ এই জেলা প্রাচীনকালে সমতট জনপদের অন্তর্গত ছিল এবং পরবর্তীতে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ ছিল। কুমিল্লা জেলার দর্শনীয় ভ্রমণ স্থান, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঘুরে বেড়ানোর সকল পর্যটন স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো; শালবন বিহার, আনন্দ বিহার, ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি, ধর্মসাগর দীঘি, রূপবান মুড়া, চন্ডীমুড়া মন্দির, ম্যাজিক পার্ক ইত্যাদি।
শালবন বৌদ্ধ বিহার
শালবন বৌদ্ধ বিহার (Shalbon Buddha Bihar) কুমিল্লা জেলার কোটবাড়িতে অবস্থিত, যা বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন হিসাবে সুপরিচিত। তৎকালীন সময়
ময়নামতি জাদুঘর
কুমিল্লা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে সালমানপুরে অবস্থিত ময়নামতি জাদুঘর (Mainamati Museum) প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহশালা হিসাবে বাংলাদেশের একটি গুরত্বপূর্ণ স্থান। ময়নামতি
ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি
কমনওয়েলথ সমাধিক্ষেত্র বা ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি (Moynamoti War Cemetery) তে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৭৩৭ জন সৈন্য চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। যার মধ্যে
নব শালবন বিহার
প্রাচীন সভ্যতায় সমৃদ্ধ কুমিল্লা জেলার ঐতিহাসিক স্থাপনায় নতুন এক সংযোজন কোটবাড়ি এলাকার নব শালবন বিহার (Nobo Shalbon Bihar)। প্রায় আড়াই
ইটাখোলা মুড়া
কুমিল্লা সদর উপজেলার থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে কোটবাড়িতে অবস্থিত ইটাখোলা মুড়া (Itakhola Mura) সপ্তম বা অষ্টম শতকে নির্মিত একটি
ডাইনো পার্ক
কুমিল্লা জেলার কোটবাড়ির জামমূড়ায় লালমাই পাহাড়ের ১২ একর জায়গা নিয়ে ডাইনোসর পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। সমতল ভূমি থেকে ৪৫ ফুট …
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী
কুমিল্লা জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে কোটবাড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বা বার্ড (Bangladesh Academy for Rural Development
রূপবান মুড়া
কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে কোটবাড়িতে অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার নাম রূপবান মুড়া (Rupban Mura)। ৯০ দশকে কুমিল্লা-কালিবাজার
রানী ময়নামতির প্রাসাদ
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পূর্ব পাশে ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে সৌন্দর্যমন্ডিত রানী ময়নামতির প্রাসাদ
আনন্দ বিহার
কুমিল্লা জেলা সদরের কোটবাড়ির ময়নামতিতে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য আনন্দ বিহার (Ananda Bihara)। ময়নামতির অন্যান্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে বৃহত্তম এই
ফান টাউন পার্ক
বিনোদনের নতুন আয়োজন নিয়ে কুমিল্লা জেলার ঢুলিপাড়াতে ২০১৬ সালে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ভার্চুয়াল থীম পার্ক ফান টাউন
ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক
ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক (Magic Paradise Park) কুমিল্লা জেলার কোটবাড়ি এলাকায় অবস্থিত। ওয়াটার পার্ক, ২০টির অধিক রাইড, ডাইনোসর পার্ক, পিকনিক স্পট
0 notes
ফান টাউন পার্ক
বিনোদনের নতুন আয়োজন নিয়ে কুমিল্লা জেলার ঢুলিপাড়াতে ২০১৬ সালে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ভার্চুয়াল থীম পার্ক ফান টাউন (Fun Town)। ভিন্ন ধাঁচে নির্মিত এই পার্ক ছোট বড় সব বয়সী মানুষের নির্মল বিনোদনের জন্য একটি উপযুক্ত জায়গা। পার্কের মনোরম পরিবেশে ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও আকর্ষণীয় রাইডের মজা নিতে ছুটির দিনে অনেকে এই পার্কে আসেন। ১৫ ডি সিনেমা ফান টাউন পার্কের প্রধান আকর্ষণ হলেও ছোট বাচ্চাদের জন্য এখানে রয়েছে নাগরদোলা, ট্রেন, বাম্পার কার, প্যাডেল বোট, সুইং চেয়ার, মেরিগো রাউন্ড, সেল্ফ কন্ট্রোল এরোপ্লেন সহ বিভিন্ন ইনডোর ও আউটডোর রাইড। আর বিশেষ দিন গুলোতে ফান টাউন পার্ক কনসার্ট, ডিজে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় আয়োজনে পূর্ণ থাকে।
প্রবেশমূল্য,খরচ ও সময়সীমা
প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত উন্মুক্ত ফান টাউন পার্কে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। এছাড়া পার্কের বিভিন্ন রাইডের ভাড়া-
রাইড
জনপ্রতি ভাড়া
নাগরদোলা (৫ মিনিটের জন্য)
৫০ টাকা
মেরিগো রাউন্ড
৫০ টাকা
বাম্পার কার
১০০ টাকা
সেল্ফ কন্ট্রোল এরোপ্লেন
১০০ টাকা
প্যাডেল বোট
১০০ টাকা
ট্রেন
৫০ টাকা
১৫ ডি সিনেমা
১০০ টাকা
ইনডোর গেমস
৫০ টাকা
সুইং চেয়ার
১০০ টাকা
কিভাবে যাবেন
ফান টাউনে যাওয়ার জন্য প্রথমে কুমিল্লা শহরে আসতে হবে। ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসে কুমিল্লা শহর যাওয়া যায়। তবে রয়্যাল কোচ, এশিয়া এয়ারকন, প্রিন্স, এশিয়া লাইন, তৃষার মতো নন-এসি বা এসি বাসে ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাওয়া সুবিধাজনক। বাস থেকে নেমে সিএনজি অথবা রিক্সায় কুমিল্লার ইপিজেড হয়ে ঢুলিপাড়া চৌমুহনি থেকে সামান্য দক্ষিণে এগোলেই ফান টাউনে পৌঁছে যাবেন।
আবার কুমিল্লার টমটম ব্রিজ থেকে অটোরিকশায় কুমিল্লা এয়ারপোর্ট রোড থেকে সহজেই ফান টাউন যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে একদিনে ফান টাউন ঘুরে ফিরে আসা যায়। যদি রাত্রিযাপনের প্রয়োজন হয় তবে কুমিল্লা শহরে বেশকিছু ভালো মানের আবাসিক হোটেল আছে। এদের মধ্যে রয়েছে এমএন হোটেল, হোটেল আমানিয়া, হোটেল আমির, হোটেল ড্রিম ল্যান্ড, মাসুম রেস্ট হাউজ, হোটেল মেলোডি, হোটেল নূর, হোটেল সোনালি ইত্যাদি।
কোথায় খাবেন
ফান টাউনের কাছাকাছি কিছু খাবার হোটেল ও রেস্তোরা আছে। মনির হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, মায়ের দোয়া হোটেল, বিসমিল্লাহ বিরানি ও কফি হাউজ , লামিম রেস্তোরায় খাবার খেতে পারবেন। এছাড়া কুমিল্লা শহরেও বিভিন্ন মানের বেশকিছু ক্যাফে, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও ফাস্ট ফুডের দোকান আছে। আর কুমিল্লার বিখ্যাত রসমালাইয়ের প্রকৃত স্বাদ নিতে হলে চলে যান মনোহরপুরের মাতৃভাণ্ডারে।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
ফান টাউন ছাড়াও কুমিল্লা শহরের অন্যান্য পার্ক ও দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ম্যাজিক প্যারাডাইস, ডাইনো পার্ক, ধর্ম সাগর, ওয়ার সিমেট্রি ও রাজেশপুর ইকো পার্ক উল্লেখযোগ্য।
0 notes
ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক: বাংলাদেশের ডিজনিল্যান্ড?
ডিজনিল্যান্ড গিয়েছেন কখনো? যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম ক্যালিফোর্নিয়ার অন্তর্গত ‘এনাহিম’ শহরে ডিজনিল্যান্ড থিম পার্কটির অবস্থান। ১৯৫৫ সালে প্রথমবারের মতো ডিজনিল্যান্ড দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত থিম পার্কের ইতিহাসে এটিই সর্বশ্রেষ্ঠ থিম পার্ক বলে বিবেচিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশেও ডিজনিল্যান্ডের আদলে সাম্প্রতিক সময়ে তৈরি করা হয়েছে একটি থিম পার্ক।
ম্যাজিক প্যারাডাইস নামের পার্কটি ঢাকার কাছেই কুম��ল্লা জেলার কোটবাড়ি এলাকায় অবস্থিত একটি বিনোদন কেন্দ্র।
শুরুটা কীভাবে?
ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কের যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ এর এপ্রিলে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে কোটবাড়ির সালমানপুরে পার্কটির অবস্থান। পার্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, এটিই বাংলাদেশের বৃহত্তম ফ্যামিলি এমিউজম্যান্ট পার্ক। পার্কটি নকশাও করা হয়েছে পরিবারের নিয়ে একসাথে ঘুরার পরিবেশ তৈরির ব্যাপারটি মাথায় রেখে। পার্কটি তৈরিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় দুইশ কোটি টাকা৷
ডিজনিল্যান্ডের আদলে তৈরি করা হয়েছে ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক এর বিশাল ফটক। ওয়াটার পার্ক, ২০টিরও বেশি বিভিন্ন ধরনের রাইড, ডাইনোসর পার্ক, পিকনিক স্পটসহ ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে বেশ জনপ্রিয় দর্শনার্থীদের কাছে।
কী আছে ম্যাজিক প্যারাডাইসে?
সবুজ প্রকৃতি আর কৃত্রিমের ছোঁয়া মিলে মিশে একাকার পার্কটি। ভিতরে ঢুকতেই চোখ চলে যাবে বিশাল এক নাগরদোলায়।
ম্যাজিক প্যারাডাইসকে সাজানো হয়েছে তিনটি অংশে। ড্রাই পার্ক, ওয়াটার প্যারাডাইস এবং ডায়নোসর ওয়ার্ল্ড।
ড্রাই পার্কে প্রায় ১৬ টি রাইড সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফেরিস হুইল, ক্যাঙ্গারু জাম্প, টুইন ড্রাগন, ট্রেন, রোলার কোস্টার, বাম্পার কার, ফ্লাইং জেট ইত্যাদি। এই অংশের প্রতিটি রাইড সুবিধা পাওয়া যাবে ১০০ টাকায়। ওয়াটার বোটের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা।
ওয়াটার প্যারাডাইসে পানিতে থাকে বা পানি সম্পর্কিত বেশ কয়েক ধরণের রাইড সুবিধা রেখেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ওয়েভ পোল, ফ্যামিলি পোল, ল্যাজি রিভার, স্প্ল্যাশ পোল ও রেইন ডান্স।
উচ্চ শব্দের গানে, ঢেউয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার আনন্দ বলে বুঝানো যাবে না। বাচ্চাদের জন্যও ওয়াটার পুলে রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ছোট পাহাড়ের উপর তিনটি ওয়াটার রাইড আছে যা আপনার পছন্দ হতে বাধ্য।
এই সুবিধা গুলো পেতে সুইমিং কস্টিউম পাওয়া যায় সেখানে, মূল্য ১০০ – ২৫০ টাকা। ১০০ থেকে ২০০ টাকা মূল্যে পাওয়া যাবে টিউবও। রাইড সুবিধা নিতে একদিনের জন্য ভাড়া গুণতে হবে জনপ্রতি ১০০ টাকা।
পার্কের তৃতীয় এবং সবচেয়ে আ��র্ষণীয় অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ডায়নোসর ওয়ার্ল্ডকে। পাহাড়ের সিঁড়ি বেয়ে উপড়ে উঠতেই ডেকে উঠবে ডায়নোসর। ডায়নোসর? ঠিক ধরেছেন। ডায়নোসরই। তবে সেটা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা। কার্ভড পলিস্টিরিন ফোম দিয়ে পার্কের একটি অংশে ডায়নোসরের কৃত্রিম অবয়ব তৈরি করা হয়েছে। ফাইবার গ্লাসের আবরণের উপর আঁকা হয়েছে ডায়নোসরের অবয়ব।
হরেক রকমের ডাইনোসরদের দেখা মেলে এখানে। স্কিন টেক্সচার, চোখ, জিহবা, লেজ আর শরীরের মুভমেন্টের সাথে সাউন্ডবক্সের গর্জন- সব মিলিয়ে আসল ডায়নোসর থাকার বাস্তবিক এক পরিবেশই তৈরি হয়। ছোট বাচ্চারা দেখলে ভয় পেয়ে যাবে নির্ঘাত। খেয়াল না করে উপরে উঠলে আপনিও হাজার বছর পুরনো ডায়নোসরের যুগে চলে গেছেন ভেবে ভয় পেতে পারেন। ডায়নোসর আছে বলে এই পার্ককে জুরাসিক পার্কের সাথেও তুলনা দিতে পারেন।
আরও দেখুন: শালবন বৌদ্ধ বিহার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ... ফান টাউন পার্ক কুমিল্লা জেলার দর্ষনিয় স্থান সমূহ
অন্যান্য সুবিধা আছে তো?
একটা পার্কে শুধু যে রাইড কিংবা দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ থাকলেই দর্শনার্থীদের আনাগোনা বাড়ে এমন ধারণা বদলেছে অনেক আগেই৷ পার্কে থাকতে হয় আনুষাঙ্গিক সকল সুবিধা৷ ম্যাজিক প্যারাডাইস কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করেছে সেসব সুবিধা দিতে। পার্কে আছে খাওয়া-দাওয়াসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আছে নামাজের স্থান ও মহিলা-পুরুষদের জন্য আলাদা স্যানিটেশন ব্যবস্হা। তাই নির্দ্বিধায় পরিবারসহ একটা দিন কাটিয়ে আসতে পারেন এই পার্কে।
কীভাবে যাবেন ম্যাজিক প্যারাডাইস?
ঢাকা থেকে সড়ক পথে অর্থাৎ বাসে করে কুমিল্লা যেতে এখন মাত্র ২ ঘন্টারও কম সময় লাগে। তাই বাসে স্বাচ্ছন্দ্যে চলে যেতে পারেন পার্কটিতে। ম্যাজিক প্যারাডাইস যাওয়ার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে ঢাকা থেকে কুমিল্লা টমছমব্রীজ গামী এশিয়া ট্রান্সপোর্ট, তিশা প্লাস অথবা এশিয়া এয়ার কন/রয়েল কোচ/প্রিন্স দিয়ে সরাসরি কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড নেমে সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে যেতে পারবেন। কুমিল্লা যাওয়ার বাস গুলো কমলাপুর ও সায়দাবাদ থেকে ছেড়ে যায়।
এছাড়া ঢাকা থেকে ট্রেনে করে সহজেই কুমিল্লা আসতে পারবেন। চট্টগ্রামগামী (সুবর্ণা ও সোনার বাংলা বাদে) প্রায় সকল ট্রেনই কুমিল্লা স্টেশনে থামে। তবে ট্রেনে আসলে আপনাকে নামতে হবে কুমিল্লা স্টেশনে। সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে কোটবাড়ি যেতে পারবেন। ট্রেনে পৌঁছাতে অবশ্য বাস থেকে দ্বিগুণেরও বেশি সময় লাগবে।
চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা আসতে প্রিন্স কিংবা সৌদিয়া বাস বেছে নিতে পারেন। অথবা যে কোন ঢাকাগামী বাসে করেই আসতে পারবেন, আপনাকে কুমিল্লায় নেমে যেতে হবে। আবার ঢাকা গামী ট্রেনে করে বাসের চেয়ে দ্রুত কুমিল্লা পৌঁছাতে পারবেন। অথবা দেশের অন্য কোন জায়গা থেকে আপনার সুবিধামত বাহনে কুমিল্লায় আসতে হবে।
কুমিল্লা থেকে ম্যাজিক প্যারাডাইসে যেতে যদি বাসে আসেন আর বাস কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোড হয়ে যায় তাহলে কোটবাড়ি বাস স্ট্যান্ড মোড়ে নেমে পড়ুন। আর যদি অন্য কোথাও নামেন তাহলে যে জায়গাতেই আসেন সেখান থেকে অটো রিক্সা বা সিএনজি দিয়ে কোটবাড়ি মোড় চলে আসতে পারেন। কোটবাড়ি মোড় থেকে ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক যাওয়ার অটো রিক্সা বা সিএনজি পেয়ে যাবেন।
খরচ কেমন ম্যাজিক প্যারাডাইসে?
ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক প্রতিদিন সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে। পার্ক এর প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২০০ টাকা। প্রবেশ মূল্য দিয়ে আপনি ডায়নোসর ওয়ার্ল্ড এবং চা খাওয়ার সুবিধা পাবেন। ওয়াটার পার্ক এর প্রবেশ মূল্য ৩০০ টাকা, বিভিন্ন রাইডের টিকেট ৫০-১০০ টাকা করে। একসাথে কয়েক রাইড মিলিয়ে বিভিন্ন ধরণের প্যাকেজ আছে।
আপনি চাইলে আলাদা আলাদা ভাবে না টিকেট কিনে একসাথে প্যাকেজের টিকেট ও কিনতে পারবেন। ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০০০ টাকায় পাওয়া যাবে প্যাকেজগুলো। ছয় বছরের নিচে বাচ্চাদের কোনো প্রবেশ মূল্য প্রয়োজন হবে না। এছাড়া পিকনিক বা অনেকজন মিলিয়ে গেট-টুগেদার করতে চাইলে আগে থেকে যোগাযোগ করে যেতে হবে।
আশেপাশে দর্শনীয় স্থান
যদি আপনি অনেক দূর থেকে ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কে যান, তাহলে হয়তো খরচ ও সময়ের হিসেবে আপনার জন্যে ব্যয়বহুল হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এই পার্কের আশেপাশের বা কুমিল্লা শহরে দেখার মতো দর্শনীয় কিছু স্হানে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। ম্যাজিক প্যারাডাইসের কাছেই রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর।
কুমিল্লা শহরে রয়েছে ধর্মসাগর দিঘি অথবা যেতে পারেন কুমিল্লা সিলেট রোডের পাশের ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে। তাই ম্যাজিক প্যারাডাইস যাওয়ার সুবাধে ঘুরে আসতে পারেন আশেপাশের এসব দর্শনীয় স্হান থেকেও।
আরও দেখুন: শালবন বৌদ্ধ বিহার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ... ফান টাউন পার্ক কুমিল্লা জেলার দর্ষনিয় স্থান সমূহ
0 notes
কম খরচে ঘুড়ে আসা যাক কক্সবাজার
বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রটি হচ্ছে কক্সবাজার। প্রতি বছর ৪০ লাখের বেশি পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করেন, যার অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক। পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত আর আশেপাশের অনেকগুলো সুন্দর জায়গার জন্য এ শহরটি টানে সব বয়সের পর্যটকদের। চাহিদা বাড়ার কারণে খরচও দিন দিন বাড়ছে সেখানে। আসুন দেখে নেই কীভাবে কম খরচে ঘুরে আসা যায় কক্সবাজার।
আসা-যাওয়া হোক রাতের গাড়িতে:
দেশের অনেকগুলো প্রধান শহর থেকে রাতে কক্সবাজারের জন্য বাস ছাড়ে। নন এসি এ ধরনের রাতের বাসে ভ্রমণ করলে আপনার খরচ বেশ কমে যাবে। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের বাস ভাড়া ৮০০ টাকা। রাতে দিনের চেয়ে তাপমাত্রা কম থাকে, তাই একটু আরাম করেই যেতে পারবেন। যাওয়া আসা দুই রাত বাসে থাকলে আপনার দুদিনের থাকার খরচ কমে যাবে।
কক্সবাজারে বিচের যত কাছে থাকবেন ততই ভাড়া বাড়তে থাকবে। তাই বিচের দিকে না থেকে কলাতলি রোড, বা এখানকার গলি গুলোতে খুজলে পেয়ে যাবেন বাজেটের মধ্যে থাকার ব্যাস কিছু হোটেল ।তাই গলির মধ্যে হোটেল নিন । ভালোভাবে খুঁজলে ৫০০ টাকার মধ্যে হোটেল পেয়ে যেতে পারেন।
নিজ দ্বায়িত্বে খুঁজে বের করুন হোটেল:
বাস থেকে নামলেই আপনাকে সিএনজি বা রিক্সাওয়ালারা হোটেল খুঁজে দিতে চাইবে। ভুলেও তাদের সাথে গিয়ে তাদের পরামর্শে হোটেল নেবেন না। এরা সাধারণত বড় অংকের কমিশনের বিনিময়ে হোটেল ঠিক করে দেয়। তাই এদের কথাবার্তা পাত্তা না দিয়ে নিজ দ্বায়িত্বে প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে হোটেল খুঁজে বের করুন। এতে আপনি দালালের হাত থেকে বেচে যাবেন।
সামগ্রি বহন এর জন্য ট্রলি নয় ব্যাকপ্যাক ব্যবহার করুন :
বাজেট ট্রিপে ট্রলি নিয়ে গেলে আপনার চলাফেরা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে শুধু লাগেজের জন্যই অনেকগুলো অহেতুক খরচ বেড়ে যায়। তাই এ ধরনের ট্রিপে একটিমাত্র ব্যাকপ্যাক (পিঠে ঝুলানো যায় এরকম ব্যাগ) ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে আরেকটি ডে ব্যাগ রাখতে পারেন যাতে অল্প কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখে বাকিগুলো রুমে রেখে আসতে পারেন।
তিন দিনের ছুটি, সপ্তাহান্ত এড়িয়ে চলুন:
আমাদের দেশে তিন দিনের কোনো বন্ধ থাকলেই কক্সবাজার লোকারণ্য হয়ে যায়, ফলে সে সময়টায় সব কিছুর দাম বেড়ে যায়। এছাড়া অন্য দিনগুলোর চেয়ে সপ্তাহান্তেই বেশি ভিড় থাকে। খরচ কমাতে হলে এ দিনগুলো এড়িয়ে যেতে হবে আপনাকে। এছাড়া ঈদের সময়, ডিসেম্বরের শেষ দিকে কক্সবাজারে খুব ভিড় হয়। যথা সম্ভব এ সময়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
খাবার দাবার:
কক্সবাজারে খাবারের জন্য অনেক খরচ হয়ে যায়। আপনি যদি কয়েকজনের সাথে ভ্রমণ করেন তবে খাবার দাবার ভাগে যোগে খেলে খরচ কমাতে পারবেন। যেমন ধরুন কক্সবাজারে জনপ্রিয় খাবারের তালিকা লইট্টা মাছের ফ্রাই আছে। এই সাইড আইটেমটি একটি নিলেই তিনজনে খাওয়া যায়। আবার ৮০ টাকা প্লেটের ভর্তা ভাজি নিলে চার জনে ভাগ করে আনায়সে খাওয়া যায়।
মূল খাবারের জন্য যে তরকারি নেবেন সেটিও ভাগ করে খাওয়া যায়। এরকম ভাগে-যোগে খেতে পারলে আপনার খরচ মাথাপিছু প্রতি বেলা ১৫০ টাকায় নেমে আসবে। এছাড়া শহরে গিয়ে খেলেও খাবারের খরচ অনেক কমে যাবে। শহরের লালদীঘির পাড়ে অনেক হোটেল আছে, সেখানে কম খরচে খেতে পারবেন।
কিছু কিছু আইটেমের দাম খুব বেশি। চেষ্টা করবে খাবারের তালিকা থেকে এগুলো বাদ দিতে। যেমন রূপচাঁদা মাছ, শুধুমাত্র একটি মাছ অর্ডার করলেই আপনার মোট খাবারের সাথে ৩৫০ টাকা যোগ হয়ে যাবে। একই কথা চিংড়ি মাছের জন্যও প্রযোজ্য। ওশেন প্যারাডাইজ হোটেলের উল্টো দিকে গলির ভিতরে বেশ কয়েকটি হোটেল আছে, সেখানে খেতে গেলেও খরচ কিছুটা কমাতে পারবেন।
ইজি বাইক/অটো ব্যবহার:
ইনানি বা হিমছড়ি যেতে চাইলে কলাতলী মোড়ে এসে উঠে যেতে পারেন লোকাল ইজি বাইক/অটোতে। হিমছড়ি পর্যন্ত মাত্র ২০ টাকা ভাড়ায় চলে যেতে পারবেন। ৫০ টাকা খরচ করে যাওয়া যায় ইনানি বিচ পর্যন্তুও। আর যদি সংখ্যায় বেশি হোন চাইলে হিমছড়ির জন্য ২০০ টাকাতেও অটো রিজার্ভ করে নিতে পারবেন।
একইভাবে যদি মহেশখালি যেতে চান তবে লঞ্চঘাট থেকে শেয়ারে স্পীড বোট উঠে পার হবেন। তারপর আদিনাথ মন্দির ঘুরে দেখে আবার চলে আসবেন কক্সবাজার। মেরিন ড্রাইভে যদি ট্রিপ দিতে চান তবে কলাতলি মোড়ে এসে সম্ভব হলে জীপে উঠে বসবেন। আগে আগে গেলে সামনের সিটে বসে উপভোগ করতে পারবেন পুরো মেরিন ড্রাইভ, খরচও নামমাত্র।
সঠিক সময়ে চেক আউট
মনে রাখবেন আপনার হোটেলের চেক ইন সাধারণত দুপুর একটা আর চেক আউট সকাল ১১টার দিকে হয়। আগেই হোটেলে জানিয়ে রাখবে আপনার গাড়ি রাতে ছাড়বে, সন্ধ্যা পর্যন্ত আপনি কী হোটেলের রুমে থাকতে পারবেন কিনা। সাধারণত ভিড় না থাকলে হোটেল মালিকরা কোনো ঝামেলা করে না।
তবে ভিড় থাকলে আপনাকে ১১টার পর আর সময় দেবেনা। এসব ক্ষেত্রে যেটা করতে পারেন রুম ছেড়ে দিয়ে লাগেজ রেখে যেতে পারেন হোটেল কাউন্টারে। সেক্ষেত্রে সারাদিন ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় হোটেলে এসে ব্যাগ নিয়ে চলে যাবেন বাস ধরার উদ্দেশ্যে।
একটি জিনিস মনে রাখবেন আপনার টাকা কম বলে লজ্জা পাবার কিছু নেই। বরং অল্প টাকা নিয়ে আপনি দেশ দেখতে বের হয়েছেন এটা গর্বের বিষয়। একসময় হয়তো আপনার টাকা হবে, তখন ঘোরাঘুরি করা সময় নাও থাকতে পারে।
1 note
·
View note