Tumgik
#ইতিহাসের লেখালেখি
eknozor · 2 years
Text
এক নজর ডট কম হলো একটি অনলাইন বাংলা নিউজ পোর্টাল – Online Bangla News Portal Ek Nozor পরিবেশন করেঃ বাংলা খবর, চাকরির খবর, খেলার খবর, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি!
1 note · View note
24x7newsbengal · 1 year
Link
0 notes
ziaur-rahman · 5 years
Text
চন্দ্রগাজী রণাঙ্গন
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আমরা কালুরঘাট বেতারে আঁটকে ফেলেছি। অথছ ৭১ এর রণাঙ্গনে অসংখ্য নায়োকচিত যুদ্ধতে মুক্তিযোদ্ধা জিয়া নিজে উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সে সব অসাধারণ সাহসিকতার ইতিহাস লিখে বড় সড় একটা পাণ্ডুলিপি হতে পারে। হতে পারে সামরিক কৌশল ও সাহসিকতার ইতিহাসে গূরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য দলীল। অথচ জিয়াকে নিয়ে উল্লেখযোগ্য লেখালেখি খুব অপ্রতুল।
অনেক বড় সিক্সটিন্থ ডিভিশনের মুক্তিযোদ্ধা আছে, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা আছে যাঁদের জন্য ফ্যামিলি সাইজের বই ছাপানো হয়, অথছ জিয়া সেখানে অনাদৃত অবহেলিত। জিয়ার দলে আজ সেবাদাস ও অজ্ঞানতা মনোবৃত্তি থেকে নেতা তৈরী হয়। তাই বুদ্ধিবিত্তিক ও ইতিহাসের মূল্যায়ন থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যার্থতা বারবার পেছনে টেনে ধরে। ইতিহাস শুধুমাত্র পুড়ান দিনের ঘটনার নির্মোহ বর্ণনা নয়, বরং ইতিহাসের পাঠ হচ্ছে অভিজ্ঞতা অর্জনের ঝুলি। আওয়ামীলীগ যখন এই সব নিয়ে গবেষনারত দের দলীয়ভাবে সমর্থন দেয় সেখানে আমাদের ইতিহাসের কর্মীদের রীতিমত অবহেলা করা হয়। যোগ্যদের ছুঁড়ে ফেলে মোসাহেব ও অযোগ্যদের মাথাই তুলে নাঁচা হয়। সে কারণেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে গাফেলতি ও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে প্রায়শ ভুল হয় আমাদের।
মূল ঘটনাতে আসা যাক
৬ ই জুন, ১৯৭১ঃ ফেনী'র পরশুরাম থানার সীমান্তের কাছাকাছি চান্দ্রগাজী বাজার ছিল ক্যাপ্টেন অলির অধীনে একটা মুক্তাঞ্চল। ত্রিপুরাস্থ ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চল কমান্ডের ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং, তাঁর দলবল নিয়ে চন্দ্রগাজী বাজার মুক্তাঞ্চল পরিদর্শনে আসেন। ডজন খানেক বাংলাদেশী ও ইন্ডিয়ান সাংবাদিক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং এর পরিদর্শন টিমে। বাংলাদেশের ওয়ার জার্নালিস্ট আব্দুল বাসার যিনি “সাপ্তাহিক সমাজ” পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, তাঁর লিখিত বর্ননা থেকে এই লেখার তথ্য সমূহ থেকে সংগৃহীত। শাবেদ শিং পরবর্তীতে মেজর জেনারেল হয়ে ইন্ডিয়ান আর্মি থেকে অবসর নেন ও অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরে ইডিয়ান সেনাদের ঝটিকা অপারেসনে নিহন হন।
শাবেদ শিং ভারতীয় অফিসারদের গাড়ী বহর সহ নিরাপদ দূরত্বে পাহাড়ী পথ দিয়ে এগুতে থাকে। পথেই জিয়া শাবেদ শিং কে বললেন চন্দ্রগাজী বাজারে তাদের খাঁটি বাংলাদেশী সারপ্রাইজ দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে। শাবেদ শিং ছিলেন অভিজ্ঞ ও পোড় খাওয়া যোদ্ধা, তাঁর অতীত বিভিন্ন যুদ্ধ অভিজ্ঞতা শুনতে শুনতে দলটি এক সময় চন্দ্রগাজী বাজারে পৌঁছে যায়।
গোপনীয়তা সত্ত্বেও বাজারের মানুষ টের পেয়ে যায় বিদ্রহী অফিসার জিয়া সাথে করে ইন্ডিয়ান ব্রিগ্রেডিয়ার নিয়ে এসেছেন এবং বাজারের সবচেয়ে বড় মিষ্টির দোকানে ঢুকেছেন। ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং এর জন্য সারপ্রাইজের সেই বস্তু ছিল চন্দ্রগাজী বাজারের বিখ্যাত রসগোল্লা। ডাইবেটিকস রোগী ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং মিষ্টি সারপ্রাইজ দেখে রীতিমত হতাশ হয়ে গেলেন। জিয়া ও অতিথি ইন্ডিয়ান অন্য অফিসাররা ততক্ষনে বিপুল উৎসাহে মিষ্টির পাতিল থেকে মুখে মিষ্টি পুড়ে ভক্ষণ শুরু করে দিয়েছেন। মিঃ শিং অসহায় দৃষ্টিতে তাঁদের রশগোল্লা ভক্ষণ অবলোকন করে যাচ্ছেন।
চন্দ্রগাজী বাজারে জিয়া এসেছে, সাথে আছে ইন্ডিয়ান ব্রিগেডিয়ার ও একঝাঁক অফিসার। পাকিদের কাছে কিছুক্ষনের মাঝেই এই খবর চলে গেল। সাথে সাথে বিশাল এক বহর নিয়ে পাক বাহিনী পশ্চিম দিক থেকে চন্দ্রগাজীর দিকে ধেয়ে আসতে লাগল। বিশাল লোভনীয় শিকার তাঁদের হাতের নাগালে। ভারতীয় ব্রিগেডিয়ারকে ধরতে পারলে সারা পৃথিবীকে দেখানো যাবে মুক্তিযুদ্ধ বলে কিছু নেই, সব ভারতীয় ষড়যন্ত্র। তারচেয়েও বড় ব্যাপার জেড ফোর্স কমান্ডার খোদ জিয়াউর রহমান সেখানে আছে। এই তো সেই গাদ্দার জিয়া যে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে গিয়ে সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছে। মার্চ, এপ্রিল মাসে যত পাকিস্তানি অফিসার সৈনিক নিহত হয়েছে তাঁর বেশির ভাগ মরেছে এই জিয়ার জেড ফোর্সের হাতে।
জিয়ার চন্দ্রগাজী পৌ��নোর সংবাদ যেমন পাকিস্তানীরা পেয়েছিল ঠিক তেমনি পাকিদের অগ্রসর হবার খবর পৌঁছে ছিল জিয়ার কাছে। সে সময় মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের সংবাদ পেলে, মুক্তিকামী জনতা সেখানে আছড়ে পড়তো। মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে তাঁরা যুদ্ধের গল্প শুনতে চাইতো, আশা আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্নের কথা শুনতে চাইতো। বাড়ির মুরগী খাসী জবাই করে মুক্তিদের খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা করতে পারলে ধন্য হত। তাঁরা বলতো “মুক্তি এসেছে”।
তো জিয়ার আগমনের কথা, এক কান দু কান হতে হতে জনতার কানে পৌঁছে গেলো আবার পাকিস্তানীরাও প্রায় এসে গেছে। ব্যাস মুহুর্তে সবাই উধাও। বিপদে পড়ে গেলো ভারতীয় অফিসাররা। যুদ্ধ দেখতে এসে সত্যিকারের মৃত্যুন্মুখ যুদ্ধের মুখে পড়তে হবে তাঁরা ভাবতেও পারেনি। জিয়া নির্বিকার ভঙ্গিতে আরো একটি মিষ্টির হাঁড়ি তুলে নিলেন। পাসে দাঁড়ানো দুই মুক্তিযোদ্ধাকে কিছু একটা বলে বিদায় দিয়ে, জিয়া হাঁড়ির ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিলেন আরো একটা মিষ্টি খাওয়ার জন্য।
অভিজ্ঞ পাঞ্জাবী ব্রিগেডিয়ার জীবনে বহু যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছেন কিন্তু এমন ভয়াবহ অবস্থায় কখনো পড়েনি। পাক বাহিনী ফায়ার ওপেন করেছে, মর্টারের আঘাতে গাছ গুলো ন্যাড়া হয়ে যাচ্ছে, রাইফেল মেশিন গানের গুলি নিরালস হুংকার দিচ্ছে। পিকনিক আমেজ মুহুর্তে উধাও, জান বাঁচানো ফরজ কাজ। ওদিকে জিয়া হাড়ি থেকে মিষ্টি সাবার করে চলেছেন, আর অতিথিদের সমানে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে কোন অসুবিধা হবে না, আপনারা বসুন এবং এই প্রসিদ্ধ মিষ্টি খেতে থাকুন।
শাবেদ শিং বিশাল বপুর মানুষ, তিনি ছোটখাট গড়নের বাংলাদেশী ৪০০ টাকার মেজরের আশ্বাসে আস্বস্ত হতে পারলেন না। ‘Boys, follow me’ বলেই মিষ্টির দোকান থেকে লাফ দিয়ে বের হতে গিয়ে পাশের ডোবার মধ্যে পরে গেলেন। বিশাল বপু শাবেদ শিং, বিশাল সাইজের পাইথনের মত ক্রলিং করে হাসফাস করতে করতে সীমান্তের দিকে বৃথা রওনা দিতে গিয়ে আবার থেকে গেলেন। অবশ্য ব্রিগেডিয়ারের ইয়াং অফিসাররা “Boys, follow me” হুকুম পালন করতে পারল না। “চাচা আপন প্রাণ বাচা” তাই শাবেদ শিং কে একা ফেলে তাঁরা বেশ কিছুটা পিছিয় সেফ জোনে ঢুকে গেছে।
মিলিটারি অফিসারদের মত দৌড়/ক্রলিং এ অনভিজ্ঞ/অনভ্যস্ত সাংবাদিক এবং সিভিলিয়নদের তখন চোখের সামনে সাক্ষাৎ আজরাইল। তারপরও জীবন বাঁচানোর তাগিদে সামনের পানা পাহাড়ী নালায় পড়ে পানকৌড়ি'র মত টুপ টাপ ডুব দিচ্ছে আর উঠছে। ফাঁকে ফাঁকে শাপান্ত করছেন জিয়া আর চন্দ্রগাজীর মিষ্টির দোকানীকে।
অফিসারদের সকালের পাট ভাঙ্গা ইউনিফর্মগুলো কাদা পানি আর ধুলায় নাগা সান্ন্যাসীদের মত প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। কারো মাথাতে তখনো শ্যাওলা, কচুর পাতা ঝুলে রয়েছে। বিপুল বেগে তারা যখন সীমান্তের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে তখন ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং জনা দুয়েক সৈনিক আর সাক্ষাতে আসা জন দশেক জনতা নিয়ে পঁচা ডোবাতে হাবুডুবু খাচ্ছেন।
কিছুক্ষণের ভেতর রাইফেল বন্দুকের ঝংকার থেমে গেলো। বাজারের পশ্চিম মাথা থেকে কাদা পানি মাখা কিছু বাংলাদেশী অস্ত্র হাতে দৌড়ে এসে যখন জিয়াকে কিছু একটা বলে গেলো তখন অতিথিরা নালা আর ডুবা থেকে একে একে উঠে আসতে শুরু করেছে। তাঁরা যখন এ যাত্রা জীবন বাঁচাতে পারার জন্য স্রষ্টার কাছে শুকুর গুজার করছে, তখন জিয়া মিষ্টির হাঁড়ি শেষ করে গামছা দিয়ে হাত মুচ্ছেন।
ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং যখন উঠে আসলেন তখন জিয়া নিজের চেয়ার ছেড়ে দিয়ে, শাবেদ শিংকে বসিয়ে আয়েস করে একটা সিগারেট জ্বালালেন, আর ব্রিগেডিয়ার সাহেব কে একটা সিগারেট এগিয়ে দিতে দিতে বললেন, “ওদের রওনা দেবার খবর পাবার আগেই নিরাপত্তার কথা ভেবে বাজারের কাছে এ্যম্বুস পেতে রেখেছিলাম আমরা, তাঁরা এই ফাঁক দিয়ে আসতে পারে এমন একটা ধারণা আমরা করেছিলাম”
পাকিস্তানীরা আসার খবর শোনা মাত্র এ্যামবুশকারীদের সাবধান করে জিয়া ওই দুই সহযোদ্ধাকে নির্দেশ দিয়ে এ্যটাকের প্রস্ততি নিতে বলেন। পাকিস্তানী বাহিনী এ্যামবুশের মাঝে আসা মাত্র দুই ধারে সাব-মেশিন গানের গুলি শুরু করে ক্যাপ্টেন অলির বাহিনী। খুব অল্প পাকিস্তানী সেনা স���দিন ফেরত যেতে পারে। জিয়া তখন হাসতে হাসতে সবাইকে বলেন,
“এবার যান, সবাই গিয়ে লাশ গুলো আর পাকিস্তানীদের ফেলে যাওয়া গাড়ি গুলো দেখুন।”
ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং এরপর “সাপ্তাহিক সমাজ” পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিক বাশারকে ইটারভিউ দিতে গিয়ে ইংরেজীতে বলেন,
“ডিয়ার সাংবাদিক, যুদ্ধে তোমরা অবশ্যই বিজয়ী হবে। যে জাতির হাতে মেজর জিয়ার মত কমব্যাটেন্ট থাকে তাদের দমিয়ে রাখা যায় না। আমি নিজে অনেক যুদ্ধ করেছি, অনেক যুদ্ধের কৌশল নিয়ে পড়েছি, কিন্তু জিয়ার মত ঠান্ডা মাথার কমব্যাটেন্ট কোথাও দেখি নি।”
এ্যাডভেঞ্চার শেষে ভারতীয় বাহিনীকে ত্রিপুরা ফেরত নিয়ে যাবার সময় সাংবাদিক বাশার এক পর্যায়ে জিয়ার পাশে এসে বলেনঃ
“স্যার আজকের ঘটনার ওপর কিন্তু কাভার ষ্টোরী হবে। কালো সানগ্লাসে ঢাকা চোখের স্বভাব সুলভ মুচকি হাসিতে, জিয়া প্রচ্ছন্ন সাঁয় দিয়ে বলেনঃ
”Well, you’ve a story, no doubt. But please don’t mention our name. That’s our of military rules.”
নিঃসন্দেহে তোমরা একটি কাহিনী পেয়েছো। কিন্তু আমাদের নাম উল্লেখ করা সামরিক নিয়মের বাইরে।।
1 note · View note
gonopress-blog · 3 years
Text
প্রিয়দর্শিনী ইন্দিরা ও একজন সাবের
Tumblr media Tumblr media
জাফর ওয়াজেদ, পিআইবি'র পরিচালক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রবীন্দ্রনাথের প্রিয়দর্শিনী ইন্দিরা গান্ধীর অবদান আমার কাছে বিশাল। যুদ্ধপীড়িত, গণহত্যার শিকার, বিপদাপন্ন, অসহায়, নিরাশ্রয় একটি জাতিকে রক্ষা শুধু নয় মাতৃস্নেহে আশ্রয় দিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রবল বিরোধিতার মুখেও (এমনকি নিজ দেশেও) হাল ছাড়েন নি। পাকিস্তানী কারাগারে আটক বাঙালির অবিসংবাদিত ও নির্বাচিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের বিচারের নামে প্রহসন বন্ধ ও মুক্তির দাবিতে বিশ্বজনমত গড়ে তুলেছিলেন। সেসব আজ ইতিহাসের অংশ। তেতাল্লিশ বছর পর আজ মনে পড়ছে- তার এই অবদানের কথা স্মরণ করে ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিল সে সময়ের এক কিশোর। বাঙালি জাতি, ছাত্র সমাজ এবং কিশোরদের পক্ষ থেকে এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন ঢাকা সরকারী ল্যাবরটরী স্কুলের দশম শ্রেণী মানবিকের এই ছাত্রটি। অবশ্য ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত এস এস সি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে ৮ম স্থান অর্জন করেছিল। প্রসঙ্গত, একই পরীক্ষায় শেখ রেহানাও অগ্রণী বিদ্যালয় থেকে মেয়েদের মধ্যে ৫ম স্থান অর্জন করেছিলেন। ‌দশম শ্রেণীর ছাত্রটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে অভিনন্দনও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটি পত্র লিখেছিলেন। তাতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং এদেশকে পাকিস্তানী হানাদারমুক্ত করতে সর্বাত্মক সহায়তা করেছেন, তাতে সে কৃতজ্ঞ। দেশ হানাদারমুক্ত হওয়ায় পুরো বাঙালি জাতির মতো তার পরিবারটিও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। ছাত্রটির চিঠিটি অবশ্য প্রকাশ হয়নি। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মহিয়সী ইন্দিরা গান্ধী পত্রের জবাবে তার চিঠির বিষয় উল্লেখ করেছিলেন। জবাবে ‌‍'মিসেস গান্ধী' তাকে অভিনন্দন জানান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবার শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাওয়ায় তিনি আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। আশীর্বাদও করেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীর পত্রটির অনুলিপি ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে স্বাধীনতা দিবসে ঢাকার‌ ‌'দৈনিক পূর্বদেশ‌' ছেপেছিল মুখবন্ধসহ। অন্য কাগজ ছেপেছিল কি না মনে নেই। ঢাকা সরকারী ল্যাবরটরী স্কুলের এই ছাত্রটি ১৯৭৪-৭৫ ঢাকা কলেজ ও ১৯৭৬-১৯৮০ বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। কলেজ জীবন থেকেই যিনি পুরোদমে লেখালেখি শুরু করে আজ বাংলা কথাসাহিত্যের একজন উচ্চাঙ্গের লেখক হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। মহিয়সী ইন্দিরা গান্ধী তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন। মনে আসে, সেই প্রার্থনা তাকে আন্তর্জাতিক সাহিত্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করবেই। স্কুল ও কলেজের সহপাঠীরা যাকে ডাকতো '‌পলিন' নামে, সেই ছাত্রটি আজ সবারই চির চেনা। সবারই পছন্দের মানব। স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটা জাতির পক্ষ থেকে যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে সেদিনের কিশোরটি, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী হিসেবে শুধু নয়, সমকালের কিশোর হিসেবেও তার প্রতি টুপি খোলা স্যালুট। তিনি, মঈনুল আহসান সাবের। Read the full article
0 notes
dailynobobarta · 4 years
Text
বাঙালি লেখক ও শিক্ষাবিদ অমূল্যকুমার দাশগুপ্তের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
New Post has been published on https://is.gd/exckOL
বাঙালি লেখক ও শিক্ষাবিদ অমূল্যকুমার দাশগুপ্তের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আমিনুল ইসলাম রুদ্র : আজ ৫ই মার্চ, বাঙালি লেখক ও শিক্ষাবিদ অমূল্যকুমার দাশগুপ্তের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত ১৯১১ সালের ১৫ অক্টোবর বরিশাল জেলার নান্দিকাঠি থানার কুলকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও হাল আমলের পাঠকের কাছে অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত খুব একটা পরিচিত নাম নয়। বাজার চলতি সাহিত্যের ইতিহাসের বইপত্রেও তাঁর প্রবেশাধিকার নেই বললেই চলে। তবে ‘সম্বুদ্ধ’ নামে তাকে অনেকেই চেনে। এ নামেই লেখালেখি করতেন তিনি। বাংলা সাহিত্যে হাস্যরসের ধারা জাতীয় গ্রন্থে সম্বুদ্ধ ও তাঁর রচনা সম্বন্ধে কিছু বাক্য ব্যয় করা হয়েছে। তিনি মূলত শিশুদের জন্যই লিখতেন। তার জীবিতকালে এবং মৃত্যুর বেশকিছু বছর পরও অনেক শিশুর কাছে ছিলেন প্রিয় লেখক। শিকার কাহিনী লেখায় পারদর্শী এই লেখক ১৯৭৩ সালের আজকের দিনে মৃত্যুৃবরণ করেন। আজ তাঁর ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। এই জ্ঞানী মানুষটি পড়াশোনা করেছেন বরিশাল ও কলকাতায়। অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত আনন্দবাজার পত্রিকা এবং শনিবারের চিঠির সহ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। কর্ম জীবনে কিছুদিন সাংবাদিকতা করলেও শিক্ষকতার পেশাতেই কেটেছে তার জীবনের বেশির ভাগ সময়। তিনি বিভিন্ন মেয়াদে বরিশাল বি.এম. কলেজ, দৌলতপুর বি.এল. কলেজ, ফরিদপুর রামাদিয়া কলেজ, পাবনা এডোয়ার্ড কলেজ ও কাঁথি পি.কে. কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপনা করেন। তিনি অনুশীলন দলের একজন সক্রিয় সদস্য হিসাবে ব্রিটিশবিরোধী সহিংস আন্দোলনে যোগদান করেন এবং কারাবরণ করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহঃ ১। ডায়লেকটিক (১৯৩৯) ২। শিকার কাহিনী (১৯৪৬), ৩। বাঘ-সাপ-ভূত, ৪। ছেলে-ধরা জয়ন্ত (গোয়েন্দা কাহিনী-১৯৬৬)। ১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতায় বসে লেখা এবং সে সময়ে রামধনু নামে একটি পত্রিকায় ছাপা হওয়া তার বিরূপকথা শিরোনামের গল্পটি তার বানানরীতি অবিকল রেখেই সংযোজিত হলো। আশা করি, এটি পড়ার পর তার অন্যান্য লেখার প্রতি পাঠকের আগ্রহ বাড়বে। শিক্ষাবিদ অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত ১৯৭৩ সালের ৫ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের কাঁথিতে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। না-ফেরার দেশে চলে যাওয়া লেখক অমূল্যকুমার দাশগুপ্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
0 notes
bartatv-blog · 6 years
Photo
Tumblr media
ইতিহাসের এই দিনেঃ ২৭ এপ্রিল আজ ২৭ এপ্রিল ২০১৮ শুক্রবার গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জী অনুসারে বছরের ১১৭ তম দিন। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটনা। ঘটনাবলী ১৫৬৫- ইতিহাসের এই দিনে ফিলিপাইনে স্পেনের প্রথম উপনিবেশ ‘সেবু’ স্থাপিত হয়। ফিলিপাইন  দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম ম্যানিলা। ১৬৬৭- ইতিহাসের এই দিনে অন্ধ এবং দরিদ্র ইংরেজ কবি জন মিলটন তার প্যারাডাইজ লস্ট কাব্যের স্বত্ব ১০ পাউন্ডে বিক্রয় করেন। জন মিল্টন সপ্তদশ শতাব্দীর ইংরেজ কবি, গদ্য লেখক এবং কমনওয়েলথ অব ইংল্যান্ডের একজন সরকারি কর্মচারী। তিনি প্রসিদ্ধ কাব্য প্যারাডাইস লস্ট এর কারণে তিনি সমধিক পরিচিত। ১৯৭২- ইতিহাসের এই দিনে অ্যাপোলো ১৬ মহাকাশযান পৃথিবীতে ফিরে আসে। জন্মদিন ম্যারি ওলস্টোনক্রাফট (১৭৫৯ - ১৭৯৭) ম্যারি ওলস্টোনক্রাফট অষ্টাদশ শতাব্দীর গুরুত্বপূর্ণ ইংরেজ লেখিকা। নারীবাদী আন্দোলনের ইতিহাসের সাথে তাঁর নাম বিশেষভাবে যুক্ত। আজ তাঁর জন্মদিন। ম্যারির সাহিত্য জীবন ছিল মাত্র ৯ বছর। এই সময়ে তিনি নারীবাদ সহ দর্শন, শিক্ষা, রাজনীতি, ধর্ম, ইতিহাস, ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি করেছেন। ওলস্টোনক্রাফটের শ্রেষ্ঠ রচনা আ ভিন্ডিকেশন অফ দ্য রাইটস অফ ওম্যান। মৃত্যুবার্ষিকী আবুল কাশেম ফজলুল হক (১৮৭৩ - ১৯৬২) আবুল কাশেম ফজলুল হক বাঙালি রাজনীতিবিদ। তিনি এ কে ফজলুল হক নামে অধিক পরিচিত। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী। রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের নিকট শের-এ-বাংলা (বাংলার বাঘ) এবং `হক সাহেব` নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ক্ষমতায় অনেক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এর মধ্যে কলকাতার মেয়র (১৯৩৫),অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭ - ১৯৪৩), পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী (১৯৫৪), পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী (১৯৫৫), পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর (১৯৫৬ - ১৯৫৮) অন্যতম। এছাড়া তিনি যুক্তফ্রন্টের গঠনকালীন অন্যতম নেতা।
0 notes
pinknutreview · 6 years
Text
ট্রাম্পকে সতর্ক হয়ে টুইট করার পরামর্শ রিপাবলিকান শিবিরের
ট্রাম্পকে সতর্ক হয়ে টুইট করার পরামর্শ রিপাবলিকান শিবিরের
অনলাইন ডেস্ক
এফবিআইর বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কতগুলো ক্রুদ্ধ টুইট বার্তা পোস্ট করেন। তিনি দাবি করেন, এই সংস্থার সুনাম এখন, তার ভাষায়, ইতিহাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। আর তাই, মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এফবিআই প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অব্যাহতভাবে চালানো টুইট বার্তা নিয়ে কংগ্রেসের অনেক সদস্যই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের রিপাবলিকান শিবিরেও তার করা টুইট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, টুইট করা নিয়ে ট্রাম্পের আরও বেশি সতর্ক হওয়া দরকার।
ট্রাম্পের টুইটটি এমন সময়ে এলো, যখন মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে স্পেশাল কাউন্সিল রবার্ট মুলার-এর তদন্ত চলছে। সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের ব্যাপারে তদন্ত বন্ধ করতে সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমিকে নির্দেশ দেয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেন ট্রাম্প। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে এফবিআই এর কাছে মিথ্যে কথা বলার দায়ে ফ্লিনকে বরখাস্ত করা হয়। নির্বাচনে জয়ী করতে রুশ যোগাযোগের কথা বরাবরই নাকচ করে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রবিবারও একগাদা টুইট করেন ট্রাম্প এবং আবারো তার সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে আক্রমণ করে লেখেন। আরেকটি টুইটে তিনি এবিসি নিউজের তীব্র সমালোচনা করেছেন তাদের রিপোর্টের এক ভুলের সূত্র ধরে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পের এহেন লেখালেখি নিয়ে অনেক ডেমোক্রেট সদস্য মনে করছেন, এর ফলে তদন্ত বা ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিবিসি।
ইত্তেফাক/সেতু
(function() { var referer="";try{if(referer=document.referrer,"undefined"==typeof referer)throw"undefined"}catch(exception){referer=document.location.href,(""==referer||"undefined"==typeof referer)&&(referer=document.URL)}referer=referer.substr(0,700); var rcel = document.createElement("script"); rcel.id = 'rc_' + Math.floor(Math.random() * 1000); rcel.type = 'text/javascript'; rcel.src = "http://ift.tt/2l0BMcM"+rcel.id+"&c="+(new Date()).getTime()+"&width="+(window.outerWidth || document.documentElement.clientWidth)+"&referer="+referer; rcel.async = true; var rcds = document.getElementById("rcjsload_83982d"); rcds.appendChild(rcel); })();
© ittefaq.com.bd
from The Daily Ittefaq :: The Daily Ittefaq RSS Feed RSS http://ift.tt/2iNhhzT via IFTTT
0 notes
ruposhibangla-blog · 6 years
Photo
Tumblr media
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে টুইট করার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এফবিআই প্রসঙ্গে আমেরিকারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অব্যাহতভাবে চালানো টুইট বার্তা নিয়ে কংগ্রেসের অনেক সদস্যই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এফবিআইর বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কতগুলো ক্রুদ্ধ টুইট বার্তা পোস্ট করেন। তিনি দাবি করেন, এই সংস্থার সুনাম এখন, তার ভাষায়, ইতিহাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ��� মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে যখন স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুলার-এর তদন্ত চলছে তখনই ট্রাম্পের এমন আক্রমণাত্মক টুইট এলো। সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের ব্যাপারে তদন্ত বন্ধ করতে সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমিকে নির্দেশ দেয়ার অভিযোগও মি. ট্রাম্প অস্বীকার করেন। রাশিয়ার সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে এফবিআই-এর কাছে মিথ্যে কথা বলার দায়ে মি. ফ্লিনকে বরখাস্ত করা হয়। নির্বাচনে জয়ী করতে রুশ যোগাযোগের কথা বরাবরই নাকচ করে আসছেন ডোনাল্ট ট্রাম্প। রোববারও একগাদা টুইট করেন মি ট্রাম্প এবং আবারো তার সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে আক্রমণ করে লেখেন। আরেকটি টুইটে তিনি এবিসি নিউজের তীব্র সমালোচনা করেছেন তাদের রিপোর্টের এক ভুলের সূত্র ধরে। তবে সামাজিক মাধ্যমে মিস্টার ট্রাম্পের এহেন লেখালেখি নিয়ে অনেক ডেমোক্রেট সদস্য মনে করছেন, এর ফলে তদন্ত বা ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। মি. ট্রাম্পের রিপাবলিকান শিবিরেও তার করা টুইট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, টুইট করা নিয়ে মি. ট্রাম্পের আরও বেশি সতর্ক হওয়া দরকার। *News Searching By BBC Bangla*
0 notes
digantablr-blog · 6 years
Text
"ছাত্রলীগ এতিমদের সংগঠন"
“ছাত্রলীগ এতিমদের সংগঠন”
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ঠিকই বলেছিলো। ছাত্রলীগ এতিমদের সংগঠন। আর তাই এর জ্ঞানদাতা অভিভাবকের অভাব নাই। দলের নেতারাও গালি দেন আর সুশীলরাতো এক পায়ে দাঁড়িয়ে লেখালেখি শুরু করেন “সবার আগে ছাত্রলীগ সামলান”- এইরকম টাইপ। ছাত্রলীগ অপ্রতিরোধ্য হয়ে কি করেছে জানতে চাইলে সুদূর অতীতের বিচ্ছিন্ন কিছু নেতিবাচক বিষয় উদাহরণ হিসাবে সামনে নিয়ে আসেন। এই সব মনে থাকলেও ছাত্রলীগের গৌরবময় ইতিহাসের কথা…
View On WordPress
0 notes
anyodhara24 · 7 years
Photo
Tumblr media
হুমায়ুন আহমেদ; একজন রূপকথার জাদুকর অন্যধারা২৪ : ১৯ জুলাই বাংলা সাহিত্যের নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের প্রয়াণ দিন। তার কাজ, তার সৃষ্টি বিশাল। তা বিশ্লেষণ করার জ্ঞান বা দক্ষতা কোনটাই আমার নেই। আমি তা করবোও না। হুমায়ন আহমেদকে স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে গণ্য করা হয়। বহুমুখী প্রতিভাসম্পুন্ন বলতে যাকে বোঝায় তিনি ছিলেন ঠিক তেমন একজন প্রতিভাধর মানুষ। দুই বংলায়তেই তিনি ছিলেন জনপ্রিয় একজন লেখক। তার সৃষ্ট চরিত্র বইয়ের উপন্যাসের পাতা থেকে জীবন্ত করে তুলেছিলেন। শরৎচন্দ্রের দেবদাস, জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন যতটা জীবন্ত ততটাই জীবন্ত তার মিসির আলি, হিমু চরিত্রগুলো। প্রেক্ষাপট ভিন্ন তবে জীবন্ত বটে। তিনি সমান দক্ষতায় ছোলগল্প লিখেছেন, উপন্যাস লিখেছেন, চলচিত্র নির্মাণ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে তার নাটক ও সিনেমায় প্রচারিত গানগুলো তো মানুষের মুখে মুখে। তিনিই হাসন রাজার গান সারা দেশে জনপ্রিয় করেছেন। তার হাত ধরে কত গুণী অভিনেতা নাট্য জগতে এসেছে। . ভারতের একটি চ্যানেলে দেখলাম হুমায়ুন আহমেদের বাংলাদেশে একটা সময়ের তুমূল জনপ্রিয় নাটক সেদেশে প্রচারিত হবে। আমার এত ভাল লাগলো যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। কারণ সেদেশ সিরিয়াল দেখতে দেখতে আমরা যখন বিরক্ত তখন অন্তত আমাদের দেশের সংস্কৃতির একটা অংশ সেদেশে দেখানো হবে ভেবে আনন্দ পেলাম। সে নাটকটি ��েখানে দেখানো হবে সেটি হুমায়ুন আহমেদের আজ রবিবার। একসময় যা আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মত দেখেছি। তিনি দেখিয়েছেন বাংলা সাহিত্যে কিভাবে পাঠক টানতে হয় এবং ধরে রাখতে হয়, কিভাবে নাটকে গুণগত পরিবর্তন এনে মানুষকে টিভি সেটের সামনে বসিয়ে রাখা যায়। তিনি আমাদের দেশের প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদ। একটা সময় একেকজন লেখকের বা সম্মিলিত কয়েকজন লেখক কবির লেখায় প্রভাবিত হয়ে লেখালেখি চলে। এখন বেশিরভাগ লেখাতেই হুমায়ুন আহমেদের লেখার ছায়া, নাটকগুলোতেও হুমায়ুন আহমেদ। মোট কথা হুমায়ুন আহমেদ বাঙালি জাতির প্রাণের মাঝে বসে আছেন। . পৃথিবী জুড়েই তার বহু ভক্ত পাঠক রয়েছে। তার অসংখ্য পাঠকের মধ্যে একজন আমি। অবশ্য আমি তার কতটা সিরিয়াস পাঠক সে বিচার করতে পারবো না। কোনদিন তার কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হয়নি। আমার অনেক ইচ্ছার মধ্যে যদিও এটাও একটা ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তার সৃষ্টির কাছাকাছি থাকাও তো তার কাছাকাছি থাকারই সমান। ছোটবেলায় যখন কোথাও কেউ নেই নাটক মন্ত্রমুগ্ধের মত দেখতাম সত্যি কথা বলতে তখনো কিন্তু হুমায়ুন আহমেদ সম্পর্কে জানতাম না। বয়সটাও অনেক কম ছিল। তখন শুধু বাকের ভাই, বদি এসব চরিত্র নিয়ে এক ধরনের ইমোশন ছিল। বহুব্রীহী দেখেছি কিন্তু তখনো হূমায়ুন আহমেদকে জানতাম না। পরে বহুব্রীহি উপন্যাস পড়ে এক অন্যরকম অনুভূতি হয়েছিল। মাধ্যমিকের গন্ডি পার হয়ে কলেজে পড়ার সময় বই পড়ার সুযোগ এলো। কলেজ লাইব্রেরিতে প্রচুর বই ছিল। প্রথম বছরে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি কার্ড বরাদ্দ ছিল। প্রতি কার্ডে আঠারোটি বই পড়া যেত। আমি আমার কার্ড দিয়ে প্রথম তুললাম হুমায়ুন আহমেদের ১৯৭১ উপন্যাসটি। শেষ করলাম এক নি:শ্বাসে। আমার প্রাণ তখন আরো বই চায়। প্রথম বছর নিজের আঠারোটি বই পড়া শেষে বন্ধুর কার্ড দিয়ে আরো আঠারোটি পড়েছিলাম। তবে এ সময়টাতে হুমায়ুন আহমেদেও কোন বই পড়া হয়নি। তখন মফস্বল বা গ্রামে বই পড়ার রীতি এতটা ছিল না। বিশেষ করে তা যদি আমার মত নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবার হয়। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেবার পর আমার হাতে এলো মিসির আলীর অমনিবাশ বই। বলা বাহুল্য ধার করা। যে বইটির গল্প নিয়ে পরে কয়েকটি আলাদা আলাদা বই প্রকাশিত হয়েছে। এর প্রথম লেখা ছিল খুব সম্ভবত দেবী। মিসির আলীর নামের শক্ত লজিকের মানুষের সাথে সেই পরিচয়। ভাল লাগাও তখন থেকেই। এত স্পষ্ট বর্ণনা বলে আমার মনে হয়েছে যে চোখ বন্ধ করলেই আমার মন মিসির আলীকে তৈরি করে নিতে পারে। হিমুর সাথে পরিচয় হয় আরো পরে। তবে রূপা এবং শুভ্রর সাথে ততদিনে পরিচয় হয়েছে। আমার বই পড়ার শখের পূর্ণতা পায় অনার্স পড়াকালীন। যে মেসে উঠেছিলাম সেখানে এক বড় ভাইয়ের বই পড়ার নেশা ছিল। তার রুমে প্রচুর বই ছিল। বাংলাদেশ, ভারতসহ পাশ্চাত্য দেশের বইগুলোও ছিল প্রচুর। যদিও কাউকে বই দিত না কিন্তু আমার আগ্রহ দেখে শুধু আমাকে বই ধার দিত। কিন্তু আমার মন খুঁজতো যে লেখকের বই তার বই বড় ভাইয়ের কাছে ছিল না। ফলে সেই অতৃপ্তি থেকেই যাচ্ছিল। যাওয়া শুরু করলাম পাবলিক লাইব্রেরীতে। সেখানে খুঁজে পেলাম আমার মনের চাওয়া বইগুলো। . আমি প্রথমেই বলেছি হুমায়ুন আহমেদ সম্পর্কে আমার খুব বেশী কিছু জানা নেই। আমি শুধু একজন পাঠকের অন্তরের উপলদ্ধিই লিখতে চেয়েছি। যদিও অনেক পাঠক সমালোচকের মুখে আমি তার লেখার গভীরতার সমালোচনা শুনেছি। তবে সমালোচনা থাকবেই। তবে তার সৃষ্টি সব কিছু ছাপিয়ে গেছে। যে লেখা পাঠকের অন্তরের গভীরে দাগ কাটতে জানে তার থেকে গভীর লেখা আর কি হতে পারে? তিনি চেয়েছিলেন তার বই পাঠক পড়ুক। তাই হয়েছে। আর তাই তিনি পাঠকের হৃদয়ে। তার ব্যাক্তিগত জীবন নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি। তবে সে তো সমালোচকরা রবীন্দ্রনাথের ব্যাক্তিগত জীবনেও আতশ কাঁচ লাগিয়ে সমালোচনার বস্তু খোঁজে। তার সমসাময়িক এতটা জনপ্রিয় আর কেউ ছিল বলে আমার জানা নেই। হুমায়ুন আহমেদের স্পর্শ যেন সফলতার অন্য নাম। সহজ, সরল সাবলীল ভাষায় পাঠককে গল্পের ভেতর টেনে নেওয়ার যে ক্ষমতা তা তার ছিল। প্রতি ঈদের দিন আজও আমি সন্ধ্যা ৭ টা ৫০ মিনিটে চ্যানেল আইয়ের সামনে বসে থাকি হুমায়ুন আহমেদের নাটক দেখার জন্য। তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন সেখানেই সফল হয়েছেন। নাটকের দর্শকদের এক নির্মল বিনোদন দেয় তার নাটকগুলো। চলচিত্রের কথা যদি বলি তাহলে সেই আগুনের পরশমনি থেকে শুরু করে সবগুলোই দেখেছি। বাদশা নামদার পরে মনে হয়েছে ইতিহাসের এমন চমৎকার একটি বিষয় গল্পের মাধ্যমে জানা যায় না পরলে বিশ্বাস করাই কষ্ট। আবার দেয়াল পরে নিজ দেশের ইতিহাসের অনেকখানি জানতে পেরেছি। রাবণের দেশে আমি এবং আমরা বইটি পড়ে সেদেশের বিভিন্ন খুঁটিনাটি তথ্য জেনেছি। অনিল বাগচীর একদিন আমি কমপক্ষে পাঁচবার পড়েছি। প্রতিবারই পড়া শেষে অনিল ছেলেটার জন্য আমার মন এক ধরনের বিষন্নতায় ডুবে গেছে। এরকম অনেক অনেক স্মৃতি রয়েছে হুমায়ুন আহমেদের সৃষ্টিকর্মের সাথে। . আমার মনে আছে হুমায়ুন আহেমেদের মৃত্যুর খবর যখন শুনি তখন একেবারেই বিশ্বাস হয়নি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল চিকিৎসা শেষে তিনি আবার ফিরে আসবেন। আমাদের জন্য আবারো লিখবেন। প্রতি বইমেলায় খোঁজ নেব হুমায়ুন আহমেদের কি বই এসেছে। আগ্রহ নিয়ে সেই বই কিনবো। তারপর রাত জেগে একটানে পড়ে শেষ করবো। আমরা মিসির আলীর নতুন যুক্তি নিয়ে উপন্যাস পাবো। হিমুরা হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে রাতে রাতে রাজপথে হেঁটে বেড়াবে। সেই পাঞ্জাবীর কোন পকেট নেই। পায়ে কোন জুতা নেই। কিন্তু তা হয়নি। যে মানুষটা জোৎস্না ভালবাসতো, বৃষ্টির জল ভালবাসতো, বৃষ্টি এলেই ভিজতে নেমে যেত বলে তার অনেক লেখায় পড়েছি তিনি চলে গেলেন। চলে গিয়েও এই আমাদের ভেতর বেঁচে রইলেন। ----------------------------------- অলোক আচার্য্য, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট, পাবনা
0 notes
ziaur-rahman · 3 years
Text
যুদ্ধে তোমরা অবশ্যই বিজয়ী হবে। যে জাতির হাতে মেজর জিয়ার মত একজন কমব্যাটেন্ট থাকে তাদের দমিয়ে রাখা যায় না।
Tumblr media
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আমরা কালুরঘাট বেতার আঁটকে ফেলেছি। অথছ ৭১ এর রণাঙ্গনে অসংখ্য নায়োকচিত যুদ্ধতে মুক্তিযোদ্ধা জিয়া নিজে উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।  
অসাধারন সে সব সাহসিকতার ইতিহাস লিখে বড় একটা পাণ্ডুলিপি হতে পারে। হতে পারে সামরিক কৌশল ও সাহসিকতার ইতিহাসের গূরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য দলীল। অথচ জিয়াকে নিয়ে উল্লেখযোগ্য লেখালেখি খুব অপ্রতুল।  
  
অনেক বড় বড় ১৬ তম ডিভিশনের মুক্তিযোদ্ধা আছে, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা আছে যাঁদের জন্য ফ্যামিলি সাইজের বই ছাপানো হয়, অথচ জিয়া সেখানে অনাদৃত অবহেলিত। এই দলে সেবাদাস ও অজ্ঞানতা মনোবৃত্তি থেকে নেতা তৈরী হয়। সে কারণে বুদ্ধিবিত্তিক ও ইতিহাসের মূল্যায়ন থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যার্থতা বারবার আমাদের পেছনে টেনে ধরে। ইতিহাস শুধুমাত্র পুড়ান দিনের ঘটনার নির্মোহ বর্ণনা নয়, বরং ইতিহাসের পাঠ হচ্ছে অভিজ্ঞতা অর্জনের ঝুলি। আওয়ামীলীগ যখন এসব গবেষনারতদের দলীয় সমর্থন দেয় সেখানে আমাদের ইতিহাসের কর্মীদের রীতিমত অবহেলা করা হয়। যোগ্যদের ছুঁড়ে ফেলে মোসাহেব ও অযোগ্যদের মাথাই তুলে নাচা হয়। সে কারণেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে গাফেলতি ও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে প্রায়শ ভুল হয় আমাদের।  
       
   
মুল ঘটনাতে আসা যাক
৬ ই জুন, ১৯৭১ সাল- ফেনী জেলার পরশুরাম থানার সীমান্তের কাছাকাছি চান্দগাজী বাজার ছিল ক্যাপ্টেন অলির অধীনে একটা মুক্তাঞ্চল। ত্রিপুরাস্থ ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং, তাঁর দলবল নিয়ে চান্দাগাজী বাজার মুক্তাঞ্চল পরিদর্শনে আসেন। ডজন খানেক বাংলাদেশী ও ইন্ডিয়ান সাংবাদিক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং এর পরিদর্শন টিমে। বাংলাদেশের ওয়ার জার্নালিস্ট আব্দুল বাসার যিনি “সাপ্তাহিক সমাজ” পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, তাঁর লিখিত বর্ননা থেকে এই লেখার তথ্য সমূহ থেকে সংগৃহীত।
   
শাবেদ শিং পরবর্তীতে মেজর জেনারেল হয়ে ইন্ডিয়ান আর্মি থেকে অবসর নেন ও অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দির অভিযানে ইডিয়ান সেনাদের ঝটিকা আক্রমণে নিহত হন। 
শাবেদ শিং ভারতীয় অফিসারদের গাড়ী বহর সহ নিরাপদ দূরত্বে পাহাড়ী পথ দিয়ে এগুতে থাকে। পথেই জিয়া শাবেদ শিং কে বললেন চান্দগাজী বাজারে তাদের খাঁটি বাংলাদেশী সারপ্রাইজ দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে। শাবেদ শিং ছিলেন অভিজ্ঞ ও পোড় খাওয়া যোদ্ধা, তাঁর অতীত বিভিন্ন যুদ্ধ অভিজ্ঞতা শুনতে শুনতে দলটি এক সময় চঁন্দ্রগাজী বাজারে পৌঁছে যায়।    
গোপনীয়তা সত্ত্বেও বাজারের মানুষ টের পেয়ে যায় বিদ্রহী অফিসার জিয়া সাথে করে ইন্ডিয়ান বিগ্রেডিয়ার নিয়ে এসেছেন। এবং বাজারের সবচেয়ে বড় মিষ্টির দোকানে ঢুকেছেন। ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং এর জন্য সারপ্রাইজের সেই বস্তু ছিল চন্দ্রগাজী বাজারের বিখ্যাত রসগোল্লা। ডাইবেটিকস রোগী ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং মিষ্টি সারপ্রাইজ দেখে রীতিমত হতাশ হয়ে গেলেন। জিয়া ও অতিথি ইন্ডিয়ান অন্য অফিসাররা ততক্ষনে বিপুল উৎসাহে মিষ্টির পাতিল থেকে মুখে মিষ্টি পুড়ে ভক্ষণ শুরু করেছেন। শাবেদ শিং অসহায় দৃষ্টিতে তাঁদের রসগোল্লা ভক্ষণ অবলোকন করে যাচ্ছেন।  
   
  
চঁন্দ্রগাজী বা চাঁদগাজী বাজারে জিয়া এসেছে, সাথে আছে ইন্ডিয়ান ব্রিগেডিয়ার ও একঝাক অফিসার। পাকিস্তানীদের কাছে কিছুক্ষনের মাঝেই এই খবর চলে গেল। সাথে সাথে বিশাল বহর নিয়ে পাক বাহিনী পশ্চিম দিক থেকে চান্দগাজির দিকে ধেয়ে আসতে লাগল। বিশাল লোভনীয় শিকার তাঁদের হাতের নাগালে। ভারতীয় ব্রিগেডিয়ারকে ধরতে পারলে সারা পৃথিবীকে দেখানো যাবে মুক্তিযুদ্ধ বলে কিছু নেই, সব ভারতীয় ষড়যন্ত্র। তারচেয়েও বড় ব্যাপার জেড ফোর্স কমান্ডার খোঁদ জিয়াউর রহমান সেখানে আছে। এই তো সেই গাদ্দার জিয়া যে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে গিয়ে সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছে। মার্চ, এপ্রিল মাসে যত পাকিস্তানি অফিসার সৈনিক নিহত হয়েছে তাঁর বেশির ভাগ মরেছে এই জিয়ার জেড ফোর্সের হাতে।   
  
জিয়ার চঁন্দ্রগাজীগাজী পৌছনোর সংবাদ যেমন পাকিস্তানীরা পেয়ে গিয়েছিল তেমনি পাকিস্তানীদের অগ্রসর হবার খবর পৌঁছে গেলো জিয়ার কাছে।  
   
সেই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের সংবাদ পেলে, মুক্তিকামী জনতা সেখানে আছড়ে পড়তো। মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে তাঁরা যুদ্ধের গল্প শুনতে চাইতো, আশা আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্নের কথা শুনতে চাইতো। বাড়ির মুরগী , খাসী জবাই করে মুক্তিদের খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা করতে পারলে ধন্য হত। তাঁরা বলতো “মুক্তি এসেছে”।  
   
তো জিয়ার আগমনের কথা, এক কান দু কান হতে হতে জনতার কানে পৌঁছে গেলো আবার পাকিরাও প্রায় এসে গেছে। ব্যাস মুহুর্তে সবাই উধাও। বিপদে পড়ে গেলো ভারতীয় অফিসাররা। যুদ্ধ দেখতে এসে সত্যিকারের মৃত্যুন্মুখ যুদ্ধের মুখে পড়তে হবে তাঁরা ভাবতেও পারেনি।  
  
জিয়া নির্বিকার ভঙ্গিতে আরো একটি মিষ্টির হাঁড়ি তুলে নিলেন। পাসে দাঁড়ানো দুই মুক্তিযোদ্ধাকে কিছু একটা বলে বিদায় দিয়ে, জিয়া হাঁড়ির ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিলেন আরো একটা মিষ্টি খাওয়ার জন্য।  
অভিজ্ঞ পাঞ্জাবী ব্রিগেডিয়ার তাঁর জীবনে বহু যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছেন কিন্তু এমন ভয়াবহ অবস্থায় কখনো পড়েনি। পাক বাহিনী ফায়ার ওপেন করেছে, মর্টারের আঘাতে গাছ গুলো ন্যাড়া হয়ে যাচ্ছে, রাইফেল মেশিন গানের গুলি নিরালস হুংকার দিচ্ছে। পিকনিক আমেজ মুহুর্তে উধাও, জান বাঁচানো ফরজ কাজ। ওদিকে জিয়া হাড়ি থেকে মিষ্টি সবার করে চলেছেন, আর অতিথিদের সমানে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে কোন অসুবিধা হবে না, আপনারা বসুন এবং এই প্রসিদ্ধ মিষ্টি খেতে থাকুন।  
শাবেদ শিং বিশাল বপুর মানুষ, তিনি ছোটখাট গড়নের বাংলাদেশী ৪০০ টাকার মেজরের আশ্বাসে আস্বস্ত হতে পারলেন না। Boys, follow me বলেই মিষ্টির দোকান থেকে লাফ দিয়ে বের হতে গিয়ে পাশের ডোবার মধ্যে পরে গেলেন শাবেদ শিং। বিশাল বপু শাবেদ শিং, বিশাল সাইজের পাইথনের মত ক্রলিং করে হাসফাস করতে করতে সীমান্তের দিকে বৃথা রওনা দিতে গিয়ে আবার থেকে গেলেন। অবশ্য ব্রিগেডিয়ারের ইয়াং অফিসাররা “Boys, follow me” হুকুম পালন করতে পারলেন না। “চাচা আপন প্রান বাচা” থিওরীতে শাবেদ শিং কে একা ফেলে তাঁরা বেশ কিছুটা পিছিয়ে সেফ জোনে ঢুকে গেছে।   
  
মিলিটারি অফিসারদের মত দৌড়/ক্রলিং এ অনভিজ্ঞ/অনভ্যস্ত সাংবাদিক এবং সিভিলিয়নদের তখন চোখের সামনে স্বাক্ষাত সাক্ষাৎ আজরাইল। তারপরো জীবন বাচানোর তাগিদে সামনের পানা পাহাড়ী নালায় পড়ে টুপ টাপ ডুব দিচ্ছেন আর উঠছেন। ফাঁকে ফাঁকে শাপান্ত করছেন জিয়া আর চান্দগাজীর মিষ্টির দোকানদারকে।  
অফিসারদের সকালের পাট ভাঙ্গা ইউনিফর্মগুলো কাদা পানি আর ধুলায় নাগা সান্ন্যাসীদের মত প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। কারো মাথাতে তখনো শ্যাওলা, কচুর পাতা ঝুলে রয়েছে। বিপুল বেগে তারা যখন সীমান্তের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে তখন ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং জনা দুয়েক সৈনিক আর সাক্ষাতে আসা জন দশেক জনতা নিয়ে পচা ডোবাতে হাবুডুবু খাচ্ছেন।   
   
কিছুক্ষণের ভেতর রাইফেল বন্দুকের ঝংকার থেমে গেলো। বাজারের পশ্চিম মাথা থেকে কাদা পানি মাখা কিছু বাংলাদেশী অস্ত্র হাতে দৌড়ে এসে যখন জিয়াকে কিছু একটা বলে গেলো তখন অতিথিরা নালা আর ডুবা থেকে একে একে উঠে আসতে শুরু করেছে। তাঁরা যখন এ যাত্রা জীবন বাঁচাতে পারার জন্য স্রস্টার কাছে শুকুর গুজার করছে, তখন জিয়া মিষ্টির হাঁড়ি শেষ করে গামছা দিয়ে হাত মুচ্ছেন।  
  
ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং যখন উঠে আসলেন তখন জিয়া নিজের চেয়ার ছেড়ে দিয়ে, শাবেদ শিংকে বসিয়ে আয়েস করে একটা সিগারেট জ্বালালেন, আর ব্রিগেডিয়ার সাহেব কে একটা সিগারেট এগিয়ে দিতে দিতে বললেনঃ
“ওদের রওনা দেবার খবর পাবার আগেই নিরাপত্যার কথা ভেবে বাজারের কাছে এ্যম্বুস পেতে রেখেছিলাম আমরা, তাঁরা এই ফাঁক দিয়ে আসতে পারে এমন একটা ধারণা আমরা করেছিলাম”
পাকিস্তানীরা আসার খবর শোনা মাত্র এ্যামবুশকারীদের সাবধান করে জিয়া ওই দুই সহযোদ্ধাকে নির্দেশ দিয়ে এ্যটাকের প্রস্ততি নিতে বলেন। পাকিস্তানী বাহিনী এ্যামবুশের মাঝে আসা মাত্র দুই ধারে সাব-মেশিন গানের গুলি শুরু করে ক্যাপ্টেন অলির বাহিনী। খুব অল্প পাকিস্তানী সেনা সেদিন ফেরত যেতে পারে। জিয়া তখন হাসতে হাসতে সবাইকে বলেনঃ
  
“এবার যান, সবাই গিয়ে লাশ গুলো আর পাকিস্তানীদের ফেলে যাওয়া গাড়ি গুলো দেখুন।” 
  
ব্রিগেডিয়ার শাবেদ শিং এরপর “সাপ্তাহিক সমাজ” পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিক বাশারকে ইটারভিউ দিতে গিয়ে ইংরেজীতে বলেনঃ
“ডিয়ার সাংবাদিক, যুদ্ধে তোমরা অবশ্যই বিজয়ী হবে। যে জাতির হাতে মেজর জিয়ার মত একজন কমব্যাটেন্ট থাকে তাদের দমিয়ে রাখা যায় না। আমি নিজে অনেক যুদ্ধ করেছি, অনেক যুদ্ধের কৌশল নিয়ে পড়েছি, কিন্তু জিয়ার মত ঠান্ডা মাথার কমব্যাটেন্ট কোথাও দেখি নি”  
  
এ্যাডভেঞ্চার শেষে ভারতীয় বাহিনীকে ত্রিপুরা ফেরত নিয়ে যাবার সময় সাংবাদিক বাশার এক পর্যায়ে জিয়ার পাশে এসে বলেনঃ 
“স্যার আজকের ঘটনার ওপর কিন্তু কাভার ষ্টোরী হবে। কালো সানগ্লাসে ঢাকা চোখের স্বভাব সুলভ মুচকি হাসিতে, জিয়া প্রচ্ছন্ন সাঁয় দিয়ে বলেনঃ
“ওয়েল ইউ হ্যাভ আ ষ্টোরী। নো ডাউট। বাট প্লীজ ডোন্ট মেনশান আওয়ার নেইম। ওটা আমাদের সামরিক নিয়মের বাইরে।”  Well, you’ve a story, no doubt. But please don’t mention our name. That’s our of military rules.
*রেফারেন্সঃ *মৃত্যুঞ্জয়ী জিয়া – -
*সাপ্তাহিক সমাজ
* ৭১ এ নিহত পাকি সৈনিকদের তালিকা ও সময় দেখতে শর্ট লিঙ্ক-
মহান মুক্তি যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তান বাহিনীর নিহত সৈনিক অফিসারদের লিস্ট
0 notes
gnews71 · 6 years
Photo
Tumblr media
সাতকানিয়ার নদীভাঙ্গন থেকে বাচঁতে বুকভরা কষ্ট আর শত আশা নিয়ে লিখেছেন -ইমরান খান নিজের ফেইসবুক ওয়ালে নিজ এলাকার নদীভাঙ্গনের দৃশ্যের ছবি দিয়ে কতৃপক্ষের নজর কাড়তে শত আশা ব্যক্ত করেছেন এক ফেইসবুক ব্যবহারকারী তার বাড়ি হলো সাতকানিয়ায় আর যে স্থানটি নিয়ে লিখেছেন এলাকাটি হলো সাতকানিয়া উপজেলার উপর বয়ে যাওয়া ডলু নদীর ভাঙ্গণ এই ভাঙ্গনে দূর্বিহ হয়ে পড়ে উপজেলার,আমিলাইষ,পশ্চিম গাটিয়াডেঙ্গা,এওচিয়া,ও অন্যান্য ইউনিয়নের হাজার হাজার জনগনরা।লিখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো... সরকারের ৩৭৩ কোটি টাকা হাওয়া! সাতকানিয়ায় পাবলিক অর্থায়নে রাস্তার সংষ্কার কাজ।ইমরান খান। একটি রাক্ষুসী নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠা পশ্চিম গাটিয়াডেঙ্গা ও আমিলাইষ নামক জনপদের অধিবাসী আমরা। আমাদের রাক্ষুসী নদীটির নাম ডলু নদী।বন্যা আসে বন্যা যায়, তবুও ডলু নদীর পাড় ভাঙ্গনের প্রতিরোধের পদক্ষেপ কেউ নেয় না। সরকার অাজ ৪ বছর শেষ করছে ক্ষমতার। তারপরও নিজ গ্রামে পরবাসি ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারেনি এ জনপদের সাধারন মানুষেরা।নিজেদেরকে রোহিঙ্গা থেকে ও অসহায় বলে দাবী করে সাতকানিয়ার মানুষ। পুরো সাতকানিয়ায় ১৭ টি ইউনিয়ন, অথছ সংসদ সদস্যা নিজেও জানেনা পশ্চিম গাটিয়াডেঙ্গা নামক গ্রামটি উত্তর, দক্ষিন, পূর্ব, পশ্চিম কোথায় অবস্হিত? এর চেয়ে বড় লজ্জার আর কিছু নাই।আসলে ক্ষুধার্ত মানুষের পেটের জ্বালা বা যন্ত্রণা একমাত্র ক্ষুধার্তরাই অনুধাবন করতে পারে। এসি বাড়ি আর এসি গাড়িতে চড়ে সাধারন জনতার কষ্ট কখনো বোঝা যায় না। হয়তো এ কারণেই আমাদের সংসদ সদস্যদের অভুক্ত মানুষের পাশে দেখা যায় না। কারণ তারা বুঝতেই পারে না পেটে খাবার না থাকলে কেমন লাগে।তাই হয়তো এ পাড়ের কান্না কেউ শুনতে পাইনা। বর্তমান সরকারের মাননীয় এমপি আবু রেজা নদভী প্রেস ব্রিফিংয়ে সাতকানিয়া- লোহাগাড়ার নদী, নালা সরষ্করন কল্পে ৫৭৭ কোটি টাকার প্রজেক্টে ৩৭৩ কোটি টাকা অনুমোদন গ্রহনের প্রাপ্তি যখন স্বীকার করেছিলেন তখন লক্ষ জনতা আশায় বুক বেঁধেছিল এভার হয়তো ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন হবে। তবে না, এটা শুধু এই জনগোষ্টির কল্পনাতেই থেকে গেল। ৩৭৩ কোটি টাকা গেল কই জনগনের প্রশ্ন থেকে যায়! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি শেষ পর্যন্ত নিজেদের বাপ দাদার ভিটা বাড়ী রক্ষা করতে অত্র এলাকার জনগন নিজ অর্থায়নে একটি বিরাট সাফল্য অর্জন করতে যাচ্ছে। সাধারন জনতা তাই নিজ উদ্দ্যেগে শ্রম ,যাদের টাকা নাই তারা ধার দেনা, নিম্নবিত্তরা বাড়ীর অাঙিনার ২০ হাজার টাকার গাছ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে টাকার যোগান দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীর পশ্চিম পাড়ের কিছু চিহ্নিত এলাকা যেমন নেয়ামত আলী পাড়া বা (মারমের কুম), আব্দুল মেহেদীর পাড়া থেকে জইল্যা বলীর স্কুল, সোলেমান চকিদারের বাড়ী( গরু হাইয়্যার ভাঙ্গা)থেকে রইশ্যা বলীর বাড়ী,অর্থাৎ পূর্ব গাটিয়াডেঙ্গা ব্রীজ পর্যন্ত এসব এলাকা গুলোর মানুষদের চোখে ঝড় বৃষ্টি মানে হাহাকার আর হাহাকার।নেয়ামত আলী পাড়া আর আব্দুল মেহেদীর পাড়ার মানুষ নিজের অর্থায়নে অনেক চৌকাঠ পেরুলেও এবার বৃষ্টির কবলে মেহেদীর পাড়া জামে ম���জিদ সহ আশেপাশের নিরীহ অসহায় মানুষ গুলোর বাপ দাদার ভিটা বাড়ী রক্ষা করা দূরহ হয়ে পড়েছে।এ ব্যাপারে সংসদ নেতার দৃষ্টিগোচর করে আশার বানী পেলেও ক্ষমতার ৪ বছর ফেরিয়ে গেলেও কোন রকম সহায়তা দেননি। এই নিয়ে কয়েকটি গন মাধ্যম নিউজ করলেও পরবর্তিতে কৌশলে তা অবরুদ্ধই থেকে গেল। ব্রিটিশ শাসনকালে কবি মুকুন্দ দেব তিন বছর জেল খাটলেন এক কবিতা লিখে। কিন্তু জেলে বসেই তিনি অনেক বেশি লেখালেখি করেছেন। একই অবস্থান ছিল কবি নজরুলের। শরৎচন্দ্রের উপন্যাস ‘পথের দাবী’ নিষিদ্ধ হলেও লেখক থামেননি। আমি মনে করি, বর্তমানে বেশির ভাগ মিডিয়াই সরকারের পক্ষে। বিপক্ষে মিডিয়ার সংখ্যা কম। ব্যক্তি বিশেষের ভুল তুলে ধরা মানে সরকারের বিরোধিতা নয়। সরকারের সাফল্যগুলোও মিডিয়ায় উঠে আসছে। আগে উন্নয়ন জার্নালিজম এত শক্তিশালী ছিল না আমাদের দেশে। এখন উন্নয়ন জার্নালিজম অনেক বেশি হয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়। মানুষ এখন শুধু ব্যর্থতা নয়, সাফল্যের খবরও বেশি শুনতে চায়। আমরা ভালো খবরগুলো প্রকাশ করলে মানুষ ইতিবাচকভাবে তা গ্রহণ করে। তাই ভালো খবরগুলো প্রকাশের পাশাপাশি এমপি সাহেবদের সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী কাণ্ডকীর্তিও তুলে ধরতে হবে। তাহলে সাধারণ মানুষ নিরাপদ থাকবে। সমাজে অনাচার কমে যাবে। বৈষম্য দূর হবে। বিনা ভোটে নির্বাচিত অনেক এমপি এখন নিজেদের এলাকায় জমিদারতন্ত্র কায়েম করেছে।বাঙ্গালী জাতীর স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডটির জন্ম দিয়েছিলেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এই সময়েই সবচেয়ে এগিয়েছে আমাদের লাল সবুজের প্রিয় মাতৃভূমি। এই সময়ে উন্নয়নের যে বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়িত হয়েছে এবং এখনও চলমান রয়েছে তা এক লিখায় শেষ করা সম্ভব নয়, সেটা এখানে লিখাও আমার উদ্দেশ্য নয়। কারন আমার দোয়ারে অন্ধকারের ঘনঘটা। দেশের চারিদিকের এতো উন্নয়নের পরেও মাঝে মাঝেই তাল কেটে যায়, বেসুরো লাগে কিছু ব্যাপার। কেন এমন হচ্ছে সাতকানিয়া বাসীর প্রতি? দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন জরিপে প্রায়শই একটা তথ্য উঠে আসে যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু সেই অনুপাতে বাড়ছে না বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের জনপ্রিয়তা। অর্থাৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন দল কিংবা সরকার সেই গতির সাথে তাল মিলিয়ে এগুতে পারছে না। যার হাত ধরে দেশে একের পর এক উন্নয়নের মহাকাব্য রচিত হচ্ছে। কিন্তু এটা ভেবে সন্তুষ্টির ঢেঁকুর তোলার খুব বেশি সুযোগ নেই। কারণ উনার দেখানো পথে এবং উনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য বাকিদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় উন্নয়নের সুফল দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে না সকল এমপির মনে রাখা উচিৎ পদ চিরস্থায়ী নয়, কিন্তু মানুষের ভালবাসা চিরস্থায়ী। একজন এমপির কাছে মানুষের চাওয়া কিন্তু খুব বেশি না। মূল চাওয়াটাই হলো যেকোন সমস্যা, সুবিধা, অসুবিধা নিজ এলাকার এমপির কাছে জানাতে পারার সুযোগ পাওয়া। এক কথায় বলা চলে ‘ইজি একসেস’। দুঃখজনক হলেও সত্যি এই জায়গায় ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। অধিকাংশ সংসদ সদস্যগণ নিজ নির্বাচনী এলাকায় না থেকে শহুরে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। দেশে হাজারো কোটিপতি আছেন, সম্পদশালী মানুষ আছেন। অর্থবিত্তের জন্য তাদের নাম ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে না। অথচ একবার এমপি হওয়া মানে দেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে যাওয়া। এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিইবা হতে পারে? এই প্রাপ্তিলাভের পরেও যারা এটাকে কাজে লাগাতে পারে না তাঁদের চেয়ে দুর্ভাগা আর কেউ হতে পারে না। অতএব, মাননীয় এমপিগণ একবার ভাবুন, আপনি কি চান? বৈষয়িক প্রাপ্তি নাকি ইতিহাসের অংশ হওয়া। আপনি যেমন চাইবেন তেমনটাই পাবেন, এমন সুযোগ কতজনই বা পায়? একজন এমপি এলাকার জনগণের প্রতিনিধি বৈ অন্যকিছু নয়। এই বোধটা মাননীয় এমপিগণ নানানক্ষেত্রেই ভুলে যান। যে ট্যাক্স ফ্রি গাড়িটা আপনি চালান তার তেলের টাকা আসে এদেশের সাধারন মানুষের ট্যাক্সের টাকা থেকে। আপনি মানুষের কাছে দায়বদ্ধ, মানুষজন আপনার কাছে না। আপনি এমপি থাকাকালে বিশাল গাড়ি বহর নিয়ে এলাকায় শো ডাউন করতে পারেন, কিন্তু মনে রাখবেন এটা আপনার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করবে না। আপনার সদস্যপদ না থাকলে এই গাড়িবহরও থাকবে না। অথচ আপনি নিজ এলাকায় পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ান, মানুষের কাতারে দাঁড়িয়ে তাদের সুখ দুঃখের সমব্যাথী হোন, সকল সমস্যা সমাধান করতে না পারুন অন্তত তাদের সমস্যা শোনেন, দেখবেন আপনার পিছনে মিছিলের স্রোত হবে। ভালোবাসায় উজাড় করে এর প্রতিদান দিবে আপনার এলাকার মানুষ। আপনার দুয়ার খুলে দিন সাধারণ মানুষদের জন্য। নিশ্চিত থাকেন সবাই ভাত কাপড়ে জন্য আপনার কাছে আসবে না। আপনি তাদের নেতা, আপনি হাসিমুখে দুটো কথা বললেই হাজারো মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন।এতোকিছুর পরও যদি আপনারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অর্জনকে ধরে রাখ���ে না পারেন তাহলে ইতিহাসের পাতায় আপনারা ঘৃণিত হিসেবে স্বীকৃত হবেন। মনে রাখবেন আওয়ামী লীগ জিতলে হয়তো আওয়ামী লীগ একা জিতে কিন্তু হারলে পুরো বাংলাদেশ হারে। আপনাদের দোহাই লাগে, আমাদের আর হারতে দিয়েন না। অনেক হারের ক্ষত নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই ক্লান্ত, বাংলাদেশও ক্লান্ত। তাই সকল এমপি, মন্ত্রী মিলে জনতার জন্য কাজ করুন। জনতার হৃদয়ে বেঁচে থাকুন। দেশের জন্য কাজ করুন।
0 notes
gnews71 · 6 years
Photo
Tumblr media
এরদোগানের কষ্টে ভরা জীবন, ছোটবেলায় আমি তিলের খাজা বিক্রি…. পৃথিবীর অনেক দেশের রাষ্ট্রনেতারা বই লিখেছেন। সেসব বই বহুলপঠিত, আলোচিত এমনকি সমালোচিতও হয়েছে। তুরস্কের বর্তমান নেতা রজব তাইয়েব এরদোগান বই লিখেননি, তবে এক নাতিদীর্ঘ সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার বইভাবনা। তুর্কি পত্রিকা থেকে ভাষান্তর করেছেন হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী। আপনার ছোটবেলার প্রিয় উপন্যাস বা কবিতাটির কথা শুনতে চাই। বলুন, কবে আপনি ওটা প্রথম পড়েছিলেন এবং কিভাবে তা আপনাকে প্রভাবিত করে। এরদোগান : আমি নিশ্চিত, প্রতিটি শিশুই সাহিত্যের সাথে পরিচিত হয় ঘুমপাড়ানি গান ও রূপকথার মাধ্যমে। আমার মা (আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন) আমাদের বড় করে তুলেছেন অ্যানাতোলিয়া ও কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে শুনিয়ে। আমার মরহুম পিতার কাছে শুনেছি অ্যানাতোলিয়ার অসংখ্য সুন্দর গল্প ও রূপকথা। মনে আছে, ছোটবেলায় আমি তিলের খাজা বিক্রি করতাম। বিক্রিশেষে যা আয় হতো তা নিয়ে ছুটে যেতাম বাইয়ের দোকানে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, আমার প্রজন্মে বেড়ে ওঠার সময়টি ছিল অস্থির। নানা জটিল বিতর্ক ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় পরিপূর্ণ। ওই সময়টায় নানা রকম প্রতীক, স্লোগান ও বিক্ষোভের প্রবল প্রতাপে ভাবধারা (আইডিয়া) হারিয়ে যেতে বসেছিল। কবর রচিত হয়েছিল বুদ্ধিমত্তার। ভিন্নমত সহ্য করার প্রবণতা তরুণদের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। বই, সাময়িকী, সংবাদপত্র, কবিতা, উপন্যাস, গল্প এবং লেখকেরাও মূল্যায়িত হতেন তার রচনাটি কী উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে এবং এর গূঢ়ার্থ দিয়ে। তরুণেরা বই পড়ত, তবে কিছু জানার জন্য নয়, বরং নিজের ভাবধারার পক্ষে যুক্তি খোঁজার জন্য। ওই অন্ধকার যুগে তরুণদের দৃশ্যপটের বাইরেই রাখা হতো। এমন দিনে আমি এবং আমরা বন্ধুরা নিজেদেরকে ওই গুমোট পরিবেশের বাইরে রাখতে সচেষ্ট হলাম। সমবয়সী অন্যদের মতো আমরা নিজেদের চোখ-কান বন্ধ রাখতে চাইলাম না, ক্ষুদ্র আদর্শিক বৃত্তে বন্দী থাকতে চাইলাম না এবং চাইলাম না এমন লোকদের মতো হতে, যারা নতুন যেকোনো ধারণাকেই হুমকি মনে করে। আমরা জানতাম, দৃঢ় ভিত্তি ও স্থির নীতি ছাড়া কোনো আন্দোলনই সফল হতে পারে না। আমাদের খুব জানা ছিল, ব্যাপক পড়াশোনা থাকলেই কেবল ভাববিনিময় ও বিতর্ক ফলপ্রসূ হতে পারে। তাই আমরা পড়াশোনার কষ্টকর পথটি বেছে বিলাম; ব্যাপক পড়াশোনা। আমাদের সর্বোচ্চ সাধ্যমতো আমরা সেসব লেখকের বই পড়তে থাকলাম, তুর্কি ও বিশ্বসাহিত্যকে যারা পথনির্দেশ দিয়েছেন। এখানে আমি আরো একটা কথা জানিয়ে রাখতে চাই, তা হলো : আমাদের সময়টি ছিল এমন একটি সময়, যখন কোনো বই হাতে পাওয়াটা ছিল খুবই কঠিন। এখনকার মতো তখন এত বই, এত পাঠাগার ছিল না। এখন যেমন অনেক পরিবার বই কেনার জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ (বাজেট) রাখে, তখন এটা ছিল না। এখন যেমন কাউকে বাসে, পার্কে বা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসে স্বাধীনভাবে বই পড়তে দেখা যায়, এমনটা তখন ভাবাই যেত না। এমন অবস্থায়ও যখন আমরা কোনো বই হাতে পেতাম, সে বই এহাত-ওহাত ঘুরে কয়েক ডজন তরুণের পড়া হয়ে যেত। তখন ইন্টারনেট ছিল না, ফটোকপি মেশিনও নয়, তা সত্ত্বেও যেকোনো মহৎ সাহিত্যকর্ম কিংবা সুন্দর একটি কবিতা হাত থেকে হাতে একেবারে অ্যানাতোলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে যেত। এই প্রজন্মের ছেলেমেয়ের কাছে বিষয়টি অদ্ভুত মনে হতে পারে। কারণ তাদের হাতের নাগালে স্কুল, টেবিল ভরতি বই। কিন্তু আমাদের তো এসব ছিল না। আমরা এমন একটি প্রজন্ম, যাদের কাছে বই ছিল দুষ্প্রাপ্য ও দুর্মূল্য। কাজেই আমাদের জন্য এটাই স্বাভাবিক যে, আমাদের সন্তানদের হাতে যত সহজে সম্ভব বই তুলে দেয়ার জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা করে যাবো। ছোটবেলায় আমি যেসব গল্প ও কবিতা পড়েছি, তার থেকে একটিকে ‘প্রিয়’ হিসেবে বাছাই করতে বললে আমি কিন্তু পারব না। তারপরও বরেণ্য চিন্তাবিদ নেসিপ ফাজিল কিসাকুরেক এবং তার ‘সাকারিয়া’ কবিতাকে আমি শীর্ষে রাখব। এই মানুষটি এবং তার রচনা আমাদেরকে ইতিহাস ও বর্তমান সম্বন্ধে সচেতনতার বোধ দিয়েছে। যদি আপনাকে বলা হয় তুরস্কের স্কুল পাঠ্যক্রমে নতুন একটি বই যোগ করতে, কোন বইটি বেছে নেবেন এবং কোন বয়সের শিক্ষার্থীদের জন্য? এরদোগান : কোনো রকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই আমি মেহমেত আকিফ এরোজির ‘সাফাহতে’ বইটির কথা বলব। এবং চাইব, সব বয়সের মানুষ বইটি পড়–ক এবং বইটির সাথে পরিচিত হোক। কারণ এটি একটি মহৎ সাহিত্য বা কাব্যই শুধু নয়, বরং এটি এমন একটি রচনা, যা আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসের ওপর আলো ফেলেছে। এটি একটি দর্শনের বই, যে দর্শনের ভিত্তিতে একটি জাতি ও একটি সভ্যতা নির্মিত হয়েছে। এটি একটি ভাবধারার বই, যে ভাবধারা আমাদের আমাদের অতীত চেতনার সাথে ভবিষ্যৎকে মিলিয়ে দিয়েছে। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত যেমন এই জাতির পরিচয় জ্ঞাপকরূপে কাজ করে এবং যে ভিত্তির ওপর তা নির্মিত, ‘সাফাহাত’ বইটিও তেমন। এতে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের চেতনাই অনুরণিত হয়। যারা বইটি প্রথম পড়বেন, তাদের কাছে এর শব্দ ও স্তবকগুলো বুঝতে পারা কঠিন হতে পারে। কিন্তু আমার বিশ্বাস, তরুণ বয়সে এরকম একটি সাহিত্যকর্মের সাথে পরিচিত হলে, এর পৃষ্ঠায় নিমজ্জিত হলে তা আমাদের তরুণদের শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করবে। যে সমাজের শব্দভাণ্ডার যত ব্যাপক, সেই সমাজের সৃজনশীলতাও তত বেশি। সবচেয়ে বড় কথা, আমি বিশ্বাস করি, ‘সাফাহাত’ বইয়ের শব্দ ও স্তবকগুলো ইতিহাসের সাথে আমাদের বন্ধনকে দৃঢ় করবে এবং ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টায় আরো ত্যাগের মনোভাব জাগ্রত করবে। আমাদের দেশে (কিংবা বিশ্বে) পরিবর্তন এনেছে, এমন কোনো বইয়ের নাম বলতে বললে আপনি কোনো বই বা লেখকের নাম বলবেন এবং কেন? এরদোগান : আমার মনে হয় আপনি নিজেও বোঝেন যে, একটি বা দু’টি নাম বলে এলে এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া প্রায় অসম্ভব। নিঃসন্দেহে পবিত্র কুরআন থেকে শুরু করে সব ধর্মগ্রন্থের চিরায়ত গুরুত্ব রয়েছে। এর বাইরে প্রত্যেক জাতির নিজস্ব অতিগুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান সাহিত্যকর্ম রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাওলানা রুমী ও ইউনূস এমরের কথা বলব। তারা আমাদের এখানে, অ্যানাতোলিয়ায় বসে লিখেছেন। কিন্তু তাদের সৃষ্টি সব সীমান্ত অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। ভেঙেছে সময়ের বেড়া। তারা আপন লোকালয়ে আবদ্ধ থাকেননি, বরং আলিঙ্গন করেছেন সমগ্র বিশ্বকে। ভাবতে অবাক লাগে, তাদের রচনা, তাদের কবিতা রচিত হয়েছে কয়েক শ’ বছর আগে। অথচ তা এখনো মানবতার পথপ্রদর্শক। আমাদের সমৃদ্ধ সাহিত্যিক ইতিহাস নিয়ে আমার সত্যিই গর্ব হয়। অবশ্য গর্বভরে উল্লেখ করার মতো আরো অনেক মহৎ সাহিত্যিক আমাদের দেশে আছেন। ইউসুফ হাস হাচিপ, আহমেত ইয়েসেবি, ফুজুলি, নেদিম, হাবি বেকতাস, কেমাল তাহির, ইয়াহিয়া কেমার, কেমিল মেরিক, ও গুজ আতাই, নুরেত্তিন তপকু, ওরহান পামুক এবং এ রকম আরো অনেকে মহৎ সাহিত্য রচনা করেছেন। প্রতিটি লেখক, তাদের সাহিত্যকর্ম, এমনকি প্রতিটি স্তবক বা বাক্য, তা ছোট হোক বা বড়, মানুষকে প্রভাবিত করে। বলা হয়ে থাকে, ‘মুখের কথা উড়ে যায়, লেখা কথা থেকে যায়। লিখিত সবকিছুই কোনো না কোনোভাবে পাঠকের ব্যক্তিগত জীবনের একটি দিকের সাথে সম্পর্কিত হয়ে যায়। এবং তা-ই এনে দেয় পরিবর্তন। উচ্চাকাক্সক্ষী রাজনীতিকদের পড়া প্রয়োজন এমন কোনো সাহিত্যকর্মের কথা কি আপনার জানা আছে? এরদোগান : মাওলানা রুমী ও ইউনূস এমরের রচনা পাঠ করে আমি নিজে বিপুলভাবে উপকৃত হয়েছি। এই দুই মহান ব্যক্তির রচনাকে আমি আমার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনে অনুপ্রেরণার উৎস জেনেছি। তাদের রচনাকর্মকে রাজনীতিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছেন, তারা জাতির আত্মার সাথে কথা বলেছেন, বলেছেন জাতির মুখের ভাষায়। যদি আপনার লক্ষ্য হয়ে থাকে মানুষের সেবা করা, তবে তাদের মুখের ভাষাটি আপনার জানা থাকতে হবে। মাওলানা রুমী, ইউনূস এমরে, হাচি বেকতাস বেলি ও হাচি বৈরাম বেলির মতো মহৎ লোকদের হাতে এই ভাষাটি পরিশুদ্ধ ও সমৃদ্ধ হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ইউনূস এসয়ের মতো পরিশুদ্ধ ভাষায় যে রাজনীতিক কথা বলতে পারবেন, তিনি দেশকে অনেক কিছুই দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আমি আরো দু-একটি নাম বলতে চাই, যাদের প্রশংসা এর আগেও অন্যত্র করেছি। তারা হলেন ফালিহ রিফাকি আতাই ও ফারহেত্তিন পাসা। মেদিনে প্রতিরক্ষা নিয়ে তাদের রচনা, আমি মনে করি, পড়া শুধু রাজনীতিকেরই পড়া উচিত তা নয়, বরং সব বয়সের মানুষেরই পড়া কর্তব্য। এগুলো পড়া এবং পড়ানো এ জন্যই প্রয়োজন যে, তাহলে আমরা উপলব্ধি করতে পারব যে, আমরা বর্তমান ��বস্থায় কিভাবে এলাম। আপনি কি এমন কোনো সাহিত্যকর্মের কথা জানেন, যা মানবজাতির কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণ করেছে বেশি? এরদোগান : আপনি তো জানেন, সাহিত্যের তুর্কি শব্দ হচ্ছে ‘এদেবিয়াত’, যা এসেছে ‘এদেব’ থেকে। এর অর্থ সমাজের শৃঙ্খলা ও পদ্ধতি অনুধাবন এবং সে অনুযায়ী কাজ করা (সদাচার)। আমাদের সাহিত্যের ইতিহাসে দেখা যায়, সাহিত্য ও আদবকেতা প্রায়ই হাত ধরাধরি করে অথবা সমান্তরালে পথ চলেছে। আমি বিশ্বাস করতে পারি না, যা জন্মগতভাবে বিনম্র, তা থেকে ক্ষতিকর কিছু আসতে পারে। ‘এদের’ বা শৃঙ্খলা হচ্ছে আঠার মতো, যা বইয়ের পৃষ্ঠাগুলোকে একসাথে আটকে রাখে। এই বাঁধনটা টুটে গেলে বইটা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। যতক্ষণ তা না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সব বইই উপকারী। বইয়ের ওপর সেন্সরশিপের ব্যাপারে আপনার কি মত? এরদোগান : সেন্সরশিপ একটা অগ্রহণযোগ্য পন্থা; শুধু সাহিত্যের বেলায় নয়, শিল্পের সব শাখায়, গণমাধ্যমে, রাজনীতিতে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও। বাকস্বাধীনতা আমাদের অধিকার। যতক্ষণ না এই অধিকার অন্যের অধিকার খর্ব করছে, তকক্ষণ এই স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষা করতে আমরা কৃতসংকল্প। একটু আগেই আমি বলছিলাম আমাদের যৌবনকালে কত রকম বিঘœ আমাদের মোকাবেলা করতে হয়েছে। নানারকম নিষেধাজ্ঞা ও সীমাবদ্ধতা আমাদের দেশকে, আমাদের তরুণবেলাকে, আমাদের চিন্তাধারাকে, আমাদের সাহিত্যকে এবং আমাদের মিডিয়াকে পঙ্গু করে রেখেছিল। শুধু আমাদের যৌবনেই নয়, আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসেও এসব চাপের মুখে পড়তে হয়েছে। আমি একজন রাজনীতিক। একটি কবিতা পড়ার ‘অপরাধে’ আমাকে জেল খাটতে হয়েছে। অথচ কবিতাটি সরকারি স্কুলের বইতে পাঠ্য ছিল। এখন আমি দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে প্রেসিডেন্ট। বাকস্বাধীনতার অর্থ ও প্রয়োজন আমি খুব ভালোভাবে বুঝি। কবি এ টি আয়হানের পঙক্তি আমি বহুবার বহু স্থানে বলেছি : ‘আমরা হয়েছি বড় নিষেধের বেড়াজাল ভেঙে-ভেঙে।’ এ কারণেই আমরা আমাদের তরুণদের এবং নতুন প্রজন্মের ওপর বিধিনিষেধ ও সেন্সরশিপের বেড়াজাল আরোপ করতে চাই না। আমরা সহিষ্ণু হতে চাই। আপনার সর্বশেষ পঠিত ও ভালো লাগা বই কোনটি? এরদোগান : কাজের বিপুল বোঝা মাথার ওপর, তার মধ্যেও আমার সর্বাত্মক চেষ্টা থাকে যেন আমি বইয়ের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন না হই। কাজের চাপে সবকিছু পড়া যদিও সম্ভব না হয়, তবুও আমি নতুন লেখালেখি সম্বন্ধে ধারণা পেতে এবং সেগুলো পড়তে সব রকম চেষ্টা চালাই। আপনি কি লিখেন? না-লিখেন যদি, তবে কি আশা পোষণ করেন যে, একটি বই বা কবিতা অন্তত লিখবেন! এরদোগান : আপনি তো জানেনই, ডায়রিতে আপন অভিজ্ঞতা লিখে রাখাকেও এক ধরনের সাহিত্যিক স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই অর্থে বলতে পারি, হ্যাঁ, আমি লিখি। যখনই একটুখানি সময় পাই, ডায়রিতে আমি নোট নিই এবং কোনো ঘটনা লিখে রাখি। হয়তো ভবিষ্যতে এটাকে স্মৃতিকথায় রূপ দেবো।
0 notes
gnews71 · 6 years
Photo
Tumblr media
ছোটবেলায় আমি তিলের খাজা বিক্রি করতাম: এরদোগানের কষ্টে ভরা জীবন… পৃথিবীর অনেক দেশের রাষ্ট্রনেতারা বই লিখেছেন। সেসব বই বহুলপঠিত, আলোচিত এমনকি সমালোচিতও হয়েছে। তুরস্কের বর্তমান নেতা রজব তাইয়েব এরদোগান বই লিখেননি, তবে এক নাতিদীর্ঘ সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার বইভাবনা। তুর্কি পত্রিকা থেকে ভাষান্তর করেছেন হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী। আপনার ছোটবেলার প্রিয় উপন্যাস বা কবিতাটির কথা শুনতে চাই। বলুন, কবে আপনি ওটা প্রথম পড়েছিলেন এবং কিভাবে তা আপনাকে প্রভাবিত করে। এরদোগান : আমি নিশ্চিত, প্রতিটি শিশুই সাহিত্যের সাথে পরিচিত হয় ঘুমপাড়ানি গান ও রূপকথার মাধ্যমে। আমার মা (আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন) আমাদের বড় করে তুলেছেন অ্যানাতোলিয়া ও কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে শুনিয়ে। আমার মরহুম পিতার কাছে শুনেছি অ্যানাতোলিয়ার অসংখ্য সুন্দর গল্প ও রূপকথা। মনে আছে, ছোটবেলায় আমি তিলের খাজা বিক্রি করতাম। বিক্রিশেষে যা আয় হতো তা নিয়ে ছুটে যেতাম বাইয়ের দোকানে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, আমার প্রজন্মে বেড়ে ওঠার সময়টি ছিল অস্থির। নানা জটিল বিতর্ক ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় পরিপূর্ণ। ওই সময়টায় নানা রকম প্রতীক, স্লোগান ও বিক্ষোভের প্রবল প্রতাপে ভাবধারা (আইডিয়া) হারিয়ে যেতে বসেছিল। কবর রচিত হয়েছিল বুদ্ধিমত্তার। ভিন্নমত সহ্য করার প্রবণতা তরুণদের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। বই, সাময়িকী, সংবাদপত্র, কবিতা, উপন্যাস, গল্প এবং লেখকেরাও মূল্যায়িত হতেন তার রচনাটি কী উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে এবং এর গূঢ়ার্থ দিয়ে। তরুণেরা বই পড়ত, তবে কিছু জানার জন্য নয়, বরং নিজের ভাবধারার পক্ষে যুক্তি খোঁজার জন্য। ওই অন্ধকার যুগে তরুণদের দৃশ্যপটের বাইরেই রাখা হতো। এমন দিনে আমি এবং আমরা বন্ধুরা নিজেদেরকে ওই গুমোট পরিবেশের বাইরে রাখতে সচেষ্ট হলাম। সমবয়সী অন্যদের মতো আমরা নিজেদের চোখ-কান বন্ধ রাখতে চাইলাম না, ক্ষুদ্র আদর্শিক বৃত্তে বন্দী থাকতে চাইলাম না এবং চাইলাম না এমন লোকদের মতো হতে, যারা নতুন যেকোনো ধারণাকেই হুমকি মনে করে। আমরা জানতাম, দৃঢ় ভিত্তি ও স্থির নীতি ছাড়া কোনো আন্দোলনই সফল হতে পারে না। আমাদের খুব জানা ছিল, ব্যাপক পড়াশোনা থাকলেই কেবল ভাববিনিময় ও বিতর্ক ফলপ্রসূ হতে পারে। তাই আমরা পড়াশোনার কষ্টকর পথটি বেছে বিলাম; ব্যাপক পড়াশোনা। আমাদের সর্বোচ্চ সাধ্যমতো আমরা সেসব লেখকের বই পড়তে থাকলাম, তুর্কি ও বিশ্বসাহিত্যকে যারা পথনির্দেশ দিয়েছেন। এখানে আমি আরো একটা কথা জানিয়ে রাখতে চাই, তা হলো : আমাদের সময়টি ছিল এমন একটি সময়, যখন কোনো বই হাতে পাওয়াটা ছিল খুবই কঠিন। এখনকার মতো তখন এত বই, এত পাঠাগার ছিল না। এখন যেমন অনেক পরিবার বই কেনার জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ (বাজেট) রাখে, তখন এটা ছিল না। এখন যেমন কাউকে বাসে, পার্কে বা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসে স্বাধীনভাবে বই পড়তে দেখা যায়, এমনটা তখন ভাবাই যেত না। এমন অবস্থায়ও যখন আমরা কোনো বই হাতে পেতাম, সে বই এহাত-ওহাত ঘুরে কয়েক ডজন তরুণের পড়া হয়ে যেত। তখন ইন্টারনেট ছিল না, ফটোকপি মেশিনও নয়, তা সত্ত্বেও যেকোনো মহৎ সাহিত্যকর্ম কিংবা সুন্দর একটি কবিতা হাত থেকে হাতে একেবারে অ্যানাতোলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে যেত। এই প্রজন্মের ছেলেমেয়ের কাছে বিষয়টি অদ্ভুত মনে হতে পারে। কারণ তাদের হাতের নাগালে স্কুল, টেবিল ভরতি বই। কিন্তু আমাদের তো এসব ছিল না। আমরা এমন একটি প্রজন্ম, যাদের কাছে বই ছিল দুষ্প্রাপ্য ও দুর্মূল্য। কাজেই আমাদের জন্য এটাই স্বাভাবিক যে, আমাদের সন্তানদের হাতে যত সহজে সম্ভব বই তুলে দেয়ার জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা করে যাবো। ছোটবেলায় আমি যেসব গল্প ও কবিতা পড়েছি, তার থেকে একটিকে ‘প্রিয়’ হিসেবে বাছাই করতে বললে আমি কিন্তু পারব না। তারপরও বরেণ্য চিন্তাবিদ নেসিপ ফাজিল কিসাকুরেক এবং তার ‘সাকারিয়া’ কবিতাকে আমি শীর্ষে রাখব। এই মানুষটি এবং তার রচনা আমাদেরকে ইতিহাস ও বর্তমান সম্বন্ধে সচেতনতার বোধ দিয়েছে। যদি আপনাকে বলা হয় তুরস্কের স্কুল পাঠ্যক্রমে নতুন একটি বই যোগ করতে, কোন বইটি বেছে নেবেন এবং কোন বয়সের শিক্ষার্থীদের জন্য? এরদোগান : কোনো রকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই আমি মেহমেত আকিফ এরোজির ‘সাফাহতে’ বইটির কথা বলব। এবং চাইব, সব বয়সের মানুষ বইটি পড়–ক এবং বইটির সাথে পরিচিত হোক। কারণ এটি একটি মহৎ সাহিত্য বা কাব্যই শুধু নয়, বরং এটি এমন একটি রচনা, যা আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসের ওপর আলো ফেলেছে। এটি একটি দর্শনের বই, যে দর্শনের ভিত্তিতে একটি জাতি ও একটি সভ্যতা নির্মিত হয়েছে। এটি একটি ভাবধারার বই, যে ভাবধারা আমাদের আমাদের অতীত চেতনার সাথে ভবিষ্যৎকে মিলিয়ে দিয়েছে। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত যেমন এই জাতির পরিচয় জ্ঞাপকরূপে কাজ করে এবং যে ভিত্তির ওপর তা নির্মিত, ‘সাফাহাত’ বইটিও তেমন। এতে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের চেতনাই অনুরণিত হয়। যারা বইটি প্রথম পড়বেন, তাদের কাছে এর শব্দ ও স্তবকগুলো বুঝতে পারা কঠিন হতে পারে। কিন্তু আমার বিশ্বাস, তরুণ বয়সে এরকম একটি সাহিত্যকর্মের সাথে পরিচিত হলে, এর পৃষ্ঠায় নিমজ্জিত হলে তা আমাদের তরুণদের শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করবে। যে সমাজের শব্দভাণ্ডার যত ব্যাপক, সেই সমাজের সৃজনশীলতাও তত বেশি। সবচেয়ে বড় কথা, আমি বিশ্বাস করি, ‘সাফাহাত’ বইয়ের শব্দ ও স্তবকগুলো ইতিহাসের সাথে আমাদের বন্ধনকে দৃঢ় করবে এবং ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টায় আরো ত্যাগের মনোভাব জাগ্রত করবে। আমাদের দেশে (কিংবা বিশ্বে) পরিবর্তন এনেছে, এমন কোনো বইয়ের নাম বলতে বললে আপনি কোনো বই বা লেখকের নাম বলবেন এবং কেন? এরদোগান : আমার মনে হয় আপনি নিজেও বোঝেন যে, একটি বা দু’টি নাম বলে এলে এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া প্রায় অসম্ভব। নিঃসন্দেহে পবিত্র কুরআন থেকে শুরু করে সব ধর্মগ্রন্থের চিরায়ত গুরুত্ব রয়েছে। এর বাইরে প্রত্যেক জাতির নিজস্ব অতিগুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান সাহিত্যকর্ম রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাওলানা রুমী ও ইউনূস এমরের কথা বলব। তারা আমাদের এখানে, অ্যানাতোলিয়ায় বসে লিখেছেন। কিন্তু তাদের সৃষ্টি সব সীমান্ত অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। ভেঙেছে সময়ের বেড়া। তারা আপন লোকালয়ে আবদ্ধ থাকে��নি, বরং আলিঙ্গন করেছেন সমগ্র বিশ্বকে। ভাবতে অবাক লাগে, তাদের রচনা, তাদের কবিতা রচিত হয়েছে কয়েক শ’ বছর আগে। অথচ তা এখনো মানবতার পথপ্রদর্শক। আমাদের সমৃদ্ধ সাহিত্যিক ইতিহাস নিয়ে আমার সত্যিই গর্ব হয়। অবশ্য গর্বভরে উল্লেখ করার মতো আরো অনেক মহৎ সাহিত্যিক আমাদের দেশে আছেন। ইউসুফ হাস হাচিপ, আহমেত ইয়েসেবি, ফুজুলি, নেদিম, হাবি বেকতাস, কেমাল তাহির, ইয়াহিয়া কেমার, কেমিল মেরিক, ও গুজ আতাই, নুরেত্তিন তপকু, ওরহান পামুক এবং এ রকম আরো অনেকে মহৎ সাহিত্য রচনা করেছেন। প্রতিটি লেখক, তাদের সাহিত্যকর্ম, এমনকি প্রতিটি স্তবক বা বাক্য, তা ছোট হোক বা বড়, মানুষকে প্রভাবিত করে। বলা হয়ে থাকে, ‘মুখের কথা উড়ে যায়, লেখা কথা থেকে যায়। লিখিত সবকিছুই কোনো না কোনোভাবে পাঠকের ব্যক্তিগত জীবনের একটি দিকের সাথে সম্পর্কিত হয়ে যায়। এবং তা-ই এনে দেয় পরিবর্তন। উচ্চাকাক্সক্ষী রাজনীতিকদের পড়া প্রয়োজন এমন কোনো সাহিত্যকর্মের কথা কি আপনার জানা আছে? এরদোগান : মাওলানা রুমী ও ইউনূস এমরের রচনা পাঠ করে আমি নিজে বিপুলভাবে উপকৃত হয়েছি। এই দুই মহান ব্যক্তির রচনাকে আমি আমার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনে অনুপ্রেরণার উৎস জেনেছি। তাদের রচনাকর্মকে রাজনীতিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছেন, তারা জাতির আত্মার সাথে কথা বলেছেন, বলেছেন জাতির মুখের ভাষায়। যদি আপনার লক্ষ্য হয়ে থাকে মানুষের সেবা করা, তবে তাদের মুখের ভাষাটি আপনার জানা থাকতে হবে। মাওলানা রুমী, ইউনূস এমরে, হাচি বেকতাস বেলি ও হাচি বৈরাম বেলির মতো মহৎ লোকদের হাতে এই ভাষাটি পরিশুদ্ধ ও সমৃদ্ধ হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ইউনূস এসয়ের মতো পরিশুদ্ধ ভাষায় যে রাজনীতিক কথা বলতে পারবেন, তিনি দেশকে অনেক কিছুই দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আমি আরো দু-একটি নাম বলতে চাই, যাদের প্রশংসা এর আগেও অন্যত্র করেছি। তারা হলেন ফালিহ রিফাকি আতাই ও ফারহেত্তিন পাসা। মেদিনে প্রতিরক্ষা নিয়ে তাদের রচনা, আমি মনে করি, পড়া শুধু রাজনীতিকেরই পড়া উচিত তা নয়, বরং সব বয়সের মানুষেরই পড়া কর্তব্য। এগুলো পড়া এবং পড়ানো এ জন্যই প্রয়োজন যে, তাহলে আমরা উপলব্ধি করতে পারব যে, আমরা বর্তমান অবস্থায় কিভাবে এলাম। আপনি কি এমন কোনো সাহিত্যকর্মের কথা জানেন, যা মানবজাতির কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণ করেছে বেশি? এরদোগান : আপনি তো জানেন, সাহিত্যের তুর্কি শব্দ হচ্ছে ‘এদেবিয়াত’, যা এসেছে ‘এদেব’ থেকে। এর অর্থ সমাজের শৃঙ্খলা ও পদ্ধতি অনুধাবন এবং সে অনুযায়ী কাজ করা (সদাচার)। আমাদের সাহিত্যের ইতিহাসে দেখা যায়, সাহিত্য ও আদবকেতা প্রায়ই হাত ধরাধরি করে অথবা সমান্তরালে পথ চলেছে। আমি বিশ্বাস করতে পারি না, যা জন্মগতভাবে বিনম্র, তা থেকে ক্ষতিকর কিছু আসতে পারে। ‘এদের’ বা শৃঙ্খলা হচ্ছে আঠার মতো, যা বইয়ের পৃষ্ঠাগুলোকে একসাথে আটকে রাখে। এই বাঁধনটা টুটে গেলে বইটা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। যতক্ষণ তা না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সব বইই উপকারী। বইয়ের ওপর সেন্সরশিপের ব্যাপারে আপনার কি মত? এরদোগান : সেন্সরশিপ একটা অগ্রহণযোগ্য পন্থা; শুধু সাহিত্যের বেলায় নয়, শিল্পের সব শাখায়, গণমাধ্যমে, রাজনীতিতে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও। বাকস্বাধীনতা আমাদের অধিকার। যতক্ষণ না এই অধিকার অন্যের অধিকার খর্ব করছে, তকক্ষণ এই স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষা করতে আমরা কৃতসংকল্প। একটু আগেই আমি বলছিলাম আমাদের যৌবনকালে কত রকম বিঘœ আমাদের মোকাবেলা করতে হয়েছে। নানারকম নিষেধাজ্ঞা ও সীমাবদ্ধতা আমাদের দেশকে, আমাদের তরুণবেলাকে, আমাদের চিন্তাধারাকে, আমাদের সাহিত্যকে এবং আমাদের মিডিয়াকে পঙ্গু করে রেখেছিল। শুধু আমাদের যৌবনেই নয়, আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসেও এসব চাপের মুখে পড়তে হয়েছে। আমি একজন রাজনীতিক। একটি কবিতা পড়ার ‘অপরাধে’ আমাকে জেল খাটতে হয়েছে। অথচ কবিতাটি সরকারি স্কুলের বইতে পাঠ্য ছিল। এখন আমি দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে প্রেসিডেন্ট। বাকস্বাধীনতার অর্থ ও প্রয়োজন আমি খুব ভালোভাবে বুঝি। কবি এ টি আয়হানের পঙক্তি আমি বহুবার বহু স্থানে বলেছি : ‘আমরা হয়েছি বড় নিষেধের বেড়াজাল ভেঙে-ভেঙে।’ এ কারণেই আমরা আমাদের তরুণদের এবং নতুন প্রজন্মের ওপর বিধিনিষেধ ও সেন্সরশিপের বেড়াজাল আরোপ করতে চাই না। আমরা সহিষ্ণু হতে চাই। আপনার সর্বশেষ পঠিত ও ভালো লাগা বই কোনটি? এরদোগান : কাজের বিপুল বোঝা মাথার ওপর, তার মধ্যেও আমার সর্বাত্মক চেষ্টা থাকে যেন আমি বইয়ের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন না হই। কাজের চাপে সবকিছু পড়া যদিও সম্ভব না হয়, তবুও আমি নতুন লেখালেখি সম্বন্ধে ধারণা পেতে এবং সেগুলো পড়তে সব রকম চেষ্টা চালাই। আপনি কি লিখেন? না-লিখেন যদি, তবে কি আশা পোষণ করেন যে, একটি বই বা কবিতা অন্তত লিখবেন! এরদোগান : আপনি তো জানেনই, ডায়রিতে আপন অভিজ্ঞতা লিখে রাখাকেও এক ধরনের সাহিত্যিক স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই অর্থে বলতে পারি, হ্যাঁ, আমি লিখি। যখনই একটুখানি সময় পাই, ডায়রিতে আমি নোট নিই এবং কোনো ঘটনা লিখে রাখি। হয়তো ভবিষ্যতে এটাকে স্মৃতিকথায় রূপ দেবো।
0 notes