যেখানে বিয়ে কঠিন, সেখানে যিনাসহজ
যেখানে বিয়ে কঠিন, সেখানে যিনাসহজ
যুবকদের ভিতরে ঈমান উজ্জীবিত করার কোন দায়িত্ব পিতামাতা পালন করেন না! চার পাঁচ বছর পর্যন্ত খুব আদর করেছে! সাত আট বছরে স্কুলে ছেড়ে দিয়েছে! বারো তেরো বছরে আর কোন খোঁজই নেয়না! কি জানে? ‘আমার ছেলে পড়ে’ কে বন্ধু? মসজিদে যায় কিনা? নামাজ পড়ে কিনা? কোন খোঁজ নেয়না!যখন পনের, ষোল, সতের, আটারো বছর বয়স-হয় বাবা ও জানে, মাও জানে, ‘আমার ছেলের অমুক মেয়ের সাথে Affair আছে’! কি যেন বলে? -রিলেশন আছে! শোনেন…
View On WordPress
0 notes
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
মানবতার সবচেয়ে বড় জঘন্যতম অপরাধ হলো যুদ্ধবিগ্রহ। যুদ্ধ মানেই বিভীষিকা, মৃত্যু, ধ্বংস ও অশান্তি। ইসলামে প্রাথমিকভাবে সব যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম। প্রয়োজনসাপেক্ষে ইসলাম যুদ্ধ করার অনুমতি দিয়েছে কিছু শর্তারোপ করে। যা বিদ্যমান থাকলে তবেই যুদ্ধ করা যাবে। প্রথমত, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি। রাষ্ট্র অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি বা নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে রসুল (স.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধান হলো ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে’ (বুখারি- ২/৫৫৩)। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র অনিরাপদ বা হুমকির সম্মুখীন হলে। অর্থাৎ শত্রুপক্ষ আক্রমণ করবে বা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধনীতির অনুমোদন দেয় ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ, তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।’ (সুরা হজ্জ-৩৯)।
তৃতীয়ত, সন্ধি ও শান্তির সুযোগ গ্রহণ। যে কোনো ধরনের যুদ্ধই ধ্বংস ও অশান্তি সৃষ্টির পথ। মানবজাতিকে যাতে ধ্বংস ও সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেই জন্য ইসলাম যুদ্ধপূর্বে সন্ধি বা শান্তিচুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে ও নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যদি সন্ধির প্রতি ঝুঁকে পড়ে, তবে তুমিও তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো। আর আল্লাহর ওপর নির্ভর কর। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’ (আনফাল-৬১)। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে হুদাইবিয়ার সন্ধির ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রের স্বার্থসংরক্ষণ, দাওয়াতের প্রসার ও দিনের বিজয়ে সন্ধির অবদান ছিল অনেক বেশি। যদিও বাহ্যিক বিচারে সন্ধি ছিল একটু অপমানজনক ও শত্রু পক্ষকে ছাড় দেওয়া কিন্তু এর ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ইসলামে কোনো যুদ্ধ, জিহাদ বা অভিযানকে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা সুস্পষ্ট বিজয় বলা হয়নি। কিন্তু সন্ধি চুক্তিকে সুস্পষ্ট বিজয় বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থত, যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা। অর্থাৎ যদি যুদ্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ না থাকে তাহলে যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাদের সঙ্গেই-বা যারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে সামনে আসে তাদের সঙ্গেই যুদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো তাদের সঙ্গে যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না’ (সুরা বাকারা-১৯০)। এখানেও ইসলাম ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ করার কথা বলে। জনগণের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের নিমিত্তে মাতৃভূমিকে বহিঃশত্রু ও অভ্যন্তরীণ শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য জানমাল ও জ্ঞানবুদ্ধি দ্বারা যে সংগ্রাম করা হয় সেটাই ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয়’ (সুরা বাকারা-১৯৩)
যুদ্ধক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা আঘাত প্রাপ্ত না হয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধে তোমরা প্রতারণা বা ধোঁকার আশ্রয় নেবে না, চুক্তিভঙ্গ করবে না, কোনো মানুষ বা প্রাণীর মৃতদেহ বিকৃত করবে না বা অসম্মান করবে না, কোনো শিশু-কিশোরকে হত্যা করবে না, কোনো মহিলাকে হত্যা করবে না, কোনো গির্জাবাসী, সন্ন্যাসী বা ধর্মযাজককে হত্যা করবে না, কোনো বৃদ্ধকে হত্যা করবে না, কোনো অসুস্থ মানুষকে হত্যা করবে না, কোনো বাড়িঘর ধ্বংস করবে না, খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া গরু, উট বা কোনো প্রাণী বধ করবে না, যুদ্ধের প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাছ কাটবে না। তোমরা দয়া ও কল্যাণ করবে, কারণ আল্লাহ দয়াকারী- কল্যাণকারীদেরকে ভালোবাসেন’ (আসসুনানুল কুবরা- ৯/৯০)। ইসলাম সব ধরনের সামরিক আগ্রাসন, নাগরিকদের ওপর বোমা নিক্ষেপ, চরমপন্থা, গণহত্যার বিরোধী। ইসলাম প্রয়োজনসাপেক্ষ যেমন ন্যায়সংগত যুদ্ধের স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি শান্তিচুক্তি বা সন্ধির বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে উত্সাহিত করা হয়েছে। যাতে যুদ্ধ নামক বিভীষিকাময় কাঁটায় মানুষ ক্ষতবিক্ষত না হয়।
ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, ইসলামের যুদ্ধনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—নারী, শিশু, অযোদ্ধা, বয়োবৃদ্ধ, শ্রমিক, প্রতিবন্ধীর ওপর আক্রমণ করা যাবে না, মৃত যোদ্ধার লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা যাবে না, আত্মসমপর্ণকারীদের প্রতি দয়াশীল হতে হবে, যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বৃক্ষ কর্তন করা যাবে না, পশুপাখি হত্যা করা যাবে না, ঘরবাড়ি ধ্বংস করা যাবে না ইত্যাদি।
মোদ্দা কথা, ইসলামে সামরিক যুদ্ধনীতি আক্রমণাত্মক নয়, বরং আত্মরক্ষামূলক। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই আক্রমণাত্মক যুদ্ধ। সামরিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারে আগ্রাসী যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আক্রান্ত রাষ্ট্রকে কোণঠাসা করে ফেলছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিষণ্ণ হয়ে উঠছে, যা বড় ধরনের মানব অপরাধ। ইসলাম এমন সব কার্যক্রমকে কঠোরভাবে নিষেধ করে। যুদ্ধ যেমন জাতি গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে, তেমনি প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে এবং পৃথিবীর অন্য ভূখণ্ডে বসবাসরত মানুষের জীবনকেও সংকটময় করে তুলে। তাই সব রাষ্ট্রকে এসব জঘন্যতম মানব অপরাধ থেকে বিরত থাকা উচিত।
নবীজি সাঃ এর যুদ্ধনীতি কতটা মানবিক ছিলো !!
ইসলামে যুদ্ধের নিয়ম-islamic war
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামে যুদ্ধনীতি |
Guidelines in the Quran for Fighting
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
War policy in Islam and the present world
0 notes
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
মানবতার সবচেয়ে বড় জঘন্যতম অপরাধ হলো যুদ্ধবিগ্রহ। যুদ্ধ মানেই বিভীষিকা, মৃত্যু, ধ্বংস ও অশান্তি। ইসলামে প্রাথমিকভাবে সব যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম। প্রয়োজনসাপেক্ষে ইসলাম যুদ্ধ করার অনুমতি দিয়েছে কিছু শর্তারোপ করে। যা বিদ্যমান থাকলে তবেই যুদ্ধ করা যাবে। প্রথমত, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি। রাষ্ট্র অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি বা নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে রসুল (স.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধান হলো ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে’ (বুখারি- ২/৫৫৩)। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র অনিরাপদ বা হুমকির সম্মুখীন হলে। অর্থাৎ শত্রুপক্ষ আক্রমণ করবে বা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধনীতির অনুমোদন দেয় ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ, তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।’ (সুরা হজ্জ-৩৯)।
তৃতীয়ত, সন্ধি ও শান্তির সুযোগ গ্রহণ। যে কোনো ধরনের যুদ্ধই ধ্বংস ও অশান্তি সৃষ্টির পথ। মানবজাতিকে যাতে ধ্বংস ও সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেই জন্য ইসলাম যুদ্ধপূর্বে সন্ধি বা শান্তিচুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে ও নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যদি সন্ধির প্রতি ঝুঁকে পড়ে, তবে তুমিও তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো। আর আল্লাহর ওপর নির্ভর কর। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’ (আনফাল-৬১)। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে হুদাইবিয়ার সন্ধির ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রের স্বার্থসংরক্ষণ, দাওয়াতের প্রসার ও দিনের বিজয়ে সন্ধির অবদান ছিল অনেক বেশি। যদিও বাহ্যিক বিচারে সন্ধি ছিল একটু অপমানজনক ও শত্রু পক্ষকে ছাড় দেওয়া কিন্তু এর ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ইসলামে কোনো যুদ্ধ, জিহাদ বা অভিযানকে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা সুস্পষ্ট বিজয় বলা হয়নি। কিন্তু সন্ধি চুক্তিকে সুস্পষ্ট বিজয় বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থত, যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা। অর্থাৎ যদি যুদ্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ না থাকে তাহলে যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাদের সঙ্গেই-বা যারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে সামনে আসে তাদের সঙ্গেই যুদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো তাদের সঙ্গে যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না’ (সুরা বাকারা-১৯০)। এখানেও ইসলাম ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ করার কথা বলে। জনগণের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের নিমিত্তে মাতৃভূমিকে বহিঃশত্রু ও অভ্যন্তরীণ শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য জানমাল ও জ্ঞানবুদ্ধি দ্বারা যে সংগ্রাম করা হয় সেটাই ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয়’ (সুরা বাকারা-১৯৩)
যুদ্ধক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু ও বৃদ্ধ��া আঘাত প্রাপ্ত না হয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধে তোমরা প্রতারণা বা ধোঁকার আশ্রয় নেবে না, চুক্তিভঙ্গ করবে না, কোনো মানুষ বা প্রাণীর মৃতদেহ বিকৃত করবে না বা অসম্মান করবে না, কোনো শিশু-কিশোরকে হত্যা করবে না, কোনো মহিলাকে হত্যা করবে না, কোনো গির্জাবাসী, সন্ন্যাসী বা ধর্মযাজককে হত্যা করবে না, কোনো বৃদ্ধকে হত্যা করবে না, কোনো অসুস্থ মানুষকে হত্যা করবে না, কোনো বাড়িঘর ধ্বংস করবে না, খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া গরু, উট বা কোনো প্রাণী বধ করবে না, যুদ্ধের প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাছ কাটবে না। তোমরা দয়া ও কল্যাণ করবে, কারণ আল্লাহ দয়াকারী- কল্যাণকারীদেরকে ভালোবাসেন’ (আসসুনানুল কুবরা- ৯/৯০)। ইসলাম সব ধরনের সামরিক আগ্রাসন, নাগরিকদের ওপর বোমা নিক্ষেপ, চরমপন্থা, গণহত্যার বিরোধী। ইসলাম প্রয়োজনসাপেক্ষ যেমন ন্যায়সংগত যুদ্ধের স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি শান্তিচুক্তি বা সন্ধির বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে উত্সাহিত করা হয়েছে। যাতে যুদ্ধ নামক বিভীষিকাময় কাঁটায় মানুষ ক্ষতবিক্ষত না হয়।
ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, ইসলামের যুদ্ধনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—নারী, শিশু, অযোদ্ধা, বয়োবৃদ্ধ, শ্রমিক, প্রতিবন্ধীর ওপর আক্রমণ করা যাবে না, মৃত যোদ্ধার লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা যাবে না, আত্মসমপর্ণকারীদের প্রতি দয়াশীল হতে হবে, যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বৃক্ষ কর্তন করা যাবে না, পশুপাখি হত্যা করা যাবে না, ঘরবাড়ি ধ্বংস করা যাবে না ইত্যাদি।
মোদ্দা কথা, ইসলামে সামরিক যুদ্ধনীতি আক্রমণাত্মক নয়, বরং আত্মরক্ষামূলক। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই আক্রমণাত্মক যুদ্ধ। সামরিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারে আগ্রাসী যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আক্রান্ত রাষ্ট্রকে কোণঠাসা করে ফেলছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিষণ্ণ হয়ে উঠছে, যা বড় ধরনের মানব অপরাধ। ইসলাম এমন সব কার্যক্রমকে কঠোরভাবে নিষেধ করে। যুদ্ধ যেমন জাতি গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে, তেমনি প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে এবং পৃথিবীর অন্য ভূখণ্ডে বসবাসরত মানুষের জীবনকেও সংকটময় করে তুলে। তাই সব রাষ্ট্রকে এসব জঘন্যতম মানব অপরাধ থেকে বিরত থাকা উচিত।
নবীজি সাঃ এর যুদ্ধনীতি কতটা মানবিক ছিলো !!
ইসলামে যুদ্ধের নিয়ম-islamic war
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামে যুদ্ধনীতি |
Guidelines in the Quran for Fighting
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
War policy in Islam and the present world
0 notes
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
মানবতার সবচেয়ে বড় জঘন্যতম অপরাধ হলো যুদ্ধবিগ্রহ। যুদ্ধ মানেই বিভীষিকা, মৃত্যু, ধ্বংস ও অশান্তি। ইসলামে প্রাথমিকভাবে সব যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম। প্রয়োজনসাপেক্ষে ইসলাম যুদ্ধ করার অনুমতি দিয়েছে কিছু শর্তারোপ করে। যা বিদ্যমান থাকলে তবেই যুদ্ধ করা যাবে। প্রথমত, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি। রাষ্ট্র অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি বা নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে রসুল (স.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধান হলো ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে’ (বুখারি- ২/৫৫৩)। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র অনিরাপদ বা হুমকির সম্মুখীন হলে। অর্থাৎ শত্রুপক্ষ আক্রমণ করবে বা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধনীতির অনুমোদন দেয় ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ, তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।’ (সুরা হজ্জ-৩৯)।
তৃতীয়ত, সন্ধি ও শান্তির সুযোগ গ্রহণ। যে কোনো ধরনের যুদ্ধই ধ্বংস ও অশান্তি সৃষ্টির পথ। মানবজাতিকে যাতে ধ্বংস ও সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেই জন্য ইসলাম যুদ্ধপূর্বে সন্ধি বা শান্তিচুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে ও নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যদি সন্ধির প্রতি ঝুঁকে পড়ে, তবে তুমিও তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো। আর আল্লাহর ওপর নির্ভর কর। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’ (আনফাল-৬১)। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে হুদাইবিয়ার সন্ধির ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রের স্বার্থসংরক্ষণ, দাওয়াতের প্রসার ও দিনের বিজয়ে সন্ধির অবদান ছিল অনেক বেশি। যদিও বাহ্যিক বিচারে সন্ধি ছিল একটু অপমানজনক ও শত্রু পক্ষকে ছাড় দেওয়া কিন্তু এর ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ইসলামে কোনো যুদ্ধ, জিহাদ বা অভিযানকে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা সুস্পষ্ট বিজয় বলা হয়নি। কিন্তু সন্ধি চুক্তিকে সুস্পষ্ট বিজয় বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থত, যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা। অর্থাৎ যদি যুদ্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ না থাকে তাহলে যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাদের সঙ্গেই-বা যারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে সামনে আসে তাদের সঙ্গেই যুদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো তাদের সঙ্গে যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না’ (সুরা বাকারা-১৯০)। এখানেও ইসলাম ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ করার কথা বলে। জনগণের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের নিমিত্তে মাতৃভূমিকে বহিঃশত্রু ও অভ্যন্তরীণ শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য জানমাল ও জ্ঞানবুদ্ধি দ্বারা যে সংগ্রাম করা হয় সেটাই ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয়’ (সুরা বাকারা-১৯৩)
যুদ্ধক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা আঘাত প্রাপ্ত না হয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধে তোমরা প্রতারণা বা ধোঁকার আশ্রয় নেবে না, চুক্তিভঙ্গ করবে না, কোনো মানুষ বা প্রাণীর মৃতদেহ বিকৃত করবে না বা অসম্মান করবে না, কোনো শিশু-কিশোরকে হত্যা করবে না, কোনো মহিলাকে হত্যা করবে না, কোনো গির্জাবাসী, সন্ন্যাসী বা ধর্মযাজককে হত্যা করবে না, কোনো বৃদ্ধকে হত্যা করবে না, কোনো অসুস্থ মানুষকে হত্যা করবে না, কোনো বাড়িঘর ধ্বংস করবে না, খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া গরু, উট বা কোনো প্রাণী বধ করবে না, যুদ্ধের প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাছ কাটবে না। তোমরা দয়া ও কল্যাণ করবে, কারণ আল্লাহ দয়াকারী- কল্যাণকারীদেরকে ভালোবাসেন’ (আসসুনানুল কুবরা- ৯/৯০)। ইসলাম সব ধরনের সামরিক আগ্রাসন, নাগরিকদের ওপর বোমা নিক্ষেপ, চরমপন্থা, গণহত্যার বিরোধী। ইসলাম প্রয়োজনসাপেক্ষ যেমন ন্যায়সংগত যুদ্ধের স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি শান্তিচুক্তি বা সন্ধির বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে উত্সাহিত করা হয়েছে। যাতে যুদ্ধ নামক বিভীষিকাময় কাঁটায় মানুষ ক্ষতবিক্ষত না হয়।
ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, ইসলামের যুদ্ধনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—নারী, শিশু, অযোদ্ধা, বয়োবৃদ্ধ, শ্রমিক, প্রতিবন্ধীর ওপর আক্রমণ করা যাবে না, মৃত যোদ্ধার লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা যাবে না, আত্মসমপর্ণকারীদের প্রতি দয়াশীল হতে হবে, যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বৃক্ষ কর্তন করা যাবে না, পশুপাখি হত্যা করা যাবে না, ঘরবাড়ি ধ্বংস করা যাবে না ইত্যাদি।
মোদ্দা কথা, ইসলামে সামরিক যুদ্ধনীতি আক্রমণাত্মক নয়, বরং আত্মরক্ষামূলক। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই আক্রমণাত্মক যুদ্ধ। সামরিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারে আগ্রাসী যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আক্রান্ত রাষ্ট্রকে কোণঠাসা করে ফেলছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিষণ্ণ হয়ে উঠছে, যা বড় ধরনের মানব অপরাধ। ইসলাম এমন সব কার্যক্রমকে কঠোরভাবে নিষেধ করে। যুদ্ধ যেমন জাতি গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে, তেমনি প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে এবং পৃথিবীর অন্য ভূখণ্ডে বসবাসরত মানুষের জীবনকেও সংকটময় করে তুলে। তাই সব রাষ্ট্রকে এসব জঘন্যতম মানব অপরাধ থেকে বিরত থাকা উচিত।
নবীজি সাঃ এর যুদ্ধনীতি কতটা মানবিক ছিলো !!
ইসলামে যুদ্ধের নিয়ম-islamic war
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামে যুদ্ধনীতি |
Guidelines in the Quran for Fighting
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
War policy in Islam and the present world
0 notes
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
মানবতার সবচেয়ে বড় জঘন্যতম অপরাধ হলো যুদ্ধবিগ্রহ। যুদ্ধ মানেই বিভীষিকা, মৃত্যু, ধ্বংস ও অশান্তি। ইসলামে প্রাথমিকভাবে সব যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম। প্রয়োজনসাপেক্ষে ইসলাম যুদ্ধ করার অনুমতি দিয়েছে কিছু শর্তারোপ করে। যা বিদ্যমান থাকলে তবেই যুদ্ধ করা যাবে। প্রথমত, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি। রাষ্ট্র অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি বা নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে রসুল (স.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধান হলো ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে’ (বুখারি- ২/৫৫৩)। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র অনিরাপদ বা হুমকির সম্মুখীন হলে। অর্থাৎ শত্রুপক্ষ আক্রমণ করবে বা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধনীতির অনুমোদন দেয় ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ, তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।’ (সুরা হজ্জ-৩৯)।
তৃতীয়ত, সন্ধি ও শান্তির সুযোগ গ্রহণ। যে কোনো ধরনের যুদ্ধই ধ্বংস ও অশান্তি সৃষ্টির পথ। মানবজাতিকে যাতে ধ্বংস ও সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেই জন্য ইসলাম যুদ্ধপূর্বে সন্ধি বা শান্তিচুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে ও নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যদি সন্ধির প্রতি ঝুঁকে পড়ে, তবে তুমিও তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো। আর আল্লাহর ওপর নির্ভর কর। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’ (আনফাল-৬১)। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে হুদাইবিয়ার সন্ধির ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রের স্বার্থসংরক্ষণ, দাওয়াতের প্রসার ও দিনের বিজয়ে সন্ধির অবদান ছিল অনেক বেশি। যদিও বাহ্যিক বিচারে সন্ধি ছিল একটু অপমানজনক ও শত্রু পক্ষকে ছাড় দেওয়া কিন্তু এর ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ইসলামে কোনো যুদ্ধ, জিহাদ বা অভিযানকে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা সুস্পষ্ট বিজয় বলা হয়নি। কিন্তু সন্ধি চুক্তিকে সুস্পষ্ট বিজয় বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থত, যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা। অর্থাৎ যদি যুদ্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ না থাকে তাহলে যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাদের সঙ্গেই-বা যারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে সামনে আসে তাদের সঙ্গেই যুদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো তাদের সঙ্গে যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না’ (সুরা বাকারা-১৯০)। এখানেও ইসলাম ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ করার কথা বলে। জনগণের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের নিমিত্তে মাতৃভূমিকে বহিঃশত্রু ও অভ্যন্তরীণ শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য জানমাল ও জ্ঞানবুদ্ধি দ্বারা যে সংগ্রাম করা হয় সেটাই ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয়’ (সুরা বাকারা-১৯৩)
যুদ্ধক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা আঘাত প্রাপ্ত না হয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধে তোমরা প্রতারণা বা ধোঁকার আশ্রয় নেবে না, চুক্তিভঙ্গ করবে না, কোনো মানুষ বা প্রাণীর মৃতদেহ বিকৃত করবে না বা অসম্মান করবে না, কোনো শিশু-কিশোরকে হত্যা করবে না, কোনো মহিলাকে হত্যা করবে না, কোনো গির্জাবাসী, সন্ন্যাসী বা ধর্মযাজককে হত্যা করবে না, কোনো বৃদ্ধকে হত্যা করবে না, কোনো অসুস্থ মানুষকে হত্যা করবে না, কোনো বাড়িঘর ধ্বংস করবে না, খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া গরু, উট বা কোনো প্রাণী বধ করবে না, যুদ্ধের প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাছ কাটবে না। তোমরা দয়া ও কল্যাণ করবে, কারণ আল্লাহ দয়াকারী- কল্যাণকারীদেরকে ভালোবাসেন’ (আসসুনানুল কুবরা- ৯/৯০)। ইসলাম সব ধরনের সামরিক আগ্রাসন, নাগরিকদের ওপর বোমা নিক্ষেপ, চরমপন্থা, গণহত্যার বিরোধী। ইসলাম প্রয়োজনসাপেক্ষ যেমন ন্যায়সংগত যুদ্ধের স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি শান্তিচুক্তি বা সন্ধির বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে উত্সাহিত করা হয়েছে। যাতে যুদ্ধ নামক বিভীষিকাময় কাঁটায় মানুষ ক্ষতবিক্ষত না হয়।
ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, ইসলামের যুদ্ধনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—নারী, শিশু, অযোদ্ধা, বয়োবৃদ্ধ, শ্রমিক, প্রতিবন্ধীর ওপর আক্রমণ করা যাবে না, মৃত যোদ্ধার লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা যাবে না, আত্মসমপর্ণকারীদের প্রতি দয়াশীল হতে হবে, যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বৃক্ষ কর্তন করা যাবে না, পশুপাখি হত্যা করা যাবে না, ঘরবাড়ি ধ্বংস করা যাবে না ইত্যাদি।
মোদ্দা কথা, ইসলামে সামরিক যুদ্ধনীতি আক্রমণাত্মক নয়, বরং আত্মরক্ষামূলক। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই আক্রমণাত্মক যুদ্ধ। সামরিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারে আগ্রাসী যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আক্রান্ত রাষ্ট্রকে কোণঠাসা করে ফেলছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিষণ্ণ হয়ে উঠছে, যা বড় ধরনের ম��নব অপরাধ। ইসলাম এমন সব কার্যক্রমকে কঠোরভাবে নিষেধ করে। যুদ্ধ যেমন জাতি গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে, তেমনি প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে এবং পৃথিবীর অন্য ভূখণ্ডে বসবাসরত মানুষের জীবনকেও সংকটময় করে তুলে। তাই সব রাষ্ট্রকে এসব জঘন্যতম মানব অপরাধ থেকে বিরত থাকা উচিত।
নবীজি সাঃ এর যুদ্ধনীতি কতটা মানবিক ছিলো !!
ইসলামে যুদ্ধের নিয়ম-islamic war
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামে যুদ্ধনীতি |
Guidelines in the Quran for Fighting
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
War policy in Islam and the present world
0 notes
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
মানবতার সবচেয়ে বড় জঘন্যতম অপরাধ হলো যুদ্ধবিগ্রহ। যুদ্ধ মানেই বিভীষিকা, মৃত্যু, ধ্বংস ও অশান্তি। ইসলামে প্রাথমিকভাবে সব যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম। প্রয়োজনসাপেক্ষে ইসলাম যুদ্ধ করার অনুমতি দিয়েছে কিছু শর্তারোপ করে। যা বিদ্যমান থাকলে তবেই যুদ্ধ করা যাবে। প্রথমত, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি। রাষ্ট্র অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি বা নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে রসুল (স.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধান হলো ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে’ (বুখারি- ২/৫৫৩)। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র অনিরাপদ বা হুমকির সম্মুখীন হল���। অর্থাৎ শত্রুপক্ষ আক্রমণ করবে বা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধনীতির অনুমোদন দেয় ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ, তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।’ (সুরা হজ্জ-৩৯)।
তৃতীয়ত, সন্ধি ও শান্তির সুযোগ গ্রহণ। যে কোনো ধরনের যুদ্ধই ধ্বংস ও অশান্তি সৃষ্টির পথ। মানবজাতিকে যাতে ধ্বংস ও সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেই জন্য ইসলাম যুদ্ধপূর্বে সন্ধি বা শান্তিচুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে ও নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যদি সন্ধির প্রতি ঝুঁকে পড়ে, তবে তুমিও তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো। আর আল্লাহর ওপর নির্ভর কর। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’ (আনফাল-৬১)। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে হুদাইবিয়ার সন্ধির ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রের স্বার্থসংরক্ষণ, দাওয়াতের প্রসার ও দিনের বিজয়ে সন্ধির অবদান ছিল অনেক বেশি। যদিও বাহ্যিক বিচারে সন্ধি ছিল একটু অপমানজনক ও শত্রু পক্ষকে ছাড় দেওয়া কিন্তু এর ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ইসলামে কোনো যুদ্ধ, জিহাদ বা অভিযানকে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা সুস্পষ্ট বিজয় বলা হয়নি। কিন্তু সন্ধি চুক্তিকে সুস্পষ্ট বিজয় বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থত, যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা। অর্থাৎ যদি যুদ্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ না থাকে তাহলে যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাদের সঙ্গেই-বা যারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে সামনে আসে তাদের সঙ্গেই যুদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো তাদের সঙ্গে যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না’ (সুরা বাকারা-১৯০)। এখানেও ইসলাম ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ করার কথা বলে। জনগণের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের নিমিত্তে মাতৃভূমিকে বহিঃশত্রু ও অভ্যন্তরীণ শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য জানমাল ও জ্ঞানবুদ্ধি দ্বারা যে সংগ্রাম করা হয় সেটাই ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয়’ (সুরা বাকারা-১৯৩)
যুদ্ধক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা আঘাত প্রাপ্ত না হয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধে তোমরা প্রতারণা বা ধোঁকার আশ্রয় নেবে না, চুক্তিভঙ্গ করবে না, কোনো মানুষ বা প্রাণীর মৃতদেহ বিকৃত করবে না বা অসম্মান করবে না, কোনো শিশু-কিশোরকে হত্যা করবে না, কোনো মহিলাকে হত্যা করবে না, কোনো গির্জাবাসী, সন্ন্যাসী বা ধর্মযাজককে হত্যা করবে না, কোনো বৃদ্ধকে হত্যা করবে না, কোনো অসুস্থ মানুষকে হত্যা করবে না, কোনো বাড়িঘর ধ্বংস করবে না, খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া গরু, উট বা কোনো প্রাণী বধ করবে না, যুদ্ধের প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাছ কাটবে না। তোমরা দয়া ও কল্যাণ করবে, কারণ আল্লাহ দয়াকারী- কল্যাণকারীদেরকে ভালোবাসেন’ (আসসুনানুল কুবরা- ৯/৯০)। ইসলাম সব ধরনের সামরিক আগ্রাসন, নাগরিকদের ওপর বোমা নিক্ষেপ, চরমপন্থা, গণহত্যার বিরোধী। ইসলাম প্রয়োজনসাপেক্ষ যেমন ন্যায়সংগত যুদ্ধের স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি শান্তিচুক্তি বা সন্ধির বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে উত্সাহিত করা হয়েছে। যাতে যুদ্ধ নামক বিভীষিকাময় কাঁটায় মানুষ ক্ষতবিক্ষত না হয়।
ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, ইসলামের যুদ্ধনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—নারী, শিশু, অযোদ্ধা, বয়োবৃদ্ধ, শ্রমিক, প্রতিবন্ধীর ওপর আক্রমণ করা যাবে না, মৃত যোদ্ধার লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা যাবে না, আত্মসমপর্ণকারীদের প্রতি দয়াশীল হতে হবে, যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বৃক্ষ কর্তন করা যাবে না, পশুপাখি হত্যা করা যাবে না, ঘরবাড়ি ধ্বংস করা যাবে না ইত্যাদি।
মোদ্দা কথা, ইসলামে সামরিক যুদ্ধনীতি আক্রমণাত্মক নয়, বরং আত্মরক্ষামূলক। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই আক্রমণাত্মক যুদ্ধ। সামরিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারে আগ্রাসী যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আক্রান্ত রাষ্ট্রকে কোণঠাসা করে ফেলছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিষণ্ণ হয়ে উঠছে, যা বড় ধরনের মানব অপরাধ। ইসলাম এমন সব কার্যক্রমকে কঠোরভাবে নিষেধ করে। যুদ্ধ যেমন জাতি গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে, তেমনি প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে এবং পৃথিবীর অন্য ভূখণ্ডে বসবাসরত মানুষের জীবনকেও সংকটময় করে তুলে। তাই সব রাষ্ট্রকে এসব জঘন্যতম মানব অপরাধ থেকে বিরত থাকা উচিত।
নবীজি সাঃ এর যুদ্ধনীতি কতটা মানবিক ছিলো !!
ইসলামে যুদ্ধের নিয়ম-islamic war
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামে যুদ্ধনীতি |
Guidelines in the Quran for Fighting
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
War policy in Islam and the present world
0 notes
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
মানবতার সবচেয়ে বড় জঘন্যতম অপরাধ হলো যুদ্ধবিগ্রহ। যুদ্ধ মানেই বিভীষিকা, মৃত্যু, ধ্বংস ও অশান্তি। ইসলামে প্রাথমিকভাবে সব যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম। প্রয়োজনসাপেক্ষে ইসলাম যুদ্ধ করার অনুমতি দিয়েছে কিছু শর্তারোপ করে। যা বিদ্যমান থাকলে তবেই যুদ্ধ করা যাবে। প্রথমত, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি। রাষ্ট্র অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি বা নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে রসুল (স.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধান হলো ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে’ (বুখারি- ২/৫৫৩)। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র অনিরাপদ বা হুমকির সম্মুখীন হলে। অর্থাৎ শত্রুপক্ষ আক্রমণ করবে বা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধনীতির অনুমোদন দেয় ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ, তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।’ (সুরা হজ্জ-৩৯)।
তৃতীয়ত, সন্ধি ও শান্তির সুযোগ গ্রহণ। যে কোনো ধরনের যুদ্ধই ধ্বংস ও অশান্তি সৃষ্টির পথ। মানবজাতিকে যাতে ধ্বংস ও সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেই জন্য ইসলাম যুদ্ধপূর্বে সন্ধি বা শান্তিচুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে ও নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যদি সন্ধির প্রতি ঝুঁকে পড়ে, তবে তুমিও তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো। আর আল্লাহর ওপর নির্ভর কর। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’ (আনফাল-৬১)। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে হুদাইবিয়ার সন্ধির ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রের স্বার্থসংরক্ষণ, দাওয়াতের প্রসার ও দিনের বিজয়ে সন্ধির অবদান ছিল অনেক বেশি। যদিও বাহ্যিক বিচারে সন্ধি ছিল একটু অপমানজনক ও শত্রু পক্ষকে ছাড় দেওয়া কিন্তু এর ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ইসলামে কোনো যুদ্ধ, জিহাদ বা অভিযানকে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা সুস্পষ্ট বিজয় বলা হয়নি। কিন্তু সন্ধি চুক্তিকে সুস্পষ্ট বিজয় বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থত, যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা। অর্থাৎ যদি যুদ্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ না থাকে তাহলে যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাদের সঙ্গেই-বা যারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে সামনে আসে তাদের সঙ্গেই যুদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো তাদের সঙ্গে যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না’ (সুরা বাকারা-১৯০)। এখানেও ইসলাম ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ করার কথা বলে। জনগণের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের নিমিত্তে মাতৃভূমিকে বহিঃশত্রু ও অভ্যন্তরীণ শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য জানমাল ও জ্ঞানবুদ্ধি দ্বারা যে সংগ্রাম করা হয় সেটাই ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয়’ (সুরা বাকারা-১৯৩)
যুদ্ধক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা আঘাত প্রাপ্ত না হয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধে তোমরা প্রতারণা বা ধোঁকার আশ্রয় নেবে না, চুক্তিভঙ্গ করবে না, কোনো মানুষ বা প্রাণীর মৃতদেহ বিকৃত করবে না বা অসম্মান করবে না, কোনো শিশু-কিশোরকে হত্যা করবে না, কোনো মহিলাকে হত্যা করবে না, কোনো গির্জাবাসী, সন্ন্যাসী বা ধর্মযাজককে হত্যা করবে না, কোনো বৃদ্ধকে হত্যা করবে না, কোনো অসুস্থ মানুষকে হত্যা করবে না, কোনো বাড়িঘর ধ্বংস করবে না, খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া গরু, উট বা কোনো প্রাণী বধ করবে না, যুদ্ধের প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাছ কাটবে না। তোমরা দয়া ও কল্যাণ করবে, কারণ আল্লাহ দয়াকারী- কল্যাণকারীদেরকে ভালোবাসেন’ (আসসুনানুল কুবরা- ৯/৯০)। ইসলাম সব ধরনের সামরিক আগ্রাসন, নাগরিকদের ওপর বোমা নিক্ষেপ, চরমপন্থা, গণহত্যার বিরোধী। ইসলাম প্রয়োজনসাপেক্ষ যেমন ন্যায়সংগত যুদ্ধের স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি শান্তিচুক্তি বা সন্ধির বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে উত্সাহিত করা হয়েছে। যাতে যুদ্ধ নামক বিভীষিকাময় কাঁটায় মানুষ ক্ষতবিক্ষত না হয়।
ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, ইসলামের যুদ্ধনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—নারী, শিশু, অযোদ্ধা, বয়োবৃদ্ধ, শ্রমিক, প্রতিবন্ধীর ওপর আক্রমণ করা যাবে না, মৃত যোদ্ধার লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা যাবে না, আত্মসমপর্ণকারীদের প্রতি দয়াশীল হতে হবে, যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বৃক্ষ কর্তন করা যাবে না, পশুপাখি হত্যা করা যাবে না, ঘরবাড়ি ধ্বংস করা যাবে না ইত্যাদি।
মোদ্দা কথা, ইসলামে সামরিক যুদ্ধনীতি আক্রমণাত্মক নয়, বরং আত্মরক্ষামূলক। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই আক্রমণাত্মক যুদ্ধ। সামরিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারে আগ্রাসী যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আক্রান্ত রাষ্ট্রকে কোণঠাসা করে ফেলছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিষণ্ণ হয়ে উঠছে, যা বড় ধরনের মানব অপরাধ। ইসলাম এমন সব কার্যক্রমকে কঠোরভাবে নিষেধ করে। যুদ্ধ যেমন জাতি গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে, তেমনি প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে এবং পৃথিবীর অন্য ভূখণ্ডে বসবাসরত মানুষের জীবনকেও সংকটময় করে তুলে। তাই সব রাষ্ট্রকে এসব জঘন্যতম মানব অপরাধ থেকে বিরত থাকা উচিত।
নবীজি সাঃ এর যুদ্ধনীতি কতটা মানবিক ছিলো !!
ইসলামে যুদ্ধের নিয়ম-islamic war
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামে যুদ্ধনীতি |
Guidelines in the Quran for Fighting
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
War policy in Islam and the present world
0 notes
গার্ডিয়ানের এক্সক্লিউসিভ বই ‘কারবালা ও ইয়াজিদ’ থেকে
ইয়াজিদকে আগাম খলিফা মনোনয়নের বাইয়াতের ব্যাপারে মদিনাবাসী একমত ছিলেন না। এতে মুয়াবিয়া (রা.) চিন্তিত হয়ে পড়েন।
কেননা, ইসলামি দুনিয়ার রাজনীতিতে মদিনার প্রবীণ ব্যক্তিবর্গের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য মুয়াবিয়া (রা.) সেখানের অভিজাত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে ইয়াজিদকে খলিফা বানানোর ব্যাপারে তাদের রাজি করানোর পরিকল্পনা করেন।
কারণ তিনি জানতেন, শীর্ষস্থানীয় সাহাবিরা রাজি না হলে ইয়াজিদকে খলিফা বানানো কখনোই সম্ভব হবে না। এ জন্য মুয়াবিয়া (রা.) তাদের সমর্থন নেওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালান।
তিনি ইরাকের গভর্নর জিয়াদকে মদিনায় প্রেরণ করেন। ধারণা করা হয়, জিয়াদের মদিনা আসার এই ঘটনা ৫৩ হিজরি বা এর পূর্বের। কেননা ৫৩ হিজরিতে জিয়াদের ওফাত হয়। তিনি মদিনাবাসীর সামনে বক্তৃতা দিয়ে লোকদের সমর্থন নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আবদুর রহমান ইবনু আবি বকর (রা.) দাঁড়িয়ে যান। বলেন–
‘হে বনু উমাইয়্যা! তোমরা আমাদের তিনটি কথা থেকে যেকোনো একটিকে বেছে নাও। রাসূল (সা.) বা আবু বকর বা উমর (রা.)–তাঁদের মাঝে যেকোনো একজনের নীতিকে মেনে নাও। তোমরা যা বলছ, সেটা তো হেরাক্লিয়াস, কিসরাহ ও পারস্যের পদ্ধতি। যখন একজন কায়সার বা রোম সম্রাট মারা যায়, তখন তাদের অপরজন এসে মসনদে বসে যায়। এখন কি আমরা তাহলে তাদের মতো হেরাক্লিয়ান পদ্ধতি বা রোমান পদ্ধতি অনুসরণ করে খলিফা নির্ধারণ করব?’
মুয়াবিয়া (রা.) কিছুসময় পর এই দায়িত্ব মারওয়ান ইবনু হাকামকে অর্পণ করেন, যাকে ৫৪ হিজরিতে দ্বিতীয়বার মদিনার গভর্নর বানানো হয়েছিল। নির্দেশ পেয়ে মদিনার গভর্নর মারওয়ান ইবনুল হাকাম লোকজনের উদ্দেশে ভাষণ দিতে যান।
তিনি প্রথমে লোকজনকে আমিরুল মুমিনিনের আনুগত্যের প্রতি উৎসাহ দেন এবং ফিতনা থেকে সাবধান করেন।-শেষে ইয়াজিদের হাতে তাদের বাইয়াতের আহ্বান জানান। মসনদের উত্তরাধিকারী হওয়ার পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করে তিনি বলেন–
‘এটা আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর সুপথপ্রাপ্ত রীতি। কেননা, তিনিও তাঁর পরে খলিফা হিসেবে উমর (রা.)-কে নির্ধারণ করে গেছেন।’
আবদুর রহমান ইবনু আবি বকর (রা.) আবারও আপত্তি জানান। তিনি বলেন–‘কখনোই না। আবু বকর (রা.) তার পরিবার ও ভ্রাতৃত্বকে পরিত্যাগ করে বনু আদির উমর (রা.)-কে শুধু এটা দেখেই নির্বাচিত করেছিলেন যে, তিনি এই পদের যোগ্য।’
এরপর একে একে ইবন উমর, হুসাইন ইবন আলি, আবদুল্লাহ ইবন জুবাইরসহ সকলেই স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। তাদের কেউই ইয়াজিদের পক্ষে বাইয়াত দিতে রাজি হননি; বরং তাঁরা ইয়াজিদের পরবর্তী খলিফা হওয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।
আশারায়ে মুবাশশারার শেষ দুজন সায়িদ ইবনে জায়েদ ও সাদ ইবনু আবি ওয়াককাস (রা.)-এর মতামত ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খিলাফতে রাশিদায় প্রবর্তিত একটি নীতি অনুযায়ী তাদের সম্মতি ব্যতীত খিলাফতের বিষয় চূড়ান্তই হতে পারত না। কিন্তু এই দুজন প্রবীণ ব্যক্তিও বাইয়াতের প্রতি একেবারেই আগ্রহ দেখাননি। মারওয়ান অনেকটা সময় পর্যন্ত সায়িদ ইবনে জায়েদ (রা.)-এর জন্য অপেক্ষা করেন।
অবশেষে এক শামি সৈন্য তাঁর কাছে গিয়ে গর্দান উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তবুও তিনি মারওয়ানের কাছে যাননি। একইভাবে ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রা.)-ও নির্জনবাস গ্রহণ করেন।
মুয়াবিয়া (রা.) তাঁদের প্রত্যাখানের কথা জানতে পারেন। তাই তিনি নিজেই মদিনার যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যেন নিজেই তাঁদের থেকে ইয়াজিদের পক্ষে বাইয়াত নিতে পারেন। আর এই কথা জানার পরে সেই প্রবীণ
সাহাবিরা সবাই মদিনা থেকে পালিয়ে মক্কায় চলে যান, যেন কোনোভাবেই তাঁদের ইয়াজিদের পক্ষে বাইয়াত দিতে না হয়।
1 note
·
View note
ক্ষমতার ফিতনা ও জুলকারনাইন এর ঘটনা। ডা: মিজানুর রহমান আজহারি।
1 note
·
View note
ফিতনা, নজদ, রিয়াদ, ওহাবী, সালাফী, গুরুত্বপূর্ণ হাদীস, বে-ঈমানী আমলদারী আলেম,
নজদী-কথিত সালাফী-আহলে হাদীস-ওহাবী
বুখারী, মুসলিম,আবু দাউদ,নাসাই তিরমিজি,ইবনে মাজাহ শরীফেরএই গুরুত্বপূর্ণ হাদিস গুলো কাদের উপর প্রয়োগ হবে।حَدَّثَنَا أَبُوْ الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا سَعِيْدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَقْسِمُ قِسْمًا أَتَاهُ…
View On WordPress
0 notes
মুসলিম সমাজে পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ উপলক্ষে সমবেত হওয়া, দুরূদ শরীফ এবং সালাম শরীফ উনাদের মাহফিল করা সেই সালফে সালেহীন রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরও আগে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যামানা হতেই চলে আসছে। সুবহানাল্লাহ! সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশের সর্বত্র এমনকি সব মসজিদ মক্তবেও পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ উনাদের মাহফিল জারি ছিলো। যখনি ভারতের দেওবন্দ মাদরাসা কেন্দ্রীক শিক্ষায় দাওরা করে কতিপয় মালানা মুফতে এদেশে আগমন করলো আর বিভিন্ন মক্তব মসজিদে ঢুকে পড়লো, তখন থেকেই তারা চক্রান্ত করে বিদাত বিদয়াত বলে পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ উনাদের মাহফিলগুলো বন্ধ করতে লাগলো। নাউযুবিল্লাহ! বিশেষ করে, মালানা হাফেজ গংদের মাধ্যমে পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ বিরোধী ফিতনা বাংলার যমীনে ব্যাপক বিস্তার লাভ করে। এরা কিন্তু বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ উনার সম্মানিত প্রথম খতীব, উস্তাদুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ মুফতী হযরত আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বরকতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি হায়াত মুবারকে থাকা অবস্থায় কোনদিনই উনার সম্মুখে দাঁড়িয়ে পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ করা বিদয়াত নাজায়িয ইত্যাদি বলার দুঃসাহস কথিত ওলামায়ে দেওবন্দ দেখাতে পারেনি। উনার ইন্তেকালের পর হতে এই নব্য ওহাবীরা রহমত বরকত পাবার প্রধান উসীলা পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ উনাদের বিরোধিতায় ঘেউ ঘেউ শুরু করলো। নাউযুবিল্লাহ!
এরা যে কত বেশি পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ উনাদের বিদ্বেষী তা একটি ঘটনা দ্বারা গোটা দেশবাসী আবারো প্রত্যক্ষ করে। বিগত কয়েক বছর আগে ঢাকা শহরের গোড়াপত্তনের ৪০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান সূচির উদ্বোধনের প্রথমে মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়াস্বরূপ পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ মাহফিল রাখা হয়। কিন্তু দেওবন্দী হাফেজদের অনুসারী কতিপয় মালানা বলেছিলো- এটা বিদয়াত নাজায়িয। এমন একটা বিশাল অনুষ্ঠানে এমন বিদয়াতী আমল না করাটাই ভালো। বিষয়টি নিয়ে তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই দায়িত্বশীল একজন বলে উঠলো, ঠিক আছে তারা গান-বাদ্য নৃত্য দিয়েই অনুষ্ঠান শুরু করবে! নাউযুবিল্লাহ! এসময় ঐ সকল দুনিয়াদার ধর্মব্যবসায়ীরা একবারের জন্য বলে উঠেনি, গান-বাজনা বা নৃত্য এগুলো বিদয়াত হারাম। বরং পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ মাহফিল বানচাল করতে পারায় তারা মালউন ইবলিস শয়তানের মতো হাসি দিয়ে নিশ্চুপ থেকেছিলো। আসলে এভাবেই এরা সমাজ থেকে পবিত্র মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ উনাদের মাহফিল উঠিয়ে দিয়ে রহমত বরকতের পরিবর্তে আযাব-গযব লা’নতের কারণ হারাম গান-বাদ্য নৃত্য সিনেমা নাটক ইত্যাদি অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
আরোও জানতে ক্লিক করুন : https://sm40.com/post/58401_মুসলিম-সমাজে-পবিত্র.html
12shareef
90DaysMahfil
0 notes
সুন্নতি আকিক পাথরের তাসবীহ (Aqeeq ki Tasbih\عقیق کی تسبیح)
একদিকে মহাপবিত্র সুন্নত, মুবারক.অপরদিকে অনেক রোগের শেফা ও বদ তাছির থেকে মুক্ত রাখে।তাই সবারই একটা তাসবীহ আক্বীক্ব পাথরের থাকা উচিত!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন রত্ন পাথর আকিক পাথর ব্যবহার করা বরকতময়। (হাদিস শরিফ)।
আন্তর্জাতিক সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্রের সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা যামানার মহান মুজাদ্দিদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আক্কিক পাথরের তাসবিহ ছিল, এবং তা থেকে জিকিরের শব্দ শুনিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, যে ব্যক্তি আখেরী যামানায় ফিতনা ফাসাদের যুগে একটি সুন্নত মুবারক আঁকড়ে ধরে থাকবে সে একশত শহীদ উনাদের মর্যাদা পাবে।” (মিশকাত শরীফ)
আকিক্ব পাথরের তাসবিহ সাথে থাকলে নিম্নোক্ত উপকার সুনিশ্চিত,যা হাজার ডাক্তার কবিরাজও শেফা দিতে পারবে না!
অদৃশ্যদের বদতাছির থেকে হেফাজত করবে
শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়, গর্ভ ধারনে সাহায্য করে এবং পুরুষত্বহীনতা দূর করতে সাহায্য করে।
রাগ প্রশমিত হয় এবং মাথা ঠাণ্ডা থাকে।
খারাপ পরিবেশে এবং জ্বিন ও ইনসানের বদ তাছির থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।
কঠিন পরিস্থিতিতে আত্বরক্ষা করে এবং দুঃখ কমাতে সাহায্য করে।
শত্রুরা ভিত থাকে।
মানুষের ইচ্ছা পূরণে শক্তি যোগায় এবং দারিদ্রিতা দূর কর।
হার্টের জন্য উপকারী, বুক ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
মনে প্রসান্তি আনে এবং সুস্থ্য মানসিকতা উন্নত করে।
যে কোন যাত্রায় সৌভাগ্য সূচিত হয়।
কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
কিডনি ও লিভাবের সমস্যায় উপকারী।
পেশাগত জীবনে সফলতা বয়ে আনে।
লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহনে প্রভাবিত করে।
খারাপ সব ধরনের জিনিস থেকে দূরে এবং হেফাজতে রাখে।
মন শান্ত করে, মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখে। এর ফলে মস্তিষ্ক উর্বর হয় এবং বিশেষ সাফল্য লাভ সম্ভব।
এছাড়া অত্যধিক আবেগপ্রবণ ব্যক্তি নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
তাই আজই আপনার জন্য তো অবশ্যই এবং প্রিয়জনকে আকিক্ব পাথরের তাসবীহ হাদিয়া করুন।
দোয়া ও সন্তুষ্টি অর্জন করুন।
অতএব আপনার প্রতিদিনের,সাপ্তাহিক ,মাসিক বাজার ও সুন্নতি সব খবার,পোষাক,তৈজসপত্র পেতে চলে আসুন আন্তর্জাতীক সুন্নত প্রচারকেন্দ্রে।০১৭৮২-২৫৫২৪৪
sm40.com#90daysmahfil(হাদিয়া করুন নিয়ামত লুফে নিন।01718740742 নগদ/বিকাশ পারসোনাল!),sunnat.info
https://sunnat.info/aqeeq-stone-tasbih...
#সুন্নত #সুন্নতী #পাথরের #পাথর #সৌন্দর্য #তাসবীহ
0 notes
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَا اَنَا عَلَيْهِ وَاَصْحَابِـىْ.
অর্থ : “আমি এবং আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আ��হুম উনাদের মত মুবারক ও পথ মুবারক উনাদের উপর যারা কায়িম থাকবেন উনারাই নাযাতপ্রাপ্ত দল। ” (তিরমিযী শরীফ)
উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হক্ব দলের বৈশিষ্ট্য বলা হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মত মুবারক অনুযায়ী মত এবং পথ মুবারক অনুযায়ী পথ হবে।
ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তো একটি নিজের তরফ থেকে আরেকটি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে পবিত্র কুরবানী করলেন। তাহলে উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী নাযাতপ্রাপ্ত দলের অন্তর্ভুক্ত হতে হলে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার অনুসরণে আমাদেরকেও দুইটি কুরবানী করতে হবে।
আর বর্তমানে এই চরম ফিতনা-ফাসাদের যামানায় এই বিলুপ্তপ্রায় মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক আমাদেরকে যিনি জানাচ্ছেন তিনি হচ্ছেন, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, আযীযুয যামান, আওলাদে রসূল, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ العِرْبَاضِ ابْنِ سَارِيَّةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْكُمْ بِتَقْوٰى اللهِ. وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَاِنْ كَانَ عَبْدًا حَبْشِيَّا. وَسَتَرَوْنَ مِنْ بَعْدِيْ اِخْتِلَافًا كَثِيْرًا. فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِيْ وَسُنَّةِ الْـخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ الـمَّهْدِيّيْنَ تَـمَسَّكُوْا بِـهَا وَعَضُّوْا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ .
অর্থ : “হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদেরকে আমি উপদেশ দিচ্ছি যে, আপনারা (খাছভাবে) মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করুন। আর যিনি আপনাদের আমীর হবেন তিনি যদি হাবশী গোলামও হন, তবুও উনার নির্দেশ পালন করবেন ও উনার অনুসরণ করবেন। কেননা আমার পরে আপনাদের মধ্যে যারা থাকবেন, উনাদের মাঝে অনেক মতবিরোধ দেখা দিবে। কাজেই (এমন মতবিরোধপূর্ণ ও সঙ্কটাপন্ন অবস্থায়) আপনাদের জন্য আমার ও আমার হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত সুন্নত মুবারক (আদর্শ মুবারক) পালন করা ওয়াজিব। আপনারা তা মাড়ির দাঁত দিয়ে শক্ত করে আঁকড়ে ধরবেন। ” (আহমদ শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ)
উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত সুন্নত মুবারক বা আদর্শ মুবারক পালন করা ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়েছে। আর ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজজাহূ আলাইহিস সালাম তিনি হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত চতুর্থ খলীফা।
সুতরাং ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজজাহূ আলাইহিস সালাম উনার আদর্শ মুবারক- “প্রতি বছর নিজের তরফ থেকে একটি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে আরেকটি কুরবানী করা” এই সম্মানিত আদর্শ মুবারক প্রতিটি মুসলমানের মাড়ির দাঁত দিয়ে শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে হবে অর্থাৎ দৃঢ়তার সাথে দায়িমীভাবে অনুসরণ করতে হবে।
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো উম্মতের পক্ষ থেকে কুরবানী দিতেন। তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে কুরবানী করার সুমহান দায়িত্ব তো স্বাভাবিকভাবেই উম্মতের উপর বর্তায়। এই ব্যাপারে চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করার কোন অবকাশই নেই। বরং উম্মতের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে চূড়ান্ত মুহব্বত ও আনুগত্যতার সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে কুরবানী করা।
আর মুহব্বতের ব্যাপারে বলতে গেলে বলতে হয়, সাইয়্যিদুনা হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তো মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতেই স্বীয় আওলাদ আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী করলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতেই কুরবানী হতে আনন্দচিত্তে রাজি হয়ে গেলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতেই আপন সন্তান কিনানকে ত্যাগ করলেন।
-আহমদ হুসাইন
#90DaysMahfil
#fardQurbani
#Qurbani
0 notes
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের কারন কি কিয়ামতের আলামত ? নবীজির ভবিষ্যৎ বাণী কি তাহলে সত্যি। জেনে নিন
তুরস্কে ভূমিকম্প কি কিয়ামতের আলামত ? নবীজির ভবিষ্যৎ বানী কি তাহলে সত্যি
প্রিয় দর্শক ‘ আশাকরি ভাল আছেন ‘ সাম্প্রতিক তুরস্ক ও সিরিয়ায় যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছে যে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছে । তুরস্কে ও সিরিয়ায় এই দুটি দেশে ভূমিকম্প মানুষকে দুমড়ে-মুচড়ে – বড় বড় দালান কোঠা গুলো ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে গেছে ।
এই তুরস্কের ও সিরিয়ায় মূল রহস্য কি ? নবীজি (সা.) এই ভূমিকম্পের কি ভবিষ্যৎ বাণী দিয়ে গেছিলেন । সে সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো – আমাদের সঙ্গে থাকবেন এবং পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন ।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের কারণ কি
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্প কি তাহলে কিয়ামতের আলামত ? এই ব্যাপারে নবীজির সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভবিষ্যৎবাণী কি ছিলো । ভূমিকম্প কেন হয় – ভূমিকম্প হলে আমাদের করণীয় কি । হঠাৎ করে সোমবার ভোর ৪ .১৭ মিনিটে প্রচন্ড আকারে মাটি কেঁপে উঠলো তুরস্ক ও সিরিয়ায় । পাত্তের রাখা পানি ঢেউয়ের মতো করে উঠতে দেখা গেল – এই সময় নিশ্চয় পুকুর নদী ও সমুদ্রের পানিতে ও প্রচন্ড ঢেউ উঠেছে ।
বড় বড় ভবনগুলোতে বসবাসকারী মানুষের আতঙ্কিত হয়ে কে কার আগে প্রাণ বাঁচাতে বাইরে বেরিয়ে আসবে সেই প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছিলো। যারা গভীর নিদ্রায় ছিলেন তাদের আর ঘুম ভাঙা হলো না । সবাই চিৎকার করে বলছিল ভূমিকম্পের কথা । এই সুন্দর বাড়ি , তার ভেতরের আসবাবপত্র , প্রাণাধিক প্রিয় স্ত্রী সন্তান ,তাদের জন্য একটু অপেক্ষা করে তাদেরকে সাথে নিয়ে বের হওয়ার সময় টুকু কেউ বিলম্ব করতে চাইছিনা ।
দুনিয়ার এই সামান্য কয়েক সেকেন্ডের ভূমিকম্প যদি মানুষের এমন অবস্থা হয় । তাহলে একবার ভেবে দেখুন কিয়ামতের ভয়াবহতা এদের কি অবস্থা হবে । মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনের ( সূরা যিলযাল ) এর মধ্যে আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে , এই ভূমিকম্পের ধরন তুলে ধরেছেন ।
আল্লাহ তাআলা ভূমিকম্পের ব্যাপারে যা বলেছেন
আল্লাহ তা’য়ালা বলেন , যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে । যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে , এবং মানুষ বলবে একি হলো ? ( সূরা যিলযাল আয়াত ১ – ৩ ) আল্লাহতা’লা বলেন , ভূমিকম্পের মাত্রা এমন ভয়াবহ হবে যে , গোটা পৃথিবীর একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে । পৃথিবী তার গর্ভের সকল মানুষ এবং ধন-সম্পদ সহ যাবতীয় জিনিস বের করে দেবে । তাই মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করার জন্য মাঝে মাঝে কিয়ামতের আলামতের সামান্য কিছু নিদর্শন প্রকাশ করেন । তাঁর বান্দাদেরকে পরকালের প্রস্তুতি গ্রহণের সংকেত প্রদান করেন ।
ভূমিকম্পের অন্যতম আরেকটি কারণ
প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি ভূমিকম্পের আরেকটি কারণ হলো – মানুষের অপকর্ম , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , যখন মানুষেরা নিজেদের মধ্যে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের প্রতিযোগিতা করবে , গচ্ছিত সম্পদের আমানতের খেয়ানত করবে , যাকাত দেয়াকে জরিমানা মনে করবে , ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দিয়ে দুনিয়ার বিদ্যা অর্জন করবে ,
পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে , মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবে , পিতা কে বাদ দিয়ে বন্ধুকে আপন করে নিবে , মসজিদের ভেতর শোরগোল করবে , অযোগ্য ব্যক্তিরা সমাজের নেতৃত্ব দেবে , নিকৃষ্ট ব্যক্তি জননেতায় পরিণত হবে , মানুষ খারাপ কাজের সুনাম অর্জন করবে , এবং এ খারাপ কাজের ভয়ে ওই ব্যক্তিকে সম্মান করা হবে , বাদ্যযন্ত্র এবং নারী শিল্পীর অবাধ বিচরণ হবে , মদ পান করা হবে ,
এবং বংশের শেষ প্রজন্মের লোকজন পূর্ববর্তীদেরকে অভিশাপ দেবে , এ সময় পৃথিবী জুড়ে তীব্র বাতাস প্রবাহিত হবে , যার ফলশ্রুতিতে একটি প্রচন্ড ভূমিকম্প এই ভূমিকা তলিয়ে দেবে , ( সুনান আত তিরমিজি হাদিস নাম্বারঃ ১৪৪৭ )
আল্লাহ তাআলার হুকুম ভূমিকম্পের প্রভাব
এ সম্পর্কে আল্লামা ইবনুল কাইয়িম রহিমাহুল্লাহ বলেন , মহান আল্লাহতালা মাঝে মাঝে পৃথিবীর জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন হলে বড় ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয় । তখন এই ভূমিকম্প মানুষকে ভীত করে , যাতে তারা মহান আল্লাহর নিকট তওবা করে , পাপ কর্ম ছেড়ে দেয় , আল্লাহর দিকে ধাবিত হয় , এবং তাদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করে । আগের কার দিনে যখন ভূমিকম্প হতো তখন সঠিক পথে পরিচালিত সৎকর্মশীল ব্যক্তিরা এটাই বলতো যে ,মহান আল্লাহ আমাদেরকে সতর্ক করছেন , ভূমিকম্প কিয়ামতের একটি অন্যতম আলামত ।
মহানবী ( সা. ) কিয়ামতের যে নির্দেশনা দিয়েছেন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না , যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে । অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে , সময়ের বরকত চলে যাবে , ফিতনা প্রকাশ পাবে , এবং সমাজে খুন খারাবি বারবে , তোমাদের সম্পদ এতো বারবে জা উপচে পড়বে , ( বুখারি ৯৭৯ )
বর্তমানে যেসব ভূমিকম্প ঘটছে , তা মহান আল্লাহর প্রেরিত সতর্ককারী নিদর্শন গুলোর একটি । এগুলো দিয়ে তিনি তাঁর বান্দাদেরকে সাবধান করে থাকেন , এগুলো মানুষের পাপ এবং অপরাধীর ফল , আল্লাহ তাআলা বলেনঃ জলে এবং স্থলে যে বিপর্যয় তোমাদের উপর আসে তা তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই , আর আল্লাহ তোমাদের অনেক অপরাধ এমনিতেই ক্ষমা করে দেন । ( সূরা শুরা আয়াত ৩০ )
ভূমিকম্প হলে কি করনীয় , প্রত্যেক মুসলমানের উচিত আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে তওবা করা , মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন , আর যদি ও জনপথ সমূহের অধিবাসীরা ঈমান আনতো , এবং তাকওয়া অবলম্বন করতো , তাহলে আমি অবশ্যই আসমান ও জমিন থেকে বরকত সমূহ তাদের উপর খুলে দিতাম , কিন্তু তারা অস্বীকার করলো , অতঃপর তারা যা অর্জন করতো , তার কারণে আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম ( সূরা আরাফ আয়াত নাম্বার ৯৬ )
অতএব দুনিয়ার বর্তমান ভূমিকম্প নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তর্কে লিপ্ত না হয়ে কুরআনের বাণীর প্রতি লক্ষ্য করে প্রত্যেকের উচিত তওবা করে , আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া , যেহেতু ভূমিকম্প কিয়ামতের সামান্য নির্দশ মাত্র , তাই কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্বে , আল্লাহ তা’আলা মানুষকে স্বীয় অপরাধ বোঝার তৌফিক দান করুক আমিন ।
প্রিয় দর্শক ‘ সমস্ত পোষ্টটি আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার প্রিয়জনকে শেয়ার করতে ভুলবেন না । এবং আমাদের সাথে নিজেকে সংযত করার জন্য ফেসবুকে আমাদের কে ফ��ো করে রাখুন এবং গুগোল নিউজ থেকে আমাদের ফলো করে রাখুন ধন্যবাদ ।
0 notes
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
মানবতার সবচেয়ে বড় জঘন্যতম অপরাধ হলো যুদ্ধবিগ্রহ। যুদ্ধ মানেই বিভীষিকা, মৃত্যু, ধ্বংস ও অশান্তি। ইসলামে প্রাথমিকভাবে সব যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম। প্রয়োজনসাপেক্ষে ইসলাম যুদ্ধ করার অনুমতি দিয়েছে কিছু শর্তারোপ করে। যা বিদ্যমান থাকলে তবেই যুদ্ধ করা যাবে। প্রথমত, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি। রাষ্ট্র অস্তিত্ব ও রাষ্ট্র প্রধানের অনুমতি বা নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে রসুল (স.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধান হলো ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে’ (বুখারি- ২/৫৫৩)। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র অনিরাপদ বা হুমকির সম্মুখীন হলে। অর্থাৎ শত্রুপক্ষ আক্রমণ করবে বা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধনীতির অনুমোদন দেয় ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ, তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।’ (সুরা হজ্জ-৩৯)।
তৃতীয়ত, সন্ধি ও শান্তির সুযোগ গ্রহণ। যে কোনো ধরনের যুদ্ধই ধ্বংস ও অশান্তি সৃষ্টির পথ। মানবজাতিকে যাতে ধ্বংস ও সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেই জন্য ইসলাম যুদ্ধপূর্বে সন্ধি বা শান্তিচুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে ও নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যদি সন্ধির প্রতি ঝুঁকে পড়ে, তবে তুমিও তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো। আর আল্লাহর ওপর নির্ভর কর। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’ (আনফাল-৬১)। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে হুদাইবিয়ার সন্ধির ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রের স্বার্থসংরক্ষণ, দাওয়াতের প্রসার ও দিনের বিজয়ে সন্ধির অবদান ছিল অনেক বেশি। যদিও বাহ্যিক বিচারে সন্ধি ছিল একটু অপমানজনক ও শত্রু পক্ষকে ছাড় দেওয়া কিন্তু এর ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ইসলামে ��োনো যুদ্ধ, জিহাদ বা অভিযানকে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা সুস্পষ্ট বিজয় বলা হয়নি। কিন্তু সন্ধি চুক্তিকে সুস্পষ্ট বিজয় বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থত, যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা। অর্থাৎ যদি যুদ্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ না থাকে তাহলে যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাদের সঙ্গেই-বা যারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে সামনে আসে তাদের সঙ্গেই যুদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো তাদের সঙ্গে যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না’ (সুরা বাকারা-১৯০)। এখানেও ইসলাম ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ করার কথা বলে। জনগণের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের নিমিত্তে মাতৃভূমিকে বহিঃশত্রু ও অভ্যন্তরীণ শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য জানমাল ও জ্ঞানবুদ্ধি দ্বারা যে সংগ্রাম করা হয় সেটাই ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয়’ (সুরা বাকারা-১৯৩)
যুদ্ধক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা আঘাত প্রাপ্ত না হয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধে তোমরা প্রতারণা বা ধোঁকার আশ্রয় নেবে না, চুক্তিভঙ্গ করবে না, কোনো মানুষ বা প্রাণীর মৃতদেহ বিকৃত করবে না বা অসম্মান করবে না, কোনো শিশু-কিশোরকে হত্যা করবে না, কোনো মহিলাকে হত্যা করবে না, কোনো গির্জাবাসী, সন্ন্যাসী বা ধর্মযাজককে হত্যা করবে না, কোনো বৃদ্ধকে হত্যা করবে না, কোনো অসুস্থ মানুষকে হত্যা করবে না, কোনো বাড়িঘর ধ্বংস করবে না, খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া গরু, উট বা কোনো প্রাণী বধ করবে না, যুদ্ধের প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাছ কাটবে না। তোমরা দয়া ও কল্যাণ করবে, কারণ আল্লাহ দয়াকারী- কল্যাণকারীদেরকে ভালোবাসেন’ (আসসুনানুল কুবরা- ৯/৯০)। ইসলাম সব ধরনের সামরিক আগ্রাসন, নাগরিকদের ওপর বোমা নিক্ষেপ, চরমপন্থা, গণহত্যার বিরোধী। ইসলাম প্রয়োজনসাপেক্ষ যেমন ন্যায়সংগত যুদ্ধের স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি শান্তিচুক্তি বা সন্ধির বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে উত্সাহিত করা হয়েছে। যাতে যুদ্ধ নামক বিভীষিকাময় কাঁটায় মানুষ ক্ষতবিক্ষত না হয়।
ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, ইসলামের যুদ্ধনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—নারী, শিশু, অযোদ্ধা, বয়োবৃদ্ধ, শ্রমিক, প্রতিবন্ধীর ওপর আক্রমণ করা যাবে না, মৃত যোদ্ধার লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা যাবে না, আত্মসমপর্ণকারীদের প্রতি দয়াশীল হতে হবে, যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বৃক্ষ কর্তন করা যাবে না, পশুপাখি হত্যা করা যাবে না, ঘরবাড়ি ধ্বংস করা যাবে না ইত্যাদি।
মোদ্দা কথা, ইসলামে সামরিক যুদ্ধনীতি আক্রমণাত্মক নয়, বরং আত্মরক্ষামূলক। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই আক্রমণাত্মক যুদ্ধ। সামরিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারে আগ্রাসী যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আক্রান্ত রাষ্ট্রকে কোণঠাসা করে ফেলছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিষণ্ণ হয়ে উঠছে, যা বড় ধরনের মানব অপরাধ। ইসলাম এমন সব কার্যক্রমকে কঠোরভাবে নিষেধ করে। যুদ্ধ যেমন জাতি গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে, তেমনি প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে এবং পৃথিবীর অন্য ভূখণ্ডে বসবাসরত মানুষের জীবনকেও সংকটময় করে তুলে। তাই সব রাষ্ট্রকে এসব জঘন্যতম মানব অপরাধ থেকে বিরত থাকা উচিত।
নবীজি সাঃ এর যুদ্ধনীতি কতটা মানবিক ছিলো !!
ইসলামে যুদ্ধের নিয়ম-islamic war
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামে যুদ্ধনীতি |
Guidelines in the Quran for Fighting
ইসলামে যুদ্ধনীতি ও বর্তমান বিশ্ব
War policy in Islam and the present world
0 notes