পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
10 Ways To Get Rid of Sins
পাপ মোচন হয় যে ১০ আমলে
জীবন চলার পথে শয়তানের প্ররোচনায় ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেক গুনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু বড় গুনাহ থাকে, যা তওবা ছাড়া মাফ হয় না। কিছু গুনাহ এমন রয়েছে, যা আল্লাহ তাআলা তওবা-ইস্তিগফার ছাড়া বান্দার নেক আমলের মাধ্যমে মাফ করে দেন। গুনাহ মাফের ফজিলতপূর্ণ ১০টি আমল নিয়েএই লেখা।
প্রতিদিন এক শ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ : একবার নবীজি তাঁর প্রিয় সাহাবাদের বলেন, ‘তোমরা কি প্রতিদিন এক হাজার নেকি লাভ এবং এক হাজার গুনাহ মাফ হওয়ার আমল জানতে চাও?’ তখন এক সাহাবি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কোন আমল করলে এক হাজার গুনাহ মাফ এবং এক হাজার নেকি লাভ করা যাবে? তখন নবী (সা.) বলেন, ‘১০০ বার সুবহানাল্লাহ বললে এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা (কোনো কোনো বর্ণনা মতে) এক হাজার গুনাহ মোচন হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৮)
নবীর ভালোবাসা : আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করা আবশ্যক। আর এই অনুসরণের মাধ্যমেই আল্লাহ ও তাঁর নবীর ভালোবাসা পাওয়ার পাশাপাশি গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার (নবীর) অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
নবীর ওপর দরুদ পাঠ করা : আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি ১০টি রহমত নাজিল করবেন। তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)
ফজর ও মাগরিব নামাজের পর নির্দিষ্ট দোয়া : এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিব নামাজের পর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির’ ১০ বার পড়বে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় চারজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হবে, ১০ নেকি লেখা হবে, ১০ গুনাহ মাফ হবে, ১০ মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং এ কলেমাগুলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে হেফাজতের কারণ হবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫১৮)
উত্তমরূপে অজু করা : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অজু করে তখন তার চেহারা ধোয়ার সময় পানির ফোঁটার সঙ্গে চোখের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন হাত ধোয়া হয়, হাতের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন পা ধোয়া হয়, পানির ফোঁটার সঙ্গে পায়ের দ্বারা কৃত গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। এভাবে বান্দা গুনাহ থেকে একেবারে পাক-সাফ হয়ে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৪৪)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা : যে ব্যক্তি যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তার গুনাহ মাফের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিস শরিফে চমৎকার একটি উদাহরণ তুলে ধরেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবাদের সম্বোধন করে বলেন, ‘তোমাদের কী মনে হয়? কারো বাড়ির পাশে যদি নদী থাকে আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকবে?’ সাহাবারা জবাবে বলেন, না, তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না।
নবী (সা.) তখন বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এরূপ। এর মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) পাপসমূহ মিটিয়ে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৬৭)
জুমার নামাজ আদায় করা : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করল ও জুমায় এলো, এরপর মনোযোগসহ খুতবা শুনল ও চুপ থাকল। আল্লাহ তাআলা তার গত জুমা ও এই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করে দেবেন; আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহও মাফ করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৭)
নামাজের জন্য মসজিদে গমন : জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়লে প্রতি কদমের বিনিময়ে গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জামাতের নামাজ ঘরের বা বাজারের নামাজ অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি সওয়াব রাখে। কারণ বান্দা যখন উত্তমরূপে অজু করে এবং একমাত্র নামাজের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয় তো প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭)
ফাতিহা শেষে আমিন বলা : বুখারির বর্ণনায় এসেছে, নবী (সা.) বলেছেন, ‘নামাজে ইমাম সাহেব যখন সুরা ফাতিহা শেষ করে তখন তোমরাও আমিন বলো। কেননা তখন ফেরেশতারাও আমিন বলে। ইমামও আমিন বলে। আর যার আমিন বলা ফেরেশতাদের আমিন বলার সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৭১৮৭)
রুকু থেকে উঠে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ইমাম যখন রুকু থেকে উঠে বলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ তখন তোমরা বলো ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ’। কারণ যার তাহমিদ ফেরেশতাদের সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, হাদিস : ৭৯৬)
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ ধুয়ে মুছে নিষ্পাপ হওয়ার উপায় |
পাপ মোচনের উপায় সমূহ┇
নফল সিয়াম ও সাদাকা পাপ মোচনের উপায়
যেসব পাপীকে আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবেন না
পাপমুক্ত থাকার ১৮ টি উপায়│
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
Taking steps to stop sinning
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
10 Ways To Get Rid of Sins
Taking steps to stop sinning
0 notes
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
10 Ways To Get Rid of Sins
পাপ মোচন হয় যে ১০ আমলে
জীবন চলার পথে শয়তানের প্ররোচনায় ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেক গুনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু বড় গুনাহ থাকে, যা তওবা ছাড়া মাফ হয় না। কিছু গুনাহ এমন রয়েছে, যা আল্লাহ তাআলা তওবা-ইস্তিগফার ছাড়া বান্দার নেক আমলের মাধ্যমে মাফ করে দেন। গুনাহ মাফের ফজিলতপূর্ণ ১০টি আমল নিয়েএই লেখা।
প্রতিদিন এক শ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ : একবার নবীজি তাঁর প্রিয় সাহাবাদের বলেন, ‘তোমরা কি প্রতিদিন এক হাজার নেকি লাভ এবং এক হাজার গুনাহ মাফ হওয়ার আমল জানতে চাও?’ তখন এক সাহাবি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কোন আমল করলে এক হাজার গুনাহ মাফ এবং এক হাজার নেকি লাভ করা যাবে? তখন নবী (সা.) বলেন, ‘১০০ বার সুবহানাল্লাহ বললে এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা (কোনো কোনো বর্ণনা মতে) এক হাজার গুনাহ মোচন হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৮)
নবীর ভালোবাসা : আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করা আবশ্যক। আর এই অনুসরণের মাধ্যমেই আল্লাহ ও তাঁর নবীর ভালোবাসা পাওয়ার পাশাপাশি গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার (নবীর) অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
নবীর ওপর দরুদ পাঠ করা : আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি ১০টি রহমত নাজিল করবেন। তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)
ফজর ও মাগরিব নামাজের পর নির্দিষ্ট দোয়া : এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিব নামাজের পর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির’ ১০ বার পড়বে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় চারজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হবে, ১০ নেকি লেখা হবে, ১০ গুনাহ মাফ হবে, ১০ মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং এ কলেমাগুলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে হেফাজতের কারণ হবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫১৮)
উত্তমরূপে অজু করা : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অজু করে তখন তার চেহারা ধোয়ার সময় পানির ফোঁটার সঙ্গে চোখের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন হাত ধোয়া হয়, হাতের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন পা ধোয়া হয়, পানির ফোঁটার সঙ্গে পায়ের দ্বারা কৃত গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। এভাবে বান্দা গুনাহ থেকে একেবারে পাক-সাফ হয়ে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৪৪)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা : যে ব্যক্তি যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তার গুনাহ মাফের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিস শরিফে চমৎকার একটি উদাহরণ তুলে ধরেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবাদের সম্বোধন করে বলেন, ‘তোমাদের কী মনে হয়? কারো বাড়ির পাশে যদি নদী থাকে আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকবে?’ সাহাবারা জবাবে বলেন, না, তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না।
নবী (সা.) তখন বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এরূপ। এর মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) পাপসমূহ মিটিয়ে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৬৭)
জুমার নামাজ আদায় করা : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করল ও জুমায় এলো, এরপর মনোযোগসহ খুতবা শুনল ও চুপ থাকল। আল্লাহ তাআলা তার গত জুমা ও এই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করে দেবেন; আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহও মাফ করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৭)
নামাজের জন্য মসজিদে গমন : জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়লে প্রতি কদমের বিনিময়ে গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জামাতের নামাজ ঘরের বা বাজারের নামাজ অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি সওয়াব রাখে। কারণ বান্দা যখন উত্তমরূপে অজু করে এবং একমাত্র নামাজের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয় তো প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭)
ফাতিহা শেষে আমিন বলা : বুখারির বর্ণনায় এসেছে, নবী (সা.) বলেছেন, ‘নামাজে ইমাম সাহেব যখন সুরা ফাতিহা শেষ করে তখন তোমরাও আমিন বলো। কেননা তখন ফেরেশতারাও আমিন বলে। ইমামও আমিন বলে। আর যার আমিন বলা ফেরেশতাদের আমিন বলার সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৭১৮৭)
রুকু থেকে উঠে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ইমাম যখন রুকু থেকে উঠে বলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ তখন তোমরা বলো ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ’। কারণ যার তাহমিদ ফেরেশতাদের সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, হাদিস : ৭৯৬)
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ ধুয়ে মুছে নিষ্পাপ হওয়ার উপায় |
পাপ মোচনের উপায় সমূহ┇
নফল সিয়াম ও সাদাকা পাপ মোচনের উপায়
যেসব পাপীকে আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবেন না
পাপমুক্ত থাকার ১৮ টি উপায়│
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
Taking steps to stop sinning
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
10 Ways To Get Rid of Sins
Taking steps to stop sinning #howto #remove #delete #erase #Sin
0 notes
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
10 Ways To Get Rid of Sins
পাপ মোচন হয় যে ১০ আমলে
জীবন চলার পথে শয়তানের প্ররোচনায় ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেক গুনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু বড় গুনাহ থাকে, যা তওবা ছাড়া মাফ হয় না। কিছু গুনাহ এমন রয়েছে, যা আল্লাহ তাআলা তওবা-ইস্তিগফার ছাড়া বান্দার নেক আমলের মাধ্যমে মাফ করে দেন। গুনাহ মাফের ফজিলতপূর্ণ ১০টি আমল নিয়েএই লেখা।
প্রতিদিন এক শ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ : একবার নবীজি তাঁর প্রিয় সাহাবাদের বলেন, ‘তোমরা কি প্রতিদিন এক হাজার নেকি লাভ এবং এক হাজার গুনাহ মাফ হওয়ার আমল জানতে চাও?’ তখন এক সাহাবি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কোন আমল করলে এক হাজার গুনাহ মাফ এবং এক হাজার নেকি লাভ করা যাবে? তখন নবী (সা.) বলেন, ‘১০০ বার সুবহানাল্লাহ বললে এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা (কোনো কোনো বর্ণনা মতে) এক হাজার গুনাহ মোচন হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৮)
নবীর ভালোবাসা : আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করা আবশ্যক। আর এই অনুসরণের মাধ্যমেই আল্লাহ ও তাঁর নবীর ভালোবাসা পাওয়ার পাশাপাশি গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার (নবীর) অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
নবীর ওপর দরুদ পাঠ করা : আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি ১০টি রহমত নাজিল করবেন। তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)
ফজর ও মাগরিব নামাজের পর নির্দিষ্ট দোয়া : এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিব নামাজের পর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির’ ১০ বার পড়বে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় চারজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হবে, ১০ নেকি লেখা হবে, ১০ গুনাহ মাফ হবে, ১০ মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং এ কলেমাগুলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে হেফাজতের কারণ হবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫১৮)
উত্তমরূপে অজু করা : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অজু করে তখন তার চেহারা ধোয়ার সময় পানির ফোঁটার সঙ্গে চোখের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন হাত ধোয়া হয়, হাতের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন পা ধোয়া হয়, পানির ফোঁটার সঙ্গে পায়ের দ্বারা কৃত গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। এভাবে বান্দা গুনাহ থেকে একেবারে পাক-সাফ হয়ে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৪৪)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা : যে ব্যক্তি যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তার গুনাহ মাফের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিস শরিফে চমৎকার একটি উদাহরণ তুলে ধরেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবাদের সম্বোধন করে বলেন, ‘তোমাদের কী মনে হয়? কারো বাড়ির পাশে যদি নদী থাকে আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকবে?’ সাহাবারা জবাবে বলেন, না, তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না।
নবী (সা.) তখন বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এরূপ। এর মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) পাপসমূহ মিটিয়ে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৬৭)
জুমার নামাজ আদায় করা : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করল ও জুমায় এলো, এরপর মনোযোগসহ খুতবা শুনল ও চুপ থাকল। আল্লাহ তাআলা তার গত জুমা ও এই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করে দেবেন; আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহও মাফ করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৭)
নামাজের জন্য মসজিদে গমন : জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়লে প্রতি কদমের বিনিময়ে গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জামাতের নামাজ ঘরের বা বাজারের নামাজ অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি সওয়াব রাখে। কারণ বান্দা যখন উত্তমরূপে অজু করে এবং একমাত্র নামাজের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয় তো প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭)
ফাতিহা শেষে আমিন বলা : বুখারির বর্ণনায় এসেছে, নবী (সা.) বলেছেন, ‘নামাজে ইমাম সাহেব যখন সুরা ফাতিহা শেষ করে তখন তোমরাও আমিন বলো। ক���ননা তখন ফেরেশতারাও আমিন বলে। ইমামও আমিন বলে। আর যার আমিন বলা ফেরেশতাদের আমিন বলার সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৭১৮৭)
রুকু থেকে উঠে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ইমাম যখন রুকু থেকে উঠে বলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ তখন তোমরা বলো ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ’। কারণ যার তাহমিদ ফেরেশতাদের সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, হাদিস : ৭৯৬)
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ ধুয়ে মুছে নিষ্পাপ হওয়ার উপায় |
পাপ মোচনের উপায় সমূহ┇
নফল সিয়াম ও সাদাকা পাপ মোচনের উপায়
যেসব পাপীকে আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবেন না
পাপমুক্ত থাকার ১৮ টি উপায়│
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
Taking steps to stop sinning
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
0 notes
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
10 Ways To Get Rid of Sins
পাপ মোচন হয় যে ১০ আমলে
জীবন চলার পথে শয়তানের প্ররোচনায় ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেক গুনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু বড় গুনাহ থাকে, যা তওবা ছাড়া মাফ হয় না। কিছু গুনাহ এমন রয়েছে, যা আল্লাহ তাআলা তওবা-ইস্তিগফার ছাড়া বান্দার নেক আমলের মাধ্যমে মাফ করে দেন। গুনাহ মাফের ফজিলতপূর্ণ ১০টি আমল নিয়েএই লেখা।
প্রতিদিন এক শ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ : একবার নবীজি তাঁর প্রিয় সাহাবাদের বলেন, ‘তোমরা কি প্রতিদিন এক হাজার নেকি লাভ এবং এক হাজার গুনাহ মাফ হওয়ার আমল জানতে চাও?’ তখন এক সাহাবি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কোন আমল করলে এক হাজার গুনাহ মাফ এবং এক হাজার নেকি লাভ করা যাবে? তখন নবী (সা.) বলেন, ‘১০০ বার সুবহানাল্লাহ বললে এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা (কোনো কোনো বর্ণনা মতে) এক হাজার গুনাহ মোচন হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৮)
নবীর ভালোবাসা : আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করা আবশ্যক। আর এই অনুসরণের মাধ্যমেই আল্লাহ ও তাঁর নবীর ভালোবাসা পাওয়ার পাশাপাশি গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার (নবীর) অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
নবীর ওপর দরুদ পাঠ করা : আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি ১০টি রহমত নাজিল করবেন। তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)
ফজর ও মাগরিব নামাজের পর নির্দিষ্ট দোয়া : এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিব নামাজের পর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির’ ১০ বার পড়বে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় চারজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হবে, ১০ নেকি লেখা হবে, ১০ গুনাহ মাফ হবে, ১০ মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং এ কলেমাগুলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে হেফাজতের কারণ হবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫১৮)
উত্তমরূপে অজু করা : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অজু করে তখন তার চেহারা ধোয়ার সময় পানির ফোঁটার সঙ্গে চোখের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন হাত ধোয়া হয়, হাতের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন পা ধোয়া হয়, পানির ফোঁটার সঙ্গে পায়ের দ্বারা কৃত গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। এভাবে বান্দা গুনাহ থেকে একেবারে পাক-সাফ হয়ে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৪৪)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা : যে ব্যক্তি যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তার গুনাহ মাফের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিস শরিফে চমৎকার একটি উদাহরণ তুলে ধরেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবাদের সম্বোধন করে বলেন, ‘তোমাদের কী মনে হয়? কারো বাড়ির পাশে যদি নদী থাকে আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকবে?’ সাহাবারা জবাবে বলেন, না, তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না।
নবী (সা.) তখন বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এরূপ। এর মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) পাপসমূহ মিটিয়ে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৬৭)
জুমার নামাজ আদায় করা : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করল ও জুমায় এলো, এরপর মনোযোগসহ খুতবা শুনল ও চুপ থাকল। আল্লাহ তাআলা তার গত জুমা ও এই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করে দেবেন; আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহও মাফ করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৭)
নামাজের জন্য মসজিদে গমন : জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়লে প্রতি কদমের বিনিময়ে গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জামাতের নামাজ ঘরের বা বাজারের নামাজ অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি সওয়াব রাখে। কারণ বান্দা যখন উত্তমরূপে অজু করে এবং একমাত্র নামাজের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয় তো প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭)
ফাতিহা শেষে আমিন বলা : বুখারির বর্ণনায় এসেছে, নবী (সা.) বলেছেন, ‘নামাজে ইমাম সাহেব যখন সুরা ফাতিহা শেষ করে তখন তোমরাও আমিন বলো। কেননা তখন ফেরেশতারাও আমিন বলে। ইমামও আমিন বলে। আর যার আমিন বলা ফেরেশতাদের আমিন বলার সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৭১৮৭)
রুকু থেকে উঠে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ইমাম যখন রুকু থেকে উঠে বলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ তখন তোমরা বলো ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ’। কারণ যার তাহমিদ ফেরেশতাদের সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, হাদিস : ৭৯৬)
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ ধুয়ে মুছে নিষ্পাপ হওয়ার উপায় |
পাপ মোচনের উপায় সমূহ┇
নফল সিয়াম ও সাদাকা পাপ মোচনের উপায়
যেসব পাপীকে আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবেন না
পাপমুক্ত থাকার ১৮ টি উপায়│
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
Taking steps to stop sinning
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
0 notes
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
10 Ways To Get Rid of Sins
পাপ মোচন হয় যে ১০ আমলে
জীবন চলার পথে শয়তানের প্ররোচনায় ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেক গুনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু বড় গুনাহ থাকে, যা তওবা ছাড়া মাফ হয় না। কিছু গুনাহ এমন রয়েছে, যা আল্লাহ তাআলা তওবা-ইস্তিগফার ছাড়া বান্দার নেক আমলের মাধ্যমে মাফ করে দেন। গুনাহ মাফের ফজিলতপূর্ণ ১০টি আমল নিয়েএই লেখা।
প্রতিদিন এক শ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ : একবার নবীজি তাঁর প্রিয় সাহাবাদের বলেন, ‘তোমরা কি প্রতিদিন এক হাজার নেকি লাভ এবং এক হাজার গুনাহ মাফ হওয়ার আমল জানতে চাও?’ তখন এক সাহাবি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কোন আমল করলে এক হাজার গুনাহ মাফ এবং এক হাজার নেকি লাভ করা যাবে? তখন নবী (সা.) বলেন, ‘১০০ বার সুবহানাল্লাহ বললে এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা (কোনো কোনো বর্ণনা মতে) এক হাজার গুনাহ মোচন হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৮)
নবীর ভালোবাসা : আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করা আবশ্যক। আর এই অনুসরণের মাধ্যমেই আল্লাহ ও তাঁর নবীর ভালোবাসা পাওয়ার পাশাপাশি গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার (নবীর) অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
নবীর ওপর দরুদ পাঠ করা : আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি ১০টি রহমত নাজিল করবেন। তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)
ফজর ও মাগরিব নামাজের পর নির্দিষ্ট দো���়া : এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিব নামাজের পর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির’ ১০ বার পড়বে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় চারজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হবে, ১০ নেকি লেখা হবে, ১০ গুনাহ মাফ হবে, ১০ মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং এ কলেমাগুলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে হেফাজতের কারণ হবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫১৮)
উত্তমরূপে অজু করা : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ��ুসলিম অজু করে তখন তার চেহারা ধোয়ার সময় পানির ফোঁটার সঙ্গে চোখের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন হাত ধোয়া হয়, হাতের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন পা ধোয়া হয়, পানির ফোঁটার সঙ্গে পায়ের দ্বারা কৃত গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। এভাবে বান্দা গুনাহ থেকে একেবারে পাক-সাফ হয়ে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৪৪)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা : যে ব্যক্তি যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তার গুনাহ মাফের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিস শরিফে চমৎকার একটি উদাহরণ তুলে ধরেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবাদের সম্বোধন করে বলেন, ‘তোমাদের কী মনে হয়? কারো বাড়ির পাশে যদি নদী থাকে আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকবে?’ সাহাবারা জবাবে বলেন, না, তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না।
নবী (সা.) তখন বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এরূপ। এর মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) পাপসমূহ মিটিয়ে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৬৭)
জুমার নামাজ আদায় করা : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করল ও জুমায় এলো, এরপর মনোযোগসহ খুতবা শুনল ও চুপ থাকল। আল্লাহ তাআলা তার গত জুমা ও এই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করে দেবেন; আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহও মাফ করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৭)
নামাজের জন্য মসজিদে গমন : জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়লে প্রতি কদমের বিনিময়ে গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জামাতের নামাজ ঘরের বা বাজারের নামাজ অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি সওয়াব রাখে। কারণ বান্দা যখন উত্তমরূপে অজু করে এবং একমাত্র নামাজের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয় তো প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭)
ফাতিহা শেষে আমিন বলা : বুখারির বর্ণনায় এসেছে, নবী (সা.) বলেছেন, ‘নামাজে ইমাম সাহেব যখন সুরা ফাতিহা শেষ করে তখন তোমরাও আমিন বলো। কেননা তখন ফেরেশতারাও আমিন বলে। ইমামও আমিন বলে। আর যার আমিন বলা ফেরেশতাদের আমিন বলার সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৭১৮৭)
রুকু থেকে উঠে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ইমাম যখন রুকু থেকে উঠে বলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ তখন তোমরা বলো ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ’। কারণ যার তাহমিদ ফেরেশতাদের সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, হাদিস : ৭৯৬)
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ ধুয়ে মুছে নিষ্পাপ হওয়ার উপায় |
পাপ মোচনের উপায় সমূহ┇
নফল সিয়াম ও সাদাকা পাপ মোচনের উপায়
যেসব পাপীকে আল্লাহ কখনোই ক্ষম��� করবেন না
পাপমুক্ত থাকার ১৮ টি উপায়│
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
Taking steps to stop sinning
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
0 notes
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
10 Ways To Get Rid of Sins
পাপ মোচন হয় যে ১০ আমলে
জীবন চলার পথে শয়তানের প্ররোচনায় ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেক গুনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু বড় গুনাহ থাকে, যা তওবা ছাড়া মাফ হয় না। কিছু গুনাহ এমন রয়েছে, যা আল্লাহ তাআলা তওবা-ইস্তিগফার ছাড়া বান্দার নেক আমলের মাধ্যমে মাফ করে দেন। গুনাহ মাফের ফজিলতপূর্ণ ১০টি আমল নিয়েএই লেখা।
প্রতিদিন এক শ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ : একবার নবীজি তাঁর প্রিয় সাহাবাদের বলেন, ‘তোমরা কি প্রতিদিন এক হাজার নেকি লাভ এবং এক হাজার গুনাহ মাফ হওয়ার আমল জানতে চাও?’ তখন এক সাহাবি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কোন আমল করলে এক হাজার গুনাহ মাফ এবং এক হাজার নেকি লাভ করা যাবে? তখন নবী (সা.) বলেন, ‘১০০ বার সুবহানাল্লাহ বললে এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা (কোনো কোনো বর্ণনা মতে) এক হাজার গুনাহ মোচন হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৮)
নবীর ভালোবাসা : আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করা আবশ্যক। আর এই অনুসরণের মাধ্যমেই আল্লাহ ও তাঁর নবীর ভালোবাসা পাওয়ার পাশাপাশি গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার (নবীর) অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ���ার্জনা করবেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
নবীর ওপর দরুদ পাঠ করা : আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি ১০টি রহমত নাজিল করবেন। তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)
ফজর ও মাগরিব নামাজের পর নির্দিষ্ট দোয়া : এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিব নামাজের পর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির’ ১০ বার পড়বে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় চারজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হবে, ১০ নেকি লেখা হবে, ১০ গুনাহ মাফ হবে, ১০ মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং এ কলেমাগুলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে হেফাজতের কারণ হবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫১৮)
উত্তমরূপে অজু করা : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অজু করে তখন তার চেহারা ধোয়ার সময় পানির ফোঁটার সঙ্গে চোখের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন হাত ধোয়া হয়, হাতের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। যখন পা ধোয়া হয়, পানির ফোঁটার সঙ্গে পায়ের দ্বারা কৃত গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। এভাবে বান্দা গুনাহ থেকে একেবারে পাক-সাফ হয়ে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৪৪)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা : যে ব্যক্তি যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তার গুনাহ মাফের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিস শরিফে চমৎকার একটি উদাহরণ তুলে ধরেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবাদের সম্বোধন করে বলেন, ‘তোমাদের কী মনে হয়? কারো বাড়ির পাশে যদি নদী থাকে আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকবে?’ সাহাবারা জবাবে বলেন, না, তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না।
নবী (সা.) তখন বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এরূপ। এর মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) পাপসমূহ মিটিয়ে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৬৭)
জুমার নামাজ আদায় করা : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করল ও জুমায় এলো, এরপর মনোযোগসহ খুতবা শুনল ও চুপ থাকল। আল্লাহ তাআলা তার গত জুমা ও এই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করে দেবেন; আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহও মাফ করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৭)
নামাজের জন্য মসজিদে গমন : জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়লে প্রতি কদমের বিনিময়ে গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জামাতের নামাজ ঘরের বা বাজারের নামাজ অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি সওয়াব রাখে। কারণ বান্দা যখন উত্তমরূপে অজু করে এবং একমাত্র নামাজের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয় তো প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭)
ফাতিহা শেষে আমিন বলা : বুখারির বর্ণনায় এসেছে, নবী (সা.) বলেছেন, ‘নামাজে ইমাম সাহেব যখন সুরা ফাতিহা শেষ করে তখন তোমরাও আমিন বলো। কেননা তখন ফেরেশতারাও আমিন বলে। ইমামও আমিন বলে। আর যার আমিন বলা ফেরেশতাদের আমিন বলার সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৭১৮৭)
রুকু থেকে উঠে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ইমাম যখন রুকু থেকে উঠে বলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ তখন তোমরা বলো ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ’। কারণ যার তাহমিদ ফেরেশতাদের সঙ্গে মিলবে, তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, হাদিস : ৭৯৬)
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ ধুয়ে মুছে নিষ্পাপ হওয়ার উপায় |
পাপ মোচনের উপায় সমূহ┇
নফল সিয়াম ও সাদাকা পাপ মোচনের উপায়
যেসব পাপীকে আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবেন না
পাপমুক্ত থাকার ১৮ টি উপায়│
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
Taking steps to stop sinning
পাপ মোচনের ১০ টি উপায়
পাপ করা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া
0 notes
সালাম ফেরানোর আগে যে দোয়াগুলো পড়তেন বিশ্বনবি,
মুমিন মুসলমানের জন্য ফরজ ইবাদত নামাজ। নামাজের যেসব জায়গায় মনের ইচ্ছা মতো দোয়া করা যায় তন্মধ্যে সালাম ফেরানোর আগেও একটি। নামাজের সালাম ফেরানোর আগে মনের ইচ্ছা মতো দোয়া করা যায়। এগুলোকে দোয়ায়ে মাছুরাও বলা হয়।
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদেরকে এই দোয়াটি এভাবে শেখাতেন, যেভাবে কুরআনের সুরা শেখাতেন। তিনি বলতেন-
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ أعُوْذُبِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّم- وَأعُوْذُبِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ- وَ أَعُوْذُبِكَ مِن فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ - وَ أَعُوْذُبِكَ مِن فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَ فِتْنَةِ الْمَمَاتِ - اَللَّهُمَّ اِنِّىْ أعُوْذُبِكَ مِنْ الْمَأْثَمِ وَ الْمَغْرَم
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবি ঝাহান্নাম। ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্ববর। ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাঝ্ঝাল। ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাত। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল্ মাছামি ওয়া মিনাল মাগরাম।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জাহান্নামের আজাব থেকে আশ্রয় চাই, কবরের আজাব হতে আশ্রয় চাই। আশ্রয় চাই দাজ্জালের ফিতনার পরীক্ষা থেকে। তোমার কাছে আশ্রয় চাই জীবন ও মৃত্যুর পরীক্ষা থেকে এবং তোমার কাছে আশ্রয় চাই পাপ ও ঋণের বোঝা থেকে।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)।
হিদায়াত পাওয়ার পর অন্তরের বক্রতা হতে মুক্তি চাওয়া-
رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারনঃ রব্বানা-লা-তুযিগ্ কুলূবানা- বা’দা ইয্ হাদাইতানা-ওয়া হাবলানা-মিল্ লাদুন্কা রহমাহ , ইন্নাকা আন্তাল্ ওয়াহ্হা-ব্।
অর্থঃ হে আমাদের রব, আপনি হিদায়াত দেয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। (সুরা আল ইমরানঃ আয়াত ৮)
অনেকেই হিদায়াত পাওয়ার পরেও আবার আগের চেহারায় ফিরে যাই/যেতে থাকি। কেউ অল্প মাত্রায়, কেউ বেশি। তারা এই দুয়াটা নিয়মিত পড়ব অবশ্যই।
অন্তরে নূর বৃদ্ধির দোয়া/ পুলসিরাত পাড় হওয়ার দোয়া
رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আতমিম লানা নূরানা ওয়াগফির লানা ইন্নাকা আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদির।’
অর্থ: 'হে আমাদের পভু! আমাদের জন্য আমাদের জ্যোতিকে পূর্ণ কর আর আমাদেরকে ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।' (সুরা তাহরিম : আয়াত ৮)
ঋণমুক্ত হওয়ার দোয়া
ঋণমুক্ত হতে সক্ষম হওয়ার জন্য রাসুল (সা.) কিছু আমল ও দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি ঋণ হতে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে অত্যধিক আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।
বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল ফাক্বরি, ওয়াল কিল্লাতি ওয়াজজিল্লাতি, ওয়া আউজুবিকা মিন আন আজলিমা আও উজলামা।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাইছি দরিদ্রতা থেকে, আপনার কম দয়া থেকে ও অসম্মানী থেকে।
আমি আপনার কাছে আরও আশ্রয় চাইছি- জুলুম করা থেকে অথবা অত্যাচারিত হওয়া থেকে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৫৪৪)
রাসুল (সা.) বলতেন- ‘আল্লাহুম্মা! ইন্নি আউযুবিকা মিনাল কাসালি, ওয়াল হারামি, ওয়াল মা’ছামি, ওয়াল মাদরামি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে অলসতা, অধিক বার্ধক্য, গুনাহ এবং ঋণ হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ’ (বোখারি, হাদিস নং ৬০০৭)
রাসুল (সা.) আরো বলতেন- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসলি, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া গালাবাতিদ দাইনি, ওয়া কাহরির রিজাল।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট দুশ্চিন্তা, অপারগতা-অলসতা, কৃপণতা এবং কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। অধিক ঋণ থেকে ও খারাপ লোকের জবরদস্তি থেকেও আশ্রয় চাচ্ছি। ’ (নাসাঈ, হাদিস নং : ৫৪৭৮)
2 notes
·
View notes
কঠিন কাজ সহজ করার জন্য দুআ এবং আমল
(১) তাক্বওয়ার পুরষ্কারঃ
আল্লাহ সুবহা'নাল্লাহু তাআ'লা বলেন,
وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مِنۡ أَمۡرِهِۦ يُسۡر
“আর যে ব্যক্তি আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।” সূরা আত-ত্বালাক্বঃ ৪।
_______________________________
(২) কঠিন কাজে পতিত হলে রাসূলুল্লাহ ﷺ যে দুআ পড়তেনঃ
اَللّٰهُمَّ لَا سَهْلَ إِلَّا مَا جَعَلْتَهُ سَهْلاً، وَأَنْتَ تَجْعَلُ الْحَزْنَ إِذَا شِئْتَ سَهْلاً
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা লা সাহলা ইল্লা মা জা‘আলতাহু সাহলা। ওয়া আংতা তাজ্‘আলুল হাযনা ইযা শি’তা সাহলা।
অর্থঃ হে আল্লাহ! কোন কাজই সহজ নয়, তা ছাড়া যা তুমি সহজ করেছ। আর যখন তুমি ইচ্ছা করো তখন দুশ্চিন্তাকেও সহজ (অর্থাৎ দূর) করতে পারো।
উৎসঃ সহীহ ইবন হিব্বানঃ ২৪২৭, (মাওয়ারিদ), ইবনুস সুন্নীঃ ৩৫১। হাফিয ইবন হাজার আসকালানী রহি'মাহুল্লাহ বলেছেন, এই হাদীসটি সহীহ। এছাড়া শায়খ আব্দুল কাদির আরনাউত ইমাম নওয়াবীর আযকার গ্রন্থের তাখরীজে (পৃ. ১০৬) একে সহীহ বলে মত প্রকাশ করেছেন।
_______________________________
(৩) মূসা আ'লাইহিস সালামের দুআঃ
মূসা আ'লাইহিস সালাম যখন আল্লাহর কালাম লাভের গৌরব অর্জন করলেন এবং নবুওয়াত ও রিসালাতের দায়িত্ব লাভ করলেন, তখন তিনি এই গুরু দায়িত্ব পালনের জন্য নিজ সত্ত্বা ও শক্তির উপর ভরসা ত্যাগ করে স্বয়ং আল্লাহ তাআ'লার সাহায্যের মুখাপেক্ষী হলেন। আল্লাহ তাআ'লার কাছে তিনি এই বলে দুআ করেছিলেন,
رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي
وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي
উচ্চারণঃ রব্বিশ-রহ’লী ছদরী। ওয়া ইয়াসসিরলী আমরী।
অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা! আমার বক্ষকে প্রশস্ত করো। আর আমার কাজ সহজ করে দাও। সূরা ত্বহাঃ ২৫-২৬।
_______________________________
(৪) আসহাবে কাহফ বা গুহাবাসী যুবকদের দুআঃ
আসহাবে কাহফ বা গুহার অধিবাসী যুবকেরা তাদের দ্বীনকে রক্ষা করার জন্যে জালিম বাদশাহ এবং মুশরিক জাতির কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের ভয় ছিল যে, না জানি তারা তাদেরকে তাদের দ্বীন থেকে বিভ্রান্ত করে ফেলে। পালিয়ে গিয়ে তারা একটি পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। তখন তারা এই ঐতিহাসিক দুআ করেছিলেন যা ক্বুরআনে উল্লেখিত হয়েছে,
رَبَّنَا آتِنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَدًا
উচ্চারনঃ রব্বানা আতিনা মিল্লাদুংকা রহ'মাতাওঁ-ওয়া হাইয়্যি' লানা মিন আমরিনা রশাদা।
অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে তোমার নিজের কাছ থেকে রহমত দান করো আর আমাদের জন্যে আমাদের কাজগুলো সঠিকভাবে পূর্ণ করো। সূরা আল-কাহফঃ ১০।
_______________________________
(৫) কাজ সহজ করার জন্য দুআঃ
رَبِّ يَسِّر وَلَا تُعَسِّر
উচ্চারণঃ রব্বি ইয়াসসির, ওয়ালা তুআ’সসির।
অর্থঃ হে আমার রব্ব! আপনি আমার জন্য বিষয়টি সহজ করো, আমার জন্য কঠিন করো না।
উল্লেখ্য, এটা ক্বুরআন ও হাদীসে বর্ণিত কোন দুআ নয়, তবে এই দুআর অর্থ সুন্দর।
প্রশ্ন করা হয়েছিল, "এইভাবে দুআ করা কি জায়েজ?"
اللهم يسر ولا تعسر
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইয়াসসির, ওয়ালা তুআ’সসির।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য বিষয়টি সহজ করে দিন, কঠিন করবেন না।
উত্তরঃ "হ্যা, এইভাবে দুআ করা জায়েজ, এই দুআ করতে কোন সমস্যা নেই। যে কোন কাজ সহজ কিংবা কঠিন হওয়া আল্লাহ সুবহা'নাহু তাআ'লার নির্ধারণ।
আল্লাহ তাআ'লা বলেন,
وَإِنْ تُصِبْهُمْ حَسَنَةٌ يَقُولُوا هَذِهِ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَإِنْ تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ يَقُولُوا هَذِهِ مِنْ عِنْدِكَ قُلْ كُلٌّ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ فَمَالِ هَؤُلَاءِ الْقَوْمِ لا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ حَدِيثًا
যদি তাদের কোন কল্যাণ ঘটে, তখন তারা বলে, এটা আল্লাহর তরফ হতে। পক্ষান্তরে যদি তাদের কোন অকল্যাণ ঘটে তখন বলে, ‘এটা তো তোমার (অর্থাৎ নবী ﷺ-এর) পক্ষ হতে।’ (হে নবী ﷺ!) আপনি বলে দিন, ‘সবকিছু-ই আল্লাহর তরফ হতে (নির্ধারিত)।’ এই জাতির লোকদের কী হলো যে, তারা কোন কথাই বুঝতে পারে না। সূরা আন-নিসাঃ ৭৮।
وبالله التوفيق، وصلى الله على نبينا محمد وآله وصحبه وسلم.
উৎসঃ আল-লাজনাতুদ-দাইয়ি'মাহ লিল বুহূষী আল-ইলমিয়্যাহ ওয়া আল-ইফতাঃ ৪২/৮৭১।
সম্মানিত মুফতিবৃন্দের নামঃ
(১) শায়খ বকর আবু জায়েদ রহি'মাহুল্লাহ (সদস্য),
(২) শায়খ সালিহ আল-ফাওযান হা'ফিযাহুল্লাহ (সদস্য),
(৩) শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে গুদাইয়্যান রহি'মাহুল্লাহ (সদস্য),
(৪) শায়খ আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ আলে-শায়খ হা'ফিযাহুল্লাহ (কমিটির প্রধান)।
1 note
·
View note
বর্তমানে দেখাও মুরশীদ, অনুমানে মানব কেনে লিরিক্স | Bortomane dakaw mursid lyrics
বর্তমানে দেখাও মুরশীদ, অনুমানে মানব কেনে লিরিক্স | Bortomane dakaw mursid lyrics
বর্তমানে দেখাও মুরশীদ, অনুমানে মানব কেনে লিরিক্স
Bortomane dakaw mursid lyrics
বর্তমানে দেখাও মুরশীদ, অনুমানে মানব কেনে,||
যেমন মহাম্মদ দেখেছিল, তেমনি দেখাও দীনহীনে।।
বার লাখ তের হাজার, তিন শত পঁচিশ প্রচার।
তাহার মধ্যে কেবা অধর, আমি খুঁজে পাইনি ধ্যানে জ্ঞানে।।
আর এক মোকামেতে শুনা, নয় লাখ ফকির আনাগোনা,
কোথায় সে খাদেম রব্বানা, যার নাম জারী ‘কুল-আরফিনে’
হায় পাঁচ পাঁচা পঁচিশের ঘরে, আমায় দেখাও দেখি…
View On WordPress
0 notes
#ঈদে #মিলাদুন্নাবীর #মাহফিল প্রথম করলেন #রব্বানা #ইমানদারগণ #জুলুছ করোনা!
0 notes
"আসসালামু আলাইকুম"
মোট ১১ টা আমল দেয়া আছে। প্রথম ৪ টা কোনমতেই বাদ দিবেন না
প্লিজ।
এরপর যে যে কয়টা ইচ্ছা হয় করবেন। সব লেভেল পার করতে
হবে এমন কথা নেই। করতে পারলে ভালো।
...
# Level_1 : (আশা করি এই লেভেল টা সবাই প্রতিদিন করবেন। )
------------
১। আয়াতুল কুরসী – প্রতি ফরজ নামাযের পরই একবার করে পড়বেন
অবশ্যই অবশ্যই। আর রাতে ঘুমানোর আগে একবার।
.
২। সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়া – রাতে ঘুমানোর আগে ১ বার (বিঃ দ্রঃ
অনেকে মুখস্ত করেন নি। দ্রুত করে নিবেন। লিখে দিচ্ছি, বাংলা
উচ্চারণে। আরবী ফন্ট অনেকের কাজ করেনা।
.
"আ-মানার-রাসুলু বিমা- উনজিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি ওয়াল মু’মিনুন। কুল্লুন আমানা
বিল্লাহি ওয়া মা��া-ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রু��ুলিহি, লা নুফার-রিকু বাইনা আহা’দিম-মির
রুসুলিহ। ওয়া 'ক্বলু সামি’না, ওয়া আতা’ না, গুফরা নাকা, রব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির।
লা~ ইউ কাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উস-আ’হা। লাহা মা কাসাবাত ওয়া আ’লাইহা মাক
তাসাবাত। রব্বানা লা~ তু আখিজনা- ইন্ নাসিনা- আও আখত্বা’না। রাব্বানা ওয়ালা তাহ’মিল
আ’লাইনা ইসরান কামা হা’মাল��াহু আ’লাল্লাজিনা মিন ক্ববলিনা। রব্বানা ওয়ালা তুহা’ম্মিল
না মা-লা~ ত্ব কতালানা বিহ। ওয়া আ’ফু আ’ন্না, ওয়াগ ফিরলানা, ওয়ার হা’মনা। আনতা
মাওলানা, ফানসুরনা আ’লাল ক্বওমিল কা-ফিরিন"
.
(এটার ফযিলত তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সমতুল্য!!! আর কি চাই বলুন! এত মর্যাদাপূর্ণ
ইবাদাত, না করতে পারলেও করার সমান সওয়াব হয়ে যাবে এটা পড়লেই!!
সুবহান আল্লাহ্। কতই না বরকতময় এই দুই আয়াত! )
(সহীহ বুখারী,মুসলিম)
.
৩। সুরা ইখলাস পাঠ করা – ১০ বার, না পারলে ৩ বার। ( প্রতি ৩ বার পড়লে
একবার কুরআন খতমের সওয়াব হয় ইন শা আল্লাহ)
(তিরমিজী শরীফ)
.
৪। দশবার দরুদ
শুধু "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" পড়লেও হয়ে যাবে। (একবার দরুদ
পড়লে দশবার আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়, রাসূল ﷺ খুশি হন; বিচার দিবসে তাঁর
শাফায়াত পাওয়া সহজ হবে ইন শা আল্লাহ)
__
সাথে রাসূল (স) এর ঘুমানোর দুয়া "আল্লাহুম্মা বিইসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়া"
পড়ে নেয়া। ডান কাধ
# Level_2 :
-------------
৫। ৩৩ বার সুবহান আল্লাহ, ৩৩ বার আলহা’মদুলিল্লাহ ,৩৪ বার আল্লাহু আকবার
পড়া
.
৬। দুই হাতের তালু একত্রে মিলিয়ে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক সূরা নাস পড়ে
তাতে ফুঁ দিবেন: তারপর দুই হাতের তালু দ্বারা দেহের যতটা অংশ সম্ভব
মাসেহ করবেন। মাসেহ আরম্ভ করবে মাথা, মুখমণ্ডল ও দেহের
সামনের দিক থেকে। (এভাবে ৩ বার।)
.
# Level_3 :
--------------
৬। ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি
যে ব্যাক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী’
পড়বে।তার গোনাহ মাফ হইয়া যাইবে,যদিও তা সাগরের ফেনা থেকেও
বেশী হয়’। (বুখারী ও মুসলিম)
.
৭।
প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদত পাঠ করুন (আশ্হাদু আন লা-~ইলাহা
ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা~ শারীকা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া
রাসূলুহূ) ।
এতে জান্নাতের ৮টি দরজার যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে
পারবেন। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ২৩৪।
................
# Level_4 :
----------------------------
৮। ঘুমাচ্ছেন, ঘুম যখন ভেঙ্গে যাবে---- তখন এইটা পড়ে নিবেন--
« ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﻭَﻟَﻪُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ، ﻭَﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻗَﺪِﻳﺮٌ، ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ، ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻛﺒَﺮُ، ﻭَﻻَ ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻻَ ﻗُﻮَّﺓَ ﺇِﻻَّ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻌَﻠِﻲِّ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ » « ﺭَﺏِّ
ﺍﻏْﻔﺮْ ﻟِﻲ ».
লা~ ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া
হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর। সুবহা-নাল্লাহি, ওয়ালহামদুলিল্লাহি, ওয়া লা~ ইলা-হা
ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়ালা- কুওয়াতা ইল্লা-বিল্লা-হিল
‘আলিয়্যিল ‘আযীম, রাব্বিগফির লী
.
অর্থ- “একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো
শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁরই; আর তিনি সকল কিছুর ওপর
ক্ষমতাবান। আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্র। আল্লাহ ছাড়া
কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সুউচ্চ সুমহান
আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং
(সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই। হে রব্ব ! আমাকে ক্ষমা
করুন”।
__
উবাদা ইবনু সামিত (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ ( ﷺ ) বলেছে‘ন, “যদি কারো
রাত্রে ঘুম ভেঙ্গে যায় অতঃপর সে উপরের যিকিরের বাক্যগুলো পাঠ
করে এবং এরপর সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় অথবা কোনো প্রকার
দু‘আ করে বা কিছু চায় তবে তার দু‘আ কবুল করা হবে। আর যদি সে এরপর
উঠে ওযু করে (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করে তাহলে তার সালাত কবুল
করা হবে।”
(সহীহ বুখারী, ১/৩৮৭, নং ১১০৩)
.
৯। প্রত্যেক সকাল ও সন্ধ্যায় সাইয়িদুল ইস্তিগফার পড়া। ক্ষমার শ্রেষ্ঠ দুয়া।
~~~~~
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দো‘আ পাঠ
করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে
মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’।
ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺭَﺑِّﻰْ ﻵ ﺇِﻟﻪَ ﺇﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺧَﻠَﻘْﺘَﻨِﻰْ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋَﺒْﺪُﻙَ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋَﻠﻰ ﻋَﻬْﺪِﻙَ ﻭَﻭَﻋْﺪِﻙَ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻄَﻌْﺖُ، ﺃَﻋُﻮْﺫُﺑِﻚَ
ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّﻣَﺎ ﺻَﻨَﻌْﺖُ، ﺃﺑُﻮْﺀُ ﻟَﻚَ ﺑِﻨِﻌْﻤَﺘِﻚَ ﻋَﻠَﻰَّ ﻭَﺃَﺑُﻮْﺀُ ﺑِﺬَﻧْﺒِﻰْ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْﻟِﻰْ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻻَﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬُّﻧُﻮْﺏَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ -
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আনতা রববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খলাক্বতানী, ওয়া
আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন
শাররি মা সানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বি যাম্বী ফাগফিরলী
ফা ইন্নাহূ লা~ ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
.
১০। সূরা মুলক (কবরের আযাব থেকে রক্ষা করে)
.
১১। তাহাজ্জুদ (ফরজ সালাতের পর আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়, দুয়া কখনো
লক্ষ্যভ্রস্ট হয়না)
_________
আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহবান জানাবে
সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং মন্দ কাজ করতে
নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম
[সূরা আলে ইমরান ৩ঃ১০৪]
©
0 notes
ধ্রুবপদ ১ ▯ তবু মনে রেখো
▯ ঢালাগান ▯ বৈতালিক ▯ মুক্তগ ▯ রবীন্দ্রমুক্তগ ▯ টপ্পা ▯ আলাপ ▯ ভাটিয়ালি
আমি বড়ো হয়েছি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং বিজয় সরকারের গান শুনে। অখণ্ড মনোযোগের সঙ্গে তখন শুনেছি রামপ্রসাদ ও রজনীকান্ত। কখনো-কখনো এমনও হয়েছে, রেডিওতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুষ্ঠান শুনবার জন্য কলেজের ক্লাস পর্যন্ত ফাকি দিয়েছি। চারদিকে তখন গান আর গান। রণজিৎ দেবনাথের ছাত্রদের রেওয়াজের কল্যাণে আমরা তখন ভৈরবী আর দরবারি ক���নাড়ার মেজাজ আলাদা করতে পারতাম। আমি যখনকার কথা বলছি, তখন নামযজ্ঞের এমন চল হয়নি। পাড়ায়-পাড়ায় তখন কবিগান আর পালাকীর্তন লেগে থাকতো। রাত জেগে বড়োদের সঙ্গে আমরা ছোটোরাও শুনতাম রামায়ণ, গাজিগান আর বেহুলার ভাসান। বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দিনভর মাইকে বাজত হেমন্ত, মান্না দে, লতা, গীতা, সন্ধ্যা, পান্নালাল থেকে নূরজাহান ও সামসাদ বেগম অব্দি। অঘ্রান-পৌষে বাড়িতে যখন ধান উঠতো, তখন গানের নানারকম উপলক্ষ্য তৈরী হতো- হরির লুট, উজোগারি, ত্রিনাথের মেলা, ঠাকুরের চিনি, আরও কত কী! প্রায় প্রত্যেক পাড়ায় তখন একটা না একটা বাড়ি থাকতো, যেখানে সন্ধ্যায় রসিক বয়স্কজন জড়ো হয়ে বিজয়, তারক, রসিক, অনাদি ও অশ্বিনীকর্তার গান করতো এবং বুক খালি ক’রে কাঁদতো। বিভিন্ন আচার-পার্বণের গানও আমরা কম পাইনি। পৌষসঙ্ক্রান্তি উপলক্ষ্যে আমরা ছোটোরা গড়তাম শুভ্রের দল, আর চৈত্রসঙ্ক্রান্তিতে একহাঁটু ধুলো নিয়ে বড়োদের অষ্টকের দলের পিছু-পিছু সারাদিন গ্রাম ঘুরে বেড়াতাম। সে এক গানের সময়! চৈত্রমাসে মা-কাকি-দিদিরা যখন ভাটির গান গেয়ে গ্রামের নদীতে ফুল ভাসিয়ে দিচ্ছে, আমরা তখন নদীর স্রোত কেটে আচারের সেইসব ফুল ধরবার জন্য সাঁতার পাল্লা দিচ্ছি। এখনও মনে পড়ে, সাত-আট বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের হাঁটুতে মাথা রেখে তার ভিজে-ভাঙা গলার বিয়ের গান শুনছি: নৌকো খটোরমটোর শুনতেচি,/ বইটেক ঝিকিরমিকির দেকতেচি-/ কান্দেলো সোনার বালি শানে আছাড় খা’য়ে।/ ভাইডির দন্যি [জন্যি] আমার জ্ব’লে যায়,/ বুনডির দন্যি আমার পুড়ে যায়-/ কান্দেলো সোনার বালি... ।।
এই শোনাটুকুই আমার সঙ্গীতপুঁজি। সঙ্গীত বিষয়ে পড়ার পুঁজি যা আছে, তা যৎসামান্য, যার মধ্য থেকে করুণাময় গোস্বামীর ‘সঙ্গীতকোষ’-এর নাম না নিলে, বোধ করি, অপরাধী থেকে যাব। সঙ্গীতে অধিকার বলতে যা বোঝায়, তা হয়তো আমার নেই; তবু একজন একনিষ্ঠ শ্রোতা হওয়ার কারণে আমার মনে এই প্রতীতি জন্মেছে যে, রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে কোনো ধরণের বাড়াবাড়ি পছন্দ করতেন না। সরল সমর্পণই তাঁর গানের প্রাণ। এমন মধুর আত্মনিবেদন বিশ্বসঙ্গীতের আর কারো গানে আছে কি না, আমি জানি না। একটু কান পাতলেই বোঝা য়ায়, বাণী ও সুরের এক অভূতপূর্ব দাম্পত্য-সংযম তাঁর সঙ্গীতকে ক’রে তুলেছে স্বতন্ত্র। এখানে কেউ কাউকে ছাপিয়ে নিজের কর্তৃত্ব স্থাপন করে না। এখানে দোহে মিলে একপ্রাণ। আর সব এহ বাহ্য। রবীন্দ্রনাথের কানে, আমার কেনো জানি মনে হয়, তালও কখনো-কখনো কোলাহলের মতো বাজতো। তাই তিনি হয়তো সারাজীবন তাল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন, নিজেও ছয়টি তাল তৈরি করেছেন- অবশ্য উল্টোষষ্ঠীকে ষষ্ঠী থেকে ভিন্ন ধরলে সঙ্খ্যাটি হবে সাত, এবং শেষ জীবনে এসে তিনি নিজের টপ্পাঙ্গের গানগুলিকে ঢালালয়ে গেয়ে সঙ্গীতকে তালের কোলাহলমুক্ত করেছেন। গোড়াতে এই গানগুলি আড়াঠেকা, একতাল, ত্রিতাল, ঠুঙরি, তেওরা ইত্যাদি তালে বাঁধা হয়েছিলো। পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথের প্রশ্রয়ে এগুলি ঢালারূপ নেয়। কবির কণ্ঠে আপনারা হয়তো ‘তবু মনে রেখো’ গানটি শুনে থাকবেন। কী ঐকান্তিক সঙ্গীতায়োজন! কোনো তাল নেই, কোনো যন্ত্রানুসঙ্গ নেই, কোনো শ্রোতা নেই। শুধু তুমি আর আমি। তোমাকে একান্তে ব্যথা জানাব ব’লেই এই অনুষ্ঠান। এই ধরণের গানকে পণ্ডিতেরা ব’লে থাকেন ঢালাগান। আমি এগুলিকে বলি মুক্তগ। আমার সকল নিয়ে ব’সে আছি, তোমায় নতুন ক’রে পাব ব’লে, শুধু তোমার বাণী নয়গো, মেঘের পরে মেঘ জমেছে, সার্থক জনম আমার, আহা তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা, যদি প্রেম দিলে না প্রাণে, আমি রূপে তোমায় ভোলাব না ইত্যাদি গান সাধারণত মুক্তগ ঢঙে গাওয়া হয়। তালমুক্ত গান হওয়ায় এদেরকে কেউকেউ বৈতালিক ব’লে ভুল ক’রে থাকেন। বৈতালিক আদৌ কোনো গানের ধরণ নয়- বৈতালিক প্রকৃতপক্ষে একশ্রেণির গায়ক, যারা জাতকের কাহিনি বা কোনো বৌদ্ধ গাঁথা গানের মাধ্যমে পরিবেশন করতো, অথবা যারা স্তুতিপাঠ ক’রে রাজারানিদের ঘুম ভাঙাতো।
আপনারা হয়তো জানেন, ছান্দসিকরা কবিতার এক বিশেষ ধরণকে ‘মুক্তক’ অভিধা দিয়েছেন। নামটি সম্ভবত প্রবোধচন্দ্র সেন মহাশয়ের দেওয়া। কিন্তু অভিধাটি ব্যাকরণসিদ্ধ নয়। শব্দটি হবে মুক্তগ। মুক্তগ অর্থ ‘যে মুক্ত গতিতে চলে’ বা ‘মুক্ত গমন যার’। যে-সমস্ত কবিতা নিয়মিত সমপার্বিক ছন্দের শাসনমুক্ত কিন্তু জোড়চলনে সততই গতিশীল, সেগুলিই মুক্তগ। বাঙলা আধুনিক থিয়েটারের জনক গিরিশচন্দ্র ঘোষের নাট্যসংলাপের মধ্যে এই ছন্দের বীজ সুপ্ত থাকলেও রবীন্দ্রনাথই প্রকৃতপক্ষে মুক্তগের প্রতিপালক ও অভিভাবক। পরবর্তীতে জীবনানন্দ দাশের কবিতায় আমরা দেখতে পাই ছন্দটির এক নিপুণ কারিগরি। কবিতার মতো গানেও রবীন্দ্রনাথ মুক্তগের প্রতিপালক। গানকে তিনি তালের বন্ধনমুক্ত ক’রে নতুনভাবে প্রেয়কে আস্বাদনের চেষ্টা করেছেন। সৃষ্টির প্রয়োজনে প্রথা ভাঙায় তাঁর জুড়ি নেই। একদিকে তিনি যেমন বাঙলা গদ্যকবিতার জনক, অন্যদিকে তেমন গদ্যকে সুরে গেয়ে তিনি গদ্যগানের জন্ম দিয়েছেন। এমন অসাধারণ দক্ষতায় তিনি গদ্যকে সঙ্গীত ক’রে তুলেছেন যে, শ্রোতাকে পূর্বভাগে ব’লে না দিলে তার খেয়ালই হবে না, গানটির বাণী গদ্য ছিল। আমি কতো-কতো দিন তাঁর ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী,/ উড়ে চলে দিগ্দিগন্তের পানে/ নিঃসীম শূন্যে শ্রাবণসঙ্গীতে/ রিমিঝিম রিমিঝিম রিমিঝিম’ শুনেছি, অথচ বোধেই আসেনি গানটি অন্ত্যমিলশূন্য। কী অনির্বচনীয় শিল্পচাতুর্য! ‘চণ্ডালিকা’য় মা যখন নিখুঁত সুর-তাল-লয়ে প্রকৃতিকে প্রশ্ন করছে, “পোড়া কপাল আমার!/ কে বলেছে তোকে ‘জল দাও’!”, তখন কানের বুঝে উঠতে কষ্ট হয়, নিছক একখণ্ড গদ্যকে রবীন্দ্রনাথ গানের নাম ক’রে চালিয়ে দিলেন।
এখানে একটি প্রশ্ন আসে, রবীন্দ্রমুক্তগ কোন সঙ্গীতাদর্শে গ’ড়ে উঠেছে- আলাপ, টপ্পা, না ভাটিয়ালির? ভাঙাটপ্পাগুলি বাদে কবিগুরুর টপ্পাঙ্গের বাকি গানগুলি যেহেতু মুক্তগ হয়ে উঠেছে এবং গানগুলির নতুন সংস্করণেও গিটকারি [পরস্পর-ঘনিষ্ঠ স্বরগুচ্ছের দ্রুত উচ্চারণ] বা স্বরঘেষের ব্যবহার যেহেতু টপ্পানুগ, রবীন্দ্রমুক্তগের সঙ্গে টপ্পার সম্পর্ক সেহেতু ��ন্মসূত্রীয়, ফলে অনস্বীকার্য। তবে টপ্পার বাইরের কিছু গানও ইদানিং মুক্তগ ঢঙে গাওয়া হচ্ছে- যেমন, আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার। উল্লেখ্য, এই গানটি কবিগুরুর নিজের তৈরী তাল ঝম্পকে বাঁধা। এবার আসা যাক আলাপ প্রসঙ্গে। আলাপ যেহেতু অনিবদ্ধ বা তালবন্ধনমুক্ত একধরণের ধ্যানগম্ভীর বিলম্বিত রাগরূপ, সেহেতু রবীন্দ্রমুক্তগের সঙ্গে এর সম্পর্কের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তবে টপ্পায় ঢালালয় ব্যবহারের ব্যাপারে আলাপ রবীন্দ্রমানসে কতোটা প্রভাব রেখেছিলো, তা আজ বলা বেশ মুশকিলের। আলাপের মতো ভাটিয়ালিও হতে পারে রবীন্দ্রমুক্তগের প্রেরণা। ভাটিয়ালি বাঙালির নাড়ির সুর। আলাপের মতো তারও রয়েছে একটি ধীর নাতিচঞ্চল প্রবাহ, কিন্তু সে-প্রবাহ আলাপের চেয়ে ঢের করুণ ও হাহাকারময়। একগুচ্ছ অক্ষর পরপর উচ্চারণের পর ভাটিয়াল যখন ওই অক্ষরগুচ্ছের শেষ স্বরটি ধ’রে লম্বা সুরে টান দেয়, তখন চারদিকে ফুটে ওঠে এক শান্ত নির্জনতা। জগৎ-সংসারে তখন ভাটিয়াল আর তার অনামা দরদি ছাড়া কেউই থাকে না। সেইসঙ্গে হঠাৎ যখন ভাটিয়ালের কণ্ঠস্বর মুদরা থেকে তারায় পৌঁছায়, তখন নিমিষেই একটি বুকফাটা হাহাকার ছড়িয়ে পড়ে সারা আকাশময়। ভাটিয়ালির মুখ্য উদ্দ্যেশ্য তাই শ্রোতারঞ্জন নয়। একান্তে কেঁদে হালকা হওয়ার জন্য এই গান। এইখানেই ভাটিয়ালির সঙ্গে রবীন্দ্রমুক্তগের সাদৃশ্য। রবীন্দ্রমুক্তগেও ভাটিয়ালির মতো পরপর একগুচ্ছ অক্ষর উচ্চারণের পর রয়েছে একটি প্রলম্বিত স্বর, এবং গানের মাঝে-মাঝে এখানে কান্নার মতো ডুকরে ওঠে টপ্পার গিটকারি। রবীন্দ্রমুক্তগ তাই একান্তে কাঁদবার আয়োজন।
পরিশেষে আমার একটি স্বপ্নের কথা বলবো। আমি স্বপ্ন দেখি এমন একজন কবির, যাঁর মুক্তগ আবৃত্তির সময়ে ভাষার শ্রেষ্ঠ বাকশিল্পী পর্য���্ত ভয়ে-শ্রদ্ধায় সচেতন হয়ে উঠবেন পাছে কবির কাব্যের নীরবতা ভেঙে পড়ে, এবং এমন একজন সঙ্গীতকারের অপেক্ষায় আছি, যাঁর মুক্তগ ভাটিয়ালির কান্না হয়ে নিরাবেগ পৃথিবীকে অশ্রুর আনন্দ ফিরিয়ে দেবে। আর তবেই হবে ছন্দের ও তালের কোলাহল থেকে কাব্য এবং সঙ্গীতের যথার্থ মুক্তি।
পুনশ্চবাঙালির নিজস্ব সঙ্গীতের কথা উঠলে যে-নামটি সর্বপ্রথম আসে, সেটি ভাটিয়ালি। এরপর আসে কীর্তন। নদীমাতৃক বাঙলাদেশে অর্থাৎ একসময়কার পূর্ববঙ্গে ভাটিয়ালির জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। আমার বাড়ি বাঙলাদেশের বৃহত্তর যশোর-খুলনা অঞ্চলে। এখানকার সাধারণ মানুষ তাদের নিত্যকার কাজকর্মের মধ্যে কিম্বা অবসরে নিজেদের অজান্তে যে সাধারণ সুরটি প্রায়ই গুনগুন ক’রে গেয়ে ওঠে, সেটি বস্তুত ভাটিয়ালি। তাদের এই গুনগুনানি হয়তো কিছু অর্থহীন অক্ষরমাত্র, কিন্তু হাহাকারটি সঙ্ক্রামক ও মর্মভেদী। বিখ্যাত কবিয়াল বিজয় সরকারের সমস্ত ধুয়া ও বিচ্ছেদী গান এই সুরের কারণে বিশিষ্ট। তাঁর বাড়িও পূর্ববঙ্গে। সামান্য খেয়াল ক’রে আমরা যদি দুই বাঙলার বাউলসঙ্গীত শুনি, তবে সহজেই আমরা পশ্চিমবঙ্গের বাউল থেকে পূর্ববঙ্গের বাউলের কিছু পার্থক্য আলাদা করতে পারবো। ঝুমুরের চাঞ্চল্য ও ঢপকীর্তনের সুরমাধুর্য পশ্চিমবঙ্গের বাউলকে করেছে গতিশীল। এই পশ্চিমবঙ্গেই একদিন কীর্তনের জন্ম হয়েছিলো, এবং কালে তার প্লাবন ছড়িয়ে পড়ে সারা বাঙলায়। বাঙলাদেশের বাউলেও তাই কীর্তন ক্রিয়াশীল। কিন্তু এখানকার ভাটিয়ালির নিমগ্নতাকে সে পুরোপুরি ভাঙতে পারিনি। এই ভাটিয়ালির গুণেই বাউলসম্রাট লালনের আমি অপার হয়ে ব’সে আছি, আমি একদিনও না দেখিলাম তারে, রাখিলেন সাঁই কূপজল ক’রে, আকার কি নিরাকার সাঁই রব্বানা, আর আমারে মারিসনে মা ইত্যাদি গান এমন ঐকান্তিক ও হাহাকারময়। জয়তু ভাটিয়ালি!
দেবদাস মিস্ত্রি
ঋতুসার। ১ অগ্রহায়ণ ১৪২২। ১৫ নভেম্বর ২০১৫। রবিবার। খুলনা
1 note
·
View note
প্রশ্ন: গুনাহ্ থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের কি কি করতে হবে ? আর কি দোয়া পড়তে হবে ? উত্তর: গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য- ১: সকল গুনাহ থেকে তাওবা করতে হবে ৷ ২: আল্লাহর কাছে দৃঢ় অঙ্গিকার করতে হবে ঐ গুনাহের কাজে পুনরায় ফিরে না আসার ব্যাপারে। ৩: সর্বদা জ্ঞানার্জন ও নেক কাজ অথবা ৪: দুনিয়াবী উপকারী কাজ-কর্মের সাথে নিজেকে সম্পর্কিত রাখতে হবে। ৫: খারাপ বন্ধু-বান্ধবী বা সঙ্গীদেরকে বর্জন করতে হবে। ৬: গুনাহের কাজের ভয়াবহতা এবং তার শাস্তি স্মরণ করতে হবে। ৭: হঠাৎ মৃত্যু এসে যেতে পারে, একথা স্মরণ রাখতে হবে। ৮: রোয কিয়ামতে আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতার বিষয় স্মরণ করতে হবে। ৯: তারপর এভাবে চলার জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করতে হবে। কয়েকটি দুয়া নিম্নে উল্লেখ করা হল: @১) দুয়া: " ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺇﻧﻲ ﺃﺳﺄﻟﻚ ﺍﻟﻬﺪﻯ، ﻭﺍﻟﺘﻘﻰ، ﻭﺍﻟﻌﻔﺎﻑ، ﻭﺍﻟﻐﻨﻰ " উচ্চারন: আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকাল হুদা, ওয়াত্তুকা,ওয়াল আফাফা ওয়াল গিনা। (হে আল্লাহ তোমার কাছে চাই হেদায়াত, তোমাকে ভয় করে চলার ক্ষমতা, সবধরনের অপরাধ থেকে পবিত্রতা এবংঅভাবমুক্তি। @২) দুআ- ﺍﻟﻠّٰﻬُﻢَّ ﺣَﺒِّﺐْ ﺇِﻟَﻴْﻨَﺎ ﺍﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥَ ﻭَﺯَﻳِّﻨْﻪُ ﻓِﻲْ ﻗُﻠُﻮْﺑِﻨَﺎ، ﻭَﻛَﺮِّﻩْ ﺇِﻟَﻴْﻨَﺎ ﺍﻟْﻜُﻔْﺮَ، ﻭَﺍﻟْﻔُﺴُﻮْﻕَ، ﻭَﺍﻟْﻌِﺼْﻴَﺎﻥَ، ﻭَﺍﺟْﻌَﻠْﻨَﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﺪِﻳْﻦَ . উচ্চারণ :আল্লাহুম্মা হাব্বিব ইলাইনাল ঈমান, ওয়া যাইয়িনহু ফি কুলুবিনা ওয়া কাররিহ ইলাইনাল কুফ্র,ওয়াল ফুসুক,ওয়াল ইসিয়ান, ওয়াজ'আলনা মিনার রশিদিন। হে আল্লাহ ঈমানকে আমার কাছে প্রিয় করে দাও এবং তা আমার অন্তরে সুসজ্জিত করো। আর কুফরী, ফাসেকী এবং গুনাহের কাজগুলো আমার কাছে ঘৃণিত করে দাও। আর আমাকে সঠিক পথ প্রাপ্তদের মধ্যে শামিল করো। @৩)দুয়া: ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻻَ ﺗُﺰِﻍْ ﻗُﻠُﻮﺑَﻨَﺎ ﺑَﻌْﺪَ ﺇِﺫْ ﻫَﺪَﻳْﺘَﻨَﺎ ﻭَﻫَﺐْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦ ﻟَّﺪُﻧﻚَ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟْﻮَﻫَّﺎﺏُ উচ্চারণ: রব্বানা লা তুযিগ কুলুবানা বা' দা ইজ হাদাইতানা ওয়া হাবলানা মিল্লা দুনকা রহমাহ।ইন্নাকা আন্তাল ওয়াহহাব। (হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে হেদায়াত প্রদানের পর আমাদের অন্তরকে বক্র করে দিও না। তোমার রহমত দান করো আমাদেরকে। নিশ্চয় তুমি মহান দাতা।) উত্তর দিয়েছেন:- শাইখ আব্দুল্লাহ্ আল-কাফি
0 notes
মজলুমের দোআ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَٰذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ نَصِيرًا হে আমাদের রব, আমাদেরকে বের করুন এ জনপদ থেকে যার অধিবাসীরা যালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন অভিভাবক নির্ধারণ করুন। আর নির্ধারণ করুন আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী রব্বানা য় আখ্রিজ্ব না-মিন্ হা-যিহিল্ র্ক্বাইয়াতিজ্জোয়া-লিমি আহ্লুহা- অজ্ব’আল্ লানা- মিল্লাদুন্কা অলিয়্যাওঁ অজ্ব ‘আল্ লানা-মিল্লাদুন্কা নাছীরা-। সূরা আন-নিসা - ৪:৭৫ দোআ ও যিকির (হিসনুল মুসলিম) (at Panthapath)
0 notes
প্ৰেম করেছে সাঁই রব্বানা লিরিক্স | Prem korache sai rabbana lyrics
প্ৰেম করেছে সাঁই রব্বানা লিরিক্স | Prem korache sai rabbana lyrics
প্ৰেম করেছে সাঁই রব্বানা লিরিক্স
Prem korache sai rabbana lyrics
প্ৰেম করেছে সাঁই রব্বানা ||
তাদের সহজ প্রেমের নাই তুলনা।
প্রেমেতে মগ্ন সদা মহম্মদা
খোদ খোদা অশোক জন।।
আলা নবী আদম ছবি
করলো প্রেমের দাবি এই তিন জনা।
একেতে আছে এই তিন
জেনো না ভিন।
চিহ্ন গেলে হবে ফানা।
যেমন কুপ জল আর গঙ্গা জলে
মিরাজ যে মিলন হলো এই দু’জনা।
এসকে ছাদেকি প্ৰেমে
ফাতেমাকে মা বলেছেন সাই রব্বানা,
যে জন প্রেমের মানুষ…
View On WordPress
0 notes