Tumgik
#ইমাম বুখারি রহ.
quransunnahdawah · 10 days
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা যোগ্য নেতৃত্বের প্রধান দায়িত্ব। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কোনো কওম বা জামায়াতের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত হন এবং ওই কওম বা জামায়াতের মধ্যে শক্তি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বাধা না দেন, তাহলে মৃত্যুর আগে দুনিয়াতেই তাঁদের ওপর আল্লাহর আজাব এসে যাবে।’ (আবু দাউদ)
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেন, ‘হে আবদুর রহমান ইবনে সামুরা! তুমি নেতৃত্ব চেয়ে নিয়ো না। কেননা চাওয়ার পর যদি তোমাকে দেওয়া হয়, তবে তার দায়-দায়িত্ব তোমার ওপরই বর্তাবে। আর যদি চাওয়া ছাড়া তোমাকে দেওয়া হয়, তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর কোনো বিষয়ে কসম করার পর যদি তার বিপরীত দিকটি বেশি কল্যাণকর মনে হয় তাহলে কাজটি করে ফেলো আর তোমার কসমের কাফফারা দিয়ে দিয়ো।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি বিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক. নেতৃত্বের মোহ ত্যাগ করা। নেতৃত্ব চেয়ে না নেওয়া। কেননা তাতে মানুষের ব্যর্থ ও নিন্দিত হওয়ার ভয় আছে, দুই. জিদের বশবর্তী হয়ে কোনো কল্যাণকর বিষয় ত্যাগ করা উচিত নয়।
এমনকি কোনো কল্যাণকর কাজ না করার কসম করলেও তা পরিহার না করে কাফফারা আদায় করা উত্তম।
নেতৃত্ব চাওয়া বারণ কেন?
রাসুলুল্লাহ (সা.) আলোচ্য হাদিসে নেতৃত্ব চেয়ে নিতে নিষেধ করেছেন এবং এর কারণ হিসেবে বলেছেন—তখন পুরো দায়িত্ব ও ব্যর্থতার দায় ব্যক্তির ওপর বর্তাবে এবং মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করবে না। বিপরীতে মানুষের আগ্রহে নেতৃত্ব গ্রহণ করলে তারা সহযোগিতা করবে। ইমাম বুখারি (রহ.) উল্লিখিত হাদিসের শিরোনাম নির্ধারণ করেছেন, ‘যে লোক আল্লাহর কাছে নেতৃত্ব চায় না আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন’—যা থেকে প্রমাণিত হয়, এখানে ‘সাহায্য করা হবে’ বাক্যে আল্লাহর সাহায্যও অন্তর্ভুক্ত।
কোনো ব্যক্তি নির্মোহভাবে মানুষের কল্যাণ ও ইসলামের সেবা করার জন্য নেতৃত্ব গ্রহণে সম্মত হলে সে আল্লাহর সাহায্য লাভ করবে। এ ছাড়া নেতৃত্বের লোভ এক প্রকার জাগতিক মোহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) জাগতিক মোহ সম্পর্কে বলেন, ‘দুনিয়ার মোহ সব পাপের মূল।’ (ফয়জুল কাদির, হাদিস : ৩৬৬২)
নেতৃত্ব পরকালে লজ্জার কারণ হবে
নেতৃত্বের প্রত্যাশার ব্যাপারে একাধিক হাদিসে মহানবী (সা.) সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমরা নেতৃত্বের লোভ করো, অথচ কিয়ামতের দিন তা লজ্জার কারণ হবে।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৮)
প্রত্যাশীদের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না
কোনো ব্যক্তি নেতৃত্বপ্রত্যাশী হলে তাকে নেতৃত্ব না দেওয়ার নিদের্শনা দিয়েছে ইসলাম। আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আমার গোত্রের দুই ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। সে দুজনের একজন বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমির নিযুক্ত করুন। অন্যজনও অনুরূপ কথা বলল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যারা নেতৃত্ব চায় এবং এর লোভ করে, আমরা তাদের এ পদে নিয়োগ করি না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৯)
বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নবী বলল, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৪৭)
নেতৃত্বের ভিত্তি হবে জনকল্যাণ
ইসলামী বিধান মতে কোনো সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের মূলভিত্তি কল্যাণকামিতা। মাকিল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং সে কল্যাণকামিতার সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৫১)
জাতির দুর্দিনে নেতৃত্ব গ্রহণ নিন্দনীয় নয়
নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়া ��িন্দনীয়। তবে জাতির দুর্দিনে নেতৃত্বের জন্য এগিয়ে আসা নিন্দনীয় নয়; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তা প্রশংসনীয়ও বটে। বিশেষত যখন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিকল্প কোনো ব্যক্তি পাওয়া না যায়। মিসরের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ থেকে জাতি রক্ষা করতে ইউসুফ (আ.) মিসর শাসককে বলেছিলেন, ‘আমাকে দেশের ধনভাণ্ডারের কর্তৃত্ব প্রদান করুন। নিশ্চয়ই আমি উত্তম রক্ষক, সুবিজ্ঞ।’ (সুরা : ইউসুফ,    আয়াত : ৫৫)
আল্লাহ সবাইকে নেতৃত্বের মোহ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
 
নেতৃত্ব গঠনে মহানবী (সা.)–র ৫ মূলনীতি
মহানবী (সা.) সব সময় মানুষের নেতৃত্ব গঠনে জোর দিয়েছেন। কোনো আদর্শকে না থাকলে কেউ নেতৃত্বের অধিকারী ব্যক্তি হতে পারেন না। তিনি নিজে বেশ কিছু নীতি অবলম্বন করতেন। একে একে সেগুলো বর্ণনা করা যাক।
 কায়েমি নেতৃত্ব পরিবর্তনের কর্মপন্থা
কোনো নবী প্রচলিত নেতা বা শাসকের কাছে নেতৃত্বের দাবি করেননি। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-ও মক্কা ও অন্যান্য স্থানের নেতা ও শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছেন, তাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু তাদের কখনো সরাসরি কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করতে বলেননি। সমাজপতিরা আগেকার মতো মহানবী (সা.)-এর বিরোধিতা করেছেন। তাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে সমাজের অন্যরা ইসলামের আওয়াজ শুনতে পেয়েছে। প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব ইসলাম কবুল করতে রাজি না হওয়ায় লাভ হয়েছে যে, তাদের অধীনস্তদের অনেকে ইসলাম গ্রহণ করা তাদের থেকে নতুন নেতৃত্ব জেগে উঠেছে।
নেতা নির্বাচন
নেতা নির্বাচনে মহানবী (সা.) কেবল যোগ্য ও বিশেষজ্ঞকে মনোনীত করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ক্ষমতা বা পদের জন্য লালায়িত ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করতেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্বপূর্ণ কাজে এমন কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করব না, যে তা পাওয়ার জন্য প্রার্থী হবে; অথবা এমন কাউকেও নয়, যে তা পাওয়ার জন্য লালায়িত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৮২৪)
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তুমি যদি চেয়ে নিয়ে তা লাভ করো, তাহলে তোমাকে ওই দায়িত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর না চাইতেই যদি তা পাও তাহলে তুমি সে জন্য সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭,১৪৭; মুসলিম, হাদিস: ১,৬৫২)
জবাবদিহিতা
নবীজির(সা.) নেতৃত্ব পরিচালনার মূলনীতি ছিল কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও অর্থ-সম্পদ আল্লাহ ও মুসলিমদের আমানত। আল্লাহভীরু ও ন্যায়পরায়ণ লোকদের হাতে তা ন্যস্ত থাকবে। কেউ ইচ্ছামত তা নষ্ট করার অধিকার রাখবে না। এ আমানত যাদের হাতে সোপর্দ করা হবে তারা এর দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে বাধ্য। আল্লাহ বলেছেন, ‘আমানত বহনের যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে আমানত সোপর্দ করার জন্য আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৫৮)
 পরামর্শ সভা গঠন
কোরআনে নবীজি (সা.)–কে পরামর্শের ভিত্তিতে কার্যনির্বাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি তাই মজলিসে শূরা বা পরামর্শ সভা গঠন করেন। আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে বিজ্ঞ সাহাবিরা ছিলেন সভার সদস্য। সদস্যদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করতেন, তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। যদিও কোরআন তাকে ক্ষমতা দিয়েছে সে-সব পরামর্শ গ্রহণ না করার বা বর্জন করার। নবীজির (সা.)পরামর্শ গ্রহণের নীতি থেকে বোঝা যায়, নেতা পরামর্শ চাইবেন সংশ্লিষ্ট লোকেরাও পরামর্শ দেবে; কিন্তু তার নিকট যে পরামর্শ বেশি সঠিক ও কল্যাণকর মনে হবে তা তিনি গ্রহণ করবেন।
জনগণের সেবক
নবীজি (সা.)বলেছেন, নেতা হবেন জনগণের সেবক (মিশকাত আল মাসাবিহ, হাদি��: ৩,৯২৫)। তিনি তাঁর অনুসারীদের এভাবেই তৈরি করেছিলেন। ফলে প্রসাশনের বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নিজেদের জনগণের সেবকের ভূমিকায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইসলামে নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি
youtube
নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা তৈরি হয় বাসা থেকেই 
youtube
নেতৃত্ব দিবে কারা ? 
youtube
নেতৃত্বের গুণাবলী
youtube
নেতৃত্ব আল্লাহর আমানত
youtube
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
1 note · View note
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা যোগ্য নেতৃত্বের প্রধান দায়িত্ব। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কোনো কওম বা জামায়াতের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত হন এবং ওই কওম বা জামায়াতের মধ্যে শক্তি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বাধা না দেন, তাহলে মৃত্যুর আগে দুনিয়াতেই তাঁদের ওপর আল্লাহর আজাব এসে যাবে।’ (আবু দাউদ)
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেন, ‘হে আবদুর রহমান ইবনে সামুরা! তুমি নেতৃত্ব চেয়ে নিয়ো না। কেননা চাওয়ার পর যদি তোমাকে দেওয়া হয়, তবে তার দায়-দায়িত্ব তোমার ওপরই বর্তাবে। আর যদি চাওয়া ছাড়া তোমাকে দেওয়া হয়, তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর কোনো বিষয়ে কসম করার পর যদি তার বিপরীত দিকটি বেশি কল্যাণকর মনে হয় তাহলে কাজটি করে ফেলো আর তোমার কসমের কাফফারা দিয়ে দিয়ো।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি বিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক. নেতৃত্বের মোহ ত্যাগ করা। নেতৃত্ব চেয়ে না নেওয়া। কেননা তাতে মানুষের ব্যর্থ ও নিন্দিত হওয়ার ভয় আছে, দুই. জিদের বশবর্তী হয়ে কোনো কল্যাণকর বিষয় ত্যাগ করা উচিত নয়।
এমনকি কোনো কল্যাণকর কাজ না করার কসম করলেও তা পরিহার না করে কাফফারা আদায় করা উত্তম।
নেতৃত্ব চাওয়া বারণ কেন?
রাসুলুল্লাহ (সা.) আলোচ্য হাদিসে নেতৃত্ব চেয়ে নিতে নিষেধ করেছেন এবং এর কারণ হিসেবে বলেছেন—তখন পুরো দায়িত্ব ও ব্যর্থতার দায় ব্যক্তির ওপর বর্তাবে এবং মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করবে না। বিপরীতে মানুষের আগ্রহে নেতৃত্ব গ্রহণ করলে তারা সহযোগিতা করবে। ইমাম বুখারি (রহ.) উল্লিখিত হাদিসের শিরোনাম নির্ধারণ করেছেন, ‘যে লোক আল্লাহর কাছে নেতৃত্ব চায় না আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন’—যা থেকে প্রমাণিত হয়, এখানে ‘সাহায্য করা হবে’ বাক্যে আল্লাহর সাহায্যও অন্তর্ভুক্ত।
কোনো ব্যক্তি নির্মোহভাবে মানুষের কল্যাণ ও ইসলামের সেবা করার জন্য নেতৃত্ব গ্রহণে সম্মত হলে সে আল্লাহর সাহায্য লাভ করবে। এ ছাড়া নেতৃত্বের লোভ এক প্রকার জাগতিক মোহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) জাগতিক মোহ সম্পর্কে বলেন, ‘দুনিয়ার মোহ সব পাপের মূল।’ (ফয়জুল কাদির, হাদিস : ৩৬৬২)
নেতৃত্ব পরকালে লজ্জার কারণ হবে
নেতৃত্বের প্রত্যাশার ব্যাপারে একাধিক হাদিসে মহানবী (সা.) সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমরা নেতৃত্বের লোভ করো, অথচ কিয়ামতের দিন তা লজ্জার কারণ হবে।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৮)
প্রত্যাশীদের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না
কোনো ব্যক্তি নেতৃত্বপ্রত্যাশী হলে তাকে নেতৃত্ব না দেওয়ার নিদের্শনা দিয়েছে ইসলাম। আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আমার গোত্রের দুই ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। সে দুজনের এ��জন বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমির নিযুক্ত করুন। অন্যজনও অনুরূপ কথা বলল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যারা নেতৃত্ব চায় এবং এর লোভ করে, আমরা তাদের এ পদে নিয়োগ করি না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৯)
বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নবী বলল, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৪৭)
নেতৃত্বের ভিত্তি হবে জনকল্যাণ
ইসলামী বিধান মতে কোনো সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের মূলভিত্তি কল্যাণকামিতা। মাকিল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং সে কল্যাণকামিতার সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৫১)
জাতির দুর্দিনে নেতৃত্ব গ্রহণ নিন্দনীয় নয়
নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়া নিন্দনীয়। তবে জাতির দুর্দিনে নেতৃত্বের জন্য এগিয়ে আসা নিন্দনীয় নয়; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তা প্রশংসনীয়ও বটে। বিশেষত যখন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিকল্প কোনো ব্যক্তি পাওয়া না যায়। মিসরের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ থেকে জাতি রক্ষা করতে ইউসুফ (আ.) মিসর শাসককে বলেছিলেন, ‘আমাকে দেশের ধনভাণ্ডারের কর্তৃত্ব প্রদান করুন। নিশ্চয়ই আমি উত্তম রক্ষক, সুবিজ্ঞ।’ (সুরা : ইউসুফ,    আয়াত : ৫৫)
আল্লাহ সবাইকে নেতৃত্বের মোহ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
 
নেতৃত্ব গঠনে মহানবী (সা.)–র ৫ মূলনীতি
মহানবী (সা.) সব সময় মানুষের নেতৃত্ব গঠনে জোর দিয়েছেন। কোনো আদর্শকে না থাকলে কেউ নেতৃত্বের অধিকারী ব্যক্তি হতে পারেন না। তিনি নিজে বেশ কিছু নীতি অবলম্বন করতেন। একে একে সেগুলো বর্ণনা করা যাক।
 কায়েমি নেতৃত্ব পরিবর্তনের কর্মপন্থা
কোনো নবী প্রচলিত নেতা বা শাসকের কাছে নেতৃত্বের দাবি করেননি। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-ও মক্কা ও অন্যান্য স্থানের নেতা ও শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছেন, তাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু তাদের কখনো সরাসরি কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করতে বলেননি। সমাজপতিরা আগেকার মতো মহানবী (সা.)-এর বিরোধিতা করেছেন। তাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে সমাজের অন্যরা ইসলামের আওয়াজ শুনতে পেয়েছে। প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব ইসলাম কবুল করতে রাজি না হওয়ায় লাভ হয়েছে যে, তাদের অধীনস্তদের অনেকে ইসলাম গ্রহণ করা তাদের থেকে নতুন নেতৃত্ব জেগে উঠেছে।
নেতা নির্বাচন
নেতা নির্বাচনে মহানবী (সা.) কেবল যোগ্য ও বিশেষজ্ঞকে মনোনীত করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ক্ষমতা বা পদের জন্য লালায়িত ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করতেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্বপূর্ণ কাজে এমন কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করব না, যে তা পাওয়ার জন্য প্রার্থী হবে; অথবা এমন কাউকেও নয়, যে তা পাওয়ার জন্য লালায়িত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৮২৪)
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তুমি যদি চেয়ে নিয়ে তা লাভ করো, তাহলে তোমাকে ওই দায়িত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর না চাইতেই যদি তা পাও তাহলে তুমি সে জন্য সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭,১৪৭; মুসলিম, হাদিস: ১,৬৫২)
জবাবদিহিতা
নবীজির(সা.) নেতৃত্ব পরিচালনার মূলনীতি ছিল কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও অর্থ-সম্পদ আল্লাহ ও মুসলিমদের আমানত। আল্লাহভীরু ও ন্যায়পরায়ণ লোকদের হাতে তা ন্যস্ত থাকবে। কেউ ইচ্ছামত তা নষ্ট করার অধিকার রাখবে না। এ আমানত যাদের হাতে সোপর্দ করা হবে তারা এর দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে বাধ্য। আল্লাহ বলেছেন, ‘আমানত বহনের যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে আমানত সোপর্দ করার জন্য আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৫৮)
 পরামর্শ সভা গঠন
কোরআনে নবীজি (সা.)–কে পরামর্শের ভিত্তিতে কার্যনির্বাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি তাই মজলিসে শূরা বা পরামর্শ সভা গঠন করেন। আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে বিজ্ঞ সাহাবিরা ছিলেন সভার সদস্য। সদস্যদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করতেন, তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। যদিও কোরআন তাকে ক্ষমতা দিয়েছে সে-সব পরামর্শ গ্রহণ না করার বা বর্জন করার। নবীজির (সা.)পরামর্শ গ্রহণের নীতি থেকে বোঝা যায়, নেতা পরামর্শ চাইবেন সংশ্লিষ্ট লোকেরাও পরামর্শ দেবে; কিন্তু তার নিকট যে পরামর্শ বেশি সঠিক ও কল্যাণকর মনে হবে তা তিনি গ্রহণ করবেন।
জনগণের সেবক
নবীজি (সা.)বলেছেন, নেতা হবেন জনগণের সেবক (মিশকাত আল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৯২৫)। তিনি তাঁর অনুসারীদের এভাবেই তৈরি করেছিলেন। ফলে প্রসাশনের বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নিজেদের জনগণের সেবকের ভূমিকায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইসলামে নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি
youtube
নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা তৈরি হয় বাসা থেকেই 
youtube
নেতৃত্ব দিবে কারা ? 
youtube
নেতৃত্বের গুণাবলী
youtube
নেতৃত্ব আল্লাহর আমানত
youtube
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
0 notes
ilyforallahswt · 10 days
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা যোগ্য নেতৃত্বের প্রধান দায়িত্ব। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কোনো কওম বা জামায়াতের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত হন এবং ওই কওম বা জামায়াতের মধ্যে শক্তি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বাধা না দেন, তাহলে মৃত্যুর আগে দুনিয়াতেই তাঁদের ওপর আল্লাহর আজাব এসে যাবে।’ (আবু দাউদ)
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেন, ‘হে আবদুর রহমান ইবনে সামুরা! তুমি নেতৃত্ব চেয়ে নিয়ো না। কেননা চাওয়ার পর যদি তোমাকে দেওয়া হয়, তবে তার দায়-দায়িত্ব তোমার ওপরই বর্তাবে। আর যদি চাওয়া ছাড়া তোমাকে দেওয়া হয়, তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর কোনো বিষয়ে কসম করার পর যদি তার বিপরীত দিকটি বেশি কল্যাণকর মনে হয় তাহলে কাজটি করে ফেলো আর তোমার কসমের কাফফারা দিয়ে দিয়ো।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি বিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক. নেতৃত্বের মোহ ত্যাগ করা। নেতৃত্ব চেয়ে না নেওয়া। কেননা তাতে মানুষের ব্যর্থ ও নিন্দিত হওয়ার ভয় আছে, দুই. জিদের বশবর্তী হয়ে কোনো কল্যাণকর বিষয় ত্যাগ করা উচিত নয়।
এমনকি কোনো কল্যাণকর কাজ না করার কসম করলেও তা পরিহার না করে কাফফারা আদায় করা উত্তম।
নেতৃত্ব চাওয়া বারণ কেন?
রাসুলুল্লাহ (সা.) আলোচ্য হাদিসে নেতৃত্ব চেয়ে নিতে নিষেধ করেছেন এবং এর কারণ হিসেবে বলেছেন—তখন পুরো দায়িত্ব ও ব্যর্থতার দায় ব্যক্তির ওপর বর্তাবে এবং মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ��হযোগিতা করবে না। ��িপরীতে মানুষের আগ্রহে নেতৃত্ব গ্রহণ করলে তারা সহযোগিতা করবে। ইমাম বুখারি (রহ.) উল্লিখিত হাদিসের শিরোনাম নির্ধারণ করেছেন, ‘যে লোক আল্লাহর কাছে নেতৃত্ব চায় না আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন’—যা থেকে প্রমাণিত হয়, এখানে ‘সাহায্য করা হবে’ বাক্যে আল্লাহর সাহায্যও অন্তর্ভুক্ত।
কোনো ব্যক্তি নির্মোহভাবে মানুষের কল্যাণ ও ইসলামের সেবা করার জন্য নেতৃত্ব গ্রহণে সম্মত হলে সে আল্লাহর সাহায্য লাভ করবে। এ ছাড়া নেতৃত্বের লোভ এক প্রকার জাগতিক মোহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) জাগতিক মোহ সম্পর্কে বলেন, ‘দুনিয়ার মোহ সব পাপের মূল।’ (ফয়জুল কাদির, হাদিস : ৩৬৬২)
নেতৃত্ব পরকালে লজ্জার কারণ হবে
নেতৃত্বের প্রত্যাশার ব্যাপারে একাধিক হাদিসে মহানবী (সা.) সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমরা নেতৃত্বের লোভ করো, অথচ কিয়ামতের দিন তা লজ্জার কারণ হবে।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৮)
প্রত্যাশীদের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না
কোনো ব্যক্তি নেতৃত্বপ্রত্যাশী হলে তাকে নেতৃত্ব না দেওয়ার নিদের্শনা দিয়েছে ইসলাম। আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আমার গোত্রের দুই ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। সে দুজনের একজন বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমির নিযুক্ত করুন। অন্যজনও অনুরূপ কথা বলল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যারা নেতৃত্ব চায় এবং এর লোভ করে, আমরা তাদের এ পদে নিয়োগ করি না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৯)
বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নবী বলল, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৪৭)
নেতৃত্বের ভিত্তি হবে জনকল্যাণ
ইসলামী বিধান মতে কোনো সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের মূলভিত্তি কল্যাণকামিতা। মাকিল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং সে কল্যাণকামিতার সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৫১)
জাতির দুর্দিনে নেতৃত্ব গ্রহণ নিন্দনীয় নয়
নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়া নিন্দনীয়। তবে জাতির দুর্দিনে নেতৃত্বের জন্য এগিয়ে আসা নিন্দনীয় নয়; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তা প্রশংসনীয়ও বটে। বিশেষত যখন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিকল্প কোনো ব্যক্তি পাওয়া না যায়। মিসরের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ থেকে জাতি রক্ষা করতে ইউসুফ (আ.) মিসর শাসককে বলেছিলেন, ‘আমাকে দেশের ধনভাণ্ডারের কর্তৃত্ব প্রদান করুন। নিশ্চয়ই আমি উত্তম রক্ষক, সুবিজ্ঞ।’ (সুরা : ইউসুফ,    আয়াত : ৫৫)
আল্লাহ সবাইকে নেতৃত্বের মোহ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
 
নেতৃত্ব গঠনে মহানবী (সা.)–র ৫ মূলনীতি
মহানবী (সা.) সব সময় মানুষের নেতৃত্ব গঠনে জোর দিয়েছেন। কোনো আদর্শকে না থাকলে কেউ নেতৃত্বের অধিকারী ব্যক্তি হতে পারেন না। তিনি নিজে বেশ কিছু নীতি অবলম্বন করতেন। একে একে সেগুলো বর্ণনা করা যাক।
 কায়েমি নেতৃত্ব পরিবর্তন���র কর্মপন্থা
কোনো নবী প্রচলিত নেতা বা শাসকের কাছে নেতৃত্বের দাবি করেননি। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-ও মক্কা ও অন্যান্য স্থানের নেতা ও শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছেন, তাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু তাদের কখনো সরাসরি কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করতে বলেননি। সমাজপতিরা আগেকার মতো মহানবী (সা.)-এর বিরোধিতা করেছেন। তাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে সমাজের অন্যরা ইসলামের আওয়াজ শুনতে পেয়েছে। প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব ইসলাম কবুল করতে রাজি না হওয়ায় লাভ হয়েছে যে, তাদের অধীনস্তদের অনেকে ইসলাম গ্রহণ করা তাদের থেকে নতুন নেতৃত্ব জেগে উঠেছে।
নেতা নির্বাচন
নেতা নির্বাচনে মহানবী (সা.) কেবল যোগ্য ও বিশেষজ্ঞকে মনোনীত করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ক্ষমতা বা পদের জন্য লালায়িত ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করতেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্বপূর্ণ কাজে এমন কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করব না, যে তা পাওয়ার জন্য প্রার্থী হবে; অথবা এমন কাউকেও নয়, যে তা পাওয়ার জন্য লালায়িত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৮২৪)
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তুমি যদি চেয়ে নিয়ে তা লাভ করো, তাহলে তোমাকে ওই দায়িত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর না চাইতেই যদি তা পাও তাহলে তুমি সে জন্য সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭,১৪৭; মুসলিম, হাদিস: ১,৬৫২)
জবাবদিহিতা
নবীজির(সা.) নেতৃত্ব পরিচালনার মূলনীতি ছিল কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও অর্থ-সম্পদ আল্লাহ ও মুসলিমদের আমানত। আল্লাহভীরু ও ন্যায়পরায়ণ লোকদের হাতে তা ন্যস্ত থাকবে। কেউ ইচ্ছামত তা নষ্ট করার অধিকার রাখবে না। এ আমানত যাদের হাতে সোপর্দ করা হবে তারা এর দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে বাধ্য। আল্লাহ বলেছেন, ‘আমানত বহনের যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে আমানত সোপর্দ করার জন্য আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৫৮)
 পরামর্শ সভা গঠন
কোরআনে নবীজি (সা.)–কে পরামর্শের ভিত্তিতে কার্যনির্বাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি তাই মজলিসে শূরা বা পরামর্শ সভা গঠন করেন। আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে বিজ্ঞ সাহাবিরা ছিলেন সভার সদস্য। সদস্যদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করতেন, তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। যদিও কোরআন তাকে ক্ষমতা দিয়েছে সে-সব পরামর্শ গ্রহণ না করার বা বর্জন করার। নবীজির (সা.)পরামর্শ গ্রহণের নীতি থেকে বোঝা যায়, নেতা পরামর্শ চাইবেন সংশ্লিষ্ট লোকেরাও পরামর্শ দেবে; কিন্তু তার নিকট যে পরামর্শ বেশি সঠিক ও কল্যাণকর মনে হবে তা তিনি গ্রহণ করবেন।
জনগণের সেবক
নবীজি (সা.)বলেছেন, নেতা হবেন জনগণের সেবক (মিশকাত আল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৯২৫)। তিনি তাঁর অনুসারীদের এভাবেই তৈরি করেছিলেন। ফলে প্রসাশনের বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নিজেদের জনগণের সেবকের ভূমিকায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইসলামে নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি
youtube
নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা তৈরি হয় বাসা থেকেই 
youtube
নেতৃত্ব দিবে কারা ? 
youtube
নেতৃত্বের গুণাবলী
youtube
নেতৃত্ব আল্লাহর আমানত
youtube
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
0 notes
myreligionislam · 10 days
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা যোগ্য নেতৃত্বের প্রধান দায়িত্ব। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কোনো কওম বা জামায়াতের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত হন এবং ওই কওম বা জামায়াতের মধ্যে শক্তি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বাধা না দেন, তাহলে মৃত্যুর আগে দুনিয়াতেই তাঁদের ওপর আল্লাহর আজাব এসে যাবে।’ (আবু দাউদ)
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেন, ‘হে আবদুর রহমান ইবনে সামুরা! তুমি ন��তৃত্ব চেয়ে নিয়ো না। কেননা চাওয়ার পর যদি তোমাকে দেওয়া হয়, তবে তার দায়-দায়িত্ব তোমার ওপরই বর্তাবে। আর যদি চাওয়া ছাড়া তোমাকে দেওয়া হয়, তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর কোনো বিষয়ে কসম করার পর যদি তার বিপরীত দিকটি বেশি কল্যাণকর মনে হয় তাহলে কাজটি করে ফেলো আর তোমার কসমের কাফফারা দিয়ে দিয়ো।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি বিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক. নেতৃত্বের মোহ ত্যাগ করা। নেতৃত্ব চেয়ে না নেওয়া। কেননা তাতে মানুষের ব্যর্থ ও নিন্দিত হওয়ার ভয় আছে, দুই. জিদের বশবর্তী হয়ে কোনো কল্যাণকর বিষয় ত্যাগ করা উচিত নয়।
এমনকি কোনো কল্যাণকর কাজ না করার কসম করলেও তা পরিহার না করে কাফফারা আদায় করা উত্তম।
নেতৃত্ব চাওয়া বারণ কেন?
রাসুলুল্লাহ (সা.) আলোচ্য হাদিসে নেতৃত্ব চেয়ে নিতে নিষেধ করেছেন এবং এর কারণ হিসেবে বলেছেন—তখন পুরো দায়িত্ব ও ব্যর্থতার দায় ব্যক্তির ওপর বর্তাবে এবং মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করবে না। বিপরীতে মানুষের আগ্রহে নেতৃত্ব গ্রহণ করলে তারা সহযোগিতা করবে। ইমাম বুখারি (রহ.) উল্লিখিত হাদিসের শিরোনাম নির্ধারণ করেছেন, ‘যে লোক আল্লাহর কাছে নেতৃত্ব চায় না আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন’—যা থেকে প্রমাণিত হয়, এখানে ‘সাহায্য করা হবে’ বাক্যে আল্লাহর সাহায্যও অন্তর্ভুক্ত।
কোনো ব্যক্তি নির্মোহভাবে মানুষের কল্যাণ ও ইসলামের সেবা করার জন্য নেতৃত্ব গ্রহণে সম্মত হলে সে আল্লাহর সাহায্য লাভ করবে। এ ছাড়া নেতৃত্বের লোভ এক প্রকার জাগতিক মোহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) জাগতিক মোহ সম্পর্কে বলেন, ‘দুনিয়ার মোহ সব পাপের মূল।’ (ফয়জুল কাদির, হাদিস : ৩৬৬২)
নেতৃত্ব পরকালে লজ্জার কারণ হবে
নেতৃত্বের প্রত্যাশার ব্যাপারে একাধিক হাদিসে মহানবী (সা.) সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমরা নেতৃত্বের লোভ করো, অথচ কিয়ামতের দিন তা লজ্জার কারণ হবে।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৮)
প্রত্যাশীদের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না
কোনো ব্যক্তি নেতৃত্বপ্রত্যাশী হলে তাকে নেতৃত্ব না দেওয়ার নিদের্শনা দিয়েছে ইসলাম। আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আমার গোত্রের দুই ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। সে দুজনের একজন বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমির নিযুক্ত করুন। অন্যজনও অনুরূপ কথা বলল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যারা নেতৃত্ব চায় এবং এর লোভ করে, আমরা তাদের এ পদে নিয়োগ করি না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৯)
বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নবী বলল, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৪৭)
নেতৃত্বের ভিত্তি হবে জনকল্যাণ
ইসলামী বিধান মতে কোনো সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের মূলভিত্তি কল্যাণকামিতা। মাকিল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং সে কল্যাণকামিতার সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৫১)
জাতির দুর্দিনে নেতৃত্ব গ্রহণ নিন্দনীয় নয়
নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়া নিন্দনীয়। তবে জাতির দুর্দিনে নেতৃত্বের জন্য এগিয়ে আসা নিন্দনীয় নয়; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তা প্রশংসনীয়ও বটে। বিশেষত যখন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিকল্প কোনো ব্যক্তি পাওয়া না যায়। মিসরের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ থেকে জাতি রক্ষা করতে ইউসুফ (আ.) মিসর শাসককে বলেছিলেন, ‘আমাকে দেশের ধনভাণ্ডারের কর্তৃত্ব প্রদান করুন। নিশ্চয়ই আমি উত্তম রক্ষক, সুবিজ্ঞ।’ (সুরা : ইউসুফ,    আয়াত : ৫৫)
আল্লাহ সবাইকে নেতৃত্বের মোহ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
 
নেতৃত্ব গঠনে মহানবী (সা.)–র ৫ মূলনীতি
মহানবী (সা.) সব সময় মানুষের নেতৃত্ব গঠনে জোর দিয়েছেন। কোনো আদর্শকে না থাকলে কেউ নেতৃত্বের অধিকারী ব্যক্তি হতে পারেন না। তিনি নিজে বেশ কিছু নীতি অবলম্বন করতেন। একে একে সেগুলো বর্ণনা করা যাক।
 কায়েমি নেতৃত্ব পরিবর্তনের কর্মপন্থা
কোনো নবী প্রচলিত নেতা বা শাসকের কাছে নেতৃত্বের দাবি করেননি। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-ও মক্কা ও অন্যান্য স্থানের নেতা ও শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছেন, তাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু তাদের কখনো সরাসরি কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করতে বলেননি। সমাজপতিরা আগেকার মতো মহানবী (সা.)-এর বিরোধিতা করেছেন। তাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে সমাজের অন্যরা ইসলামের আওয়াজ শুনতে পেয়েছে। প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব ইসলাম কবুল করতে রাজি না হওয়ায় লাভ হয়েছে যে, তাদের অধীনস্তদের অনেকে ইসলাম গ্রহণ করা তাদের থেকে নতুন নেতৃত্ব জেগে উঠেছে।
নেতা নির্বাচন
নেতা নির্বাচনে মহানবী (সা.) কেবল যোগ্য ও বিশেষজ্ঞকে মনোনীত করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ক্ষমতা বা পদের জন্য লালায়িত ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করতেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্বপূর্ণ কাজে এমন কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করব না, যে তা পাওয়ার জন্য প্রার্থী হবে; অথবা এমন কাউকেও নয়, যে তা পাওয়ার জন্য লালায়িত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৮২৪)
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তুমি যদি চেয়ে নিয়ে তা লাভ করো, তাহলে তোমাকে ওই দায়িত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর না চাইতেই যদি তা পাও তাহলে তুমি সে জন্য সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭,১৪৭; মুসলিম, হাদিস: ১,৬৫২)
জবাবদিহিতা
নবীজির(সা.) নেতৃত্ব পরিচালনার মূলনীতি ছিল কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও অর্থ-সম্পদ আল্লাহ ও মুসলিমদের আমানত। আল্লাহভীরু ও ন্যায়পরায়ণ লোকদের হাতে তা ন্যস্ত থাকবে। কেউ ইচ্ছামত তা নষ্ট করার অধিকার রাখবে না। এ আমানত যাদের হাতে সোপর্দ করা হবে তারা এর দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে বাধ্য। আল্লাহ বলেছেন, ‘আমানত বহনের যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে আমানত সোপর্দ করার জন্য আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৫৮)
 পরামর্শ সভা গঠন
কোরআনে নবীজি (সা.)–কে পরামর্শের ভিত্তিতে কার্যনির্বাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি তাই মজলিসে শূরা বা পরামর্শ সভা গঠন করেন। আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে বিজ্ঞ সাহাবিরা ছিলেন সভার সদস্য। সদস্যদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করতেন, তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। যদিও কোরআন তাকে ক্ষমতা দিয়েছে সে-সব পরামর্শ গ্রহণ না করার বা বর্জন করার। নবীজির (সা.)পরামর্শ গ্রহণের নীতি থেকে বোঝা যায়, নেতা পরামর্শ চাইবেন সংশ্লিষ্ট লোকেরাও পরামর্শ দেবে; কিন্তু তার নিকট যে পরামর্শ বেশি সঠিক ও কল্যাণকর মনে হবে তা তিনি গ্রহণ করবেন।
জনগণের সেবক
নবীজি (সা.)বলেছেন, নেতা হবেন জনগণের সেবক (মিশকাত আল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৯২৫)। তিনি তাঁর অনুসারীদের এভাবেই তৈরি করেছিলেন। ফলে প্রসাশনের বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নিজেদের জনগণের সেবকের ভূমিকায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইসলামে নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি
youtube
নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা তৈরি হয় বাসা থেকেই 
youtube
নেতৃত্ব দিবে কারা ? 
youtube
নেতৃত্বের গুণাবলী
youtube
নেতৃত্ব আল্লাহর আমানত
youtube
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
0 notes
allahisourrabb · 10 days
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা যোগ্য নেতৃত্বের প্রধান দায়িত্ব। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কোনো কওম বা জামায়াতের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত হন এবং ওই কওম বা জামায়াতের মধ্যে শক্তি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বাধা না দেন, তাহলে মৃত্যুর আগে দুনিয়াতেই তাঁদের ওপর আল্লাহর আজাব এসে যাবে।’ (আবু দাউদ)
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেন, ‘হে আবদুর রহমান ইবনে সামুরা! তুমি নেতৃত্ব চেয়ে নিয়ো না। কেননা চাওয়ার পর যদি তোমাকে দেওয়া হয়, তবে তার দায়-দায়িত্ব তোমার ওপরই বর্তাবে। আর যদি চাওয়া ছাড়া তোমাকে দেওয়া হয়, তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর কোনো বিষয়ে কসম করার পর যদি তার বিপরীত দিকটি বেশি কল্যাণকর মনে হয় তাহলে কাজটি করে ফেলো আর তোমার কসমের কাফফারা দিয়ে দিয়ো।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি বিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক. নেতৃত্বের মোহ ত্যাগ করা। নেতৃত্ব চেয়ে না নেওয়া। কেননা তাতে মানুষের ব্যর্থ ও নিন্দিত হওয়ার ভয় আছে, দুই. জিদের বশবর্তী হয়ে কোনো কল্যাণকর বিষয় ত্যাগ করা উচিত নয়।
এমনকি কোনো কল্যাণকর কাজ না করার কসম করলেও তা পরিহার না করে কাফফারা আদায় করা উত্তম।
নেতৃত্ব চাওয়া বারণ কেন?
রাসুলুল্লাহ (সা.) আলোচ্য হাদিসে নেতৃত্ব চেয়ে নিতে নিষেধ করেছেন এবং এর কারণ হিসেবে বলেছেন—তখন পুরো দায়িত্ব ও ব্যর্থতার দায় ব্যক্তির ওপর বর্তাবে এবং মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করবে না। বিপরীতে মানুষের আগ্রহে নেতৃত্ব গ্রহণ করলে তারা সহযোগিতা করবে। ইমাম বুখারি (রহ.) উল্লিখিত হাদিসের শিরোনাম নির্ধারণ করেছেন, ‘যে লোক আল্লাহর কাছে নেতৃত্ব চায় না আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন’—যা থেকে প্রমাণিত হয়, এখানে ‘সাহায্য করা হবে’ বাক্যে আল্লাহর সাহায্যও অন্তর্ভুক্ত।
কোনো ব্যক্তি নির্মোহভাবে মানুষের কল্যাণ ও ইসলামের সেবা করার জন্য নেতৃত্ব গ্রহণে সম্মত হলে সে আল্লাহর সাহায্য লাভ করবে। এ ছাড়া নেতৃত্বের লোভ এক প্রকার জাগতিক মোহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) জাগতিক মোহ সম্পর্কে বলেন, ‘দুনিয়ার মোহ সব পাপের মূল।’ (ফয়জুল কাদির, হাদিস : ৩৬৬২)
নেতৃত্ব পরকালে লজ্জার কারণ হবে
নেতৃত্বের প্রত্যাশার ব্যাপারে একাধিক হাদিসে মহানবী (সা.) সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমরা নেতৃত্বের লোভ করো, অথচ কিয়ামতের দিন ত�� লজ্জার কারণ হবে।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৮)
প্রত্যাশীদের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না
কোনো ব্যক্তি নেতৃত্বপ্রত্যাশী হলে তাকে নেতৃত্ব না দেওয়ার নিদের্শনা দিয়েছে ইসলাম। আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আমার গোত্রের দুই ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। সে দুজনের একজন বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমির নিযুক্ত করুন। অন্যজনও অনুরূপ কথা বলল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যারা নেতৃত্ব চায় এবং এর লোভ করে, আমরা তাদের এ পদে নিয়োগ করি না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৯)
বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নবী বলল, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন। আ��্লাহ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৪৭)
নেতৃত্বের ভিত্তি হবে জনকল্যাণ
ইসলামী বিধান মতে কোনো সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের মূলভিত্তি কল্যাণকামিতা। মাকিল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং সে কল্যাণকামিতার সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৫১)
জাতির দুর্দিনে নেতৃত্ব গ্রহণ নিন্দনীয় নয়
নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়া নিন্দনীয়। তবে জাতির দুর্দিনে নেতৃত্বের জন্য এগিয়ে আসা নিন্দনীয় নয়; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তা প্রশংসনীয়ও বটে। বিশেষত যখন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিকল্প কোনো ব্যক্তি পাওয়া না যায়। মিসরের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ থেকে জাতি রক্ষা করতে ইউসুফ (আ.) মিসর শাসককে বলেছিলেন, ‘আমাকে দেশের ধনভাণ্ডারের কর্তৃত্ব প্রদান করুন। নিশ্চয়ই আমি উত্তম রক্ষক, সুবিজ্ঞ।’ (সুরা : ইউসুফ,    আয়াত : ৫৫)
আল্লাহ সবাইকে নেতৃত্বের মোহ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
 
নেতৃত্ব গঠনে মহানবী (সা.)–র ৫ মূলনীতি
মহানবী (সা.) সব সময় মানুষের নেতৃত্ব গঠনে জোর দিয়েছেন। কোনো আদর্শকে না থাকলে কেউ নেতৃত্বের অধিকারী ব্যক্তি হতে পারেন না। তিনি নিজে বেশ কিছু নীতি অবলম্বন করতেন। একে একে সেগুলো বর্ণনা করা যাক।
 কায়েমি নেতৃত্ব পরিবর্তনের কর্মপন্থা
কোনো নবী প্রচলিত নেতা বা শাসকের কাছে নেতৃত্বের দাবি করেননি। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-ও মক্কা ও অন্যান্য স্থানের নেতা ও শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছেন, তাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু তাদের কখনো সরাসরি কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করতে বলেননি। সমাজপতিরা আগেকার মতো মহানবী (সা.)-এর বিরোধিতা করেছেন। তাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে সমাজের অন্যরা ইসলামের আওয়াজ শুনতে পেয়েছে। প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব ইসলাম কবুল করতে রাজি না হওয়ায় লাভ হয়েছে যে, তাদের অধীনস্তদের অনেকে ইসলাম গ্রহণ করা তাদের থেকে নতুন নেতৃত্ব জেগে উঠেছে।
নেতা নির্বাচন
নেতা নির্বাচনে মহানবী (সা.) কেবল যোগ্য ও বিশেষজ্ঞকে মনোনীত করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ক্ষমতা বা পদের জন্য লালায়িত ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করতেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্বপূর্ণ কাজে এমন কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করব না, যে তা পাওয়ার জন্য প্রার্থী হবে; অথবা এমন কাউকেও নয়, যে তা পাওয়ার জন্য লালায়িত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৮২৪)
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তুমি যদি চেয়ে নিয়ে তা লাভ করো, তাহলে তোমাকে ওই দায়িত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর না চাইতেই যদি তা পাও তাহলে তুমি সে জন্য সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭,১৪৭; মুসলিম, হাদিস: ১,৬৫২)
জবাবদিহিতা
নবীজির(সা.) নেতৃত্ব পরিচালনার মূলনীতি ছিল কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও অর্থ-সম্পদ আল্লাহ ও মুসলিমদের আমানত। আল্লাহভীরু ও ন্যায়পরায়ণ লোকদের হাতে তা ন্যস্ত থাকবে। কেউ ইচ্ছামত তা নষ্ট করার অধিকার রাখবে না। এ আমানত যাদের হাতে সোপর্দ করা হবে তারা এর দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে বাধ্য। আল্লাহ বলেছেন, ‘আমানত বহনের যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে আমানত সোপর্দ করার জন্য আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৫৮)
 পরামর্শ সভা গঠন
কোরআনে নবীজি (সা.)–কে পরামর্শের ভিত্তিতে কার্যনির্বাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি তাই মজলিসে শূরা বা পরামর্শ সভা গঠন করেন। আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে বিজ্ঞ সাহাবিরা ছিলেন সভার সদস্য। সদস্যদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করতেন, তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। যদিও কোরআন তাকে ক্ষমতা দিয়েছে সে-সব পরামর্শ গ্রহণ না করার বা বর্জন করার। নবীজির (সা.)পরামর্শ গ্রহণের নীতি থেকে বোঝা যায়, নেতা পরামর্শ চাইবেন সংশ্লিষ্ট লোকেরাও পরামর্শ দেবে; কিন্তু তার নিকট যে পরামর্শ বেশি সঠিক ও কল্যাণকর মনে হবে তা তিনি গ্রহণ করবেন।
জনগণের সেবক
নবীজি (সা.)বলেছেন, নেতা হবেন জনগণের সেবক (মিশকাত আল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৯২৫)। তিনি তাঁর অনুসারীদের এভাবেই তৈরি করেছিলেন। ফলে প্রসাশনের বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নিজেদের জনগণের সেবকের ভূমিকায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইসলামে নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি
youtube
নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা তৈরি হয় বাসা থেকেই 
youtube
নেতৃত্ব দিবে কারা ? 
youtube
নেতৃত্বের গুণাবলী
youtube
নেতৃত্ব আল্লাহর আমানত
youtube
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
0 notes
mylordisallah · 10 days
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা যোগ্য নেতৃত্বের প্রধান দায়িত্ব। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কোনো কওম বা জামায়াতের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত হন এবং ওই কওম বা জামায়াতের মধ্যে শক্তি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বাধা না দেন, তাহলে মৃত্যুর আগে দুনিয়াতেই তাঁদের ওপর আল্লাহর আজাব এসে যাবে।’ (আবু দাউদ)
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেন, ‘হে আবদুর রহমান ইবনে সামুরা! তুমি নেতৃত্ব চেয়ে নিয়ো না। কেননা চাওয়ার পর যদি তোমাকে দেওয়া হয়, তবে তার দায়-দায়িত্ব তোমার ওপরই বর্তাবে। আর যদি চাওয়া ছাড়া তোমাকে দেওয়া হয়, তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর কোনো বিষয়ে কসম করার পর যদি তার বিপরীত দিকটি বেশি কল্যাণকর মনে হয় তাহলে কাজটি করে ফেলো আর তোমার কসমের কাফফারা দিয়ে দিয়ো।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি বিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক. নেতৃত্বের মোহ ত্যাগ করা। নেতৃত্ব চেয়ে না নেওয়া। কেননা তাতে মানুষের ব্যর্থ ও নিন্দিত হওয়ার ভয় আছে, দুই. জিদের বশবর্তী হয়ে কোনো কল্যাণকর বিষয় ত্যাগ করা উচিত নয়।
এমনকি কোনো কল্যাণকর কাজ না করার কসম করলেও তা পরিহার না করে কাফফারা আদায় করা উত্তম।
নেতৃত্ব চাওয়া বারণ কেন?
রাসুলুল্লাহ (সা.) আলোচ্য হাদিসে নেতৃত্ব চেয়ে নিতে নিষেধ করেছেন এবং এর কারণ হিসেবে বলেছেন—তখন পুরো দায়িত্ব ও ব্যর্থতার দায় ব্যক্তির ওপর বর্তাবে এবং মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করবে না। বিপরীতে মানুষের আগ্রহে নেতৃত্ব গ্রহণ করলে তারা সহযোগিতা করবে। ইমাম বুখারি (রহ.) উল্লিখিত হাদিসের শিরোনাম নির্ধারণ করেছেন, ‘যে লোক আল্লাহর কাছে নেতৃত্ব চায় না আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন’—যা থেকে প্রমাণিত হয়, এখানে ‘সাহায্য করা হবে’ বাক্যে আল্লাহর সাহায্যও অন্তর্ভুক্ত।
কোনো ব্যক্তি নির্মোহভাবে মানুষের কল্যাণ ও ইসলামের সেবা করার জন্য নেতৃত্ব গ্রহণে সম্মত হলে সে আল্লাহর সাহায্য লাভ করবে। এ ছাড়া নেতৃত্বের লোভ এক প্রকার জাগতিক মোহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) জাগতিক মোহ সম্পর্কে বলেন, ‘দুনিয়ার মোহ সব পাপের মূল।’ (ফয়জুল কাদির, হাদিস : ৩৬৬২)
নেতৃত্ব পরকালে লজ্জার কারণ হবে
নেতৃত্বের প্রত্যাশার ব্যাপারে একাধিক হাদিসে মহানবী (সা.) সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমরা নেতৃত্বের লোভ করো, অথচ কিয়ামতের দিন তা লজ্জার কারণ হবে।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৮)
প্রত্যাশীদের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না
কোনো ব্যক্তি নেতৃত্বপ্রত্যাশী হলে তাকে নেতৃত্ব না দেওয়ার নিদের্শনা দিয়েছে ইসলাম। আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আমার গোত্রের দুই ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। সে দুজনের একজন বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমির নিযুক্ত করুন। অন্যজনও অনুরূপ কথা বলল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যারা নেতৃত্ব চায় এবং এর লোভ করে, আমরা তাদের এ পদে নিয়োগ করি না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৪৯)
বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নবী বলল, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৪৭)
নেতৃত্বের ভিত্তি হবে জনকল্যাণ
ইসলামী বিধান মতে কোনো সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের মূলভিত্তি কল্যাণকামিতা। মাকিল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং সে কল্যাণকামিতার সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭১৫১)
জাতির দুর্দিনে নেতৃত্ব গ্রহণ নিন্দনীয় নয়
নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়া নিন্দনীয়। তবে জাতির দুর্দিনে নেতৃত্বের জন্য এগিয়ে আসা নিন্দনীয় নয়; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তা প্রশংসনীয়ও বটে। বিশেষত যখন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিকল্প কোনো ব্যক্তি পাওয়া না যায়। মিসরের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ থেকে জাতি রক্ষা করতে ইউসুফ (আ.) মিসর শাসককে বলেছিলেন, ‘আমাকে দেশের ধনভাণ্ডারের কর্তৃত্ব প্রদান করুন। নিশ্চয়ই আমি উত্তম রক্ষক, সুবিজ্ঞ।’ (সুরা : ইউসুফ,    আয়াত : ৫৫)
আল্লাহ সবাইকে নেতৃত্বের মোহ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
 
নেতৃত্ব গঠনে মহানবী (সা.)–র ৫ মূলনীতি
মহানবী (সা.) সব সময় মানুষের নেতৃত্ব গঠনে জোর দিয়েছেন। কোনো আদর্শকে না থাকলে কেউ নেতৃত্বের অধিকারী ব্যক্তি হতে পারেন না। তিনি নিজে বেশ কিছু নীতি অবলম্বন করতেন। একে একে সেগুলো বর্ণনা করা যাক।
 কায়েমি নেতৃত্ব পরিবর্তনের কর্মপন্থা
কোনো নবী প্রচলিত নেতা বা শাসকের কাছে নেতৃত্বের দাবি করেননি। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-ও মক্কা ও অন্যান্য স্থানের নেতা ও শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছেন, তাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু তাদের কখনো সরাসরি কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করতে বলেননি। সমাজপতিরা আগেকার মতো মহানবী (সা.)-এর বিরোধিতা করেছেন। তাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে সমাজের অন্যরা ইসলামের আওয়াজ শুনতে পেয়েছে। প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব ইসলাম কবুল করতে রাজি না হওয়ায় লাভ হয়েছে যে, তাদের অধীনস্তদের অনেকে ইসলাম গ্রহণ করা তাদের থেকে নতুন নেতৃত্ব জেগে উঠেছে।
নেতা নির্বাচন
নেতা নির্বাচনে মহানবী (সা.) কেবল যোগ্য ও বিশেষজ্ঞকে মনোনীত করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ক্ষমতা বা পদের জন্য লালায়িত ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করতেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্বপূর্ণ কাজে এমন কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করব না, যে তা পাওয়ার জন্য প্রার্থী হবে; অথবা এমন কাউকেও নয়, যে তা পাওয়ার জন্য লালায়িত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৮২৪)
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তুমি যদি চেয়ে নিয়ে তা লাভ করো, তাহলে তোমাকে ওই দায়িত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর না চাইতেই যদি তা পাও তাহলে তুমি সে জন্য সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭,১৪৭; মুসলিম, হাদিস: ১,৬৫২)
জবাবদিহিতা
নবীজির(সা.) নেতৃত্ব পরিচালনার মূলনীতি ছিল কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও অর্থ-সম্পদ আল্লাহ ও মুসলিমদের আমানত। আল্লাহভীরু ও ন্যায়পরায়ণ লোকদের হাতে তা ন্যস্ত থাকবে। কেউ ইচ্ছামত তা নষ্ট করার অধিকার রাখবে না। এ আমানত যাদের হাতে সোপর্দ করা হবে তারা এর দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে বাধ্য। আল্লাহ বলেছেন, ‘আমানত বহনের যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে আমানত সোপর্দ করার জন্য আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৫৮)
 পরামর্শ সভা গঠন
কোরআনে নবীজি (সা.)–কে পরামর্শের ভিত্তিতে কার্যনির্বাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি তাই মজলিসে শূরা বা পরামর্শ সভা গঠন করেন। আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে বিজ্ঞ সাহাবিরা ছিলেন সভার সদস্য। সদস্যদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করতেন, তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। যদিও কোরআন তাকে ক্ষমতা দিয়েছে সে-সব পরামর্শ গ্রহণ না করার বা বর্জন করার। নবীজির (সা.)পরামর্শ গ্রহণের নীতি থেকে বোঝা যায়, নেতা পরামর্শ চাইবেন সংশ্লিষ্ট লোকেরাও পরামর্শ দেবে; কিন্তু তার নিকট যে পরামর্শ বেশি সঠিক ও কল্যাণকর মনে হবে তা তিনি গ্রহণ করবেন।
জনগণের সেবক
নবীজি (সা.)বলেছেন, নেতা হবেন জনগণের সেবক (মিশকাত আল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৯২৫)। তিনি তাঁর অনুসারীদের এভাবেই তৈরি করেছিলেন। ফলে প্রসাশনের বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নিজেদের জনগণের সেবকের ভূমিকায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইসলামে নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি
youtube
নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা তৈরি হয় বাসা থেকেই 
youtube
নেতৃত্ব দিবে কারা ? 
youtube
নেতৃত্বের গুণাবলী
youtube
নেতৃত্ব আল্লাহর আমানত
youtube
আল্লাহ যে নেতাকে সাহায্য করেন
Allah Helps The Leader
0 notes
shakilhossain69bd · 6 years
Text
নতুন দ্বীনি ভাইদের প্রতি খোলা চিঠি! ========================== এক শুক্রবারের ঘটনা। জুমু’আর সালাতের পর তিনজন ভাই এগিয়ে এলেন। একান্ত কিছু কথা বলবেন। একটু সাইডে গিয়ে দাঁড়ালাম। তিনজনের প্রশ্ন একটাই―‘এই পরিস্থিতিতে কী করণীয়? কোন্ জামায়াতে যোগ দেয়া যায়? কীভাবে কাজ করা যায়...?’ ইত্যাদি। . প্রশ্নগুলো খুব কমন। প্রায়ই আসে নতুন দ্বীনের বুঝ পাওয়া ভাইদের পক্ষ থেকে। কিছু ভিডিও দেখে, দুয়েকটা গরম লেকচার শুনেই যারা ভাবছেন তাওহীদ এবং জিহাদের মানহাজ তারা বুঝে গেছেন। নিজেকে মুজাহিদ মুজাহিদ ভেবেও একপ্রকার আত্মতৃপ্তি লাভ করেন তারা। নিজের আমল, ইবাদাত ও আখলাকের ব্যাপারে চরম উদাসীনতা, দিনরাত ফেইসবুক, ইউটিউবে বুঁদ হয়ে থাকা, বড় বড় আলিমদের ব্যাপারে লাগামহীন গালাগালি, ’ইল্ম অর্জনে চরম অবহেলা―এসবই তাদের বড় গুণ! . আপনার মনে হবে যে, এরা সত্যিই কাজ করতে প্রচুর আগ্রহী। কিন্তু এদের অধিকাংশেরই অবস্থা হলো, কাজের বেলায় এদেরকে আপনি খুঁজে পাবেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরা ‘হিরোইজম’-এ আক্রান্ত। ‘জিহাদ জিহাদ’ করাই এদের কাজ। জিহাদ ‘করা’ নয়। . এই টাইপের ভাইগুলোর পক্ষ থেকেই এধরণের প্রশ্নগুলো বেশি আসে। আমি তাদের আবেগটাকে শ্রদ্ধা করি। এটা ভালো। কিন্তু আমাদেরকে বুঝতে হবে, এই স্রেফ আবেগের নাম ‘মানহাজ’ না। ব্যাপারটা এমন না যে, একরাতে ঘুমোলেন, আর আলাদিন মহাশয় এসে আপনাকে বলল, “এই চেরাগে ঘষা দাও, তাহলেই তুমি আপাদমস্তক মুজাহিদ হয়ে যাবে!” . তো যাহোক, আমি ঐ ভাইদেরকে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত বোঝালাম। কেন আগে আক্বীদাহ ও মানহাজ ক্লিয়ার হওয়া দরকার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে উসাইরিম রাদিয়াল্লাহু আনহুরা তাওহিদের স্বীকৃতি দিয়েই জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। তখন সময়টাই ছিল এমন। কিন্তু আজ চতুর্মুখী ফিতনায় উম্মাহ জর্জরিত। এই ধরণের ইমোশন বা হিরোইজমে আক্রান্ত ভাইয়েরা খুব সহজেই ঝরে যায়। কয়েকটা HD ভিডিওই তাদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়, মানহাজ পরিবর্তন করে দেয়। . সবশেষে আমি তাদেরকে একটা লিস্ট দিলাম, সিলেবাসও বলা যেতে পারে। এখানেও পেশ করছি, ভাইদের উপকারার্থে। . . ● শুরু করুন কুরআন দিয়ে। আগে কুরআনটাকে সহীহ্ করুন। আর সহিহভাবে পড়তে জানলে হিফয শুরু করুন। প্রতিদিন অন্তত পাঁচ রুকু তিলাওয়াত করুন। এক রুকু হিফয করার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি তরজমা পড়ুন। সাথে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাও পড়ুন। তাকি উসমানি সাহেবের ‘তাওযিহুল কুরআন’ অথবা সংক্ষিপ্ত ‘আহসানুল বায়ান’ পড়তে পারেন। এরপর আস্তে আস্তে পড়তে থাকুন ‘তাফসির ইবনে কাসির’। . ● এর পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সীরাহ্ অধ্যয়ন করুন। মৌলিক হিসেবে ‘ইবনু হিশাম’ অথবা ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ পড়তে পারেন। এরপর বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে পড়তে Rain Drops এর ‘সীরাহ’ পড়তে পারেন। এরও আগে পড়ে নিতে পারেন ইমাম তিরমিযির ‘আশ-শামায়িলুল মুহাম্মাদিয়্যাহ’। . ● এরপর ধরুন আক্বীদাহ। প্রথমেই পড়তে পারেন ‘আল-ফিক্বহুল আকবার’। এরপর ‘আকিদাতুত তাহাবি’। সাথে ইবনু আবিল ইযের ব্যাখ্যাও পড়ুন। এরপর ইবনু তাইমিয়্যাহ রহ. এর ‘আল-আকিদাতুল ওয়াসিতিয়্যাহ’ পড়ুন। এরপর শাহ ইসমাইল শহিদ রহ. এর ‘তাকবিয়াতুল ঈমান’ পড়ুন। এরপর মুহাম্মাদ বিন আবদিল ওয়াহহাব রাহ. এর ‘উসুলুস সালাসাহ’, ‘কাওয়ায়িদুল আরবায়া’, ‘কিতাবুত তাওহিদ’, ‘নাওয়াকিদুল ইসলাম’, ‘কাশফুশ শুবহাত’ সহ অন্যান্য রিসালাহগুলো পড়ুন। এরপর সমকালীন বিভিন্ন আলিমদের আক্বীদাহ সংক্রান্ত কিতাবাদি অধ্যয়ন করুন। . ● এরপর ধরুন হাদিস। প্রথমেই পড়ুন ইমাম নববী রহ. এর ‘আল-আরবাউন’ বা চল্লিশ হাদিস। এরপর ইমাম নববির ‘রিয়াদুস সালিহিন’ অথবা ইমাম বুখারির ‘আদাবুল মুফরাদ’ যেকোনো একটা পড়ুন। গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস মুখস্থ করুন। এরপর পড়তে পারেন ‘আল-লুলু ওয়াল মারজান’ (মুত্তাফাকুন আলাইহি বা বুখারি-মুসলিমে বর্ণিত হাদিসের সমন্বয়)। . ● এরপর ফিক্বহের কিতাবাদি অধ্যয়ন করুন। পাশাপাশি আরবিভাষা শেখার চেষ্টা করুন। কোনো মুহাক্কিক আলিমের সাথে সম্পর্ক রাখুন। তার সংস্পর্শে থাকুন। এরপর কোনো একদিন আইসা বইলেন, ‘ভাই! কী করব, বলে দেন।’―তখন না হয় কিছু কাজের কথা বলমু নে? 😊 . লেখা: Ustadh Munirul Islam Ibn Jakir #Dawah
11 notes · View notes
khutbahs · 4 years
Link
১০ মহররমের তিন আমল
হিজরি সনের প্রথম মাস মহররম। মুসলিম উম্মাহর কাছে এই দিন নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। শরিয়ত ও ইতিহাস উভয় বিবেচনায় মাসটি তাৎপর্যপূর্ণ। ইতিহাসের অনেক অনুপ্রেরণামূলক ঘটনার সাক্ষী এই মহররম মাস। শুধু উম্মতে মুহাম্মদিই নয়, বরং পূর্ববর্তী অনেক উম্মত ও নবীর অবিস্মরণীয় ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল এই মাসে। মুসলিম ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এই মাসকেন্দ্রিক অনেক কুসংস্কার, ভুল বিশ্বাস ও কাজের চর্চা রয়েছে মুসলিম সমাজে; যার বৃহদংশই ভিত্তিহীন। ভিত্তি রয়েছে এমন তিনটি আমল নিম্নে তুলে ধরা হলো—
রোজা রাখা
আশুরার দিনে আমল হিসেবে তিনটি কাজ করা যায়। প্রথমত, রোজা রাখা। এ আমল সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। আশুরা উপলক্ষে দুই দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। মহররমের ১০ তারিখের আগে বা পরে এক দিন বাড়িয়ে রোজা রাখার কথা হাদিস শরিফে এসেছে। ইসলামে আশুরার রোজার বিশেষ গুরুত্ব আছে। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.) আমাদের (রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে) আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং এর প্রতি উৎসাহিত করতেন। আর এ বিষয়ে তিনি নিয়মিত আমাদের খবরাখবর নিতেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো তখন আশুরার রোজার ব্যাপারে তিনি আমাদের নির্দেশও দিতেন না, নিষেধও করতেন না। আর এ বিষয়ে তিনি আমাদের খবরাখবরও নিতেন না।’ (মুসলিম, হাদিস : ১১২৮)
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.) আশুরা ও রমজানের রোজা সম্পর্কে যেরূপ গুরুত্বারোপ করতেন, অন্য কোনো রোজা সম্পর্কে রাসুল (সা.)-কে সেরূপ গুরুত্ব প্রদান করতে দেখিনি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০০৬, মুসলিম, হাদিস : ১১৩২)
পরিবারের জন্য ভালো খাবারের আয়োজন করা
আরেকটি আমল বর্ণনা সূত্রে দুর্বল হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। আর তা হলো, আশুরার দিনে যথাসাধ্য খাবারে প্রশস্ততা প্রদর্শন করা। যথাসম্ভব ভালো খাবার খাওয়া। হজরত আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি আশুরার দিনে পরিবারে প্রশস্ততা প্রদর্শন করবে, সে সারা বছর প্রশস্ততায় থাকবে।’ (তাবরানি, মুজামে কবির, হাদিস : ১০০০৭; বায়হাকি, হাদিস : ৩৭৯৫)
এ হাদিসের বর্ণনা সূত্রে দুর্বলতা আছে। তবে ইবনে হিব্বানের মতে, এটি ‘হাসান’ বা গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের হাদিস। আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.)-এর দাবি, রিজিকে প্রশস্ততার ব্যাপারে কোনো হাদিস নেই। এটি ধারণাপ্রসূত। ইমাম আহমদ (রহ.) বলেছেন, এটি বিশুদ্ধ হাদিস নয়। তবে এ বিষয়ে একাধিক বর্ণনা থাকার কারণে ‘হাসান’ হওয়া অস্বীকার করা যাবে না। আর ‘হাসান লিগাইরিহি’ পর্যায়ের হাদিস দ্বারা আমল করা যায়। (আস-সওয়াইকুল মুহরিকা আলা আহলির রফজি ওয়াদ দালাল ওয়াজ জানদিকা : ২/৫৩৬)
নবীর পরিবারের জন্য দোয়া পাঠ করা
আরেকটি আমল যুক্তি দ্বারা প্রমাণিত। আর তা হলো, আহলে বাইত তথা নবীর পরিবারের সদস্যরা শাহাদাতের কারণে তাঁদের জন্য দোয়া করা, দরুদ পড়া এবং তাঁদের কাছ থেকে সত্যের ওপর অটল থাকার শিক্ষা গ্রহণ করা। এই তিনটি কাজ ছাড়া আশুরায় অন্য কোনো আমল নেই।
স্মরণ রাখতে হবে, ইসলামের ইতিহাসে মহররম মাসের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিভিন্ন কারণে। প্রাক-ইসলামী যুগেও মহররমের ঐতিহ্য বিদ্যমান ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসের অসংখ্য কালজয়ী ঘটনার জ্বলন্ত সাক্ষী পুণ্যময় এ মাস। আর কারবালার ঐতিহাসিক ট্র্যাজেডিও আশুরার দিনে সংঘটিত হওয়ায় পৃথিবীর ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। রচিত হয়েছে শোকাভিভূত এক নতুন অধ্যায়। কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনাই আশুরার একমাত্র ও আসল প্রেরণার উৎস নয়। তাই আশুরা মানেই কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা নয়, আশুরার ঐতিহ্য আবহমানকাল থেকেই চলে আসছে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, জাহেলি যুগে মক্কার কুরাইশ বংশের লোকেরা আশুরার রোজা রাখত এবং রাসুল (সা.)-ও আশুরার রোজা রাখতেন। (সহিহ মুসলিম : ২৬৩২) কাজেই আশুরার সুমহান ঐতিহ্যকে ‘কারবালা দিবসে’র ফ্রেমে বন্দি করা শুধু সত্যের অপলাপই নয়, একই সঙ্গে দুরভিসন্ধিমূলকও!
0 notes
dailynobobarta · 4 years
Text
মহররম মাসের ফজিলত!
New Post has been published on https://is.gd/WOyoFH
মহররম মাসের ফজিলত!
মহররম হিজরি বছরের প্রথম মাস। এ মাসে আল্লাহ তাআলার নিকট প্রতিটি মুসলমানের একমাত্র চাওয়া-পাওয়া হলো তিনি যেন মুসলিম উম্মাহকে বছরজুড়ে রহমত বরকত ও কল্যাণ দ্বারা ঢেকে দেন। এ মাসে রোজা রাখা বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুমহান আদর্শ। হাদিসের ঘোষণা অনুয��য়ী মহররমের ফজিলত তুলে ধরা হলো। আশুরার রোজা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় এসে দেখলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমরা তো তাদের অপেক্ষা হজরত মূসা আলাইহিস সালাম এর অনুসরণের অধিক যোগ্য। এরপর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এদিনে রোজা রাখলেন এবং অন্যদের ও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। -বোখারি শরিফ, ১ম খ-, পৃ. ২৫৮ :: ৩ টি রোজা ইহুদি ও খ্রিস্টানরা এ দিবসের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে রোজা রাখে। তাই অন্য এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহররমের ১০ তারিখের রোজার সঙ্গে ৯ অথবা ১১ তারিখকে মিলিয়ে রোজা রাখতে বলেছেন। একদিন রোজা রাখা মাকরুহ। -ফাতাওয়ায়ে শামী, ৩য় খ-, পৃ. ৩৩৫ :: আশুরার ফজিলত ইমাম বায়হাকী রহ. তাঁর শোআবুল ঈমান গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি খালেছ মনে উদার হস্তে আশুরার দিন দান-খয়রাত করবে, আল্লাহ পাক সারা বছর তার রুজি-রোজগারে বরকত দান করেন। হজরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশুরার দিন এবং রমজান মাসে যেভাবে তার সঙ্গে রোজা রাখতে দেখেছি, অন্য কোনো সময় দেখিনি’। (বুখারি, মুসলিম) হজরত আবু কাতাদাহ আল-আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আশুরার রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ইরশাদ করেন, এ রোজার মাধ্যমে বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ হয়। (ইবনে মাজাহ, মুসলিম শরিফ)। নবী করিম সা. ইরশাদ করেন, ‘রমজানের পর যদি তুমি রোজা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রোজা রাখ। কারণ এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহতায়ালা একটি জাতির তাওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তাওবা কবুল করবেন।’ (জামে তিরমিজি ১/১৫৭)। উপরোল্লিখিত ঘটনা ও হাদিসগুলো পড়লেই বোঝা যায় এ মাস কত গুরুত্বপূর্ণ। আশুরার দিন কত ফজিলত ও বরকতময়। একই সঙ্গে এ মাসের তিনটি রোজার (৯.১০.১১ তারিখে) মধ্যে আল্লাহ কত ফজিলত রেখেছেন। আল্লাহ সবাইকে বিষয়গুলোর ওপর আমল করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমীন। মহররম হিজরি বর্ষের প্রথম মাস। নানা কারণে মাসটি অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। এমাসের ১০ তারিখ হলো পবিত্র আশুরা। এ দিনের সঙ্গে আছে পৃথিবী সূচনালঘ্নের বহু ইতিহাস ও ঘটনাবলি। যে কারণে মহররমকে আরবি মাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস ধরা হয়। আসুন জেনে নেই এ মাসে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটনা ঘটেছে। ১) এ মাসে আশুরার দিন তথা ১০ তারিখে হজরত আদম আ. এর তওবা কবুল হয়েছে। বর্ণিত আছে, তিনি দীর্ঘ ৩০০ বছর কান্নার পর আশুরার দিকে তার তওবা কবুল হয়। ২) হজরত নূহ আ. এর জাহাজ মহাপ্লাবন থেকে মুক্তি পায়। প্লাবন শেষে জাহাজটি জুদি পাহাড়ে (বর্তমানে আরারাত পর্বতশ্রেণী) এসে স্থির হয়। ৩) এ দিনে হজরত মূসা আ. ও বনি ইসরাইল ফেরাউনের অত্যাচার থেকে মুক্ত হন এবং ফেরাউন ও তার অনুচরবর্গ লোহিত সাগরে নিমজ্জিত হয়। ৪) এ দিনে হজরত ইউনুস আ. মাছের পেট থেকে মুক্তি পান। ৫) এ দিনে হজরত ঈসা আ. জন্মগ্রহণ করেন এবং এ দিনেই তাকে আকাশে উঠিয়ে নেওয়া হয়। ৬) আশুরার দিন পূর্ববর্তী আম্বিয়ায়ে কেরাম আ.ও রোজা রাখতেন। ৭) রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে উম্মতে মুহাম্মদির ওপর আশুরার রোজা ফরজ ছিল। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর আশুরার রোজা নফল রোজায় পরিণত হয়। ৮) আরশ, কুরসী, আসমান-জমিন, চন্দ্রসূর্য, তারকা, বেহেশত এ দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে। ৯) এ দিনেই সর্বপ্রথম আসমান থেকে যমিনে বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ১০) হযরত ঈসা আ. এ দিনেই পৃথিবীতে এসেছিলেন। এ দিনেই তাকে আসমানে তুলে নেয়া হয়েছিল। ১১) হযরত ইবরাহিম আ. এ দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। নমরুদের অগ্নিকু- থেকে তিনি এ দিনেই মুক্তিলাভ করেছিলেন। ১২) এই দিনেই হযরত সোলাইমান আলাইহিস সালাম কে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন বাদশাহী দেয়া হয়েছিল। ১৩) এই দিনেই হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম তাঁর চোখের দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিলেন। ১৪) এ দিনেই হযরত রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র, বেহেশতি যুবকদের সরদার হযরত ইমাম হোসেইন রা. শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করেন। ইয়া আল্লাহ মহররম মাসের ফজিলতের উসিলায় আমাদের সকলের গুনাহ গুলো মাপ করুন আল্লাহুম্মা আমিন। লেখকঃ হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও গবেষক।
0 notes
ইমাম বুখারি রহ. এর সমাধি এবং আর্শ্চযজনক কিছু কথা
ইমাম বুখারি রহ. এর সমাধি এবং আর্শ্চযজনক কিছু কথা
বেলায়েত হুসাইন: হাদীসশাস্ত্রের ‘আমিরুল মু’মিনিন’ খ্যাত প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম বুখারী রহ. এর স্মৃতিচারণ করলে অবধারিতভাবেই তার জন্মস্থান বুখারার কথা সামনে আসে। ঠিক তেমনি মহান এই মনীষার মৃত্যু ও মৃত্যু-পরবর্তী সময়ের আলোচনা যখন হয়, তখন আমাদের স্মরণ করতে হয় সমরখন্দের কথা। প্রচণ্ড ধীশক্তির অধিকারী মহান এ ইমামের সমাধিকার্য এখানেই সম্পন্ন হয়েছে।
প্রাচীন নগরী সমরকন্দ নানাদিক থেকে প্রসিদ্ধ। তবে এখানে…
View On WordPress
0 notes
gnews71 · 6 years
Photo
Tumblr media
জেনে নিন কি কারণে আমল ভাল হলেও জান্নাতে যেতে পারবেন না অহংকার একটি খারাপ গুণ। এটি ইবলিস ও দুনিয়ায় তার সৈনিকদের বৈশিষ্ট্য। সর্বপ্রথম যে অহংকার করেছিল সে হচ্ছে— লানতপ্রাপ্ত ইবলিস। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, “অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে বললাম আদমকে সেজদা কর; তখন সবাই সেজদা করল। কিন্তু ইবলিস সেজদাকারীদের মধ্যে ছিল না। আল্লাহ বললেন: আমি যখন তোকে সেজদা করার আদেশ দিলাম তখন কিসে তোকে সেজদা করতে বাধা দিল? সে বলল, আমি তার চেয়ে উত্তম। আমাকে বানিয়েছেন আগুন দিয়ে; তাকে বানিয়েছেন মাটি দিয়ে।” [সূরা আরাফ, আয়াত: ১১-১২] অহংকার একটি ইবলিসি চরিত্র। যে ব্যক্তি অহংকার করতে চায় সে জেনে রাখুক সে শয়তানের চরিত্র গ্রহণ করেছে। সে সম্মানিত ফেরেশতাদের চরিত্র গ্রহণ করেনি, যারা আল্লাহর আনুগত্য করে সেজদায় লুটিয়ে পড়েছিল। আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নবী সা: বলেন: “যার অন্তরে অনুু পরিমাণ অহংকার আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। একথা শুনে এক সাহাবী বলল: ইয়া রাসুলুল্লাহ সা: যে কোন লোকই তো পছন্দ করে তার জামাটা সুন্দর হোক, তার জুতাটা সুন্দর হোক? তিনি সা: বললেন: নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর; তিনি পছন্দও করেন সৌন্দর্য। অহংকার হচ্ছে সত্যকে উপেক্ষা করা এবং মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা।”[সহিহ মুসলিম] এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, সত্যকে উপেক্ষার অর্থ হল, সত্য জেনেও সেটাকে প্রত্যাখ্যান করা। আর মানুষকে তুচ্ছ করার অর্থ হল, মানুষকে তুচ্ছতাচ্ছ্যিল বা হেয় করা। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, “যে ব্যক্তি অহংকারবশতঃ কাপড় ঝুলিয়ে হাঁটবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। আবু বকর (রাঃ) বললেন: আমার কাপড়ের একটা অংশ অনিচ্ছায় ঝুলে পড়ে যায়; আমি বারবার সেটাকে টেনে নেই। তখন তিনি সা. বললেন, আপনি তো সিদ্দীক। [সহিহ বুখারি (৩৪৬৫) অহংকার শুধু মাত্র আল্লাহর জন্যই প্রযোজ্য। আবু সাঈদ খুদরি (রাঃ) ও আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন, রাসুল সা: বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, সম্মান হচ্ছে- আমার কাপড়; আর অহংকার হচ্ছে- আমার চাদর। যে ব্যক্তি এটা নিয়ে আমার সাথে টানাটানি করে আমি তাকে শাস্তি দেই।”[সহিহ মুসলিম (২৬২০)] এই হাদিসের ব্যাখ্যায় মুসলিম শরীফের প্রখ্যাত ভাষ্যকার ইমাম নববী রহ. লিখেছেন, আমার সাথে ‘টানাটানি’ করবে এর অর্থ- যে এ গুণ লালন করবে; ফলে সে অংশীদার এর পর্যায়ে পড়বে। এটি অহংকারের কঠিন শাস্তি ও অহংকার হারাম হওয়ার স্পষ্ট ঘোষণা।[শারহু মুসলিম (১৬/১৭৩)] যে ব্যক্তি অহংকার করতে চায় ও বড়ত্ব দেখাতে চায় আল্লাহ তাকে নীচে ছুড়ে ফেলে দেন ও বেইজ্জত করেন। যে ব্যক্তি মানুষের উপর অহংকার করে কিয়ামতের দিন তাকে মানুষের পায়ের নীচে মাড়ানো হবে। এভাবে আল্লাহ তাআলা অহংকারের কারণে তাকে লাঞ্ছিত করবেন। আমর ইবনে শুয়াইব তার পিতা থেকে তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন তিনি নবী সা: থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন: “কিয়ামতের দিন অহংকারীদেরকে ছোট ছোট পিপীলিকার ন্যায় মানুষের আকৃতিতে হাশরের ময়দানে উপস্থিত করা হবে। অপমান ও লাঞ্ছনা তাদেরকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলবে। তাদেরকে জাহান্নামের একটি জেলখানায় একত্রিত করা হবে, যার নাম হবে “বুলাস’’। আগুন তাদেরকে চতুর্দিক থেকে ঢেকে ফেলবে। জাহান্নামীদের শরীরের ঘাম তাদেরকে পান করতে বাধ্য করা হবে।”।[সুনানে তিরমিজি (২৪৯২)] অহংকারের নানান রূপ রয়েছে: ১. সত্যকে গ্রহণ না করা; অন্যায়ভাবে বিতর্ক করা। যেমনটি আমরা আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের হাদিসে উল্লেখ করেছি। “অহংকার হচ্ছে- সত্যকে উপেক্ষা করা এবং মানুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা।” ২. নিজের সৌন্দর্য্য, দামী পোশাক ও দামী খাবার ইত্যাদি দ্বারা অভিভূত হয়ে পড়া এবং মানুষের উপর দাম্ভিকতা ও অহংকার প্রকাশ করা। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবী সা: বলেছেন, একদা এক ব্যক্তি হুল্লা পরে, আত্মম্ভরিতা নিয়ে, মাথা আঁচড়িয়ে হাঁটছিল এমতাবস্থায় আল্লাহ তাকে সহ ভূমি ধ্বস করে দিলেন এবং এভাবে কিয়ামত পর্যন্ত সে নীচের দিকে যেতে থাকবে।”[সহিহ বুখারি (৩২৯৭) ও সহিহ মুসলিম (২০৮৮)] কখনো কখনো আত্মীয়স্বজন ও বংশধরদের নিয়ে গৌরবের মাধ্যমেও অহংকার হতে পারে. অহংকার প্রতিরোধ করার উপায় হল: নিজেকে অন্য দশজন মানুষের মত মনে করা। অন্যসব লোককে নিজের সমতুল্য মনে করা। তারাও এক বাপ-মা থেকে জন্মগ্রহণ করেছে। যেভাবে আপনিও এক বাপ-মা এর ঘরে জন্মগ্রহণ করেছেন। আর আল্লাহভীতি ব্যক্তির মর্যাদা পরিমাপের মানদন্ড। আল্লাহ তাআলা বলেন: “নিশ্চয় তোমাদের যে ব্যক্তি বেশি তাকওয়াবান সে আল্লাহর নিকট বেশি সম্মানিত।”[সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১৩] অহংকারী ব্যক্তির জানা থাকা উচিত সে যতই বড় হোক না কেন পাহাড় সমান তো আর হতে পারবে না; জমিন ছিদ্র করে তো বেরিয়ে যেতে পারবে না। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর এবং কণ্ঠস্বর নীচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।”[সূরা লোকমান, আয়াত: ১৭-১৮] এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম কুরতুবী বলেন, “পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না” এখানে অহংকার থেকে বারণ করা হয়েছে এবং বি���য়ী হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আয়াতে ‘আল মারহা’ শব্দের অর্থ- তীব্র আনন্দ। কেউ কেউ বলেছেন: হাঁটার মধ্যে অহংকার করা, কেউ বলেছেন, কোন মানুষের তার মর্যাদার সীমা অতিক্রম করে যাওয়া। কাতাদা বলেছেন, হাঁটার ক্ষেত্রে অহংকার। কেউ কেউ বলেছেন: প্রত্যাখান। কেউ কেউ বলেছেন, উদ্যম। [তাফসিরে কুরতুবী ১০/২৬০] অহংকার প্রতিরোধ করার আরেকটি উপায় হলো- অহংকারী যে পথ দিয়ে বের হয়েছে পেশাবও সে পথ দিয়ে বের হয়। তার সৃষ্টির সূচনা হয়েছে নাপাক বীর্য থেকে। তার সর্বশেষ পরিণতি হচ্ছে- পচা লাশ। এ দুই অবস্থার মাঝখানে সে পায়খানা বহন করে চলছে। সুতরাং অহংকার করার মত কী আছে?!! আমরা আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাদেরকে অহংকার থেকে মুক্তি দেন এবং আমাদেরকে বিনয় দান করেন। আমিন। (সংগৃহীত)
0 notes
sylhetnews-blog · 6 years
Text
সৌভাগ্য আর পূণ্যের রজনী,লাইলাতুল কদর
http://www.surmatimes.com/?p=77860 সুরমা টাইমস ডেস্ক ::     রোজার শেষ ১০ দিন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তার মধ্যে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অধিক গুরুত্ব হলো লাইলাতুল কদর। লাইলাতুল কদরের রজনীকে বলা হয়ে থাকে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রাত। এক কথায় বছরের শ্রেষ্ঠ রাত। এ রাতে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ‘কদর’ নামে স্বতন্ত্র একখানা সুরা নাজিল করেন। ফলে এ রাত গুরুত্ব ও তাৎপর্যের দিক থেকে বছরের অন্যান্য রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। বছরের বারো মাসের মধ্যে যেমন শ্রেষ্ঠ মাস, তেমনি রমজানের একটি রাত ‘লাইলাতুল কদর’ রমজানের অন্যান্য রাতের চেয়ে মর্যাদাপূর্ণ। সুরা কদরে বর্ণিত লাইলাতুল কদরের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো : ১. এ রাতে আল-কুরআনুল কারীম অবর্তীর্ণ হয়েছে। ২. এ রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। ৩. এ রাতে হযরত জিবরাঈল (আঃ) এক দল ফেরেশতাসহ জমিনে অবতরন করেন। তারা ওইসব লোকদের জন্য দোয়া করতে থাকেন, যারা রাতজেগে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকেন। ৪. এ রাতটি ভাগ্য রজনী। লাইলাতুল কদর কোরআন নাজিলের রাত। কোরআন নাজিলের কারণেই এ রাতের মর্যাদা এত বেশি। যেমন রমজানে কোরআন নাজিল হওয়ায় রমজানের মর্যাদা অন্যসব মাসের চেয়ে বেশি। লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। লাইলাতুল কদর নবীজি (সা.) এর উম্মদের জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এক বিশেষ করুণা। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা আমার উম্মতকে লাইলাতুল কদর দিয়েছেন। যা পূর্বেকার কোনো উম্মতকে দেওয়া হয়নি। (কানযুল উম্মাল : ৮/৫৩৬)। লইলাতুল কদরের মাধ্যমে কম হায়াত পেয়েও বেশি হায়াত পাওয়া পূর্বেকার উম্মতের চেয়ে বেশি সওয়াবের অধিকারী হবে এ উম্মত। ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, রাসুলুল্লাহকে (সা.) পূর্ববর্তী উম্মতদের বয়স দেখানো হয়েছে যতটুকু আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত ছিল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজের উম্মতের বয়সকে কম মনে করলেন। তিনি ভাবলেন, আমার উম্মত এই অল্প সময়ে পূর্বেকার উম্মতদের মতো আমল করতে পারবে না। তখনই আল্লাহ তায়ালা নবীজি (সা.) প্রতি সুরা কদর নাজিল করলেন। যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। (মুআত্তা ইমাম মালেক : ২৬০)। হাজার মাস হলো ৮৩ বছর ৪ মাস। সুতরাং যে ব্যক্তি একটি লাইলাতুর কদর পেল এবং এ রাতে ইবাদত করতে পারল সে অন্য উম্মতদের ৮৩ বছরেরও বেশি সময়ের ইবাদতের চেয়ে বেশি সওয়াব লাভ করল। মুজাহিদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বনি ইসরাইলের এক আবেদের (ইবাদতকারী) কথা বর্ণনা করলেন। যে সারারাত ইবাদতে লিপ্ত থাকত। সকাল হলেই আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য বের হতো। এবাবে এক হাজার মাস ইবাদতে কাটিয়ে দিল। নবীজির এ কথা শুনে মুসলমানরা বিস্মিত হলো। আল্লাহ তায়ালা সুরা কদর নাজিল করে জানিয়ে দিলেন যে, লাইলাতুল কদরের ইবাদত সওয়াবের দিক থেকে বনি ইসরাইলের ওই ব্যক্তির হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ১৮/২২২)। এ তো একটি লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির সওয়াব। কেউ যদি জীবনে ৫০ বার লাইলাতুল কদর পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন তাহলে তিনি অন্য উম্মতদের ৪ হাজার ১৬৬ বছর ইবাদতের সমান সওয়াব লাভ কববেন। এ রাতে হজরত জিবরাঈল (আ.) একদল ফেরেশতাসহ জমিনে নেমে আসেন। নবীজি (সা.) বলেন, যখন লাইলাতুল ক্বদর উপস্থিত হয়, তখন হযরত জিবরাঈল আমীন একদল ফেরেশতাসহ পৃথিবীতে নেমে আসেন। তাদের সাথে সবুজ রঙের একটা ঝান্ডা থাকে যা কা’বা শরীফের উপর উড্ডীন করে দিয়ে ফেরেশতাগণ পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েন এবং আল্লাহর বান্দা-বান্দিরা যে যেখানে যে অবস্থায় দাঁড়িয়ে, বসে, আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকে, দুআ করে, তাদেরকে সালাম করে, তাদের সাথে মুসাফাহা করে এবং তাদের দুয়ায় আমীন আমীন বলতে থাকে। (বায়হাকি)। লাইলাতুল কদরের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এ রাত ভাগ্য রজনী। আল্লাহ তায়ালা সুরা দুখানের ৩-৪ নং আয়াতে বলেছেন, ‘নিশ্চই আমি একে (পবিত্র কোরআন) এক মুবারক রজনীতে অবতীর্ণ করেছি, আমি তো সতর্ককারী। এ রাতেই প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়। (সুরা দুখান : ৩-৪)। এখানে একটি ব্যাপার স্পষ্ট যে, যে রাতে (লাইলাতুম মাবারাকা) গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো স্থির হয় তা হলো কোরআন নাজিলের রাত। আর কোরআনুল কারিম কোন রাতে নাজিল হয়েছে তা তো কোরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চই আমি একে (কোরআনকে) লাইলাতুল কদরে অবতীর্ণ করেছি। (সুরা কদর : ১)। সুতরাং এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ স্থির হওয়ার যে রাতের কথা বলা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে লাইলাতুল কদর। সুরা দাখানের ৩য় আয়াতের ‘লাইলাতুম মুবারাকা’র ব্যখ্যায় আল্লামা ইবনে কাসির বলেন, ‘এ রাত অবশ্যই লাইলাতুল কদর। কেননা কোরআনের স্পষ্ট ও পরিষ্কার কথা দ্বারা কোরআনের রমজান মাসে নাজিল হওয়া সাব্যস্ত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা সুরা বাকারার ১৭৭ নং আয়াতে বলেছেন, ‘রমজান ওই মাস যাতে কোরআনুল কারিম অবতীর্ণ করা হয়।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ১৬/৬১০)। আল্লাহ তায়ালার দরবার থেকে গুনাহ মাফ করিয়ে নেওয়ার এক অবারিত সুযোগ লাইলাতুল কদর। যে ব্যক্তি এ রাতে ইবাদত করবে আল্লাহ তায়ালা তার অতীতের সব (সগিরা) গুনাহ মাফ করে দেবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদতে কাটায় করবে আল্লাহ তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ (বুখারি : ১/২৭০; মুসলিম : ১/২৫৯)। তওবার মাধ্যমে কবিরা গুনাহও মাফ করিয়ে নেবার এক অনন্য সুযোগ লাইলাতুল কদর। লাইলাতুল কদর কোন রাত তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ব্যাপারে স্পষ্ট ���রে কিছু বলেননি। তবে এতটুকু জানা যায় যে এ রা রমজানের শেষ দশকে। রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর একটিই হবে লাইলাতুল কদর। এ প্রসঙ্গে রাসূল সাঃ) বলেন, “তোমরা রমাযানের শেষ দশকে বেজোড় রাতে লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করো।’ তাই রমজানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতগুলোর যে কোনো একটি হতে পারে লাইলাতুল কদর। তাই ২৭ রমজানের রাতও লাইলাতুল কদর হবার সম্ভাবনা। তাই ২৭ রমজানের রাতসহ শেষ দশকের অন্যান্য বেজোড় রাতগুলো বিশেষভাবে আমল করে আল্লাহর দরবার থেকে অফুরন্ত কল্যাণ অর্জনে মনযোগী হওয়া প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য। যারা এমনকি করবে না তারা সত্যিকারে অনেক বড় প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত। কেননা হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরের বরকত থকে বঞ্চিত সে হাজারো কল্যাণ ও বরকত থেকে বঞ্চিত।’ (শুআবুল ইমান : ৩/৩৪০)। লাইলাতুল কদরে পড়ার মতো একটি বিশেষ দুয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি নবীজিকে (সা.) জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি যদি জানি যে এটা লাইলাতুল কদর তাবে আমি কী দোয়া পড়ব? নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এই দোয়া পড়বে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি’ (হে আল্লাহ আপনি অনেক বড় ক্ষমাশীল। ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। আমাকে ক্ষমা করে দিন! (তিরমিজি : ২/১৯১)।
0 notes
bartatv-blog · 6 years
Photo
Tumblr media
রমজানে মনীষীরা কোরআন তিলাওয়াত করতেন যেভাবে রমজান কোরআন নাজিলের মাস। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘রমজান মাস হলো সেই মাস, যে মাসে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোজা রাখবে।’ (সুরা আল বাকারা, আয়াত : ১৮৫) সুতরাং কোরআনের সঙ্গে এই মাসের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। স্বয়ং নবীজি (সা.)-এর নিয়মে পরিণত হয়েছিল যে পুরো বছর কোরআনের যে অংশগুলো নাজিল হতো; তিনি সবটুকু জিবরাইল (আ.)-কে পুনর্বার পড়ে শোনাতেন এবং জিবরাইল (আ.)ও তাঁকে পড়ে শোনাতেন। যে বছর নবীজি ইন্তেকাল করেন, সে বছর একে অন্যকে দুবার পড়ে শুনিয়েছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬২৩, সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৪৫০) তাই এই মোবারক মাসে সলফে সালেহিন তথা পুণ্যবান লোকেরা রোজা রাখার মহান হুকুম পালনের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য নফল ইবাদতের মধ্যে কোরআন তিলাওয়াতকে বেশি গুরুত্ব দিতেন। রমজানের পুরো মাস পবিত্র কোরআনের জন্য ওয়াকফ করে দিতেন। তাঁদের কেউ কেউ সাধ্যানুযায়ী অধিকবার কোরআন খতমের প্রতি মনোনিবেশ করতেন আর কারো কারো মনোযোগ থাকত কোরআনের গভীরে গিয়ে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম নিগূঢ় তথ্য ও রহস্যগুলো উদ্ঘাটন করা, কোরআনের মণিমুক্তাগুলো সংগ্রহ করার প্রতি। তাঁদের জীবনের এসব দিক আমাদের সামনে এলে, আমরাও এমনটা করতে অনুপ্রাণিত হতে পারি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরা এমন ছিল, যাদের আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেছিলেন। অতএব, তুমিও তাদের পথ অনুসরণ করো।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৯০) কারো মনে সংশয় জাগতে পারে যে এত কম সময়ে দ্রুত কোরআন খতমের কারণ ও বৈধতা কী? মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনে রাজাব হাম্বলি (রহ.) বলেন, তিন দিনের কম সময়ে কোরআন খতম করতে হাদিসে যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, তা সব সময় এমনটা করার বেলায় প্রযোজ্য। কিন্তু ফজিলতপূর্ণ সময় যেমন—রমজান, বিশেষত রমজানের রাত্রি; যেখানে কদরের রাত অনুসন্ধান করা হয় অথবা ফজিলতপূর্ণ স্থান যেমন—মক্কা, বিশেষত তাদের জন্য যারা বাইরে থেকে মক্কায় প্রবেশ করে। এসব ক্ষেত্রে অধিক হারে কোরআন তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক প্রমুখ ইমামের মন্তব্য ও অন্যান্য আলিমের কর্মপন্থা এর সমর্থন করে। (লাতায়িফুল মাআরিফ, ইবনে রাজাব, ১৭১) রমজানে দুই রাতে কোরআন খতম: আসওয়াদ ইবনে ইয়াজিদ ইবনে কায়স আবু আমর আন নাখায়ি। ইমাম ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। ইবরাহিম নাখায়ি (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—আসওয়াদ রমজানের প্রতি দুই রাতে কোরআন খতম করতেন। তিনি মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে নিদ্রা যেতেন। আর রমজান ছাড়া অন্য মাসে তিনি প্রতি ছয় রাতে কোরআন খতম করতেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা, জাহাবি, ৪/৫১) মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে কোরআন খতম: সাঈদ ইবনে জুবাইর ইবনে হিশাম একজন প্রথিতযশা আলিম। তাঁর সম্পর্কে হাসান ইবনে সালিহ বর্ণনা করেন, ইবনে হিশাম রমজান মাসে মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে কোরআন খতম করতেন। অবশ্য তখনকার যুগে লোকেরা এশার নামাজ বিলম্ব করে আদায় করত। (প্রাগুক্ত, ৪/৩২৪) এক দিন ও এক রাতে তিন খতম:আবুল হুসাইন ইবনে হুবাইশ একদা আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে সাহল ইবনে আতার আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, প্রত্যহ তাঁর এক খতম হতো। আর রমজানে প্রতি এক দিন ও এক রাতে তিন খতম হতো। শেষ বয়সে কোরআনের নিগূঢ় রহস্য এবং সূক্ষ্ম জ্ঞান আবিষ্কার করার মানসে এক খতম শুরু করেছিলেন। ১০ বছর পর্যন্ত পড়েছেন। তবে খতম হওয়ার আগেই তিনি এ পৃথিবী ত্যাগ করেন। (আল মুনতাজাম ফি তারিখিল মুলুকি ওয়াল উমাম, ইবনুল জাওজি : ৬/১৬০) তিন দিনে এক খতম:আবু আওয়ানা বর্ণনা করেন, আমি কাতাদা ইবনে দিআমা (রহ.)-কে রমজানে কোরআনে কারিমের দারস দিতে দেখেছি। সালাম ইবনে আবি ��ুতি (রহ.) বলেন, কাতাদা প্রতি সাত দিন অন্তর কোরআন খতম করতেন। রমজান এলে প্রতি তিন দিনে এক খতম করতেন। আর রমজানের শেষ দশকে তিনি কোরআন খতম করতেন প্রতি রাতে। (প্রাগুক্ত : ৫/২৭৬) রমজানে ৯০ খতম: মুহাম্মাদ ইবনে জুহাইর ইবনে কুমাইর বলেন, আমার আব্বাজান রমজান মাসে কোরআন খতম হওয়ার সময় আমাদের সবাইকে একত্র করতেন। তিনি প্রতি রাত-দিনে তিন খতম, এভাবে পুরো মাসে ৯০ বার কোরআনে কারিম খতম করতেন। (আল মুনতাজাম ফি তারিখিল মুলুকি ওয়াল উমাম, ইবনুল জাওজি : ৫/৪) সাত দিনে কোরআন খতম: ইবনে আবি শায়বা (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, আবু মিজলাজ (রহ.) রমজানে মহল্লার মসজিদে ইমামতি করতেন। তিনি সাত দিনে কোরআনে কারিম খতম করতেন। (আস সিকাত, ইবনে হিব্বান : ৫/৫১৮) রমজানে ৬০ খতম: ইয়াহইয়া ইবনে নাসর বলেন, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) অনেক সময় রমজান মাসে কোরআনে কারিম ৬০ বার খতম করতেন। (তারিখে বাগদাদ, খতিব বাগদাদি : ১৩/৩৫৭) আবু বকর ইবনুল হাদ্দাদ (রহ.) বলেন, আমি এ কথা শুনে আশ্চর্য বোধ করলাম আবার মুগ্ধও হলাম যে ইমাম শাফিয়ি (রহ.) রমজানে নামাজের ভেতরের তিলাওয়াত ছাড়াও ৬০ বার কোরআন খতম করতেন। আমিও চেষ্টা করেছিলাম। তবে সর্বোচ্চ ৫৯ বার খতম করতে সক্ষম হয়েছি। আর রমজান ছাড়া অন্য মাসে ৩০ খতম করেছি। প্রত্যহ এক খতম: ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল আল বুখারি (রহ.) রমজানে প্রত্যহ দিনের বেলায় এক খতম করতেন এবং তারাবির পর (তাহাজ্জুদ) সালাতে প্রদি তিন রাতে এক খতম তিলাওয়াত করতেন। (তারিখে বাগদাদ, খতিব বাগদাদি, ২/১২; তাবাকাতুস সুবকি, ২/২২৩; হাদয়ুস সারি মুকাদ্দামাতু ফাতহিল বারি; ইবনে হাজার, পৃষ্ঠা ৪৮২) ৩৩ খতম: খলিফা মামুন রমজানে ৩৩ বার কোরআনে কারিম তিলাওয়াত করে খতম করতেন। (তারিখে বাগদাদ : ১০/১৯০) রমজানে প্রতি রাতে কোরআন খতম: উবাইদা ইবনে হুমাইদ মানসুর থেকে, তিনি মুজাহিদ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন—আলী ইবনে আবদুল্লাহ আল আজদি (রহ.) রমজানে প্রতি রাতে কোরআন খতম করতেন। (তারিখে বাগদাদ : ৫/১৬৪) সারা দিনে এক আয়াত: অন্যদিকে এমনও বহু তথ্য পাওয়া যায় যে মনীষীরা কোরআনের অর্থ ও মর্ম নিয়ে চিন্তা ও গবেষণাকর্মে রমজান কাটিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ বিগত শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ হাদিসবিশারদ আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরি (রহ.)-এর কথা উল্লেখ করা যায়। তাঁর সুযোগ্য ছাত্র আল্লামা ইউসুফ বানুরি (রহ.) বলেন, রমজানে কখনো কখনো এমন হতো যে হজরত কাশ্মীরি (রহ.) সকালে কোরআনের একটি আয়াত তিলাওয়াত করতে শুরু করেছেন এবং বিকাল পর্যন্ত একই আয়াত পুনরাবৃত্তি করে চলেছেন। লক্ষ্য ছিল, ওই আয়াত নিয়ে গবেষণা এবং আয়াত থেকে শিক্ষা ও সূক্ষ্মতর তথ্য উদ্ঘাটন। তাঁর ওই সব গবেষণার একটি লিখিত রূপ হলো তাঁর লেখা ‘মুশকিলাতুল কোরআন’ গ্রন্থটি।
0 notes
shahriarkabir-blog · 7 years
Photo
Tumblr media
রোজা রেখে যে ৬টি কাজ করা নিষিদ্ধ – সবার জানা দরকার রোজা রেখে যে ৬টি কাজ করা নিষিদ্ধ – কোন ব্যক্তি যদি রোজা রেখে নিচের ৬টি কাজ করে, তাহলে তার রোজা নিশ্চিত ভাবে উপোশের মতো হয়ে যাবে।  অর্থ্যাৎ রোজাদার ব্যক্তিকে শুধু না খেয়ে থাকলেই হবে না, বরং সকল অনৈতিক বিষয়ে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।  রমাজান মাসে রোজাদার ব্যক্তিকে কোন ছয়টি জিনিস করা একেবারেই নিষিদ্ধ চলুন তা জেনে আসি। ১) দৃষ্টি সংযত রাখতে হবে।  তাই বেগানা মেয়েদের দেখা থেকে চোখকে হেফাজত করুন।  তা সরাসরি দেখা হোক বা টিভি-সিনেমায় দেখা হোক বা ম্যাগাজিন ও পত্রিকার ছবি হোক।  অনেকে রোজা রেখে অবসর সময় নাটক-সিনেমা দেখে কাটায়।  এতে তাদের রোজা হালকা হয়ে যায়। ২) জবানের হেফাজত করা।  অর্থা‍ৎ মিথ্যা, গীবত, পরনিন্দা, অশ্লীল কথাবার্তা ও ঝগড়া থেকে রিবত থাকা।  হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি রোজা অবস্থায় মিথ্যাচার ও মন্দ কাজ ত্যাগ করেনি তার পানাহার ত্যাগে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।  -সহিহ বুখারি: ১/২৫৫, হাদিস- ১৯০৩ অন্য এক হাদিসে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘রোজা অবস্থায় তোমাদের কেউ যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং শোরগোল, হট্টগোলে লিপ্ত না হয়।  যদি কেউ তার সঙ্গে গালিগালাজ বা মারামারি-কাটাকাটিতে লিপ্ত হতে চায় তবে সে (অনুরূপ আচরণ না করে) বলবে, আমি রোজাদার। ‘ এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, রোজা অবস্থায় মারামারি ও ঝগড়াঝাটি তো দূরের কথা, শোরগোল করাও রোজার আদব পরিপন্থী।  অতএব জবানকে এসব থেকে বিরত রেখে সর্বদা জিকির ও কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে তরতাজা রাখবে। ৩) কানের হেফাজত।  যেমন- গান শোনা, গীবত, পরনিন্দা ও অশ্লীল কথাবার্তা শোনা থেকে বিরত থাকা। ৪) অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, যেমন হাত-পা ইত্যাদিকেও গোনাহ ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখা। ৫) অন্তরকেও সব রকমের গোনাহ থেকে বিরত রাখা।  যেমন- গোনাহের কল্পনা করা, পেছনের গোনাহ স্মরণ করে স্বাদ গ্রহণ করা, অহঙ্কার, হিংসা, কু-ধারণা ইত্যাদি থেকে অন্তরকে হেফাজত করা। ৬) সেহরি ও ইফতারে হারাম আহার পরিহার করা।  ইমাম গাজ্জালী (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি সারাদিন রোজা রেখে হারাম খাবার দ্বারা ইফতার করে সে যেন একটি অট্টালিকা নির্মাণ করে আর একটি শহর ধ্বংস করে। Source: Jana Ojana News
0 notes
khutbahs · 4 years
Link
কুরবানির হুকুম:
কুরবানির হুকুম কি? ওয়াজিব না সুন্নত?
এ বিষয়ে ইমাম ও ফকীহদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে এবং তাদের দুটো মত রয়েছে।
প্রথম মত: কুরবানি ওয়াজিব। ইমাম আওযায়ী, ইমাম লাইস, ইমাম আবু হানীফা রহ. প্রমুখের মত এটাই। আর ইমাম মালেক ও ইমাম আহমদ রহ. থেকে একটি মত বর্ণিত আছে যে তারাও ওয়াজিব বলেছেন।
দ্বিতীয় মত: কুরবানি সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। এটি অধিকাংশ আলেমের মত এবং ইমাম মালেক ও শাফেয়ী রহ.-এর প্রসিদ্ধ মত। কিন্তু এ মতের প্রবক্তারা আবার বলেছেন: সামর্থ্য থাকা অবস্থায় কুরবানি পরিত্যাগ করা মাকরূহ। যদি কোনো জনপদের লোকেরা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সম্মিলিতভাবে কুরবানি পরিত্যাগ করে তবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে। কেননা, কুরবানি হল ইসলামের একটি শি‘য়ার বা মহান নিদর্শন।
যারা কুরবানি ওয়াজিব বলেন তাদের দলিল:
[এক] আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিয়েছেন:—
﴿ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢ ﴾ [الكوثر: ٢]
‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর এবং (পশু) কুরবানি কর।’ [সূরা কাউছার, আয়াত: ২] আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশ পালন ওয়াজিব।
[দুই] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:—
«من وجد سعة ولم يضح، فلا يقربن مصلانا ». رواه أحمد وابن ماجه، وصححه الحاكم.
‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারে না আসে।’[1]
যারা কুরবানি পরিত্যাগ করে তাদের প্রতি এ হাদিস একটি সতর্ক-বাণী। তাই কুরবানি ওয়াজিব।
[তিন] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:—
«يا أيها الناس: إن على كل أهل بيت في كل عام أضحية ». . رواه أحمد وابن ماجه، حسنه الألباني
হে মানব সকল ! প্রত্যেক পরিবারের দায়িত্ব হল প্রতি বছর কুরবানি দেয়া।[2]
আর যারা কুরবানি দেওয়া সুন্নত বলেন তাদের দলিল হচ্ছে:
[এক] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:—
«إذا رأيتم هلال ذي الحجة، وأراد أحدكم أن يضحي، فليمسك عن شعره وأظفاره، حتى يضحي ». رواه مسلم
‘তোমাদের মাঝে যে কুরবানি করতে চায়, যিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর সে যেন কুরবানি সম্পন্ন করার আগে তার কোনো চুল ও নখ না কাটে।’[3]
এ হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘যে কুরবানি করতে চায়’ কথা দ্বারা বুঝে আসে এটা ওয়াজিব নয়।
[দুই] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতের মাঝে যারা কুরবানি করেনি তাদের পক্ষ থেকে কুরবানি করেছেন। তার এ কাজ দ্বারা বুঝে নেয়া যায় যে কুরবানি ওয়াজিব নয়।
শাইখ ইবনে উসাইমীন রহ. উভয় পক্ষের দলিল-প্রমাণ উল্লেখ করার পর বলেন: এ সকল দলিল-প্রমাণ পরস্পর বিরোধী নয় বরং একটা অন্যটার সম্পূরক।
সারকথা হল যারা কুরবানিকে ওয়াজিব বলেছেন তাদের প্রমাণাদি অধিকতর শক্তিশালী। আর ইমাম ইবনে তাইমিয়ার মত এটাই[4] আর বর্তমান কালের শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ উসাইমীন এ মতটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
কুরবানির ফযিলত
[ক] কুরবানি দাতা নবী ইবরাহিম আ. ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদর্শ বাস্তবায়ন করে থাকেন।
[খ] পশুর রক্ত প্রবাহিত করার মাধ্যমে কুরবানি দাতা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য অর্জন করেন। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেন:—
﴿لَن يَنَالَ ٱللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَآؤُهَا وَلَٰكِن يَنَالُهُ ٱلتَّقۡوَىٰ مِنكُمۡۚ كَذَٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمۡ لِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٣٧﴾ [الحج : ٣٧]
‘আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না তাদের গোশত এবং রক্ত বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া। এভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এজন্য যে, তিনি তোমাদের পথ-প্রদর্শন করেছেন; সুতরাং আপনি সুসংবাদ দিন মুহসিনদেরকে।’[5]
[গ] পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও অভাবীদের আনন্দ দান। আর এটা অন্য এক ধরনের আনন্দ যা কুরবানির গোশতের পরিমাণ টাকা যদি আপনি তাদের সদকা দিতেন তাতে অর্জিত হত না। কুরবানি না করে তার পরিমাণ টাকা সদকা করে দিলে কুরবানি আদায় হবে না।
কুরবানির শর্তাবলি:
[১] এমন পশু দ্বারা কুরবানি দিতে হবে যা শরিয়ত নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেগুলো হল উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা। এ গুলোকে কুরআনের ভাষায় বলা হয় ‘বাহীমাতুল আন‘আম।’ যেমন, আল্লাহ বলেন:—
﴿ وَلِكُلِّ أُمَّةٖ جَعَلۡنَا مَنسَكٗا لِّيَذۡكُرُواْ ٱسۡمَ ٱللَّهِ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّنۢ بَهِيمَةِ ٱلۡأَنۡعَٰمِۗ ٣٤ ﴾ [الحج : ٣٤]
‘আমরা প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানির নিয়ম করে দিয়েছি; তিনি তাদেরকে জীবনোপকরণ স্বরূপ যে সকল চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন, সেগুলোর উপর যেন তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’[6] হাদিসে এসেছে:—
عن جابر- رضى الله عنه- قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم:لا تذبحوا إلا مسنة، إلا أن تعسر عليكم، فتذبحوا جذعة من الضأن. [رواه مسلم]
জাবের রা. হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা অবশ্যই এক বছরের বয়সের ছাগল কুরবানি করবে। তবে তা তোমাদের জন্য দুষ্কর হলে ছয় মাসের মেষ-শাবক কুরবানি করতে পার”।[7] আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ছাড়া অন্য কোনো জন্তু কুরবানি করেননি ও কুরবানি করতেও বলেননি। তাই কুরবানি শুধু এগুলো দিয়েই করতে হবে। ইমাম মালিক রহ.-এর মতে কুরবানির জন্য সর্বোত্তম জন্তু হল শিং ওয়ালা সাদা-কালো দুম্বা। কারণ রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের দুম্বা কুরবানি করেছেন বলে বুখারি ও মুসলিমের হাদিসে এসেছে। উট ও গরু-মহিষে সাত ভাগে কুরবানি দেয়া যায়। যেমন হাদিসে এসেছে—
عن جابر- رضى الله عنه- أنه قال: نحرنا بالحديبية مع النبي صلى الله عليه وسلم البدنة عن سبعة، والبقرة عن سبعة.
জাবের রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমরা হুদাইবিয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। তখন আমরা উট ও গরু দ্বারা সাত জনের পক্ষ থেকে কুরবানি দিয়েছি।’[8]
গুণগত দিক দিয়ে উত্তম হল কুরবানির পশু হৃষ্টপুষ্ট, অধিক গোশত সম্পন্ন, নিখুঁত, দেখতে সুন্দর হওয়া।
[২] শরিয়তের দৃষ্টিতে কুরবানির পশুর বয়সের দিকটা খেয়াল রাখা জরুরি। উট পাঁচ বছরের হতে হবে। গরু বা মহিষ দু বছরের হতে হবে। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা হতে হবে এক বছর বয়সের।
[৩] কুরবানির পশু যাবতীয় দোষ-ত্রুটি মুক্ত হতে হবে। যেমন হাদিসে এসেছে:—
عن البراء بن عازب- رضى الله عنه- قال: قام فينا رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: «أربع لا تجوز في الأضاحي،- وفي رواية: تجزىء – العوراء البين عورها، والمريضة البين مرضها، والعرجاء البين ضلعها، والكسيرة التي لا تنقى ». [رواه الترمذي وفي رواية النسائي] ذكر [العجفاء] بدل [الكسيرة] وصححه الألباني في صحيح سنن النسائي
সাহাবি আল-বারা ইবনে আযেব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়ালেন তারপর বললেন: চার ধরনের পশু, যা দিয়ে কুরবানি জায়েয হবে না। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে পরিপূর্ণ হবে না—অন্ধ; যার অন্ধত্ব স্পষ্ট, রোগাক্রান্ত; যার রোগ স্পষ্ট, পঙ্গু; যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট এবং আহত; যার কোনো অঙ্গ ভেঙ্গে গেছে। নাসায়ির বর্ণনায় ‘আহত’ শব্দের স্থলে ‘পাগল’ উল্লেখ আছে।[9]
আবার পশুর এমন কতগুলো ত্রুটি আছে যা থাকলে কুরবানি আদায় হয় কিন্তু মাকরূহ হবে। এ সকল দোষত্রুটি যুক্ত পশু কুরবানি না করা ভাল। সে ত্রুটিগুলো হল শিং ভাঙ্গা, কান কাটা, লেজ কাটা, ওলান কাটা, লিঙ্গ কাটা ইত্যাদি।
[৪] যে পশুটি কুরবানি করা হবে তার উপর কুরবানি দাতার পূর্ণ মালিকানা সত্ত্ব থাকতে হবে। বন্ধকি পশু, কর্জ করা পশু বা পথে পাওয়া পশু দ্বারা কুরবানি আদায় হবে না।
কুরবানির ওয়াক্ত বা সময়:
কুরবানি নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পর্কিত একটি ইবাদত। এ সময়ের পূর্বে যেমন কুরবানি আদায় হবে না তেমনি পরে করলেও আদায় হবে না।
যারা ঈদের সালাত আদায় করবেন তাদের জন্য কুরবানির সময় শুরু হবে ঈদের সালাত আদায় করার পর থেকে। যদি ঈদের সালাত আদায়ের পূর্বে কুরবানির পশু যবেহ করা হয় তাহলে কুরবানি আদায় হবে না। যেমন হাদিসে এসেছে—
عن البراء بن عازب -رضى الله عنه- قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يخطب فقال: «إن أول ما نبدأ به من يومنا هذا، أن نصلى ثم نرجع فننحر، فمن فعل هذا فقد أصاب سنتنا، ومن نحر قبل أن يصلي فإنما هو لحم قدمه لأهله، ليس من النسك في شيء ». [رواه البخاري]
আল-বারা ইবনে আযেব রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবাতে বলেছেন: এ দিনটি আমরা শুরু করব সালাত দিয়ে। অতঃপর সালাত থেকে ফিরে আমরা কুরবানি করব। যে এমন আমল করবে সে আমাদের আদর্শ সঠিকভাবে অনুসরণ করল। আর যে এর পূর্বে যবেহ করল সে তার পরিবারবর্গের জন্য গোশতের ব্যবস্থা করল। কুরবানির কিছু আদায় হল না।[10]
সালাত শেষ হওয়ার সাথে সাথে কুরবানি পশু যবেহ না করে সালাতের খুতবা দুটি শেষ হওয়ার পর যবেহ করা ভাল। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রকম করেছেন। হাদিসে এসেছে—
قال جندب بن سفيان البجلي -رضى الله عنه-: صلى النبى صلى الله عليه وسلم يوم النحر، ثم خطب ثم ذبح … ]رواه البخاري [
সাহাবি জুনদাব ইবনে সুফিয়ান আল-বাজালী রা. বলেছেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানির দিন সালাত আদায় করলেন অতঃপর খুতবা দিলেন তারপর পশু যবেহ করলেন।[11]
عن جندب بن سفيان قال: شهدت النبي صلى الله عليه وسلم يوم النحر قال: «من ذبح قبل أن يصلي فليعد مكانها أخرى، ومن لم يذبح فليذبح.» [رواه البخاري]
জুনদুব ইবনে সুফিয়ান বলেন, আমি কুরবানির দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি নামাজের পূর্বে যবেহ করেছে সে যেন আবার অন্য স্থানে যবেহ করে। আর যে যবেহ করেনি সে যেন যবেহ করে।[12]
আর কুরবানির সময় শেষ হবে যিলহজ মাসের তেরো তারিখের সূর্যাস্তের সাথে সাথে। অতএব কুরবানির পশু যবেহ করার সময় হল চার দিন। যিলহজ মাসের দশ, এগারো, বার ও তেরো তারিখ। এটাই উলামায়ে কেরামের নিকট সর্বোত্তম মত হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে। কারণ:
এক. আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন:—
﴿ لِّيَشۡهَدُواْ مَنَٰفِعَ لَهُمۡ وَيَذۡكُرُواْ ٱسۡمَ ٱللَّهِ فِيٓ أَيَّامٖ مَّعۡلُومَٰتٍ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّنۢ بَهِيمَةِ ٱلۡأَنۡعَٰمِۖ ٢٨ ﴾ [الحج : ٢٨]
‘যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদের চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে।’[13]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম বুখারি রহ. বলেন: ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন: ‘এ আয়াতে নির্দিষ্ট দিনগুলো বলতে বুঝায় কুরবানির দিন ও তার পরবর্তী তিন দিন।’
অতএব এ দিনগুলো আল্লাহ তা‘আলা কুরবানির পশু যবেহ করার জন্য নির্ধারণ করেছেন।
দুই. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:—
كل أيام التشريق ذبح. [رواه أحمد، صححه الألباني في السلسلة الصحيحة]
‘আইয়ামে তাশরীকের প্রতিদিন যবেহ করা যায়।’[14] আইয়ামে তাশরীক বলতে কুরবানির পরবর্তী তিন দিনকে বুঝায়।
তিন. কুরবানির পরবর্তী তিন দিনে সওম পালন জায়েয নয়। এ দ্বারা বুঝে নেয়া যায় যে এ তিন দিনে কুরবানি করা যাবে।
চার. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘আইয়ামে তাশরীক হল খাওয়া, পান করা ও আল্লাহর জিকির করার দিন।’
এ দ্বারা বুঝে নিতে পারি যে, যে দিনগুলো আল্লাহ খাওয়ার জন্য নির্ধারণ করেছেন সে দিনগুলোতে কুরবানির পশু যবেহ করা যেতে পারে।
পাঁচ. সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত হয়, কুরবানির পরবর্তী তিনদিন কুরবানির পশু যবেহ করা যায়।
ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন: আলী ইবনে আবি তালেব রা. বলেছেন: ‘কুরবানির দিন হল ঈদুল আজহার দিন ও তার পরবর্তী তিন দিন।’ অধিকাংশ ইমাম ও আলেমদের এটাই মত। যারা বলেন, কুরবানির দিন হল মোট তিন দিন; যিলহজ মাসের দশ, এগারো ও বার তারিখ, বার তারিখের পর যবেহ করলে কুরবানি হবে না, তাদের কথার সমর্থনে কোনো প্রমাণ নেই ও মুসলিমদের ঐক্যমত্য [ইজমা] প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
মৃত ব্যক্তির পক্ষে কুরবানি
মূলত কুরবানির প্রচলন জীবিত ব্যক্তিদের জন্য। যেমন আমরা দেখি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবিগণ নিজেদের পক্ষে কুরবানি করেছেন। অনেকের ধারণা কুরবানি শুধু মৃত ব্যক্তিদের জন্য করা হবে। এ ধারণা মোটেই ঠিক নয়। তবে মৃত ব্যক্তিদের জন্য কুরবানি করা জায়েয ও একটি সওয়াবের কাজ। কুরবানি একটি সদকা। আর মৃত ব্যক্তির নামে যেমন সদকা করা যায় তেমনি তার নামে কুরবানিও দেয়া যায়।
যেমন মৃত ব্যক্তির জন্য সদকার বিষয়ে হাদিসে এসেছে—
عن عائشة- رضى الله عنها- أن رجلا أتى النبى صلى الله عليه وسلم فقال يا رسول الله: إن أمي افتلتت نفسها ولم توصى، وأظنها لو تكلمت تصدقت، أفلها أجر إن تصدقت عنها ؟ قال: « نعم » . [رواه البخاري ومسلم]
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত: এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল—হে রাসূল! আমার মা হঠাৎ মারা গেছেন। কোনো অসিয়ত করে যেতে পারেন নি। আমার মনে হয় তিনি কোনো কথা বলতে পারলে অসিয়ত করে যেতেন। আমি যদি এখন তার পক্ষ থেকে সদকা করি তাতে কি তার সওয়াব হবে ? তিনি উত্তর দিলেন: হ্যাঁ।[15]
মৃত ব্যক্তির জন্য এ ধরনের সদকা ও কল্যাণমূলক কাজের যেমন যথেষ্ট প্রয়োজন ও তেমনি তা তাঁর জন্য উপকারী।
এমনিভাবে একাধিক মৃত ব্যক্তির জন্য সওয়াব প্রেরণের উদ্দেশ্যে একটি কুরবানি করা জায়েয আছে। অবশ্য যদি কোনো কারণে মৃত ব্যক্তির জন্য কুরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য পূর্ণ একটি কুরবানি করতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায়, ব্যক্তি নিজেকে বাদ দিয়ে মৃত ব্যক্তির জন্য কুরবানি করেন। এটা মোটেই ঠিক নয়। ভাল কাজ নিজেকে দিয়ে শুরু করতে হয় তারপর অন্যান্য জীবিত ও মৃত ব্যক্তির জন্য করা যেতে পারে। যেমন হাদিসে এসেছে—
عن عائشة وأبي هريرة -رضى الله عنهما- أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان إذا أراد أن يضحي، اشترى كبشين عظيمين سمينين أقرنين أملحين موجوئين، [مخصيين] فذبح أحدهما عن أمته، لمن شهد لله بالتوحيد، وشهد له بالبلاغ، وذبح آخر عن محمد، وعن آل محمد- صلى الله عليه وسلم- . [صحيح ابن ماجة [صححه الألباني]
আয়েশা রা. ও আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কুরবানি দিতে ইচ্ছা করলেন তখন দুটো দুম্বা ক্রয় করলেন। যা ছিল বড়, হৃষ্টপুষ্ট, শিং ওয়ালা, সাদা-কালো বর্ণের এবং খাসি। একটি তিনি তার ঐ সকল উম্মতের জন্য কুরবানি করলেন; যারা আল্লাহর একত্ববাদ ও তার রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছে, অন্যটি তার নিজের ও পরিবার বর্গের জন্য কুরবানি করেছেন।[16]
মৃত ব্যক্তি যদি তার সম্পদ থেকে কুরবানি করার অসিয়ত করে যান তবে তার জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব হয়ে যাবে।
অংশীদারির ভিত্তিতে কুরবানি করা কুরবানি:
যাকে ‘শরীকে কুরবানি দেয়া’ বলা হয়।
ভেড়া, দুম্বা, ছাগল দ্বারা এক ব্যক্তি একটা কুরবানি করতে পারবেন। আর উট, গরু, মহিষ দ্বারা সাত জনের পক্ষ থেকে সাতটি কুরবানি করা যাবে। ইতোপূর্বে জাবের রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত হয়েছে।
অংশীদারি ভিত্তিতে কুরবানি করার দুটি পদ্ধতি হতে পারে:
[এক] সওয়াবের ক্ষেত্রে অংশীদার হওয়া। যেমন কয়েক জন মুসলিম মিলে একটি বকরি ক্রয় করল। অতঃপর একজনকে ঐ বকরির মালিক বানিয়ে দিল। বকরির মালিক বকরিটি কুরবানি করল। যে কজন মিলে বকরি খরিদ করেছিল সকলে সওয়াবের অংশীদার হল।
[দুই] মালিকানার অংশীদারির ভিত্তিতে কুরবানি। দু জন বা ততোধিক ব্যক্তি একটি বকরি কিনে সকলেই মালিকানার অংশীদার হিসেবে কুরবানি করল। এ অবস্থায় কুরবানি শুদ্ধ হবে না। অবশ্য উট, গরু ও মহিষের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি জায়েয আছে।
মনে রাখতে হবে কুরবানি হল একটি ইবাদত ও আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভের উপায়। তাই তা আদায় করতে হবে সময়, সংখ্যা ও পদ্ধতিগত দিক দিয়ে শরিয়ত অনুমোদিত নিয়মাবলী অনুসরণ করে। কুরবানির উদ্দেশ্য শুধু গোশত খাওয়া নয়, শুধু মানুষের উপকার করা নয় বা শুধু সদকা [দান] নয়। কুরবানির উদ্দেশ্য হল আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একটি মহান নিদর্শন তার রাসূলের নির্দেশিত পদ্ধতিতে আদায় করা।
তাই, আমরা দেখলাম কীভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোশতের বকরি ও কুরবানির বকরির মাঝে পার্থক্য নির্দেশ করলেন। তিনি বললেন যা সালাতের পূর্বে যবেহ হল তা বকরির গোশত আর যা সালাতের পরে যবেহ হল তা কুরবানির গোশত।
কুরবানি দাতা যে সকল কাজ থেকে দূরে থাকবেন:
যখন কেউ কুরবানি পেশ করার ইচ্ছা করে আর যিলহজ মাস প্রবেশ করে। তার জন্য চুল, নখ অথবা চামড়ার কোনো অংশ কাটা থেকে বিরত থাকবে, যতক্ষণ না কুরবানি করবে।
হাদিসে এসেছে—
عن أم سلمة- رضى الله عنها- أن النبي- صلى الله عليه وسلم- قال: « إذا رأيتم هلال ذي الحجة، وأراد أحدكم أن يضحي، فليمسك عن شعره وأظفاره» . [رواه مسلم] وفي رواية له: « فلا يمس من شعره وبشره شيئا » ، وفي رواية: حتى يضحي.
উম্মে সালামাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমাদের মাঝে যে কুরবানি করার ইচ্ছে করে সে যেন যিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে। ইমাম মুসলিম হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। তার অন্য একটি বর্ণনায় আছে—‘সে যেন চুল ও চামড়া থেকে কোনো কিছু স্পর্শ না করে। অন্য বর্ণনায় আছে ‘কুরবানির পশু যবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত এ অবস্থায় থাকবে।’[17]
কুরবানি দাতার পরিবারের লোক জনের নখ, চুল ইত্যাদি কাঁটাতে কোনো সমস্যা নেই।
কোন কুরবানি দাতা যদি তার চুল, নখ অথবা চামড়ার কোনো অংশ কেটে ফেলে তার জন্য উচিৎ তাওবা করা, পুনরাবৃত্তি না করা, ত��ে এ জন্য কোনো কাফফারা নেই এবং এ জন্য কুরবানিতে কোনো সমস্যা হবে না। আর যদি ভুলে, অথবা না জানার কারণে অথবা অনিচ্ছাসত্বে কোনো চুল পড়ে যায়, তার কোনো গুনাহ হবে না। আর যদি সে কোনো কারণে তা করতে বাধ্য হয়, তাও তার জন্য জায়েয, এ জন্য তার কোনো কিছু প্রদান করতে হবে না। যেমন নখ ভেঙ্গে গেল, ভাঙ্গা নখ তাকে কষ্ট দিচ্ছে সে তা কর্তন করতে পারবে, তদ্রূপ কারো চুল লম্বা হয়ে চোখের উপর চলে আসছে সেও চুল কাটতে পারবে অথবা কোনো চিকিৎসার জন্যও চুল ফেলতে পারবে।
কুরবানি দাতা চুল ও নখ না কাটার নির্দেশে কি হিকমত রয়েছে এ বিষয়ে উলামায়ে কেরাম অনেক কথা বলেছেন। অনেকে বলেছেন: কুরবানি দাতা হজ করার জন্য যারা এহরাম অবস্থায় রয়েছেন তাদের আমলে যেন শরিক হতে পারেন, তাদের সাথে একাত্মতা বজায় রাখতে পারেন।
ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেছেন: ‘কুরবানি দাতা চুল ও নখ বড় করে তা যেন পশু কুরবানি করার সাথে সাথে নিজের কিছু অংশ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কুরবানি [ত্যাগ] করায় অভ্যস্ত হতে পারেন এজন্য এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’ যদি কেউ যিলহজ মাসের প্রথম দিকে কুরবানি করার ইচ্ছা না করে বরং কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর কুরবানির নিয়ত করল সে কি করবে? সে নিয়ত করার পর থেকে কুরবানির পশু যবেহ পর্যন্ত চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকবে।
ফুটনোটঃ[1] আহমদ, ইবনু মাজাহ: ৩৫১৬
[2] ইবনু মাজাহ: ৩১২৫
[3] মুসলিম: ১৯৭৭
[4] মাজমূ ফাতাওয়া ৩২/১৬২-১৬৪।
[5] সূরা হজ, আয়াত: ৩৭
[6] সূরা হজ, আয়াত: ৩৪
[7] মুসলিম, হাদিস: ১৯৩৬
[8] ইবনে মাজাহ্‌: ৩১৩২
[9] তিরমিযি, হাদিস: ১৫৪৬, নাসায়ী: ৪৩৭১
[10] বুখারি: ৯৬৫
[11] বুখারি, হাদিস: ৯৮৫
[12] বুখারি, হাদিস: ৫৫৬২
[13] সূরা আল-হজ, আয়াত: ২৮
[14] বর্ণনায় আহমদ, হাদিস: ৪/৮২
[15] বুখারি: ১৩৩৮,২৭৬০, মুসলিম: ১০৪।
[16] ইবনে মাজা, হাদিস: ২৫৩১
[17] মুসলিম: ১৯৭৭
যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন, ঈদ, কুরবানি ও আইয়ামে তাশরীকের দিনসমূহ করনীয়, বর্জনীয় ও সুন্নাহ সমূহ:
জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
0 notes
khutbahs · 4 years
Link
যেসব কাজের হুবহু প্রতিদান পাওয়া যায়
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমি নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পেছনে বসা ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, ‘হে বৎস! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কয়েকটি বাক্য শেখাব। আল্লাহর বিধানগুলো সংরক্ষণ করবে, আল্লাহ তোমাকে হেফাজত করবেন। আল্লাহর দাবিগুলো (বিধান) আদায় করবে, তুমি আল্লাহকে তোমার সামনেই পাবে। আর যখন তুমি কোনো কিছু চাওয়ার ইচ্ছা করবে, তখন আল্লাহর কাছেই চাইবে। যখন সাহায্য চাইতে হলে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে। জেনে রেখো! যদি সব সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো উপকার করতে চায়, তবু তারা আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া কখনই তোমার উপকার করতে পারবে না। আর যদি সব সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো ক্ষতি করতে চায়, তবু তারা আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া কখনই তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। কলম তুলে নেওয়া হয়েছে এবং দপ্তরসমূহ শুকিয়ে গেছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৬)
আলোচ্য হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, মানুষ যেমন কাজ করবে তেমন ফল পাবে। কখনো কখনো আল্লাহ মানুষের কাজের প্রতিদান অনুরূপ কাজের মাধ্যমে দেন। কোরআন ও হাদিসের বর্ণনা থেকে এমন কিছু কাজের বিবরণ তুলে ধরা হলো—
১. আল্লাহকে সাহায্য করা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করো আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করবেন। তোমাদের কদম (অবস্থান) দৃঢ় করবেন।’ (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত : ৭)
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম তাবারি (রহ.) বলেন, ‘যদি তোমরা জিহাদের ময়দানে শত্রুর বিরুদ্ধে আল্লাহর রাসুলকে সাহায্য করো, আল্লাহর দ্বিন প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা-সংগ্রাম করো, তবে আল্লাহ তার দ্বিনের সাহায্যকারীকে সাহায্য করবেন এবং তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করবেন।’
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহকে সাহায্য করবে আল্লাহ অবশ্যই তাদের সাহায্য করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিমান ও পরাক্রমশালী।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৪০)
২. আল্লাহকে স্মরণ : আল্লাহ বলেন, ‘আমাকে স্মরণ কোরো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব। আমার কৃতজ্ঞতা আদায় করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫২)
সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রহ.) এই অর্থ এভাবে করেন, ‘আনুগত্যের মাধ্যমে তুমি আমাকে স্মরণ করো, আমি ক্ষমা ও অনুগ্রহের মাধ্যমে তোমাকে স্মরণ করব।’ আর হাসান বসরি (রহ.) অর্থ করেন, ‘তোমার ওপর আমি যা যা আবশ্যক করেছি তা পালনের মাধ্যমে আমাকে স্মরণ করো, আমি পুরস্কার ও প্রতিদানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তার মাধ্যমে তোমাকে স্মরণ করব।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)
৩. আল্লাহর সঙ্গে অঙ্গীকার পূরণ : আল্লাহ বলেছেন, ‘এবং আমার সঙ্গে তোমাদের অঙ্গীকার পূরণ করো আমিও তোমাদের সঙ্গে আমার অঙ্গীকার পূর্ণ করব।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৪০)
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, আয়াতটি বনি ইসরাঈলের ব্যাপারে অবতীর্ণ। তারা আল্লাহর কাছে অঙ্গীকার করেছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) আগমন করলে, তারা তাঁকে সত্যায়ন করবে এবং মেনে নেবে। কিন্তু সেই অঙ্গীকার তারা রক্ষা করেনি।
এ ছাড়াও আল্লাহর প্রতি বান্দার আনুগত্য এবং তার প্রতিদানে জান্নাত অথবা অবাধ্যতার শাস্তি হিসেবে জাহান্নাম প্রদানের বিষয়গুলোও আল্লাহর অঙ্গীকারের অন্তর্ভুক্ত।
৪. অন্যের দোষ গোপন করা : মানুষের দোষচর্চা ইসলামে নিষিদ্ধ। কেউ যদি অন্যের দোষ গোপন করে তবে আল্লাহ তার দোষও গোপন করবেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলমানের দোষ গোপন রাখে আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭০২৮)
শায়খ শফিউল্লাহ মুবারকপুরী এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘কেউ যদি মুসলমানের এমন কোনো দোষ বা ত্রুটি জেনেও গোপন করে—যা প্রকাশে সে লজ্জাবোধ করে, তবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ-ত্রুটি গোপন করবেন এবং পৃথিবীতেও তাকে পাপের জন্য লজ্জিত করবেন না।’ (মিন্নাতুল মুনয়িম ফি শরহিল মুসলিম : ৪/২৪২)
৫. মসজিদ নির্মাণ : মসজিদ আল্লাহর ঘর। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পৃথিবীতে তাঁর ঘর মসজিদ নির্মাণ করবে, আল্লাহ জান্নাতে তার জন্য ঘর নির্মাণ করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ তৈরি করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি তৈরি করে দেবেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৬৬১)
৬. আল্লাহর বিধান সংরক্ষণ : আল্লাহর বিধান সংরক্ষণের অর্থ হলো, তা মান্য করে চলা। আল্লাহ যা করতে বলেছেন তা করা এবং করতে নিষেধ করেছেন তা পরিহার করা। যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান মেনে চলবে, আল্লাহ তাকে যাবতীয় অকল্যাণ থেকে রক্ষা করবেন। আলোচ্য হাদিসে যেমনটি বলা হয়েছে। এ ছাড়া পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো পুরুষ বা কোনো নারী যদি ভালো কাজ করে, আমি তাকে উত্তম জীবন দান করব।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯৭)
৭. দ্বিমুখী নীতি অনুসরণ করা : পৃথিবীতে যারা দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে অনুরূপ শাস্তি দেবেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে দ্বিমুখী হবে, কিয়ামতের দিন তার দুটি আগুনের জিহ্বা হবে।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৫)
৮. সৃষ্টির প্রতি দয়া করা : যে ব্যক্তি আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি অনুগ্রহ করবে, আল্লাহ তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন। রাসুলে আকরাম (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে দয়াশীলদের প্রতি দয়া করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৪৮)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা দুনিয়াবাসীর প্রতি দয়া করো, যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৯৪৩)
লেখক : সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিসি) 
0 notes