জিহাদ কি?
জিহাদ (আরবি: جهاد), যার অর্থ সংগ্রাম; কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য লাভের জন্য সমগ্র শক্তি নিয়োগ করাকে বোঝানো হয়। এর আভিধানিক অর্থ পরিশ্রম,সাধনা,কষ্ট, চেষ্টা ইত্যাদি। সচরাচর ইসলামী পারিভাষিক অর্থে 'জিহাদ' কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি বার্তা
জিহাদ আল্লাহ্র আদেশঃ
পবিত্র কোরআনের আল-ই-ইমরান-এর ১৪২ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা কি মনে করো যে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, যতক্ষণ না আল্লাহ জানেন তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে ও কে ধৈর্য ধরেছে!’ সুরা আনকাবুত-এর ৬৯ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা আমার উদ্দেশ্যে জিহাদ করে আমি তাদের অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।’ এ কথাগুলোর মধ্য দিয়ে জেহাদের মূলগত তাৎপর্যই প্রকাশ পেয়েছে।
জিহাদ আল্লাহ্র আদেশ
দুর্বল হও অথবা সবল সর্বাবস্থাতেই তোমরা বের হও এবং আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দ্বারা জিহাদ কর। (সূরা তওবা ৪১)
আর তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই (জিহাদ) করছো না! সূরা নিসা
https://www.youtube.com/watch?v=zzDWtE63B4k
জিহাদে করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কি পুরস্কার দেবেন আল্লাহ তায়ালা ।
https://www.youtube.com/watch?v=CB1mlmWGKx8
জিহাদ নিয়ে সব বিভ্রান্তির অবসান
https://www.youtube.com/watch?v=aKIPfC8P_Vs
জিহাদ মানে সংগ্রাম
জিহাদ কি ? জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন কি ?
https://www.youtube.com/watch?v=mw9IFIFOvbI&t=68s
জিহাদ এর সঠিক ব্যাখ্যা
https://www.youtube.com/watch?v=NoQyusk9FeY
জিহাদ কি,কখন করতে হবে
https://www.youtube.com/watch?v=XtZWhH2LQLA&t=37s
জিহাদ বর্তমানে ফরজে আইন
https://www.youtube.com/watch?v=MDrqGo-bcsY
আল্লাহর পথে জিহাদ
https://www.youtube.com/watch?v=tQBv4b_vaRI
জিহাদের সঠিক অর্থ কি?
জিহাদ, (আরবি: "সংগ্রাম" বা "প্রচেষ্টা") ইসলামে জেহাদের অর্থ একটি প্রশংসনীয় সংগ্রাম বা প্রচেষ্টা।
ইসলামে জিহাদের ৩ প্রকার কি কি?
জিহাদকে অভ্যন্তরীণ ("বৃহত্তর") জিহাদে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে নিজের ভিত্তি প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং বাহ্যিক ("কম") জিহাদ, যা আবার কলম/জিহাদের (বিতর্ক বা প্ররোচনা) জিহাদে বিভক্ত। তরবারি.
জিহাদ সম্পর্কে কুরআন কি বলে?
জিহাদ সম্পর্কে কুরআন কি বলে.
যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর, কিন্তু শত্রুতা শুরু করো না। আল্লাহ আগ্রাসনকারীদের পছন্দ করেন না। যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়, তাদের (যুদ্ধের) অনুমতি দেওয়া হয়, কারণ তাদের প্রতি জুলুম করা হয়; এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের সাহায্যের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী।
মুহাম্মদ (সাঃ) এর জিহাদ কিরূপ ছিল?
ইসলামের প্রথম দিকের 'মক্কান' সময়কালে, নবী মুহাম্মদের (সঃ ) জিহাদের বার্তাটি মূর্তিপূজা, পৌত্তলিকতা এবং বহুদেবতার দ্বারা কমবেশি বৈশিষ্ট্যযুক্ত একটি প্রচলিত আদেশের বিরুদ্ধে ইসলামপ্রচারের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন ।
জিহাদ কি ? জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন কি ?
https://www.youtube.com/watch?v=mw9IFIFOvbI&t=68s
প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি বার্তা
A Message To Every Muslim
Jihad in Islam
0 notes
জিহাদ কি?
জিহাদ (আরবি: جهاد), যার অর্থ সংগ্রাম; কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য লাভের জন্য সমগ্র শক্তি নিয়োগ করাকে বোঝানো হয়। এর আভিধানিক অর্থ পরিশ্রম,সাধনা,কষ্ট, চেষ্টা ইত্যাদি। সচরাচর ইসলামী পারিভাষিক অর্থে 'জিহাদ' কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি বার্তা
জিহাদ আল্লাহ্র আদেশঃ
পবিত্র কোরআনের আল-ই-ইমরান-এর ১৪২ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা কি মনে করো যে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, যতক্ষণ না আল্লাহ জানেন তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে ও কে ধৈর্য ধরেছে!’ সুরা আনকাবুত-এর ৬৯ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা আমার উদ্দেশ্যে জিহাদ করে আমি তাদের অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।’ এ কথাগুলোর মধ্য দিয়ে জেহাদের মূলগত তাৎপর্যই প্রকাশ পেয়েছে।
জিহাদ আল্লাহ্র আদেশ
দুর্বল হও অথবা সবল সর্বাবস্থাতেই তোমরা বের হও এবং আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দ্বারা জিহাদ কর। (সূরা তওবা ৪১)
আর তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই (জিহাদ) করছো না! সূরা নিসা
https://www.youtube.com/watch?v=zzDWtE63B4k
জিহাদে করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কি পুরস্কার দেবেন আল্লাহ তায়ালা ।
https://www.youtube.com/watch?v=CB1mlmWGKx8
জিহাদ নিয়ে সব বিভ্রান্তির অবসান
https://www.youtube.com/watch?v=aKIPfC8P_Vs
জিহাদ মানে সংগ্রাম
জিহাদ কি ? জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন কি ?
https://www.youtube.com/watch?v=mw9IFIFOvbI&t=68s
জিহাদ এর সঠিক ব্যাখ্যা
https://www.youtube.com/watch?v=NoQyusk9FeY
জিহাদ কি,কখন করতে হবে
https://www.youtube.com/watch?v=XtZWhH2LQLA&t=37s
জিহাদ বর্তমানে ফরজে আইন
https://www.youtube.com/watch?v=MDrqGo-bcsY
আল্লাহর পথে জিহাদ
https://www.youtube.com/watch?v=tQBv4b_vaRI
জিহাদের সঠিক অর্থ কি?
জিহাদ, (আরবি: "সংগ্রাম" বা "প্র��েষ্টা") ইসলামে জেহাদের অর্থ একটি প্রশংসনীয় সংগ্রাম বা প্রচেষ্টা।
ইসলামে জিহাদের ৩ প্রকার কি কি?
জিহাদকে অভ্যন্তরীণ ("বৃহত্তর") জিহাদে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে নিজের ভিত্তি প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং বাহ্যিক ("কম") জিহাদ, যা আবার কলম/জিহাদের (বিতর্ক বা প্ররোচনা) জিহাদে বিভক্ত। তরবারি.
জিহাদ সম্পর্কে কুরআন কি বলে?
জিহাদ সম্পর্কে কুরআন কি বলে.
যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর, কিন্তু শত্রুতা শুরু করো না। আল্লাহ আগ্রাসনকারীদের পছন্দ করেন না। যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়, তাদের (যুদ্ধের) অনুমতি দেওয়া হয়, কারণ তাদের প্রতি জুলুম করা হয়; এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের সাহায্যের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী।
মুহাম্মদ (সাঃ) এর জিহাদ কিরূপ ছিল?
ইসলামের প্রথম দিকের 'মক্কান' সময়কালে, নবী মুহাম্মদের (সঃ ) জিহাদের বার্তাটি মূর্তিপূজা, পৌত্তলিকতা এবং বহুদেবতার দ্বারা কমবেশি বৈশিষ্ট্যযুক্ত একটি প্রচলিত আদেশের বিরুদ্ধে ইসলামপ্রচারের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন ।
জিহাদ কি ? জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন কি ?
https://www.youtube.com/watch?v=mw9IFIFOvbI&t=68s
প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি বার্তা
A Message To Every Muslim
Jihad in Islam
0 notes
জিহাদ কি?
জিহাদ (আরবি: جهاد), যার অর্থ সংগ্রাম; কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য লাভের জন্য সমগ্র শক্তি নিয়োগ করাকে বোঝানো হয়। এর আভিধানিক অর্থ পরিশ্রম,সাধনা,কষ্ট, চেষ্টা ইত্যাদি। সচরাচর ইসলামী পারিভাষিক অর্থে 'জিহাদ' কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি বার্তা
জিহাদ আল্লাহ্র আদেশঃ
পবিত্র কোরআনের আল-ই-ইমরান-এর ১৪২ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা কি মনে করো যে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, যতক্ষণ না আল্লাহ জানেন তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে ও কে ধৈর্য ধরেছে!’ সুরা আনকাবুত-এর ৬৯ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা আমার উদ্দেশ্যে জিহাদ করে আমি তাদের অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।’ এ কথাগুলোর মধ্য দিয়ে জেহাদের মূলগত তাৎপর্যই প্রকাশ পেয়েছে।
জিহাদ আল্লাহ্র আদেশ
দুর্বল হও অথবা সবল সর্বাবস্থাতেই তোমরা বের হও এবং আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দ্বারা জিহাদ কর। (সূরা তওবা ৪১)
আর তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই (জিহাদ) করছো না! সূরা নিসা
https://www.youtube.com/watch?v=zzDWtE63B4k
জিহাদে করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কি পুরস্কার দেবেন আল্লাহ তায়ালা ।
https://www.youtube.com/watch?v=CB1mlmWGKx8
জিহাদ নিয়ে সব বিভ্রান্তির অবসান
https://www.youtube.com/watch?v=aKIPfC8P_Vs
জিহাদ মানে সংগ্রাম
জিহাদ কি ? জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন কি ?
https://www.youtube.com/watch?v=mw9IFIFOvbI&t=68s
জিহাদ এর সঠিক ব্যাখ্যা
https://www.youtube.com/watch?v=NoQyusk9FeY
জিহাদ কি,কখন করতে হবে
https://www.youtube.com/watch?v=XtZWhH2LQLA&t=37s
জিহাদ বর্তমানে ফরজে আইন
https://www.youtube.com/watch?v=MDrqGo-bcsY
আল্লাহর পথে জিহাদ
https://www.youtube.com/watch?v=tQBv4b_vaRI
জিহাদের সঠিক অর্থ কি?
জিহাদ, (আরবি: "সংগ্রাম" বা "প্রচেষ্টা") ইসলামে জেহাদের অর্থ একটি প্রশংসনীয় সংগ্রাম বা প্রচেষ্টা।
ইসলামে জিহাদের ৩ প্রকার কি কি?
জিহাদকে অভ্যন্তরীণ ("বৃহত্তর") জিহাদে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে নিজের ভিত্তি প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং বাহ্যিক ("কম") জিহাদ, যা আবার কলম/জিহাদের (বিতর্ক বা প্ররোচনা) জিহাদে বিভক্ত। তরবারি.
জিহাদ সম্পর্কে কুরআন কি বলে?
জিহাদ সম্পর্কে কুরআন কি বলে.
যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর, কিন্তু শত্রুতা শুরু করো না। আল্লাহ আগ্রাসনকারীদের পছন্দ করেন না। যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়, তাদের (যুদ্ধের) অনুমতি দেওয়া হয়, কারণ তাদের প্রতি জুলুম করা হয়; এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের সাহায্যের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী।
মুহাম্মদ (সাঃ) এর জিহাদ কিরূপ ছিল?
ইসলামের প্রথম দিকের 'মক্কান' সময়কালে, নবী মুহাম্মদের (সঃ ) জিহাদের বার্তাটি মূর্তিপূজা, পৌত্তলিকতা এবং বহুদেবতার দ্বারা কমবেশি বৈশিষ্ট্যযুক্ত একটি প্রচলিত আদেশের বিরুদ্ধে ইসলামপ্রচারের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন ।
জিহাদ কি ? জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন কি ?
https://www.youtube.com/watch?v=mw9IFIFOvbI&t=68s
প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি বার্তা
A Message To Every Muslim
Jihad in Islam
0 notes
জিহাদ কি?
জিহাদ (আরবি: جهاد), যার অর্থ সংগ্রাম; কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য লাভের জন্য সমগ্র শক্তি নিয়োগ করাকে বোঝানো হয়। এর আভিধানিক অর্থ পরিশ্রম,সাধনা,কষ্ট, চেষ্টা ইত্যাদি। সচরাচর ইসলামী পারিভাষিক অর্থে 'জিহাদ' কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি বার্তা
জিহাদ আল্লাহ্র আদেশঃ
পবিত্র কোরআনের আল-ই-ইমরান-এর ১৪২ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা কি মনে করো যে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, যতক্ষণ না আল্লাহ জানেন তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে ও কে ধৈর্য ধরেছে!’ সুরা আনকাবুত-এর ৬৯ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা আমার উদ্দেশ্যে জিহাদ করে আমি তাদের অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।’ এ কথাগুলোর মধ্য দিয়ে জেহাদের মূলগত তাৎপর্যই প্রকাশ পেয়েছে।
জিহাদ আল্লাহ্র আদেশ
দুর্বল হও অথবা সবল সর্বাবস্থাতেই তোমরা বের হও এবং আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দ্বারা জিহাদ কর। (সূরা তওবা ৪১)
আর তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই (জিহাদ) করছো না! সূরা নিসা
https://www.youtube.com/watch?v=zzDWtE63B4k
জিহাদে করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কি পুরস্কার দেবেন আল্লাহ তায়ালা ।
https://www.youtube.com/watch?v=CB1mlmWGKx8
জিহাদ নিয়ে সব বিভ্রান্তির অবসান
https://www.youtube.com/watch?v=aKIPfC8P_Vs
জিহাদ মানে সংগ্রাম
জিহাদ কি ? জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন কি ?
https://www.youtube.com/watch?v=mw9IFIFOvbI&t=68s
জিহাদ এর সঠিক ব্যাখ্যা
https://www.youtube.com/watch?v=NoQyusk9FeY
জিহাদ কি,কখন করতে হবে
https://www.youtube.com/watch?v=XtZWhH2LQLA&t=37s
জিহাদ বর্তমানে ফরজে আইন
https://www.youtube.com/watch?v=MDrqGo-bcsY
আল্লাহর পথে জিহাদ
https://www.youtube.com/watch?v=tQBv4b_vaRI
জিহাদের সঠিক অর্থ কি?
জিহাদ, (আরবি: "সংগ্রাম" বা "প্রচেষ্টা") ইসলামে জেহাদের অর্থ একটি প্রশংসনীয় সংগ্রাম বা প্রচেষ্টা।
ইসলামে জিহাদের ৩ প্রকার কি কি?
জিহাদকে অভ্যন্তরীণ ("বৃহত্তর") জিহাদে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে নিজের ভিত্তি প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং বাহ্যিক ("কম") জিহাদ, যা আবার কলম/জিহাদের (বিতর্ক বা প্ররোচনা) জিহাদে বিভক্ত। তরবারি.
জিহাদ সম্পর্কে কুরআন কি বলে?
জিহাদ সম্পর্কে কুরআন কি বলে.
যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর, কিন্তু শত্রুতা শুরু করো না। আল্লাহ আগ্রাসনকারীদের পছন্দ করেন না। যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়, তাদের (যুদ্ধের) অনুমতি দেওয়া হয়, কারণ তাদের প্রতি জুলুম করা হয়; এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের সাহায্যের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী।
মুহাম্মদ (সাঃ) এর জ��হাদ কিরূপ ছিল?
ইসলামের প্রথম দিকের 'মক্কান' সময়কালে, নবী মুহাম্মদের (সঃ ) জিহাদের বার্তাটি মূর্তিপূজা, পৌত্তলিকতা এবং বহুদেবতার দ্বারা কমবেশি বৈশিষ্ট্যযুক্ত একটি প্রচলিত আদেশের বিরুদ্ধে ইসলামপ্রচারের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন ।
জিহাদ কি ? জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন কি ?
https://www.youtube.com/watch?v=mw9IFIFOvbI&t=68s
প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি বার্তা
A Message To Every Muslim
Jihad in Islam
0 notes
কেনো আমি গান্ধীকে ঘৃণা করি ? - (পর্ব-১)
( গান্ধী সম্পর্কে প্রকৃত সত্য জানতে হলে পড়ুন এই প্রবন্ধটি।)
মানুষ মূল্যায়িত হয় তার কথা ও কাজের গুনেই। তাই গান্ধী যা করে গেছে এবং বলে গেছে, সেই মতোই তাকে মূল্যায়ন করতে হবে। এই পোস্টে আমি তার সেই মূল্যায়ন করবো এবং এই পোস্ট পড়া শেষে আপনারাও নিশ্চয় বুঝতে পারবেন যে শুধু আমি নই, এখন কোটি কোটি মানুষ কেনো গান্ধীকে ঘৃণা করছে ?
শুরুতেই নজর দেওয়া যাক গান্ধীর শিক্ষা-দীক্ষায়। ছোটবেলা থেকেই শুনতাম গান্ধী ব্যারিস্টার, ভাবতাম নিশ্চয় অনেক শিক্ষিত, অনেক জ্ঞানী। কিন্তু পরে যা জেনেছি, তা জেনে শুধু আমিই অবাক হই নি, জানলে অবাক হবেন আপনারাও। গান্ধী তার সমগ্র জীবনে মাত্র একটি সার্টিফিকেট অর্জন করতে পেরেছিলো, আর তা হলো ম্যাট্রিক পাসের সার্টিফিকেট, ১৮৮৭ সালে গান্ধী টেনে টুনে কোনোভাবে থার্ড ডিভিশনে ম্যাট্রিক পাশ করে, তার প্রা্প্ত নম্বর ছিলো ২৪৭ আউট অফ ৬০০। এখন ব্যারিস্টারি রহস্যের কথা শুনুন, তখনকার দিনে ব্যারিস্টার হতে গেলে কোনো পরীক্ষা দিতে হতো না, কিছুদিন কোনো বয়স্ক বা অভিজ্ঞ ব্যারিস্টারের সহকারী হিসেবে কাজ করলেই ব্যারিস্টার হিসেবে বার এসোসিয়েসনের সদস্য হওয়া যেতো। কিন্তু এই সহকারী হওয়ার জন্যও গান্ধীর ভারতীয় সার্টিফিকেট এবং তার ফলাফল গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচিত হয় নি, তাই গান্ধীকে আবারও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাট্রিক পরীক্ষায় বসতে হয়। প্রথম বার ফেল করে দ্বিতীয় বার কোনোমতে গান্ধী সে পরীক্ষায় পাশ করে এবং ব্যারিস্টারের সহকারী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। আগের দিনের অনেক মানুষেরই প্রথাগত শিক্ষা খুব বেশি ছিলো না, যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর; কিন্তু তারা ছিলো স্বশিক্ষায় শিক্ষিত, কিন্তু গান্ধীর কথা ও আচরণে এটাও স্পষ্ট হয় যে তার মধ্যে সেই স্বশিক্ষাও ছিলো না। কারণ, গান্ধীর বেশির ভাগ কথা বার্তা ই ছিলো ননসেন্স। পুরো পোস্ট পড়ার পর, আপনারা আমার এই কথার মর্ম বুঝতে পারবেন।
গান্ধী, হিন্দুদের প্রাণের গ্রন্থ গীতা সম্পর্কে তার ‘অনাশক্তি যোগ’ গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছে, “গীতার বর্ণিত যুদ্ধ কোনো বাস্তব যুদ্ধ নয়, পরন্তু ভৌতিক যুদ্ধ বর্ণনের রূপকের মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে যে দ্বন্দ্বযুদ্ধ নিরন্তর চলিতেছে, ইহাতে তাহাই বর্ণিত হইয়াছে। রসস্থিত যুদ্ধকে রসপূর্ণ আকার দেওয়া হইয়াছে।” এর সরল মানে হলো, মহভারতের যুদ্ধ কোনো বাস্তব ঘটনা নয়, মানুষের মনে শুভ অশুভ শক্তির মধ্যে যে অবিরাম যুদ্ধ চলছে এটা তার রূপক মাত্র।
গান্ধী, তার ‘গীতাবোধ’ গ্রন্থের প্রস্তাবনায় আরো বলেছে, “মহাভারতকে ঐতিহাসিক গ্রন্থ বলিয়া ধরা হয়, কিন্তু আমার কাছে মহাভারত ও রামায়ণ ঐতিহাসিক কোনো গ্রন্থ নয়। ইহারা ধর্মগ্রন্থ। আর যদি ইতিহাস বল, তবে উহারা আত্মার ইতিহাস। হাজার হাজার বৎসর পূর্বে কী হইয়াছিলো তাহার বর্ণনা উহাতে নাই, পরন্তু আজ প্রত্যেক মানুষের অন্তরে যাহা চলিতেছে, উহা তাহারই প্রতিচ্ছবি।”
হিন্দু ধর্মের প্রাণপুরুষ শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে গান্ধী বলেছে, “গীতার কৃষ্ণ মূর্তিমস্ত শুদ্ধ পূর্ণজ্ঞান, কিন্তু কাল্পনিক। ইহাতে কৃষ্ণ নামক অবতার পুরুষকে অস্বীকার করা হইতেছে না। মাত্র বলা হইতেছে পূর্ণকৃষ্ণ কাল্পনিক। পূর্ণ অবতারের কল্পনা পরে আরোপিত হইয়াছে।”
এই হলো হিন্দুধর্ম সম্পর্কে গান্ধীর জ্ঞান বা ধারণা, এখন আপনিই বলেন- এ শ্রদ্ধার যোগ্য, না ঘৃনার যোগ্য ?
গান্ধী বলতো, “একজন সত্যাগ্রহী সব সময় আক্রমনকারীর দ্বারা নিহত হবার কামনা করবে, কিন্তু কাউকে হত্যা করার কামনা করবে না।” এটা কি কোনো মানুষের কথা হতে পারে ? পৃথিবীর একটি ছোট্ট বা ক্ষুদ্র প্রাণীও তো তার আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করে এবং টিকে থাকার চেষ্টা করে। গান্ধীর এই নীতির ফলে ভারত ভাগের আগে ও পরে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে যে লক্ষ লক্ষ হিন্দু, হত্যার শিকার হয়েছে, তা রোধ করার জন্য গান্ধী তো কোনো পদক্ষেপ নেয় ই নি, উপরন্তু হিন্দুদেরকে মরতে সে উৎসাহিত করেছে; পুরো পোস্ট পড়তে পড়তে আপনারা এর বহু প্রমান পাবেন।
বসন্তের টিকা দেওয়াকে গান্ধী পাপ বলে মনে করতো। এর মূল কারণ হলো, গান্ধী ছিলো পাশ্চাত্য চিকিৎসার পদ্ধতির বিরোধী; কারণ, সে ইনজেকশন দেওয়া্ ও অপারেশন করাকে হিংসা বলে মনে করতো। ১৯৪৬ সালে গান্ধীর স্ত্রী কস্তরবার ম্যালেরিয়া হয় এবং ডাক্তার তাকে পেনিসিলিন ইনজেকশন দেবার কথা বলে। সেই মত বৃটিশ সরকার তার জন্য লন্ডন থেকে পেনিসিলিন ইনজেকশন নিয়ে আসে। কিন্তু গান্ধী হিংসার নাম করে তা প্রয়োগ করতে বাধা দেয়। ফলে গান্ধীর স্ত্রী মারা যায়। অথচ ১৯২২ সালে কারাবাসের সময় গান্ধীর খুব আমাশা হয় এবং ডাক্তার তাকে নিয়মিত ইনজেকশন করে সুস্থ করে তোলে এরপর গান্ধীর এ্যাপেনডিসাইটিস হয়, গান্ধী সেই অপারেশনও করায়।গান্ধী ছিলো এমনই ভণ্ড।
গান্ধী আরো মনে করতো, উচ্চ বর্ণের লোকেরা নিম্নবর্���ের লোকেদের ঘৃণা করে যে পাপ করে তার ফলে ভূমিকম্প হয়; এই অপদার্থটা ছিলো এমনই কুসংস্কারাচ্ছন্ন। নেতাজী বলেছেন, “বৃটিশের নির্দেশে গান্ধী যখনই কোনো আন্দোলন তুলে নিতেন, তখনই তিনি নিজের শয়তানিকে চাপা দেওয়ার জন্য বা দেশের মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য অনশন শুরু করতেন।” কারণ গান্ধীর সকল প্রকার অনশন ও কারাবাস ছিলো বৃটিশদের পরিকল্পনার অংশ।
ড. আম্বেদকরের মতে, গান্ধী ছিলো শক্তের ভক্ত নরমের যম। দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকাকালে একবার গান্ধী হিন্দু, খ্রিষ্টান ও ইসলামের মধ্যে তুলনা করে একটি বক্তৃতা ��েয়, সেই বক্তব্যে মুসলমানরা ক্ষুব্ধ হয় এবং ১৯০৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, কয়েকজন মুসলমান তার উপর হামলা করে এবং আচ্ছা মতো মার দেয়। এরপর থেকেই গান্ধী মুসলমানদের সর্বপ্রকার সমালোচনা করা বন্ধ করে দেয় এবং তারপর থেকে সে মুসলমানদের অত্যন্ত গর্হিত অপরাধকেও সে আর অপরাধ বলেই মনে করতো না।
১৯৩৯ সালের নভেম্বর মাসে সিন্ধু প্রদেশের মুসলমানরা হিন্দুদের উপর আক্রমন চালায়। গান্ধী আক্রান্ত হিন্দুদেরকে অহিংসা করতে বলে এবং আক্রমনকারী মুসলমানদের ব্যাপারে চুপ থাকে। একসময় গান্ধী, বঙ্কিমচন্দ্রের বন্দেমাতরম গানের খুব ভক্ত ছিলো এবং এর প্রশংসা করে সে লিখেছিলো, “এর আবেদন অনেক মহৎ এবং অন্যান্য দেশের জাতীয় সঙ্গীতের তুলনায় তা শুনতেও অনেক সুমধুর। অনেক দেশের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে অন্যান্য দেশকে কটাক্ষ করা হয় এবং নিন্দাসূচক বাক্য ব্যবহার কর হয়। কিন্তু বন্দেমাতরম এই সব দোষ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত। এর একমাত্র উদ্দেশ্য আমাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করা।” কিন্তু পরবর্তীকালে গান্ধী যখন বুঝতে পারে যে, মুসলমানরা এই গান পছন্দ করে না, তখন সে বন্দেমাতরম গাওয়া ও আবৃত্তি করা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয় এবং তার আপত্তির কারণেই ‘বন্দেমাতরম’ ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারে নি।
১৯৩১ সালে কংগ্রেস কমিটি ভারতের জাতীয় পতাকা গেরুয়া করার প্রস্তাব দেয়, কিন্তু গান্ধীর ইচ্ছায় তা হয় তিরঙ্গা । তারপরও গান্ধী পরে ভারতের এই জাতীয় পতাকাকেও সেভাবে সম্মান দেয় নি, কারণ গান্ধী বুঝতে পেরেছিলো যে, এই পতাকা মুসলমানরা পছন্দ করে না। এ ব্যাপারে একটি ঘটনা, নাথুরা গডসে, তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এইভাবে, “১৯৪৬ সালে কলকতা ও নোয়াখালিতে হিন্দুদের গণহত্যার ঠিক পরে গান্ধী যখন নোয়াখালি ও ত্রিপুরা ভ্রমন করছিলো, তখন নোয়াখালিতে তার সাময়িক বাসগৃহের মাথায় স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা তিরঙ্গা পতাকা লাগিয়ে দিয়েছিলো। কিন্ত যেই মাত্র একজন সামান্য পথচারী মুসলমান গান্ধীর সাথে দেখা করে ওই পতাকার ব্যাপারে আপত্তি জানায়, গান্ধী তৎক্ষণাৎ তা নামিয়ে ফেলার হুকুম দেয়। লক্ষ লক্ষ কংগ্রেস কর্মীর শ্রদ্ধার কেন্দ্র বিন্দু যে জাতীয় পতাকা, সেই পতাকাকে এক মিনিটের মধ্যে গান্ধী অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে, কারণ একজন অশিক্ষিত গ্রাম্য মুসলমান তাতে খুশি হবে।”
হিন্দুদের চাপে, নেহেরু, সরকার গঠনের পরেই সোমনাথ মন্দির পুননির্মানের সিদ্ধান্ত নেয় ; অথচ মন্ত্রীসভার সদস্য না হয়েও গান্ধী নেহেরুকে এই সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করে। নেহেরুর উপর গান্ধীর এই প্রভাব ছিলো, যেহেতু সর্দার প্যাটেল, অধিকাংশের সমর্থনে প্রথম প্রধা্ন মন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও, গান্ধী তার নিজের ক্ষমতা বলে নেহেরুকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলো। অন্যদিকে, একই সময়ে ১৩ই জানুয়ারী, ১৯৪৮ এ অনশন করে গান্ধী দিল্লীর মসজিদ পুননির্মান করে দিতে সরকারকে বাধ্য করে।
গান্ধী প্রথমে হিন্দি ভাষারও খুব ভক্ত ছিলো এবং সে বলতো যে, হিন্দি ভাষাই সর্বভারতীয় ভাষা হবার উপযুক্ত। কিন্তু পরে মুসলমানদের খুশি করার জন্য সে ‘হিন্দুস্থানী’ নামের আড়ালে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী করেছিলো।
ইংরেজদের বিরোধিতা করে সন্ত্রাসমূলক কাজ করার জন্য বৃটিশ সরকার- ভগত সিং, রাজগুরু ও শুকদেব এর মৃত্যুদণ্ড দেয়। কিন্তু সারা ভারতের লোকজন চেয়েছিল গান্ধী হস্তক্ষেপ করে এদের মৃত্যুদণ্ড রোধ করুক, কিন্তু গান্ধী তা না করার জন্য জেদ ধরে থাকে এবং বলে, “ওরা পথভ্রষ্ট, ওদের পথ হিংসার।” শুধু তাই নয়, মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলো ব’লে- রাণা প্রতাপ, গুরু গোবিন্দ সিং, রাজা রণজিত সিংহ ও রাজা শিবাজীর নিন্দা করে গান্ধী বলেছিলো, “তারা ছিলেন লক্ষ্যভ্রষ্ট দেশপ্রেমিক।” এই মন্তব্যের ফলে শিবাজীর ভক্ত মারাঠারা বেশ ক্ষেপে গিয়েছিলো পরে গান্ধীর হয়ে নেহেরু ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে শান্ত করে।
স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ছিলেন ‘আর্য সমাজ’ এর একজন প্রচারক এবং তিনি ধর্মান্তরিত ভারতীয় হিন্দুদেরকে পুনরায় হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি শুদ্ধিযজ্ঞ চালু করেছিলেন। কিন্তু তার এই প্রচেষ্টার জন্য তিনি মুসলমানদের বিরাগভাজন হন। একটি ঘটনায়, এক মুসলিম মহিলা তার দুই সন্তানসহ স্বামী শ্রদ্ধানন্দের শরণাপন্ন হয় এবং তাদেরকে হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে আনতে বলে। কিন্তু মহিলাটির স্বামী এই অভিযোগে আদালতে মামলা করে যে, শ্রদ্ধানন্দ তার স্ত্রী সন্তানকে অপহরণ করেছে। কিন্তু আদালত তার এই মামলা খারিজ করে শ্রদ্ধানন্দকে মুক্তি দেয়। এর ফলে মুসলিমরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ঐ মহিলার স্বামী আবদুল রসিদ শ্রদ্ধানন্দকে হত্যা করে, এই হত্যাকাণ্ড ঘটে ১৯২৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর।
এই হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন পরেই আসামের গৌহাটিতে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন শুরু হয়। শ্রদ্ধানন্দের মৃত্যুতে পরিবেশ খুবই শোকাহত ছিলো। কিন্তু গান্ধী বক্তৃতা করতে উঠেই সেই খুনীকে ‘ভাই আব্দুল রসিদ’ বলে সম্বোধন করে বক্তৃতা শুরু করে, উপস্থিত সবাই তো বিস্ময়ে হতবাক। কিন্তু সেসবের কোনো তোয়াক্কা না করে গান্ধী তার বক্তৃতা চালিয়ে যেতে থাকে এবং বলে, এখন হয়তো আপনারা বুঝতে পারছেন যে, কেনো আমি আব্দুল রসিদকে ‘ভাই আব্দুল রসিদ’ বলেছি এবং আমি বারবার ঐ কথাই বলবো। আমি একথাও বলবো না যে, আব্দুল রসিদ স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে খুন করার অপরাধে অপরাধী। প্রকৃত অপরাধী হলো তারা, যারা মানুষের মনে ঘৃণা জাগিয়ে তোলে।’ এর মাধ্যমে গান্ধী বুঝিয়ে দেয় যে স্বামী শ্রদ্ধানন্দ নিজেই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী। এরপর শ্রদ্ধানন্দের শোকবার্তায় গান্ধী লিখে, স্বামী শ্রদ্ধানন্দ সম্পর্কে আমি একটি কথা ই বলবো যে, তিনি বীরের জীবন যাপন করেছেন এবং বীরের মৃত্যু বরণ করেছেন।” এর মাধ্যমে গান্ধী বোঝালো যে, কোনো মুসলমানের হাতে কোনো হিন্দু খুন হলে হিন্দুদের উচিত সেই মৃত্যুকে বীরের মত মৃত্যুবরণ বলে মনে করা।
গান্ধীর এই নীতি, পরবর্তীতে হিন্দুদের জীবন যে কিভাবে বিষময় করে তুলেছিলো সেটা বুঝতে পারবেন, দেশভাগের পূর্ব ও পরের আরো কয়েকটি ঘটনা জানলে-
দেশ ভাগের কয়েক মাস আগে থেকে যখন পশ্চিম পাঞ্জাবের হিন্দুরা উদ্বাস্তু হয়ে পূর্ব পাঞ্জাবে ও দিল্লিতে আসতে শুরু করে, তখন গান্ধী সেই সব বিপন্ন হিন্দুদের উদ্দেশ্যে ১৯৪৭ সালের ৬ এপ্রিল এক ভাষণে বলে, “মুসলমানরা যদি হিন্দুদের অস্তিত্বকেও বিপন্ন করে তোলে, তবুও হিন্দুদের কখনোই উচিত হবে না মুসলমানদের প্রতি ক্রোধ প্রকাশ করা। যদি তারা আমাদের সবাইকে তরোয়াল দিয়ে কেটে ফেলে, তবে আমাদের উচিত হবে বীরের মতো সেই মৃত্যুকে বরণ করা।… আমাদের জন্ম মৃত্যু তো ভাগ্যের লিখন, তাই এ ব্যাপারে এত মন খারাপের কী আছে ?”
১৯৪৬ সালের ২৩ নভেম্বরের এক ভাষণে গন্ধী আরো বলে, “রাওয়াল পিণ্ডি থেকে যেসব লোকেরা পালিয়ে এসেছে, তাদের মধ্যে কিছু লোক আমার সাথে দেখা করে জিজ্ঞেস করলো, যে ��মস্ত হিন্দু এখনও পাকিস্তানে পড়ে রয়েছে, তাদের কী হবে ? আমি তাদেরকে প্রশ্ন করলাম, তোমরা কেনো দিল্লিতে চলে এসেছো ? কেনো তোমরা সেখানে মরে গেলে না ? আমি এখনও বিশ্বাস করি যে, আমরা যেখানে বসবাস করছি, সে স্থান আমাদের কখনো ত্যাগ করা উচিত নয়। এমনকি সেখানকার লোকেদের কাছ থেকে নিষ্ঠুর ব্যবহার পেলে বা মৃত্যু নিশ্চিত হলেও না। যদি সেই লোকেরা আমাদেরকে হত্যা করে, তবে যাও, মুখে ভগবানের নাম নিতে নিতে তাদের হাতে বীরের মৃত্যু বরণ করো। যদি আমাদের লোকেদের হত্যা করা হয়, তবে কেনো আমরা অন্য কারো ওপর ক্রুদ্ধ হবো ? যদি তাদের হত্যা করা হয় তবে বুঝে নিতে হবে যে, তারা আকাঙ্ক্ষিত উত্তম গতিই লাভ করেছে।”
গান্ধী এ ব্যাপারে আরো বলে- যা নাথুরাম গডসে তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছে- “যাদের হত্যা করা হয়েছে, তারা যদি সাহসের সাথে মৃত্যু বরণ করে থাকে, তবে তারা কিছুই হারায় নি, বরং কিছু অর্জন করেছে।… মৃত্যুর জন্য তাদের ভীত হওয়া উচিত নয়। প্রকৃতপক্ষে যারা হত্যা করেছে, তারা তো আমাদেরই ভাই ছাড়া আর কেউ নয়, তারা আমাদেরই মুসলমান ভাই।”
‘ফ্রিডম এ্যাট মিডনাইট’ গ্রন্থের ৩৮৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা কয়েকজন হিন্দু গান্ধীর সাথে দেখা করলে গান্ধী তাদেরকে আবার পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যাবার পরামর্শ দেয়, যদিও তাদের ফিরে যাবার অর্থ ছিলো নিশ্চিত মৃত্যু। গান্ধী তাদেরকে বলে, “একটি মুসলমানকেও হত্যা না করে শেষ মানুষটি পর্যন্ত সমস্ত পাঞ্জাবী যদি হিন্দু যদি মৃত্যুবরণ করে, তবে পাঞ্জাব অমর হবে, তোমরা যাও এবং অহিংসার স্বার্থে স্বেচ্ছাকৃত বলি হও।” এই সময় হিন্দু শরণার্থীরা পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত হয়ে সাময়িক ভাবে দিল্লি কিছু মসজিদে আশ্রয় নেয়, কিন্তু ভারতের মুসলমানরা আপত্তি জানালে গান্ধী সমস্ত শরনার্থীদেরকে শিশু স্ত্রীলোক সহ রাস্তায় থাকতে বাধ্য করে। গান্ধী তার অহিংসা নীতিকে বোঝাবার জন্য ১৯২৬ সালের ৬ জুলাই নবজীবন পত্রিকায় গান্ধী লিখেছিলো যে, “কোনো মুসলমান যদি ঘরে ঢুকে আমার বোনকে ধর্ষণ করে আমি সেই ধর্ষনকারীর পায়ে চুমু খাবো।” গান্ধী এই হিজড়া মনোভাবের ফলে কিভাবে হিন্দু মেয়েরা মুসলমানদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে, তা বুঝতে পারবেন নিচের এই ঘটনাগুলোতে-
ফ্রিডম এ্যাট মিডনাইট’ গ্রন্থের ৪৭৯ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে, দেশভাগের প্রাক্কালে পাঞ্জাবের মেয়েরা যখন মুসলমানদের হাতে ধর্ষিতা হচ্ছিলো, তখন গান্ধী তাদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়েছিলো, “কোনো মুসলমান কোনো মহিলাকে ধর্ষণ করতে চাইলে, তারা কখনোই সেই মুসলমানকে বাধা দেবে না, বরং তার সাথে সহযোগিতা করবে। সেই মহিলার তখন উচিত হবে দুই দাঁতের মধ্যে জিভ কামড়ে মরার মতো শুয়ে থাকা।”
১৯৪৬ সালে নোয়াখালিতে হিন্দু হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের সময় এ সম্পর্কে গান্ধী যেসব কথাবার্তা বলেছে, তা শুনলেও যে কোনো সুস্থ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের বমি আসবে। নিচে সেগুলোর কিছু বর্ণনা দিচ্ছি-
নোয়াখালির হিন্দুদেরকে, মুসলমানদের এই বর্বরতা থেকে রক্ষা করার জন্য ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ও অন্যান্য শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পক্ষ থেকে গান্ধীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছিলো, কিন্ত গান্ধী প্রথমে নোয়াখালি আসতেই রাজী হয় নি; কারণ, নোয়াখালি এসে তার কর্তব্য কর্ম কী হবে, সেই বিষয়ে ঈশ্বর নাকি তাকে কোনো নির্দেশ দেয় নি ! তাই মুসলমানদের আক্রমনে নিপীড়িত হিন্দুদের প্রতি সমবেদনা এবং দুঃখ জানিয়েই সে তার কর্তব্যকর্ম শেষ করে। দিল্লিতে বসে গান্ধী যে বিবৃতি দেয়, ১৭ অক্টোবর, কোলকাতা থেকে প্রকাশিত অমৃতবাজার পত্রিকা তা ছাপিয়েছিলো। বিবৃতির বক্তব্য একরম : "নোয়াখালির সংবাদ আমি শুনেছি, শুনেছি কলকাতার রক্তস্নানের কথাও; কিন্তু আমি খুঁজছি, এই মূহুর্তে আমার কর্তব্য কর্ম কী ? নিশ্চয় ঈশ্বর আমাকে পথ দেখাবে।"
শুধু তাই নয়, হিন্দুদের উপর এই আক্রমনের জন্য মুসলিম লীগ বা আক্রমনে মদত দেওয়ার জন্য সুরাবর্দীর সাম্প্রদায়িক প্রশাসন সম্পর্কেও গান্ধী কোনো মন্তব্য করতে রাজী হয় নি; এ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে গান্ধী বলেছিলো, "২৩ অক্টোবর দিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির যে সভা বসবে তার আগে আমি মুখ খুলবো না।" পাপাত্মা গান্ধী, নোয়াখালির হিন্দুদের, মুসলমানদের অত্যাচারের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার এক অসাধারণ অহিংস পথের সন্ধান দিয়েছিলো। এই নপুংসক, মুসলমানদের সশস্ত্র আক্রমনে ক্ষত বিক্ষত ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হিন্দুদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিলো, "তারা (হিন্দুরা) যেন কখনোই অসহায়ভাবে মৃত্যু বরণ না করে। বরং তাদের উচিত একটিও শব্দ না করে হত্যাকারীদের তরবারির দিকে মাথা এগিয়ে দেওয়া, তাহলেই দাঙ্গা থেমে যাবে।"
শুধু এখানেই শেষ নয়, এই পাপাত্মা, ধর্ষিতা বা অপহৃতা নোয়াখালির মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলেছিলো, "তারা যেন তাদের অত্যাচারীদের বাধা না দেয়; কারণ, মেয়েদের জানা উচিত কিভাবে মৃত্যু বরণ করতে হয়। সুতরাং খুব সাহসের সাথে মৃত্যুর মুখোমুখী দাঁড়াতে হবে এবং এর জন্য একটুও শোক করা উচিত নয়; কেবলমাত্র তাহলেই তাদের উপর এই অত্যাচার (ধর্ষণ ও অপহরণ) বন্ধ হবে।" আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে গান্ধীর প্রকৃত জন্মদাতা কে ? সে কোনো মানুষ , না অন্য কোনো জানোয়ার ? গান্ধীকে এখন আমার হিজড়া বলে গালি দিতেও খারাপ লাগে। কারণ, এতে প্রকৃতির খেয়ালে যারা হিজড়া হয়ে জন্ম নিয়েছে, আমার মনে হয়, তাদেরকে অপমান করা হয়।
২৪ অক্টোবর, ১৯৪৬ সালে, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির হিন্দু মহাসভার নেতৃত্বে এক বিরাট জনতা দিল্লিতে গান্ধীর হরিজন কলোনীর প্রার্থনা সভায় উপস্থিত হয়। তারা গান্ধীকে নোয়াখালির হিন্দু মেয়েদের সম্ভ্রম রক্ষা ও সাম্প্রদায়িক সুরাবর্দীর মন্ত্রীসভাকে বাতিল করার ব্যবস্থা নিতে বলেন। কিন্তু গান্ধী পুনরায় তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে নোয়াখালির সমস্ত হিন্দুকে মুসলমানদের তরবারির নিকট আত্মসমর্পন করার পরামর্শ দেয়; কেননা, তার মতে, মুসলমান আক্রমনকারীদের বাধা দেওয়ার মানেই হলো অযথা রক্তপাত। সেই সময় গান্ধী আবারও উপস্থিত লোকজনকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার সেই বিখ্যাত দুর্গন্ধময় আবর্জনা, "নিহত হও, কিন্তু কাউকে হত্যা করো না।" গান্ধীর এসব মল মূত্র ভারত বাসীর জন্য প্রকাশ করেছিলো অমৃত বাজার পত্রিকা ২৫.১০. ১৯৪৬ তারিখে। ১৯৪৬ সালে যখন নোয়াখালিতে হিন্দু হত্যা হচ্ছিলো তখন গান্ধী সেখানে তো সাথে সাথে যায় ই নি, গিয়েছিলো হিন্দু হত্যা ও ধর্ষণের সব ঘটনা যখন শেষ হয়ে গেছে, তখন হত্যা নির্যাতন শুরুর ২৬ দিন পর, কিন্তু নোয়াখালির প্রতিক্রিয়ায় বিহারে যখন দাঙ্গা শুরু হয়, সেই দাঙ্গা থামাতে গান্ধী সেখানে গিয়েছিলো সাথে সাথে এবং দাঙ্গা বন্ধ করার ব্যবস্থাও করেছিলো; কারণ, বিহারে তার জাত ভাই মুসলমনারা বেশি সংখ্যায় মরছিলো। গান্ধীর এই মুসলিম প্রীতির জন্য অনেকে গান্ধীর জীবদ্দশাতেই তাকে মোহাম্মদ গান্ধী বলতো।
এ পোস্টে এই পর্যন্তই, গান্ধীর কুকর্মের আরো ইতিহাস পাবেন পরের পর্বে।
জয় হিন্দ।
Collected Ruposhree Roy
0 notes
পবিত্র রমযানে মাসে' আলেম-ওলামাদের উপর জূলুম-নিপীড়ন বন্ধ করুন
পবিত্র রমযানে মাসে' আলেম-ওলামাদের উপর জূলুম-নিপীড়ন বন্ধ করুন-
পবিত্র রমযান মাসে আলেম-ওলামাদের উপর জুলূম- নির্যাতন বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) এর কেন্দ্রীয় নেতা জনাব খোরশেদ আলম। রহমত, বরকত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির মহাসম্মানিত মাহে রমজান।
রমজান সিয়াম সাধনা করে মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য হাসিল করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য। আর এই রোজার মাসে তারাবীহ নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর মসজিদের…
View On WordPress
0 notes
আল্লাহর পথে আহবান এর পরিচিতি: দাওয়াহ, আমর, নাহই, তাবলীগ, নসিহত, ওয়াজ
নিজের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিজের আশেপাশে অবস্থানরত অন্যান্য মানুষদের মধ্যে আল্লাহর দীনকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব। এ জন্য মুমিনের জীবনের একটি বড় দায়িত্ব হলো –আল আমরু বিল মারুফ অয়ান নাহ্ইউ আনিল মুনকার– অর্থাৎ ন্যায় কাজের আদেশ ও অন্যায় থেকে নিষেধ করা। আদেশ ও নিষেধকে একত্রে আদ-দাওয়াতু ইলাল্লাহ বা আল্লাহর দিকে আহবান বলা হয়। এ ইবাদত পালনকারীকে দায়ী ইলাল্লাহ বা আল্লাহর দিকে আহবানকারী ও সংক্ষেপে দায়ী অর্থাৎ দাওয়াতকারী বা দাওয়াত-কর্মী বলা হয়। দাওয়াত (الدعوة) শব্দের অর্থ, আহবান করা বা ডাকা। আরবিতে (الأمر) বলতে আদেশ, নির্দেশ, উপদেশ, অনুরোধ, অনুনয় সবই বুঝায়। অনুরূপভাবে নাহই (النهي) বলতে নিষেধ, বর্জনের অনুরোধ ইত্যাদি বুঝানো হয়। কোরআন-হাদিসে এই দায়িত্ব বুঝানোর জন্য আরো অনেক পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে: তন্মধ্যে রয়েছে আত-তাবলীগ (التبليغ) আন-নাসীহাহ (النصيحة) আল-ওয়াজ (الوعظ) ইত্যাদি। আত-তাবলীগ অর্থ পৌঁছানো, প্রচার করা, খবর দেওয়া, ঘোষণা দেওয়া বা জানিয়ে দেওয়া। আন-নাসীহাহ শব্দের অর্থ আন্তরিক ভালবাসা ও কল্যাণ কামনা। এ ভালবাসা ও কল্যাণ কামনা প্রসূত ওয়াজ, উপদেশ বা পরামর্শকেও নসিহত বলা হয়। ওয়াজ বাংলায় প্রচলিত অতি পরিচিত আরবি শব্দ। এর অর্থ উপদেশ, আবেদন, প্রচার, সতর্কীকরণ ইত্যাদি। দাওয়াতের এই দায়িত্ব পালনকে কোরআনুল কারিমে ইকামতে দীন বা দীন প্রতিষ্ঠা বলে অভিহিত করা হয়েছে। এগুলি সবই একই ইবাদতের বিভিন্ন নাম এবং একই ইবাদতের বিভিন্ন দিক। পরবর্তী আলোচনা থেকে আমরা তা বুঝতে পারব, ইনশাআল্লাহ।
কোরআন-হাদিসের আলোকে দাওয়াত-এর গুরুত্ব
নবী রাসূলগণের মূল দায়িত্ব: সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা এককথায় আল্লাহর দীন পালনের পথে আহবান করাই ছিল সকল নবী ও রাসূলের (আলাইহিমুস সালাম) দায়িত্ব। সকল নবীই তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন এবং শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন: “যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যাঁর উল্লেখ তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইনজীলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেন।” [সূরা আরাফ: ১৫৭]
এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কর্মকে আদেশ ও নিষেধ নামে অভিহিত করা হয়েছে। অন্যত্র এ কর্মকে দাওয়াত বা আহবান নামে অভিহিত করা হয়েছে। আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা বলেন: “তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন না, অথচ রাসূল তোমাদেরকে আহবান করছেন যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আন।” [সূরা হাদীদ: ৮]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ দায়িত্বকে দাওয়াত বা আহবান বলে অভিহিত করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন: “আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে আহবান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।” [সূরা নাহল: ১২৫]
অন্যত্র এই দায়িত্বকেই তাবলিগ বা প্রচার বলে অভিহিত করা হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন: “হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা আপনি প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার করলেন না।” [সূরা মায়েদা : ৬৭]
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে, প্রচার বা পোঁছানোই রাসূলগণের একমাত্র দায়িত্ব। নিচের আয়াতে বলা হয়েছে: “রাসূলগণের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।” [সূরা নাহল: ৩৫]
নূহ আ.- এর জবানিতে বলা হয়েছে: “আমি আমার প্রতিপলকের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।” [সূরা আরাফ: ৬২]
সূরা আরাফের ৬৮, ৭৯, ৯৩ নম্বর আয়াত, সূরা হুদ-এর ৩৪ নম্বর আয়াত ও অন্যান্য স্থানে দাওয়াতকে নসিহত বলে অভিহিত করা হয়েছে। সূরা শুরার ১৩ আয়াতে বলেছেন: “তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নূহকে- আর যা আমি ওহী করেছি আপনাকে- এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা এবং ঈসাকে, এ বলে যে, তোমরা দীন প্রতিষ্ঠা কর এবং তাতে দলাদলি-বিচ্ছিন্নতা করো না। আপনি মুশরিকদের যার প্রতি আহবান করছেন তা তাদের নিকট দুর্বহ মনে হয়।” [সূরা শুরা: ১৩]
তাবারি, ইবনু কাসির ও অন্যান্য মুফাসসির, সাহাবি-তাবিয়ি মুফাসসিরগণ থেকে উদ্ধৃত করেছেন যে, দীন প্রতিষ্ঠার অর্থ হলো দীন পালন করা। আর দীন পরিপূর্ণ পালনের মধ্যেই রয়েছে আদেশ, নিষেধ ও দাওয়াত। এ অর্থে কোনো কোনো গবেষক দীন পালন বা নিজের জীবনে দীন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অন্যদের জীবনে দীন প্রতিষ্ঠার দাওয়াতকেও ইকামতে দীন বলে গণ্য করেছেন।
উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্যদাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দীন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্বই উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য।ইরশাদ হয়েছে: “আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।” [সূরা আলে ইমরান: ১০৪]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন: “তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়কার্যে আদেশ এবং অন্যায় কার্যে নিষেধ কর এবং আল্লাহতে বিশ্বাস কর।” [সূরা আলে ইমরান: ১১০]
প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন: “তারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা কল্যাণকর কাজে দ্রুত ধাবিত হয় এবং তারা নেককারদের অন্তর্ভুক্ত।” [সূরা আলে ইমরান: ১১৪]
আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলা আরও বলেন: “আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [সূরা তাওবা: ৭১]
সূরা তাওবার ১১২ আয়াতে, সূরা হজ্জের ৪১ আয়াতে, সূরা লুকমানের ১৭ আয়াতে ও অন্যান্য স্থানেও উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহর প্রকৃত মুমিন বান্দাদের অন্যতম বৈশিষ্ট হলো সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ।
এভাবে আমরা দেখছি যে, ঈমান, নামাজ, রোজা ইত্যাদি ইবাদতের মত সৎকাজের নির্দেশ ও অসৎকাজের নিষেধ মুমিনের অন্যতম কর্ম। শুধু তাই নয়, মুমিনদের পারস্পারিক বন্ধুত্বের দাবি হলো যে, তারা একে অপরের আন্যায় সমর্থন করেন না, বরং একে অপরকে ন্যায়কর্মে নির্দেশ দেন এবং অন্যায় থেকে নিষেধ করেন। এখানে আরো লক্ষণীয়, এ সকল আয়াতে ঈমান, নামাজ, জাকাত ইত্যাদির আগে সৎকার্যে আদেশ ও অসৎকার্যে নিষেধ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকে আমরা মুমিনের জীবনে এর সবিশেষ গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারি।
এই দায়িত্বপালনকারী মুমিনকেই সর্বোত্তম বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন: “ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কথায় কে উত্তম যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলিমদের একজন।” [ সূরা ফুসসিলাত: ৩৩ ]
আমরা দেখেছি যে, আদেশ, নিষেধ বা দাওয়াত-এর আরেক নাম নসিহত। নসিহত বর্তমানে সাধারণভাবে উপদেশ অর্থে ব্যবহৃত হলেও মূল আরবিতে নসিহত অর্থ আন্তরিকতা ও কল্যাণ কামনা। কারো প্রতি আন্তিরকতা ও কল্যাণ কামনার বহি:প্রকাশ হলো তাকে ভাল কাজের পরামর্শ দেওয়া ও খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করা। এ কাজটি মুমিনদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি অন্যতম দায়িত্ব। বরং এই কাজটির নামই দীন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “দীন হলো নসিহত। সাহাবিগণ বললেন, কার জন্য ? বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য, মুসলিমগণের নেতৃবর্গের জন্য এবং সাধারণ মুসলিমদের জন্য।” (মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ নসিহতের জন্য সাহাবিগণের বাইআত তথা প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করতেন। বিভিন্ন হাদিসে জারির ইবনু আব্দুল্লাহ রা. মুগিরা ইবনু শুবা রা. প্রমুখ সাহাবি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বাইয়াত বা প্রতিজ্ঞা করেছি, সালাত কায়েম, জাকাত প্রদান ও প্রত্যেক মুসলিমের নসিহত (কল্যাণ কামনা) করার উপর।“(বোখারি)।
এ অর্থে তিনি সৎকার্যে আদেশ ও অসৎকার্যে নিষেধের বাইয়াত গ্রহণ করতেন। উবাদাহ ইবনু সামিত ও অন্যান্য সাহাবি রা. বলেন: “আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে বাইয়াত করি আনুগত্যের… এবং সৎকর্মে আদেশ ও অসৎকর্মে নিষেধের এবং এ কথার উপর যে, আমরা মহিমাময় আল্লাহর জন্য কথা বলব এবং সে বিষয়ে কোন নিন্দুকের নিন্দা বা গালি গালাজের তোয়াক্কা করব না।” (আহমাদ, বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য সনদে)।
ক্ষমতা বনাম দায়িত্ব এবং ফরজে আইন বনাম ফরজে কিফায়া
আদেশ নিষেধের জন্য স্বভাবতই ক্ষমতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন। এ জন্য যারা সমাজে ও রাষ্ট্রে দায়িত্ব ও ক্ষমতায় রয়েছেন তাদের জন্য এ দায়িত্ব অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফরজে আইন বা ব্যক্তিগতভাবে ফরজ। দায়িত্ব ও ক্ষমতা যত বেশি, আদেশ ও নিষেধের দায়িত্বও তত বেশি। আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার ভয়ও তাদের তত বেশি। আল্লাহ তায়ালা বলেন: “যাদেরকে আমি পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে বা ক্ষমতাবান করলে তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত দেয়, সৎকার্যে নির্দেশ দেয় এবং অসৎকার্যে নিষেধ করে। আর সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারে।” [সূরা হজ্জ : ৪১]
এ জন্য এ বিষয়ে শাসকগোষ্ঠী, প্রশাসনের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ, আঞ্চলিক প্রশাসকবর্গ, বিচারকবর্গ, আলিমগণ, বুদ্ধিজীবিবর্গ ও সমাজের অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের দায়িত্ব অন্যদের চেয়ে বেশি, তাদের জন্য আশংকাও বেশি। তাদের মধ্যে কেউ যদি দায়িত্ব পালন না করে নিশ্চুপ থাকেন তবে তার পরিণতি হবে কঠিন ও ভয়াবহ।অনুরূপভাবে নিজের পরিবার, নিজের অধীনস্থ মানুষগণ ও নিজের প্রভাবাধীন মানুষদের আদেশ-নিষেধ করা গৃহকর্তা বা কর্মকর্তার জন্য ফরজে আইন। কারণ আল্লাহ তাকে এদের উপর ক্ষমতাবান ও দায়িত্বশীল করেছেন এবং তিনি তাকে এদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “সাবধান! তোমরা সকলেই অভিভাবকত্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। মানুষদের উপর দায়িত্বপ্রাপ্ত শাসক বা প্রশাসক, অভিভাবক এবং তাকে তার অধীনস্ত জনগণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। বাড়ির কর্তাব্যক্তি তার পরিবারের সদস্যদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিভাবক এবং তাকে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ি ও তার সন্তান-সন্ততির দায়িত্বপ্রাপ্তা এবং তাকে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে।” (বোখারি ও মুসলিম)।
কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, অন্যায় ও অসৎকর্মের প্রতিবাদ করা শুধুমাত্র এদেরই দায়িত্ব। বরং তা সকল মুসলমানের দায়িত্ব। যিনি অন্যায় বা গর্হিত কর্ম দেখবেন তার উপরেই দায়িত্ব হয়ে যাবে সাধ্য ও সুযোগমত তার সংশোধন বা প্রতিকার করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “তোমাদের কেউ যদি কোনো অন্যায় দেখতে পায় তবে সে তাকে তার বাহুবল দিয়ে প্রতিহত করবে। যদি তাতে সক্ষম না হয় তবে সে তার বক্তব্যের মাধ্যমে (প্রতিবাদ) তা পরিবর্তন করবে। এতেও যদি সক্ষম না হয় তা হলে অন্তর দিয়ে তার পরিবর্তন (কামনা ) করবে। আর এটা হলো ঈমানের দুর্বলতম পর্যায়।” (মুসলিম)।
এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, প্রত্যেক মুমিনেরই দায়িত্ব হলো, অন্যায় দেখতে পেলে সাধ্য ও সুযোগ মত তার পরিবর্তন বা সংশোধন করা। এক্ষেত্রে অন্যায়কে অন্তর থেকে ঘৃণা করা এবং এর অবসান ও প্রতিকার কামনা করা প্রত্যেক মুমিনের উপরেই ফরজ। অন্যায়ের প্রতি হৃদয়ের বিরক্তি ও ঘৃণা না থাকা ঈমান হারানোর লক্ষণ। আমরা অগণিত পাপ, কুফর, হারাম ও নিষিদ্ধ কর্মের সয়লাবের মধ্যে বাস করি। বারংবার দেখতে দেখতে আমাদের মনের বিরক্তি ও আপত্তি কমে যায়। তখন মনে হতে থাকে, এ তো স্বাভাবিক বা এ তো হতেই পারে। পাপকে অন্তর থেকে মেনে নেওয়ার এ অবস্থাই হলো ঈমান হারানোর অবস্থা। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নিষেধ করেছেন বা যা পাপ ও অন্যায় তাকে ঘৃণা করতে হবে, যদিও তা আমার নিজের দ্বারা সংঘটিত হয় বা বিশ্বের সকল মানুষ তা করেন। এ হলো ঈমানের নূন্যতম দাবী।
উপরের আয়াত ও হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে ক্ষমতার ভিত্তিতে এই ইবাদতটির দায়িত্ব বর্তাবে। এ জন্য ফকীহগণ উল্লেখ করেছেন যে, দীন প্রতিষ্ঠা বা দাওয়াত ও আদেশ নিষেধের এ ইবাদতটি সাধারণভাবে ফরজে কিফায়া।
যদি সমাজের একাধিক মানুষ কোনো অন্যায় বা শরিয়ত বিরোধী কর্মের কথা জানতে পারেন বা দেখতে পান তাহলে তার প্রতিবাদ বা প্রতিকার করা তাদের সকলের উপর সামষ্টিকভাবে ফরজ বা ফরজে কিফায়া। তাদের মধ্য থেকে কোনো একজন যদি এ দায়িত্ব পালন করেন তবে তিনি ইবাদতটি পালনের সাওয়াব পাবেন এবং বাকিদের জন্য তা মূলত: নফল ইবাদতে পরিণত হবে। বাকি মানুষেরা তা পালন করলে সাওয়াব পাবেন, তবে পালন না করলে গোনাহগার হবেন না। আর যদি কেউই তা পালন না করেন তাহলে সকলেই পাপী হবেন।
দুইটি কারণে তা ফরজে আইন বা ব্যক্তিগত ফরজে পরিণত হয়:
প্রথমত: ক্ষমতা। যদি কেউ জানতে পারেন যে, তিনিই এ অন্যায়টির প্রতিকার করার ক্ষমতা রাখেন তাহলে তার জন্য তা ফরজে আইন-এ পরিণত হয়। পরিবারের অভিভাবক, এলাকার বা দেশের রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দের জন্য এ দায়িত্বটি এ পর্যায়ে ফরজে আইন। এ ছাড়া যে কোনো পরিস্থিতিতে যদি কেউ বুঝতে পারেন যে, তিনি হস্তক্ষেপ করলে বা কথা বললে অন্যায়টি বন্ধ হবে বা ন্যায়টি প্রতিষ্ঠিত হবে তবে তা তার জন্য ফরজে আইন বা ব্যক্তিগতভাবে ফরজ হবে।
দ্বিতীয়ত: দেখা। যদি কেউ জানতে পারেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কেউ অন্যায়টি দেখেনি বা জানেনি, তবে তার জন্য তা নিষেধ করা ও পরিত্যাগের জন্য দাওয়াত দেওয়া ফরজে আইন বা ব্যক্তিগত ফরজ এ-পরিণত হয়। সর্বাবস্থায় এ প্রতিবাদ, প্রতিকার ও দাওয়াত হবে সাধ্যানুযায়ী হাত দিয়ে মুখ দিয়ে বা অন্তর দিয়ে।
আল্লাহর পথে দাওয়াত-এর বিষয়বস্তু দাওয়াত, আদেশ, নিষেধ, ওয়াজ, নসিহত ইত্যাদির বিষয়বস্তু কী? আমরা কোন কোন বিষয়ের দাওয়াত বা আদেশ-নিষেধ করব? কোন বিষয়ের কতটুকু গুরুত্ব দিতে হবে? আমরা কি শুধুমাত্র নামাজ রোজা ইত্যাদি ইবাদতের জন্য দাওয়াত প্রদান করব? নাকি চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা, সমাজ, মানবাধিকার, সততা ইত্যাদি বিষয়েও দাওয়াত প্রদান করব? আমরা কি শুধু মানুষদের জন্যই দাওয়াত প্রদান করব? নাকি আমরা জীব-জানোয়ার, প্রকৃতি ও পরিবেশের কল্যাণেও দাওয়াত ও আদেশ-নিষেধ করব?
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। ঈমান, বিশ্বাস, ইবাদত, মুআমালাত ইত্যাদি সকল বিষয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে এর বিস্তারিত নির্দেশনা রয়েছে। সকল বিষয়ই দাওয়াতের বিষয়। কিছু বিষয় বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কিছু বিষয়ের মধ্যে দাওয়াতকে সীমাবদ্ধ করার অধিকার মুমিনকে দেওয়া হয়নি। তবে গুরুত্বগত পার্থক্য রয়েছে। দাওয়াতের সংবিধান কোরআনুল কারিম ও হাদিস শরিফে যে বিষয়গুলির প্রতি দাওয়াতের বেশি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে, মুমিনও সেগুলির প্রতি বেশি গুরুত্ব প্রদান করবেন।
আমরা জানি যে, কোরআন ও হাদিসে প্রদত্ত গুরুত্ব অনুসারে মুমিন জীবনের কর্মগুলিকে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। ফরজে আইন, ফরজে কিফায়া, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুসতাহাব, হারাম, মাকরূহ, মুবাহ ইত্যাদি পরিভাষাগুলি আমাদের নিকট পরিচিত। কিন্তু অনেক সময় আমরা ফজিলতের কথা বলতে যেয়ে আবেগ বা অজ্ঞতা বসত এক্ষেত্রে মারাত্মক ভুল করে থাকি। নফল-মুসতাহাব কর্মের দাওয়াত দিতে যেয়ে ফরজ, ওয়াজেব কর্মের কথা ভুলে যাই বা অবহেলা করি। এছাড়া অনেক সময় মুসতাহাবের ফজিলত বলতে যেয়ে হারামের ভয়ঙ্কর পরিণতির কথা বলা হয় না।
কোরআন-হাদিসের দাওয়াত পদ্ধতি থেকে আমরা দাওয়াত ও দীন প্রতিষ্ঠার আদেশ নিষেধের বিষয়াবলীর গুরুত্বের পর্যায় নিম্নরূপ দেখতে পাই।
প্রথমত: তাওহিদ ও রিসালাতের বিশুদ্ধ ঈমান অর্জন ও সর্ব প্রকার শিরক, কুফর ও নিফাক থেকে আত্মরক্ষা সকল নবীরই দাওয়াতের বিষয় ছিল প্রথমত: এটি। কোরআন-হাদিসে এ বিষয়ের দাওয়াতই সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে। একদিকে যেমন তাওহিদের বিধানাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করে তাওহিদ প্রতিষ্ঠার দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, তেমনি বারংবার শিরক, কুফর ও নিফাকের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে তা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।বর্তমান সময়ে দীনের পথে দাওয়াতে ব্যস্ত অধিকাংশ দায়ী এই বিষয়টিতে ভয়ানকভাবে অবহেলা করেন। আমরা চিন্তা করি যে, আমরা তো মুমিনদেরকেই দাওয়াত দিচ্ছি। কাজেই ঈমান-আকিদা বা তাওহিদের বিষয়ে দাওয়াত দেওয়ার বা শিরক-কুফর থেকে নিষেধ করার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। অথচ মহান আল্লাহ বলেন: “তাদের অধিকাংশ আল্লাহর উপর ঈমান আনায়ন করে, তবে (ইবাদতে) শিরক করা অবস্থায়।” [ সূরা ইউসুফ: ১০৬ ]
হাদিস শরিফে মুমিনদেরকে বারংবার শিরক কুফর থেকে সাবধান করা হয়েছে। শিরক, কুফর ও নিফাক মুক্ত বিশুদ্ধ তাওহিদ ও রিসালাতের ঈমান ছাড়া নামাজ, রোজা, দাওয়াত, জিহাদ, জিকর, তাযকিয়া ইত্যাদি সকল ফরজ বা নফল ইবাদতই অর্থহীন।
দ্বিতীয়ত: বান্দার বা সৃষ্টির অধিকার সংশ্লিষ্ট হারাম বর্জনআমরা জানি ফরজকর্ম দুই প্রকার, করণীয় ফরজ ও বর্জনীয় ফরজ। যা বর্জন করা ফরজ তাকে হারাম বলা হয়। হারাম দুই প্রকার, প্রথম প্রকার হারাম, মানুষ ও সৃষ্টির অধিকার নষ্ট করা বা তাদের কোনো ক্ষতি করা বিষয়ক হারাম। এগুলি বর্জন করা সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ।পিতামাতা, স্ত্রী, সন্তান, অধীনস্ত, সহকর্মী, প্রতিবেশী, দরিদ্র, এতিম ও অন্যান্য সকলের অধিকার সঠিকভাবে আদায় করা, কোনোভাবে কারো অধিকার নষ্ট না করা, কাউকে জুলুম না করা, গীবত না করা, ওজন-পরিমাপ ইত্যাদিতে কম না করা, প্রতিজ্ঞা, চুক্তি, দায়িত্ব বা আমানত আদায়ে আবহেলা না করা, হারাম উপার্জন থেকে আত্মরক্ষা করা, নিজের বা আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হলেও ন্যয় কথা বলা ও ন্যয় বিচার করা, কাফির শত্রুদের পক্ষে হলেও ন্যয়ানুগ পন্থায় বিচার-ফয়সালা করা ইত্যাদি বিষয় কোরআন ও হাদিসের দাওয়াত ও আদেশ নিষেধের অন্যতম গুরিত্বপূর্ণ বিষয়।এমনকি রাস্তাঘাট, মজলিস, সমাজ বা পরিবেশে কাউকে কষ্ট দেওয়া এবং কারো অসুবিধা সৃষ্টি করাকেও হাদিস শরিফে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে। সৃষ্টির অধিকার বলতে শুধু মানুষদের অধিকারই বুঝানো হয়নি। পশুপাখির অধিকার সংরক্ষণ, মানুষের প্রয়োজন ছাড়া কোনো প্রাণীকে কষ্ট না দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে অত্যন্ত কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। দাওয়াতের ক্ষেত্রে অনেক সময় এ বিষয়গুলি অবহেলিত। এমনকি অনেক দায়ী বা দাওয়াতকর্মীও এ সকল অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েন।
যেকোনো কর্মস্থলে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জন্য কর্মস্থলের দায়িত্ব পরিপূর্ণ আন্তরিকতার সাথে সঠিকভাবে পালন করা ফরজে আইন। যদি কেউ নিজের কর্মস্থলে ফরজ সেবা গ্রহণের জন্য আগত ব্যক্তিকে ফরজ সেবা প্রদান না করে তাকে পরদিন আসতে বলেন বা একঘন্টা বসিয়ে রেখে চাশতের নামাজ আদায় করেন বা দাওয়াতে অংশ গ্রহণ করেন তাহলে তিনি মূলত: ঐ ব্যক্তির মত কর্ম করছেন, যে ব্যক্তি পাগড়ির ফজিলতের কথায় মোহিত হয়ে লুঙ্গি খুলে উলঙ্গ হয়ে পাগড়ি পরেছেন।
অধিকার ও দায়িত্ব বিষয়ক আদেশ-নিষেধ কোরআন হাদিসে বেশি থাকলেও আমরা এ সকল বিষয়ে বেশি আগ্রহী নই। কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্যদেরকে কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন ও আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানের বিষয়ে দাওয়াত ও আদেশ নিষেধ করতে আমরা আগ্রহী নই। অবৈধ পার্কিং করে, রাস্তার উপর বাজার বসিয়ে, রাস্তা বন্ধ করে মিটিং করে বা অনুরূপ কোনোভাবে মানুষের কষ্ট দেওয়া, অপ্রয়োজনীয় ধোঁয়া, গ্যাস, শব্দ ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের বা জীব জানোয়ারের কষ্ট দেওয়া বা প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা, দাওয়াত বা আদেশ-নিষেধ করাকে আমরা অনেকেই আল্লাহর পথে দাওয়াতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করি না। বরং এগুলিকে জাগতিক, দুনিয়াবী বা আধুনিক বলে মনে করি।
তৃতীয়ত: পরিবার ও অধীনস্তদেরকে ইসলাম অনুসারে পরিচালিত করাবান্দার হক, বা মানবাধিকার বিষয়ক দায়িত্ব সমূহের অন্যতম হলো নিজের দায়িত্বাধীনদেরকে দীনের দাওয়াত দেওয়া ও দীনের পথে পরিচালিত করা। দাওয়াতকর্মী বা দায়ী নিজে যেমন এ বিষয়ে সতর্ক হবেন, তেমনি বিষয়টি দাওয়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে গ্রহণ করবেন।
চতুর্থত: অন্যান্য হারাম বর্জন করাহত্যা, মদপান, রক্তপান, শুকরের মাংস ভক্ষণ, ব্যভিচার, মিথ্যা, জুয়া, হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার, রিয়া ইত্যাদিও হারাম। দায়ী বা দাওয়াতকর্মী নিজে এ সব থেকে নিজের কর্ম ও হৃদয়কে পবিত্র করবেন এবং এগুলি থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য দাওয়াত প্রদান করবেন। আমরা দেখতে পাই যে, কুরাআন ও হাদিসে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বারংবার বিভিন্নভাবে এবিষয়ক দাওয়াত প্রদান করা হয়েছে।
পঞ্চমত: পালনীয় ফরজ-ওয়াজিবগুলি আদায় করানামাজ, জাকাত, রোজা, হজ্জ, হালাল উপার্জন, ফরজে আইন পর্যায়ের ইলম শিক্ষা ইত্যাদি এ জাতীয় ফরজ ইবাদত এবং দাওয়াতের অন্যতম বিষয়।
ষষ্ঠত: সৃষ্টির উপকার ও কল্যাণমূলক সুন্নাত-নফল ইবাদত করাসকল সৃষ্টিকে তার অধিকার বুঝে দেওয়া ফরজ। অধিকারের অতিরিক্ত সকলকে যথাসাধ্য সাহায্য ও উপকার করা কোরআন হাদিসের আলোকে সর্বশ্রেষ্ঠ নফল ইবাদত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও প্রিয়তম পথ। ক্ষুধার্তকে আহার দেওয়া, দরিদ্রকে দারিদ্রমুক্ত করা, বিপদগ্রস্থকে বিপদ হতে মুক্ত হতে সাহায্য করা, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং যে কোনোভাবে যে কোনো মানুষের বা সৃষ্টির কল্যাণ, সেবা বা উপকারে সামান্যতম কর্ম আল্লাহর নিকট অত্যন্ত প্রিয়। কোরআন ও হাদিসে এ সকল বিষয়ে বারংবার দাওয়াত ও আদেশ নিষেধ করা হয়েছে।
সপ্তমত: আল্লাহ ও তাঁর বান্দার মধ্যকার সুন্নত-নফল ইবাদত করানফল নামাজ, রোজা, যিকির, তিলাওয়াত, ফরজে কিফায়া বা নফল পর্যায়ের দাওয়াত, তাবলিগ, জিহাদ, নসিহত, তাযকিয়া ইত্যাদি এ পর্যায়ের। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দাওয়াতে রত মুমিনগণ ষষ্ঠ পর্যায়ের নফল ইবাদতের চেয়ে সপ্তম পর্যায়ের নফল ইবাদতের দাওয়াত বেশি প্রদান করেন। বিশেষত, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান তৈরি, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসা সেবা প্রদান ইত্যাদি বিষয়ের দাওয়াত প্রদানকে আমরা আল্লাহর পথে দাওয়াত বলে মনেই করি না। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, মানুষ ছাড়া অন্য কোনো জীব-জানোয়ারও যদি কোনো অন্যায় বা ক্ষতির কর্মে লিপ্ত থাকে সাধ্য ও সুযোগমত তার প্রতিকার করাও আদেশ নিষেধ ও কল্যাণ কামনার অংশ। যেমন কারো পশু বিপদে পড়তে যাচ্ছে বা কারো ফসল নষ্ট করছে দেখতে পেলে মুমিনের দায়িত্ব হল সুযোগ ও সাধ্যমত তার প্রতিকার করা। তিনি এই কর্মের জন্য আদেশ-নিষেধ ও নসিহতের সাওয়াব লাভ করবেন। পূর্ববর্তী যুগের প্রাজ্ঞ আলেমগণ এ সকল বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেকেই এ সকল বিষয়কে আল্লাহর পথে দাওয়াত বা দীন প্রতিষ্ঠার অংশ বলে বুঝতে পারেন না। মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করুন।
0 notes
কোরআন-হাদিসের আলোকে দাওয়াত-এর গুরুত্ব
নবী রাসূলগণের মূল দায়িত্ব: সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষে���, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা এককথায় আল্লাহর দীন পালনের পথে আহবান করাই ছিল সকল নবী ও রাসূলের (আলাইহিমুস সালাম) দায়িত্ব। সকল নবীই তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন এবং শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন: “যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যাঁর উল্লেখ তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইনজীলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেন।” [সূরা আরাফ: ১৫৭]
এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কর্মকে আদেশ ও নিষেধ নামে অভিহিত করা হয়েছে। অন্যত্র এ কর্মকে দাওয়াত বা আহবান নামে অভিহিত করা হয়েছে। আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা বলেন: “তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন না, অথচ রাসূল তোমাদেরকে আহবান করছেন যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আন।” [সূরা হাদীদ: ৮]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ দায়িত্বকে দাওয়াত বা আহবান বলে অভিহিত করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন: “আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে আহবান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।” [সূরা নাহল: ১২৫]
অন্যত্র এই দায়িত্বকেই তাবলিগ বা প্রচার বলে অভিহিত করা হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন: “হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা আপনি প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার করলেন না।” [সূরা মায়েদা : ৬৭]
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে, প্রচার বা পোঁছানোই রাসূলগণের একমাত্র দায়িত্ব। নিচের আয়াতে বলা হয়েছে: “রাসূলগণের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।” [সূরা নাহল: ৩৫]
নূহ আ.- এর জবানিতে বলা হয়েছে: “আমি আমার প্রতিপলকের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।” [সূরা আরাফ: ৬২]
সূরা আরাফের ৬৮, ৭৯, ৯৩ নম্বর আয়াত, সূরা হুদ-এর ৩৪ নম্বর আয়াত ও অন্যান্য স্থানে দাওয়াতকে নসিহত বলে অভিহিত করা হয়েছে। সূরা শুরার ১৩ আয়াতে বলেছেন: “তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নূহকে- আর যা আমি ওহী করেছি আপনাকে- এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা এবং ঈসাকে, এ বলে যে, তোমরা দীন প্রতিষ্ঠা কর এবং তাতে দলাদলি-বিচ্ছিন্নতা করো না। আপনি মুশরিকদের যার প্রতি আহবান করছেন তা তাদের নিকট দুর্বহ মনে হয়।” [সূরা শুরা: ১৩]
তাবারি, ইবনু কাসির ও অন্যান্য মুফাসসির, সাহাবি-তাবিয়ি মুফাসসিরগণ থেকে উদ্ধৃত করেছেন যে, দীন প্রতিষ্ঠার অর্থ হলো দীন পালন করা। আর দীন পরিপূর্ণ পালনের মধ্যেই রয়েছে আদেশ, নিষেধ ও দাওয়াত। এ অর্থে কোনো কোনো গবেষক দীন পালন বা নিজের জীবনে দীন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অন্যদের জীবনে দীন প্রতিষ্ঠার দাওয়াতকেও ইকামতে দীন বলে গণ্য করেছেন।
উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্যদাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দীন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্বই উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য।ইরশাদ হয়েছে: “আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।” [সূরা আলে ইমরান: ১০৪]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন: “তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়কার্যে আদেশ এবং অন্যায় কার্যে নিষেধ কর এবং আল্লাহতে বিশ্বাস কর।” [সূরা আলে ইমরান: ১১০]
প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন: “তারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা কল্যাণকর কাজে দ্রুত ধাবিত হয় এবং তারা নেককারদের অন্তর���ভুক্ত।” [সূরা আলে ইমরান: ১১৪]
আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলা আরও বলেন: “আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [সূরা তাওবা: ৭১]
সূরা তাওবার ১১২ আয়াতে, সূরা হজ্জের ৪১ আয়াতে, সূরা লুকমানের ১৭ আয়াতে ও অন্যান্য স্থানেও উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহর প্রকৃত মুমিন বান্দাদের অন্যতম বৈশিষ্ট হলো সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ।
এভাবে আমরা দেখছি যে, ঈমান, নামাজ, রোজা ইত্যাদি ইবাদতের মত সৎকাজের নির্দেশ ও অসৎকাজের নিষেধ মুমিনের অন্যতম কর্ম। শুধু তাই নয়, মুমিনদের পারস্পারিক বন্ধুত্বের দাবি হলো যে, তারা একে অপরের আন্যায় সমর্থন করেন না, বরং একে অপরকে ন্যায়কর্মে নির্দেশ দেন এবং অন্যায় থেকে নিষেধ করেন। এখানে আরো লক্ষণীয়, এ সকল আয়াতে ঈমান, নামাজ, জাকাত ইত্যাদির আগে সৎকার্যে আদেশ ও অসৎকার্যে নিষেধ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকে আমরা মুমিনের জীবনে এর সবিশেষ গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারি।
এই দায়িত্বপালনকারী মুমিনকেই সর্বো��্তম বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন: “ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কথায় কে উত্তম যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলিমদের একজন।” [ সূরা ফুসসিলাত: ৩৩ ]
আমরা দেখেছি যে, আদেশ, নিষেধ বা দাওয়াত-এর আরেক নাম নসিহত। নসিহত বর্তমানে সাধারণভাবে উপদেশ অর্থে ব্যবহৃত হলেও মূল আরবিতে নসিহত অর্থ আন্তরিকতা ও কল্যাণ কামনা। কারো প্রতি আন্তিরকতা ও কল্যাণ কামনার বহি:প্রকাশ হলো তাকে ভাল কাজের পরামর্শ দেওয়া ও খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করা। এ কাজটি মুমিনদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি অন্যতম দায়িত্ব। বরং এই কাজটির নামই দীন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “দীন হলো নসিহত। সাহাবিগণ বললেন, কার জন্য ? বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য, মুসলিমগণের নেতৃবর্গের জন্য এবং সাধারণ মুসলিমদের জন্য।” (মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ নসিহতের জন্য সাহাবিগণের বাইআত তথা প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করতেন। বিভিন্ন হাদিসে জারির ইবনু আব্দুল্লাহ রা. মুগিরা ইবনু শুবা রা. প্রমুখ সাহাবি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বাইয়াত বা প্রতিজ্ঞা করেছি, সালাত কায়েম, জাকাত প্রদান ও প্রত্যেক মুসলিমের নসিহত (কল্যাণ কামনা) করার উপর।“(বোখারি)।
এ অর্থে তিনি সৎকার্যে আদেশ ও অসৎকার্যে নিষেধের বাইয়াত গ্রহণ করতেন। উবাদাহ ইবনু সামিত ও অন্যান্য সাহাবি রা. বলেন: “আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে বাইয়াত করি আনুগত্যের… এবং সৎকর্মে আদেশ ও অসৎকর্মে নিষেধের এবং এ কথার উপর যে, আমরা মহিমাময় আল্লাহর জন্য কথা বলব এবং সে বিষয়ে কোন নিন্দুকের নিন্দা বা গালি গালাজের তোয়াক্কা করব না।” (আহমাদ, বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য সনদে)।
ক্ষমতা বনাম দায়িত্ব এবং ফরজে আইন বনাম ফরজে কিফায়া
আদেশ নিষেধের জন্য স্বভাবতই ক্ষমতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন। এ জন্য যারা সমাজে ও রাষ্ট্রে দায়িত্ব ও ক্ষমতায় রয়েছেন তাদের জন্য এ দায়িত্ব অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফরজে আইন বা ব্যক্তিগতভাবে ফরজ। দায়িত্ব ও ক্ষমতা যত বেশি, আদেশ ও নিষেধের দায়িত্বও তত বেশি। আল্লাহর কাছে জবাবদিহিত���র ভয়ও তাদের তত বেশি। আল্লাহ তায়ালা বলেন: “যাদেরকে আমি পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে বা ক্ষমতাবান করলে তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত দেয়, সৎকার্যে নির্দেশ দেয় এবং অসৎকার্যে নিষেধ করে। আর সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারে।” [সূরা হজ্জ : ৪১]
এ জন্য এ বিষয়ে শাসকগোষ্ঠী, প্রশাসনের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ, আঞ্চলিক প্রশাসকবর্গ, বিচারকবর্গ, আলিমগণ, বুদ্ধিজীবিবর্গ ও সমাজের অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের দায়িত্ব অন্যদের চেয়ে বেশি, তাদের জন্য আশংকাও বেশি। তাদের মধ্যে কেউ যদি দায়িত্ব পালন না করে নিশ্চুপ থাকেন তবে তার পরিণতি হবে কঠিন ও ভয়াবহ।অনুরূপভাবে নিজের পরিবার, নিজের অধীনস্থ মানুষগণ ও নিজের প্রভাবাধীন মানুষদের আদেশ-নিষেধ করা গৃহকর্তা বা কর্মকর্তার জন্য ফরজে আইন। কারণ আল্লাহ তাকে এদের উপর ক্ষমতাবান ও দায়িত্বশীল করেছেন এবং তিনি তাকে এদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “সাবধান! তোমরা সকলেই অভিভাবকত্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। মানুষদের উপর দায়িত্বপ্রাপ্ত শাসক বা প্রশাসক, অভিভাবক এবং তাকে তার অধীনস্ত জনগণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। বাড়ির কর্তাব্যক্তি তার পরিবারের সদস্যদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিভাবক এবং তাকে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ি ও তার সন্তান-সন্ততির দায়িত্বপ্রাপ্তা এবং তাকে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে।” (বোখারি ও মুসলিম)।
কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, অন্যায় ও অসৎকর্মের প্রতিবাদ করা শুধুমাত্র এদেরই দায়িত্ব। বরং তা সকল মুসলমানের দায়িত্ব। যিনি অন্যায় বা গর্হিত কর্ম দেখবেন তার উপরেই দায়িত্ব হয়ে যাবে সাধ্য ও সুযোগমত তার সংশোধন বা প্রতিকার করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “তোমাদের কেউ যদি কোনো অন্যায় দেখতে পায় তবে সে তাকে তার বাহুবল দিয়ে প্রতিহত করবে। যদি তাতে সক্ষম না হয় তবে সে তার বক্তব্যের মাধ্যমে (প্রতিবাদ) তা পরিবর্তন করবে। এতেও যদি সক্ষম না হয় তা হলে অন্তর দিয়ে তার পরিবর্তন (কামনা ) করবে। আর এটা হলো ঈমানের দুর্বলতম পর্যায়।” (মুসলিম)।
এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, প্রত্যেক মুমিনেরই দায়িত্ব হলো, অন্যায় দেখতে পেলে সাধ্য ও সুযোগ মত তার পরিবর্তন বা সংশোধন করা। এক্ষেত্রে অন্যায়কে অন্তর থেকে ঘৃণা করা এবং এর অবসান ও প্রতিকার কামনা করা প্রত্যেক মুমিনের উপরেই ফরজ। অন্যায়ের প্রতি হৃদয়ের বিরক্তি ও ঘৃণা না থাকা ঈমান হারানোর লক্ষণ। আমরা অগণিত পাপ, কুফর, হারাম ও নিষিদ্ধ কর্মের সয়লাবের মধ্যে বাস করি। বারংবার দেখতে দেখতে আমাদের মনের বিরক্তি ও আপত্তি কমে যায়। তখন মনে হতে থাকে, এ তো স্বাভাবিক বা এ তো হতেই পারে। পাপকে অন্তর থেকে মেনে নেওয়ার এ অবস্থাই হলো ঈমান হারানোর অবস্থা। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নিষেধ করেছেন বা যা পাপ ও অন্যায় তাকে ঘৃণা করতে হবে, যদিও তা আমার নিজের দ্বারা সংঘটিত হয় বা বিশ্বের সকল মানুষ তা করেন। এ হলো ঈমানের নূন্যতম দাবী।
উপরের আয়াত ও হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে ক্ষমতার ভিত্তিতে এই ইবাদতটির দায়িত্ব বর্তাবে। এ জন্য ফকীহগণ উল্লেখ করেছেন যে, দীন প্রতিষ্ঠা বা দাওয়াত ও আদেশ নিষেধের এ ইবাদতটি সাধারণভাবে ফরজে কিফায়া।
যদি সমাজের একাধিক মানুষ কোনো অন্যায় বা শরিয়ত বিরোধী কর্মের কথা জানতে পারেন বা দেখতে পান তাহলে তার প্রতিবাদ বা প্রতিকার করা তাদের সকলের উপর সামষ্টিকভাবে ফরজ বা ফরজে কিফায়া। তাদের মধ্য থেকে কোনো একজন যদি এ দায়িত্ব পালন করেন তবে তিনি ইবাদতটি পালনের সাওয়াব পাবেন এবং বাকিদের জন্য তা মূলত: নফল ইবাদতে পরিণত হবে। বাকি মানুষেরা তা পালন করলে সাওয়াব পাবেন, তবে পালন না করলে গোনাহগার হবেন না। আর যদি কেউই তা পালন না করেন তাহলে সকলেই পাপী হবেন।
দুইটি কারণে তা ফরজে আইন বা ব্যক্তিগত ফরজে পরিণত হয়:
প্রথমত: ক্ষমতা। যদি কেউ জানতে পারেন যে, তিনিই এ অন্যায়টির প্রতিকার করার ক্ষমতা রাখেন তাহলে তার জন্য তা ফরজে আইন-এ পরিণত হয়। পরিবারের অভিভাবক, এলাকার বা দেশের রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দের জন্য এ দায়িত্বটি এ পর্যায়ে ফরজে আইন। এ ছাড়া যে কোনো পরিস্থিতিতে যদি কেউ বুঝতে পারেন যে, তিনি হস্তক্ষেপ করলে বা কথা বললে অন্যায়টি বন্ধ হবে বা ন্যায়টি প্রতিষ্ঠিত হবে তবে তা তার জন্য ফরজে আইন বা ব্যক্তিগতভাবে ফরজ হবে।
দ্বিতীয়ত: দেখা। যদি কেউ জানতে পারেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কেউ অন্যায়টি দেখেনি বা জানেনি, তবে তার জন্য তা নিষেধ করা ও পরিত্যাগের জন্য দাওয়াত দেওয়া ফরজে আইন বা ব্যক্তিগত ফরজ এ-পরিণত হয়। সর্বাবস্থায় এ প্রতিবাদ, প্রতিকার ও দাওয়াত হবে সাধ্যানুযায়ী হাত দিয়ে মুখ দিয়ে বা অন্তর দিয়ে।
আল্লাহর পথে দাওয়াত-এর বিষয়বস্তু দাওয়াত, আদেশ, নিষেধ, ওয়াজ, নসিহত ইত্যাদির বিষয়বস্তু কী? আমরা কোন কোন বিষয়ের দাওয়াত বা আদেশ-নিষেধ করব? কোন বিষয়ের কতটুকু গুরুত্ব দিতে হবে? আমরা কি শুধুমাত্র নামাজ রোজা ইত্যাদি ইবাদতের জন্য দাওয়াত প্রদান করব? নাকি চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা, সমাজ, মানবাধিকার, সততা ইত্যাদি বিষয়েও দাওয়াত প্রদান করব? আমরা কি শুধু মানুষদের জন্যই দাওয়াত প্রদান করব? নাকি আমরা জীব-জানোয়ার, প্রকৃতি ও পরিবেশের কল্যাণেও দাওয়াত ও আদেশ-নিষেধ করব?
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। ঈমান, বিশ্বাস, ইবাদত, মুআমালাত ইত্যাদি সকল বিষয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে এর বিস্তারিত নির্দেশনা রয়েছে। সকল বিষয়ই দাওয়াতের বিষয়। কিছু বিষয় বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কিছু বিষয়ের মধ্যে দাওয়াতকে সীমাবদ্ধ করার অধিকার মুমিনকে দেওয়া হয়নি। তবে গুরুত্বগত পার্থক্য রয়েছে। দাওয়াতের সংবিধান কোরআনুল কারিম ও হাদিস শরিফে যে বিষয়গুলির প্রতি দাওয়াতের বেশি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে, মুমিনও সেগুলির প্রতি বেশি গুরুত্ব প্রদান করবেন।
আমরা জানি যে, কোরআন ও হাদিসে প্রদত্ত গুরুত্ব অনুসারে মুমিন জীবনের কর্মগুলিকে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। ফরজে আইন, ফরজে কিফায়া, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুসতাহাব, হারাম, মাকরূহ, মুবাহ ইত্যাদি পরিভাষাগুলি আমাদের নিকট পরিচিত। কিন্তু অনেক সময় আমরা ফজিলতের কথা বলতে যেয়ে আবেগ বা অজ্ঞতা বসত এক্ষেত্রে মারাত্মক ভুল করে থাকি। নফল-মুসতাহাব কর্মের দাওয়াত দিতে যেয়ে ফরজ, ওয়াজেব কর্মের কথা ভুলে যাই বা অবহেলা করি। এছাড়া অনেক সময় মুসতাহাবের ফজিলত বলতে যেয়ে হারামের ভয়ঙ্কর পরিণতির কথা বলা হয় না।
কোরআন-হাদিসের দাওয়াত পদ্ধতি থেকে আমরা দাওয়াত ও দীন প্রতিষ্ঠার আদেশ নিষেধের বিষয়াবলীর গুরুত্বের পর্যায় নিম্নরূপ দেখতে পাই।
প্রথমত: তাওহিদ ও রিসালাতের বিশুদ্ধ ঈমান অর্জন ও সর্ব প্রকার শিরক, কুফর ও নিফাক থেকে আত্মরক্ষা সকল নবীরই দাওয়াতের বিষয় ছিল প্রথমত: এটি। কোরআন-হাদিসে এ বিষয়ের দাওয়াতই সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে। একদিকে যেমন তাওহিদের বিধানাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করে তাওহিদ প্রতিষ্ঠার দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, তেমনি বারংবার শিরক, কুফর ও নিফাকের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে তা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।বর্তমান সময়ে দীনের পথে দাওয়াতে ব্যস্ত অধিকাংশ দায়ী এই বিষয়টিতে ভয়ানকভাবে অবহেলা করেন। আমরা চিন্তা করি যে, আমরা তো মুমিনদেরকেই দাওয়াত দিচ্ছি। কাজেই ঈমান-আকিদা বা তাওহিদের বিষয��ে দাওয়াত দেওয়ার বা শিরক-কুফর থেকে নিষেধ করার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। অথচ মহান আল্লাহ বলেন: “তাদের অধিকাংশ আল্লাহর উপর ঈমান আনায়ন করে, তবে (ইবাদতে) শিরক করা অবস্থায়।” [ সূরা ইউসুফ: ১০৬ ]
হাদিস শরিফে মুমিনদেরকে বারংবার শিরক কুফর থেকে সাবধান করা হয়েছে। শিরক, কুফর ও নিফাক মুক্ত বিশুদ্ধ তাওহিদ ও রিসালাতের ঈমান ছাড়া নামাজ, রোজা, দাওয়াত, জিহাদ, জিকর, তাযকিয়া ইত্যাদি সকল ফরজ বা নফল ইবাদতই অর্থহীন।
দ্বিতীয়ত: বান্দার বা সৃষ্টির অধিকার সংশ্লিষ্ট হারাম বর্জনআমরা জানি ফরজকর্ম দুই প্রকার, করণীয় ফরজ ও বর্জনীয় ফরজ। যা বর্জন করা ফরজ তাকে হারাম বলা হয়। হারাম দুই প্রকার, প্রথম প্রকার হারাম, মানুষ ও সৃষ্টির অধিকার নষ্ট করা বা তাদের কোনো ক্ষতি করা বিষয়ক হারাম। এগুলি বর্জন করা সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ।পিতামাতা, স্ত্রী, সন্তান, অধীনস্ত, সহকর্মী, প্রতিবেশী, দরিদ্র, এতিম ও অন্যান্য সকলের অধিকার সঠিকভাবে আদায় করা, কোনোভাবে কারো অধিকার নষ্ট না করা, কাউকে জুলুম না করা, গীবত না করা, ওজন-পরিমাপ ইত্যাদিতে কম না করা, প্রতিজ্ঞা, চুক্তি, দায়িত্ব বা আমানত আদায়ে আবহেলা না করা, হারাম উপার্জন থেকে আত্মরক্ষা করা, নিজের বা আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হলেও ন্যয় কথা বলা ও ন্যয় বিচার করা, কাফির শত্রুদের পক্ষে হলেও ন্যয়ানুগ পন্থায় বিচার-ফয়সালা করা ইত্যাদি বিষয় কোরআন ও হাদিসের দাওয়াত ও আদেশ নিষেধের অন্যতম গুরিত্বপূর্ণ বিষয়।এমনকি রাস্তাঘাট, মজলিস, সমাজ বা পরিবেশে কাউকে কষ্ট দেওয়া এবং কারো অসুবিধা সৃষ্টি করাকেও হাদিস শরিফে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে। সৃষ্টির অধিকার বলতে শুধু মানুষদের অধিকারই বুঝানো হয়নি। পশুপাখির অধিকার সংরক্ষণ, মানুষের প্রয়োজন ছাড়া কোনো প্রাণীকে কষ্ট না দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে অত্যন্ত কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। দাওয়াতের ক্ষেত্রে অনেক সময় এ বিষয়গুলি অবহেলিত। এমনকি অনেক দায়ী বা দাওয়াতকর্মীও এ সকল অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েন।
যেকোনো কর্মস্থলে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জন্য কর্মস্থলের দায়িত্ব পরিপূর্ণ আন্তরিকতার সাথে সঠিকভাবে পালন করা ফরজে আইন। যদি কেউ নিজের কর্মস্থলে ফরজ সেবা গ্রহণের জন্য আগত ব্যক্তিকে ফরজ সেবা প্রদান না করে তাকে পরদিন আসতে বলেন বা একঘন্টা বসিয়ে রেখে চাশতের নামাজ আদায় করেন বা দাওয়াতে অংশ গ্রহণ করেন তাহলে তিনি মূলত: ঐ ব্যক্তির মত কর্ম করছেন, যে ব্যক্তি পাগড়ির ফজিলতের কথায় মোহিত হয়ে লুঙ্গি খুলে উলঙ্গ হয়ে পাগড়ি পরেছেন।
অধিকার ও দায়িত্ব বিষয়ক আদেশ-নিষেধ কোরআন হাদিসে বেশি থাকলেও আমরা এ সকল বিষয়ে বেশি আগ্রহী নই। কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্যদেরকে কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন ও আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানের বিষয়ে দাওয়াত ও আদেশ নিষেধ করতে আমরা আগ্রহী নই। অবৈধ পার্কিং করে, রাস্তার উপর বাজার বসিয়ে, রাস্তা বন্ধ করে মিটিং করে বা অনুরূপ কোনোভাবে মানুষের কষ্ট দেওয়া, অপ্রয়োজনীয় ধোঁয়া, গ্যাস, শব্দ ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের বা জীব জানোয়ারের কষ্ট দেওয়া বা প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা, দাওয়াত বা আদেশ-নিষেধ করাকে আমরা অনেকেই আল্লাহর পথে দাওয়াতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করি না। বরং এগুলিকে জাগতিক, দুনিয়াবী বা আধুনিক বলে মনে করি।
তৃতীয়ত: পরিবার ও অধীনস্তদেরকে ইসলাম অনুসারে পরিচালিত করাবান্দার হক, বা মানবাধিকার বিষয়ক দায়িত্ব সমূহের অন্যতম হলো নিজের দায়িত্বাধীনদেরকে দীনের দাওয়াত দেওয়া ও দীনের পথে পরিচালিত করা। দাওয়াতকর্মী বা দায়ী নিজে যেমন এ বিষয়ে সতর্ক হবেন, তেমনি বিষয়টি দাওয়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে গ্রহণ করবেন।
চতুর্থত: অন্যান্য হারাম বর্জন করাহত্যা, মদপান, রক্তপান, শুকরের মাংস ভক্ষণ, ব্যভিচার, মিথ্যা, জুয়া, হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার, রিয়া ইত্যাদিও হারাম। দায়ী বা দাওয়াতকর্মী নিজে এ সব থেকে নিজের কর্ম ও হৃদয়কে পবিত্র করবেন এবং এগুলি থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য দাওয়াত প্রদান করবেন। আমরা দেখতে পাই যে, কুরাআন ও হাদিসে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বারংবার বিভিন্নভাবে এবিষয়ক দাওয়াত প্রদান করা হয়েছে।
পঞ্চমত: পালনীয় ফরজ-ওয়াজিবগুলি আদায় করানামাজ, জাকাত, রোজা, হজ্জ, হালাল উপার্জন, ফরজে আইন পর্যায়ের ইলম শিক্ষা ইত্যাদি এ জাতীয় ফরজ ইবাদত এবং দাওয়াতের অন্যতম বিষয়।
ষষ্ঠত: সৃষ্টির উপকার ও কল্যাণমূলক সুন্নাত-নফল ইবাদত করাসকল সৃষ্টিকে তার অধিকার বুঝে দেওয়া ফরজ। অধিকারের অতিরিক্ত সকলকে যথাসাধ্য সাহায্য ও উপকার করা কোরআন হাদিসের আলোকে সর্বশ্রেষ্ঠ নফল ইবাদত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও প্রিয়তম পথ। ক্ষুধার্তকে আহার দেওয়া, দরিদ্রকে দারিদ্রমুক্ত করা, বিপদগ্রস্থকে বিপদ হতে মুক্ত হতে সাহায্য করা, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং যে কোনোভাবে যে কোনো মানুষের বা সৃষ্টির কল্যাণ, সেবা বা উপকারে সামান্যতম কর্ম আল্লাহর নিকট অত্যন্ত প্রিয়। কোরআন ও হাদিসে এ সকল বিষয়ে বারংবার দাওয়াত ও আদেশ নিষেধ করা হয়েছে।
সপ্তমত: আল্লাহ ও তাঁর বান্দার মধ্যকার সুন্নত-নফল ইবাদত করানফল নামাজ, রোজা, যিকির, তিলাওয়াত, ফরজে কিফায়া বা নফল পর্যায়ের দাওয়াত, তাবলিগ, জিহাদ, নসিহত, তাযকিয়া ইত্যাদি এ পর্যায়ের। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দাওয়াতে রত মুমিনগণ ষষ্ঠ পর্যায়ের নফল ইবাদতের চেয়ে সপ্তম পর্যায়ের নফল ইবাদতের দাওয়াত বেশি প্রদান করেন। বিশেষত, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান তৈরি, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসা সেবা প্রদান ইত্যাদি বিষয়ের দাওয়াত প্রদানকে আমরা আল্লাহর পথে দাওয়াত বলে মনেই করি না। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, মানুষ ছাড়া অন্য কোনো জীব-জানোয়ারও যদি কোনো অন্যায় বা ক্ষতির কর্মে লিপ্ত থাকে সাধ্য ও সুযোগমত তার প্রতিকার করাও আদেশ নিষেধ ও কল্যাণ কামনার অংশ। যেমন কারো পশু বিপদে পড়তে যাচ্ছে বা কারো ফসল নষ্ট করছে দেখতে পেলে মুমিনের দায়িত্ব হল সুযোগ ও সাধ্যমত তার প্রতিকার করা। তিনি এই কর্মের জন্য আদেশ-নিষেধ ও নসিহতের সাওয়াব লাভ করবেন। পূর্ববর্তী যুগের প্রাজ্ঞ আলেমগণ এ সকল বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেকেই এ সকল বিষয়কে আল্লাহর পথে দাওয়াত বা দীন প্রতিষ্ঠার অংশ বলে বুঝতে পারেন না। মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করুন। আমীন।
0 notes