Tumgik
#এক যুগ
lifeis-art · 9 months
Text
Tumblr media Tumblr media
আজ বিশ্ব শাড়ী দিবস
আমি সেরকম ভাবে শাড়ি-প্রেমী নই। নিজের সংগ্রহে নানা ধরনের শাড়ি থাকা তো দূরের কথা, বেশীরভাগ শাড়িই আমি চিনিনা-নামও জানিনা। সংগ্রহে নানা ধরনের শাড়ি না থাকায় বিন্দুমাত্র আফসোস না হলেও শাড়ির বিষয়ে ন্যূনতম জ্ঞান না থাকায় খারাপলাগা আছে বৈকি!
শাড়ির কথা উঠলেই যে কয়েকজন মানুষের কথা মনে পড়ে, তাদের মধ্যে একজন হলেন আমার ঠাম্মি। আমার ঠাম্মির দুই আলমারি ভর্তি শাড়ি থাকার পরেও নিত্য-নতুন শাড়ি কেনা, জমানো আর বিশেষ করে তাদের যত্ন নেওয়ার বহর দেখে আত্মীয়স্বজন- বন্ধুবান্ধবমহলে আলোচনা-সমালোচনা চলতেই থাকতো। সামনাসামনি না পারলেও পেছনে সবাইই বলতো 'শাড়ি তো নয়! যেন যকের ধন! শাড়ির আবার অত যত্নের কি আছে শুনি! দুদিন পরবে, তারপর ফেলে দেবে তা নয়, সব শাড়িই যেন যুগ যুগ ধরে রেখে দেবার পরিকল্পনা!'
আমার ঠাম্মি সেসব পাত্তা না দিয়ে বলতেন 'এক একটা শাড়ি আসলে এক একটা মানুষ। মানুষকে কাছে পেতে হলে যেমন তাকে জানতে-চিনতে-বুঝতে হয়, ভালোবাসতে হয়, আদর-যত্নে ভরিয়ে দিতে হয়, ঠিক তেমনি শাড়িরও যত্ন করতে হয়।'🙂
শাড়িতে ঘামের দাগ পড়ছে কিনা, বর্ষার দিনে শাড়ি পরে বেরোলে নীচের পাড়ের কাছে কাদা-জলের দাগ লাগছে কিনা বা খাবারের দাগ-পানের পিক একটুও লেগে যাচ্ছে কিনা সেসব ব্যাপারে সদা তটস্থ থাকতেন। তিনি সিল্কের সব শাড়ি রাখতেন পাতলা সুতির কাপড়ের একটি ব্যাগে। পরবর্তীকালে ওডোলিন বা ন্যাপথালিন, তার আগে নিমপাতা-কালোজিরে এসব একটি পাতলা কাপড়ের তৈরি ছোট্ট পুঁটলিতে ভরে পুঁটলিটা সেই ব্যাগে রাখতেন। প্রতি ভাদ্রের রৌদ্রে উল্টেপাল্টে সব শাড়ি নিজের হাতে রোদে দিতেন। ঘড়ি ধরে সেসব শাড়ি রোদে রেখে আবার নিজের হাতেই নিয়ে আসতেন পাছে আমরা দেরি করায় শাড়ির রঙ জ্বলে যায়! একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর শাড়ি পালিশ করতে দেওয়ার ব্যাপার তো ছিলোই।
আমাদের বাড়িতে এক কাকু বহু বছর ধরে শাড়ি বিক্রি করতে আসতেন। ঠাম্মী তাঁর বেশীরভাগ শাড়ি সেই কাকুর কাছ থেকেই নিতেন। শেষ কয়েকটা বছর ঠাম্মী কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। মারা যাওয়ার মাসখানেক আগেও কাকু আসায় ঠাম্মী বিছানায় শুয়ে শুয়েই কাকুর দেখানো শাড়ি পছন্দ করছিলেন। রেখেওছিলেন একটা। আমাদের মধ্যেই কেউ কেউ বলে ফেলেছিলাম, 'তুমি আবারও শাড়ি কিনছ? কোনও শাড়িই তো পরা হয় না তোমার। কী করবে এত শাড়ি দিয়ে?'
ঠাম্মী তাঁর সেই পরিচিত গাম্ভীর্যভরা গলায় বলেছিলেন, 'এখন কিনছি। একমাস বাদে হয়তো থাকবো না। তখন কিনবোও না।'
একটু থেমে আবারও বলেছিলেন, 'কে বলেছে শাড়ি শুধু পরার জন্য? এই যে এত অসুস্থ শরীরেও শাড়ি কিনতে ইচ্ছে করে, এই ইচ্ছেটাই জানান দেয় আমি এখনও বেঁচে আছি। যেদিন এই ইচ্ছেরা থাকবে না, আমিও থাকব না।'
আমি যেই শাড়িটা পরে আছি এটা ঠাম্মীর শাড়ি। শাড়িটা কতদিনের পুরনো জানিনা। ঠাম্মী মারা যাওয়ার অনেকটা সময় পরে কোনও এক অনুষ্ঠানে পরেছিলাম। শাড়িটা পরে ভালো করে তোলা কোনও ছবি নেই। খুঁজেপেতে একটা পেলাম, সেটাই পোস্টের সঙ্গে দিলাম। এই পোস্টে আমাকে কেমন লাগছে, আমার ছবিটা কতটা স্পষ্ট তার থেকেও অনেক বড় বিষয় হল ঠাম্মীর শাড়ি, যা নিজেই আস্ত একখানা গল্প।
সত্যিই, শাড়িরা এক-একটা মানুষ, যারা হাত ধরে এক প্রজন্মের মানুষকে অন্য প্রজন্মের মানুষের গল্প বলে। গল্প বলে বিভিন্ন প্রদেশের। গল্প বলে সেইসব খেটে-খাওয়া মানুষের, যারা সুতো বুনে একফালি রঙিন স্বপ্ন তৈরি করতে পারে। 🙂
লেখা : সোহিনী দেবরায়
6 notes · View notes
sukantakrmondal · 11 days
Text
Sadhna TV Satsang || 15-09-2024 || Episode: 3029 || Sant Rampal Ji Mahar...
আদ্ধাত্তিক সৎ সাধনার জ্ঞান না থাকা শিক্ষিত মানুষ- দের কাছে বিনম্র অনুরোধ। আপনারা সবাই মানুন বা না মানুন রামপাল জী মহারাজ ঐ সৎ গুরু যাঁকে কবীর দেব পরমেশ্বর পরমপিতা ই পাঠিয়েছেন। ভবিষ্যৎ বক্তারা সবাই রামপালজী মহারাজের দিকে ই ইঙ্গিত দিচ্ছেন। কলি যুগে সত্য যুগ আনতে পারে এক মাত্র মহান সন্ত রামপাল জী মহারাজ । দীক্ষিত অনুযায়ীদের প্রতিবেদন শুনলে আশা করি আপনার ও আদ্ধাত্তিক ত্বত্ত্ব জ্ঞান জানার ও গ্রহন করার মানসিকতা তৈরি হবে। কবীর দেব ই এই সময় রামপাল জী মহারাজ রুপে এসেছেন । বিশ্বাস করে এগিয়ে এসে দীক্ষা গ্রহণ করে জীবন মরনের রোগ কাটান।🙏🙏
https://www.jagatgururampalji.org/gyan_ganga_english.pdf
0 notes
banglavisiononline · 1 month
Link
বাংলাদেশের ক্রিকেট থেকে অবশেষে পাপন যুগের অবসা
0 notes
quransunnahdawah · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
তিনটি বিষয়ে মানুষ মোহমুক্ত নয়—(ক) হুকুমত তথা ক্ষমতার মোহ। (খ) দৌলত তথা সম্পদের মোহ। (গ) আওরাত তথা নারীর মোহ। অথচ উপদলীয় কোন্দল, বিরোধ ও ক্ষুদ্র স্বার্থের অচলায়তন ভেঙে মদিনা সনদের ধারাবাহিকতায় প্রিয় নবী (সা.) গোত্র শাসিত ২৭৬টি দেশীয় রাজ্যকে একত্র করে প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইল এলাকার লোকদের এক পতাকাতলে শামিল করেছিলেন।
প্রিয় নবী (সা.) তিন স্তরবিশিষ্ট প্রশাসন কাঠামো গড়ে তোলেন—কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক প্রশাসন। কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে বিভিন্ন দপ্তরে ভাগ করে বিশিষ্ট সাহাবিদের দায়িত্ব প্রদান করেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রাদেশিক পর্যায়ে নিযুক্ত হন ওয়ালি বা গভর্নর। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের জন্য আমিল বা আঞ্চলিক প্রশাসকের পদ সৃষ্টি করা হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ। ‘ইন্নাল আরদা লিল্লাহ...।’ অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই এই পৃথিবী আল্লাহর, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী করেন।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১২৮)
৬২৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ঐতিহাসিক খন্দকের যুদ্ধের পটভূমিতে অবতীর্ণ আয়াতে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহর বিধানের ��িরন্তনতা।
ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও। যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর যাকে ইচ্ছা করো লাঞ্ছিত...।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ২৬)
ক্ষমতা ও দায়িত্ব আমানতস্বরূপ। এটি আল্লাহর নিয়ামত।
প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি)
তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নেওয়া যাবে না। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ। আমরা এমন কাউকে ক্ষমতায় নিযুক্ত করব না, যে দায়িত্ব চায় এবং এমন লোককেও না, যে দায়িত্ব লাভের প্রত্য���শা করে।’
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘হে আবদুর রহমান, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিয়ো না। কারণ যদি তোমার চাওয়ার কারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তো তোমাকে নিঃসঙ্গ ছেড়ে দেওয়া হবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে)। পক্ষান্তরে যদি না চাইতেই দায়িত্ব ও ক্ষমতা তোমার ওপর অর্পিত হয়, তাহলে তুমি ওই বিষয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
ক্ষমতা ক্ষমতাবানের কাছে আমানতস্বরূপ। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি মুসলিম জনগোষ্ঠীর শাসক নিযুক্ত হয়, অতঃপর সে প্রতারক ও আত্মসাত্কারী হিসেবে মারা যায়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (বুখারি)
ইসলাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয় আদর্শগত কারণে। প্রিয় নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে খলিফা ওমর (রা.) হয়ে যান ‘অর্ধপৃথিবীর বাদশাহ’, যাঁর সুশাসনের নজির হলো জেরুজালেম বিজয়ী আমিরুল মুমিনিন টেনে নিচ্ছেন উটের রশি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাতের আঁধারে। তিনি বলতেন, ‘ওই ফোরাতের কূলে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে আমি ওমরকে আল্লাহর সমীপে জবাবদিহি করতে হবে!’
ক্ষমতা ভোগ-ব্যবহার ও শক্তির মানদণ্ড নয়। মুহাম্মদ ইবনে নাসর স্পেনে তাঁর বসবাসের জন্য ‘আল হামরা’ প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করেন। বিজয়ী বেশে গ্রানাডায় প্রবেশকালে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সমবেত জনতার উল্লাস ধ্বনি ছিল ‘মারহাবান লিন-নাসর অর্থাৎ আল্লাহর কৃপায় বিজয়ীকে স্বাগত।’ জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘লা গালিবা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ যদি আল্লাহ না চান, কেউ বিজয়ী নয়।’
দেখা যায়, ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির স্বাধীন সুলতান হিসেবে অভিষিক্ত হন। ‘সালতানাত’ যুগের প্রথম দিকের শাসনকে ‘মামলুক’ বা ক্রীতদাসের যুগ বলা হতো। এমনকি সম্রাজ্ঞী নুরজাহানও ছিলেন ভারতে বিক্রি হওয়া একজন ইরানি ক্রীতদাসী।
১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দের শীতকালে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি ঝাড়খণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল দিয়ে দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করেন, তখন লক্ষ্মণ সেনের পাহারাদাররা স্রেফ ‘ঘোড়া বিক্রেতা’ ছাড়া আর কিছুই তাঁকে মনে করেনি। ইখতিয়ার হলেন বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক। এভাবেই ভারতের বুকে সাড়ে ৫০০ বছরের (১২০৪-১৭৫৭ খ্রি.) মুসলিম শাসনের অধ্যায় রচিত হয়েছিল।
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
মহান আল্লাহ উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন।      
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন | আর যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন 
youtube
আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব/সম্মান দান করেন 
youtube
নৌকা ডুবে গেছে ক্ষমতা দেখিয়ে ঝুলুম করে বেচে থাকার চেষ্টা করবেন না |
youtube
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
0 notes
tawhidrisalatakhirah · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
তিনটি বিষয়ে মানুষ মোহমুক্ত নয়—(ক) হুকুমত তথা ক্ষমতার মোহ। (খ) দৌলত তথা সম্পদের মোহ। (গ) আওরাত তথা নারীর মোহ। অথচ উপদলীয় কোন্দল, বিরোধ ও ক্ষুদ্র স্বার্থের অচলায়তন ভেঙে মদিনা সনদের ধারাবাহিকতায় প্রিয় নবী (সা.) গোত্র শাসিত ২৭৬টি দেশীয় রাজ্যকে একত্র করে প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইল এলাকার লোকদের এক পতাকাতলে শামিল করেছিলেন।
প্রিয় নবী (সা.) তিন স্তরবিশিষ্ট প্রশাসন কাঠামো গড়ে তোলেন—কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক প্রশাসন। কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে বিভিন্ন দপ্তরে ভাগ করে বিশিষ্ট সাহাবিদের দায়িত্ব প্রদান করেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রাদেশিক পর্যায়ে নিযুক্ত হন ওয়ালি বা গভর্নর। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের জন্য আমিল বা আঞ্চলিক প্রশাসকের পদ সৃষ্টি করা হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ। ‘ইন্নাল আরদা লিল্লাহ...।’ অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই এই পৃথিবী আল্লাহর, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী করেন।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১২৮)
৬২৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ঐতিহাসিক খন্দকের যুদ্ধের পটভূমিতে অবতীর্ণ আয়াতে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহর বিধানের চিরন্তনতা।
ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও। যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর যাকে ইচ্ছা করো লাঞ্ছিত...।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ২৬)
ক্ষমতা ও দায়িত্ব আমানতস্বরূপ। এটি আল্লাহর নিয়ামত।
প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি)
তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নেওয়া যাবে না। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ। আমরা এমন কাউকে ক্ষমতায় নিযুক্ত করব না, যে দায়িত্ব চায় এবং এমন লোককেও না, যে দায়িত্ব লাভের প্রত্যাশা করে।’
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘হে আবদুর রহমান, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিয়ো না। কারণ যদি তোমার চাওয়ার কারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তো তোমাকে নিঃসঙ্গ ছেড়ে দেওয়া হবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে)। পক্ষান্তরে যদি না চাইতেই দায়িত্ব ও ক্ষমতা তোমার ওপর অর্পিত হয়, তাহলে তুমি ওই বিষয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
ক্ষমতা ক্ষমতাবানের কাছে আমানতস্বরূপ। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি মুসলিম জনগোষ্ঠীর শাসক নিযুক্ত হয়, অতঃপর সে প্রতারক ও আত্মসাত্কারী হিসেবে মারা যায়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (বুখারি)
ইসলাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয় আদর্শগত কারণে। প্রিয় নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে খলিফা ওমর (রা.) হয়ে যান ‘অর্ধপৃথিবীর বাদশাহ’, যাঁর সুশাসনের নজির হলো জেরুজালেম বিজয়ী আমিরুল মুমিনিন টেনে নিচ্ছেন উটের রশি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাতের আঁধারে। তিনি বলতেন, ‘ওই ফোরাতের কূলে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে আমি ওমরকে আল্লাহর সমীপে জবাবদিহি করতে হবে!’
ক্ষমতা ভোগ-ব্যবহার ও শক্তির মানদণ্ড নয়। মুহাম্মদ ইবনে নাসর স্পেনে তাঁর বসবাসের জন্য ‘আল হামরা’ প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করেন। বিজয়ী বেশে গ্রানাডায় প্রবেশকালে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সমবেত জনতার উল্লাস ধ্বনি ছিল ‘মারহাবান লিন-নাসর অর্থাৎ আল্লাহর কৃপায় বিজয়ীকে স্বাগত।’ জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘লা গালিবা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ যদি আল্লাহ না চান, কেউ বিজয়ী নয়।’
দেখা যায়, ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির স্বাধীন সুলতান হিসেবে অভিষিক্ত হন। ‘সালতানাত’ যুগের প্রথম দিকের শাসনকে ‘মামলুক’ বা ক্রীতদাসের যুগ বলা হতো। এমনকি সম্রাজ্ঞী নুরজাহানও ছিলেন ভারতে বিক্রি হওয়া একজন ইরানি ক্রীতদাসী।
১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দের শীতকালে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি ঝাড়খণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল দিয়ে দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করেন, তখন লক্ষ্মণ সেনের পাহারাদাররা স্রেফ ‘ঘোড়া বিক্রেতা’ ছাড়া আর কিছুই তাঁকে মনে করেনি। ইখতিয়ার হলেন বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক। এভাবেই ভারতের বুকে সাড়ে ৫০০ বছরের (১২০৪-১৭৫৭ খ্রি.) মুসলিম শাসনের অধ্যায় রচিত হয়েছিল।
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
মহান আল্লাহ উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন।      
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন | আর যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন 
youtube
আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব/সম্মান দান করেন 
youtube
নৌকা ডুবে গেছে ক্ষমতা দেখিয়ে ঝুলুম করে বেচে থাকার চেষ্টা করবেন না |
youtube
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
0 notes
ilyforallahswt · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
তিনটি বিষয়ে মানুষ মোহমুক্ত নয়—(ক) হুকুমত তথা ক্ষমতার মোহ। (খ) দৌলত তথা সম্পদের মোহ। (গ) আওরাত তথা নারীর মোহ। অথচ উপদলীয় কোন্দল, বিরোধ ও ক্ষুদ্র স্বার্থের অচলায়তন ভেঙে মদিনা সনদের ধারাবাহিকতায় প্রিয় নবী (সা.) গোত্র শাসিত ২৭৬টি দেশীয় রাজ্যকে একত্র করে প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইল এলাকার লোকদের এক পতাকাতলে শামিল করেছিলেন।
প্রিয় নবী (সা.) তিন স্তরবিশিষ্ট প্রশাসন কাঠামো গড়ে তোলেন—কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক প্রশাসন। কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে বিভিন্ন দপ্তরে ভাগ করে বিশিষ্ট সাহাবিদের দায়িত্ব প্রদান করেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রাদেশিক পর্যায়ে নিযুক্ত হন ওয়ালি বা গভর্নর। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের জন্য আমিল বা আঞ্চলিক প্রশাসকের পদ সৃষ্টি করা হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ। ‘ইন্নাল আরদা লিল্লাহ...।’ অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই এই পৃথিবী আল্লাহর, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী করেন।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১২৮)
৬২৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ঐতিহাসিক খন্দকের যুদ্ধের পটভূমিতে অবতীর্ণ আয়াতে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহর বিধানের চিরন্তনতা।
ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও। যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর যাকে ইচ্ছা করো লাঞ্ছিত...।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ২৬)
ক্ষমতা ও দায়িত্ব আমানতস্বরূপ। এটি আল্লাহর নিয়ামত।
প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি)
তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নেওয়া যাবে না। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ। আমরা এমন কাউকে ক্ষমতায় নিযুক্ত করব না, যে দায়িত্ব চায় এবং এমন লোককেও না, যে দায়িত্ব লাভের প্রত্যাশা করে।’
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘হে আবদুর রহমান, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিয়ো না। কারণ যদি তোমার চাওয়ার কারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তো তোমাকে নিঃসঙ্গ ছেড়ে দেওয়া হবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে)। পক্ষান্তরে যদি না চাইতেই দায়িত্ব ও ক্ষমতা তোমার ওপর অর্পিত হয়, তাহলে তুমি ওই বিষয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
ক্ষমতা ক্ষমতাবানের কাছে আমানতস্বরূপ। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি মুসলিম জনগোষ্ঠীর শাসক নিযুক্ত হয়, অতঃপর সে প্রতারক ও আত্মসাত্কারী হিসেবে মারা যায়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (বুখারি)
ইসলাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয় আদর্শগত কারণে। প্রিয় নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে খলিফা ওমর (রা.) হয়ে যান ‘অর্ধপৃথিবীর বাদশাহ’, যাঁর সুশাসনের নজির হলো জেরুজালেম বিজয়ী আমিরুল মুমিনিন টেনে নিচ্ছেন উটের রশি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাতের আঁধারে। তিনি বলতেন, ‘ওই ফোরাতের কূলে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে আমি ওমরকে আল্লাহর সমীপে জবাবদিহি করতে হবে!’
ক্ষমতা ভোগ-ব্যবহার ও শক্তির মানদণ্ড নয়। মুহাম্মদ ইবনে নাসর স্পেনে তাঁর বসবাসের জন্য ‘আল হামরা’ প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করেন। বিজয়ী বেশে গ্রানাডায় প্রবেশকালে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সমবেত জনতার উল্লাস ধ্বনি ছিল ‘মারহাবান লিন-নাসর অর্থাৎ আল্লাহর কৃপায় বিজয়ীকে স্বাগত।’ জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘লা গালিবা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ যদি আল্লাহ না চান, কেউ বিজয়ী নয়।’
দেখা যায়, ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির স্বাধীন সুলতান হিসেবে অভিষিক্ত হন। ‘সালতানাত’ যুগের প্রথম দিকের শাসনকে ‘মামলুক’ বা ক্রীতদাসের যুগ বলা হতো। এমনকি সম্রাজ্ঞী নুরজাহানও ছিলেন ভারতে বিক্রি হওয়া একজন ইরানি ক্রীতদাসী।
১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দের শীতকালে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি ঝাড়খণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল দিয়ে দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করেন, তখন লক্ষ্মণ সেনের পাহারাদাররা স্রেফ ‘ঘোড়া বিক্রেতা’ ছাড়া আর কিছুই তাঁকে মনে করেনি। ইখতিয়ার হলেন বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক। এভাবেই ভারতের বুকে সাড়ে ৫০০ বছরের (১২০৪-১৭৫৭ খ্রি.) মুসলিম শাসনের অধ্যায় রচিত হয়েছিল।
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী ���স্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
মহান আল্লাহ উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন।      
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন | আর যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন 
youtube
আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব/সম্মান দান করেন 
youtube
নৌকা ডুবে গেছে ক্ষমতা দেখিয়ে ঝুলুম করে বেচে থাকার চেষ্টা করবেন না |
youtube
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
0 notes
myreligionislam · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
তিনটি বিষয়ে মানুষ মোহমুক্ত নয়—(ক) হুকুমত তথা ক্ষমতার মোহ। (খ) দৌলত তথা সম্পদের মোহ। (গ) আওরাত তথা নারীর মোহ। অথচ উপদলীয় কোন্দল, বিরোধ ও ক্ষুদ্র স্বার্থের অচলায়তন ভেঙে মদিনা সনদের ধারাবাহিকতায় প্রিয় নবী (সা.) গোত্র শাসিত ২৭৬টি দেশীয় রাজ্যকে একত্র করে প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইল এলাকার লোকদের এক পতাকাতলে শামিল করেছিলেন।
প্রিয় নবী (সা.) তিন স্তরবিশিষ্ট প্রশাসন কাঠামো গড়ে তোলেন—কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক প্রশাসন। কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে বিভিন্ন দপ্তরে ভাগ করে বিশিষ্ট সাহাবিদের দায়িত্ব প্রদান করেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রাদেশিক পর্যায়ে নিযুক্ত হন ওয়ালি বা গভর্নর। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের জন্য আমিল বা আঞ্চলিক প্রশাসকের পদ সৃষ্টি করা হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ। ‘ইন্নাল আরদা লিল্লাহ...।’ অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই এই পৃথিবী আল্লাহর, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী করেন।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১২৮)
৬২৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ঐতিহাসিক খন্দকের যুদ্ধের পটভূমিতে অবতীর্ণ আয়াতে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহর বিধানের চিরন্তনতা।
ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও। যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর য���কে ইচ্ছা করো লাঞ্ছিত...।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ��৬)
ক্ষমতা ও দায়িত্ব আমানতস্বরূপ। এটি আল্লাহর নিয়ামত।
প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি)
তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নেওয়া যাবে না। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ। আমরা এমন কাউকে ক্ষমতায় নিযুক্ত করব না, যে দায়িত্ব চায় এবং এমন লোককেও না, যে দায়িত্ব লাভের প্রত্যাশা করে।’
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘হে আবদুর রহমান, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিয়ো না। কারণ যদি তোমার চাওয়ার কারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তো তোমাকে নিঃসঙ্গ ছেড়ে দেওয়া হবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে)। পক্ষান্তরে যদি না চাইতেই দায়িত্ব ও ক্ষমতা তোমার ওপর অর্পিত হয়, তাহলে তুমি ওই বিষয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
ক্ষমতা ক্ষমতাবানের কাছে আমানতস্বরূপ। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি মুসলিম জনগোষ্ঠীর শাসক নিযুক্ত হয়, অতঃপর সে প্রতারক ও আত্মসাত্কারী হিসেবে মারা যায়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (বুখারি)
ইসলাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয় আদর্শগত কারণে। প্রিয় নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে খলিফা ওমর (রা.) হয়ে যান ‘অর্ধপৃথিবীর বাদশাহ’, যাঁর সুশাসনের নজির হলো জেরুজালেম বিজয়ী আমিরুল মুমিনিন টেনে নিচ্ছেন উটের রশি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাতের আঁধারে। তিনি বলতেন, ‘ওই ফোরাতের কূলে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে আমি ওমরকে আল্লাহর সমীপে জবাবদিহি করতে হবে!’
ক্ষমতা ভোগ-ব্যবহার ও শক্তির মানদণ্ড নয়। মুহাম্মদ ইবনে নাসর স্পেনে তাঁর বসবাসের জন্য ‘আল হামরা’ প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করেন। বিজয়ী বেশে গ্রানাডায় প্রবেশকালে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সমবেত জনতার উল্লাস ধ্বনি ছিল ‘মারহাবান লিন-নাসর অর্থাৎ আল্লাহর কৃপায় বিজয়ীকে স্বাগত।’ জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘লা গালিবা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ যদি আল্লাহ না চান, কেউ বিজয়ী নয়।’
দেখা যায়, ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির স্বাধীন সুলতান হিসেবে অভিষিক্ত হন। ‘সালতানাত’ যুগের প্রথম দিকের শাসনকে ‘মামলুক’ বা ক্রীতদাসের যুগ বলা হতো। এমনকি সম্রাজ্ঞী নুরজাহানও ছিলেন ভারতে বিক্রি হওয়া একজন ইরানি ক্রীতদাসী।
১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দের শীতকালে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি ঝাড়খণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল দিয়ে দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করেন, তখন লক্ষ্মণ সেনের পাহারাদাররা স্রেফ ‘ঘোড়া বিক্রেতা’ ছাড়া আর কিছুই তাঁকে মনে করেনি। ইখতিয়ার হলেন বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক। এভাবেই ভারতের বুকে সাড়ে ৫০০ বছরের (১২০৪-১৭৫৭ খ্রি.) মুসলিম শাসনের অধ্যায় রচিত হয়েছিল।
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
মহান আল্লাহ উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন।      
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন | আর যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন 
youtube
আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব/সম্মান দান করেন 
youtube
নৌকা ডুবে গেছে ক্ষমতা দেখিয়ে ঝুলুম করে বেচে থাকার চেষ্টা করবেন না |
youtube
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
0 notes
allahisourrabb · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
তিনটি বিষয়ে মানুষ মোহমুক্ত নয়—(ক) হুকুমত তথা ক্ষমতার মোহ। (খ) দৌলত তথা সম্পদের মোহ। (গ) আওরাত তথা নারীর মোহ। অথচ উপদলীয় কোন্দল, বিরোধ ও ক্ষুদ্র স্বার্থের অচলায়তন ভেঙে মদিনা সনদের ধারাবাহিকতায় প্রিয় নবী (সা.) গোত্র শাসিত ২৭৬টি দেশীয় রাজ্যকে একত্র করে প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইল এলাকার লোকদের এক পতাকাতলে শামিল করেছিলেন।
প্রিয় নবী (সা.) তিন স্তরবিশিষ্ট প্রশাসন কাঠামো গড়ে তোলেন—কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক প্রশাসন। কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে বিভিন্ন দপ্তরে ভাগ করে বিশিষ্ট সাহাবিদের দায়িত্ব প্রদান করেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রাদেশিক পর্যায়ে নিযুক্ত হন ওয়ালি বা গভর্নর। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের জন্য আমিল বা আঞ্চলিক প্রশাসকের পদ সৃষ্টি করা হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ। ‘ইন্নাল আরদা লিল্লাহ...।’ অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই এই পৃথিবী আল্লাহর, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী করেন।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১২৮)
৬২৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ঐতিহাসিক খন্দকের যুদ্ধের পটভূমিতে অবতীর্ণ আয়াতে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহর বিধানের চিরন্তনতা।
ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও। যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর যাকে ইচ্ছা করো লাঞ্ছিত...।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ২৬)
ক্ষমতা ও দায়িত্ব আমানতস্বরূপ। এটি আল্লাহর নিয়ামত।
প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি)
তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নেওয়া যাবে না। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ। আমরা এমন কাউকে ক্ষমতায় নিযুক্ত করব না, যে দায়িত্ব চায় এবং এমন লোককেও না, যে দায়িত্ব লাভের প্রত্যাশা করে।’
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘হে আবদুর রহমান, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিয়ো না। কারণ যদি তোমার চাওয়ার কারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তো তোমাকে নিঃসঙ্গ ছেড়ে দেওয়া হবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে)। পক্ষান্তরে যদি না চাইতেই দায়িত্ব ও ক্ষমতা তোমার ওপর অর্পিত হয়, তাহলে তুমি ওই বিষয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
ক্ষমতা ক্ষমতাবানের কাছে আমানতস্বরূপ। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি মুসলিম জনগোষ্ঠীর শাসক নিযুক্ত হয়, অতঃপর সে প্রতারক ও আত্মসাত্কারী হিসেবে মারা যায়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (বুখারি)
ইসলাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয় আদর্শগত কারণে। প্রিয় নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে খলিফা ওমর (রা.) হয়ে যান ‘অর্ধপৃথিবীর বাদশাহ’, যাঁর সুশাসনের নজির হলো জেরুজালেম বিজয়ী আমিরুল মুমিনিন টেনে নিচ্ছেন উটের রশি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাতের আঁধারে। তিনি বলতেন, ‘ওই ফোরাতের কূলে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে আমি ওমরকে আল্লাহর সমীপে জবাবদিহি করতে হবে!’
ক্ষমতা ভোগ-ব্যবহার ও শক্তির মানদণ্ড নয়। মুহাম্মদ ইবনে নাসর স্পেনে তাঁর বসবাসের জন্য ‘আল হামরা’ প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করেন। বিজয়ী বেশে গ্রানাডায় প্রবেশকালে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সমবেত জনতার উল্লাস ধ্বনি ছিল ‘মারহাবান লিন-নাসর অর্থাৎ আল্লাহর কৃপায় বিজয়ীকে স্বাগত।’ জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘লা গালিবা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ যদি আল্লাহ না চান, কেউ বিজয়ী নয়।’
দেখা যায়, ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির স্বাধীন সুলতান হিসেবে অভিষিক্ত হন। ‘সালতানাত’ যুগের প্রথম দিকের শাসনকে ‘মামলুক’ বা ক্রীতদাসের যুগ বলা হতো। এমনকি সম্রাজ্ঞী নুরজাহানও ছিলেন ভারতে বিক্রি হওয়া একজন ইরানি ক্রীতদাসী।
১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দের শীতকালে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি ঝাড়খণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল দিয়ে দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করেন, তখন লক্ষ্মণ সেনের পাহারাদাররা স্রেফ ‘ঘোড়া বিক্রেতা’ ছাড়া আর কিছুই তাঁকে মনে করেনি। ইখতিয়ার হলেন বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক। এভাবেই ভারতের বুকে সাড়ে ৫০০ বছরের (১২০৪-১৭৫৭ খ্রি.) মুসলিম শাসনের অধ্যায় রচিত হয়েছিল।
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
মহান আল্লাহ উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন।      
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন | আর যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন 
youtube
আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব/সম্মান দান করেন 
youtube
নৌকা ডুবে গেছে ক্ষমতা দেখিয়ে ঝুলুম করে বেচে থাকার চেষ্টা করবেন না |
youtube
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
0 notes
mylordisallah · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
তিনটি বিষয়ে মানুষ মোহমুক্ত নয়—(ক) হুকুমত তথা ক্ষমতার মোহ। (খ) দৌলত তথা সম্পদের মোহ। (গ) আওরাত তথা নারীর মোহ। অথচ উপদলীয় কোন্দল, বিরোধ ও ক্ষুদ্র স্বার্থের অচলায়তন ভেঙে মদিনা সনদের ধারাবাহিকতায় প্রিয় নবী (সা.) গোত্র শাসিত ২৭৬টি দেশীয় রাজ্যকে একত্র করে প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইল এলাকার লোকদের এক পতাকাতলে শামিল করেছিলেন।
প্রিয় নবী (সা.) তিন স্তরবিশিষ্ট প্রশাসন কাঠামো গড়ে তোলেন—কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক প্রশাসন। কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে বিভিন্ন দপ্তরে ভাগ করে বিশিষ্ট সাহাবিদের দায়িত্ব প্রদান করেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রাদেশিক পর্যায়ে নিযুক্ত হন ওয়ালি বা গভর্নর। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের জন্য আমিল বা আঞ্চলিক প্রশাসকের পদ সৃষ্টি করা হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ। ‘ইন্নাল আরদা লিল্লাহ...।’ অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই এই পৃথিবী আল্লাহর, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী করেন।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১২৮)
৬২৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ঐতিহাসিক খন্দকের যুদ্ধের পটভূমিতে অবতীর্ণ আয়াতে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহর বিধানের চিরন্তনতা।
ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও। যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর যাকে ইচ্ছা করো লাঞ্ছিত...।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ২৬)
ক্ষমতা ও দায়িত্ব আমানতস্বরূপ। এটি আল্লাহর নিয়ামত।
প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি)
তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নেওয়া যাবে না। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ। আমরা এমন কাউকে ক্ষমতায় নিযুক্ত করব না, যে দায়িত্ব চায় এবং এমন লোককেও না, যে দায়িত্ব লাভের প্রত্যাশা করে।’
আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘হে আবদুর রহমান, দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিয়ো না। কারণ যদি তোমার চাওয়ার কারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তো তোমাকে নিঃসঙ্গ ছেড়ে দেওয়া হবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে)। পক্ষান্তরে যদি না চাইতেই দায়িত্ব ও ক্ষমতা তোমার ওপর অর্পিত হয়, তাহলে তুমি ওই বিষয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)
ক্ষমতা ক্ষমতাবানের কাছে আমানতস্বরূপ। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি মুসলিম জনগোষ্ঠীর শাসক নিযুক্ত হয়, অতঃপর সে প্রতারক ও আত্মসাত্কারী হিসেবে মারা যায়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (বুখারি)
ইসলাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয় আদর্শগত কারণে। প্রিয় নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে খলিফা ওমর (রা.) হয়ে যান ‘অর্ধপৃথিবীর বাদশাহ’, যাঁর সুশাসনের নজির হলো জেরুজালেম বিজয়ী আমিরুল মুমিনিন টেনে নিচ্ছেন উটের রশি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাতের আঁধারে। তিনি বলতেন, ‘ওই ফোরাতের কূলে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে আমি ওমরকে আল্লাহর সমীপে জবাবদিহি করতে হবে!’
ক্ষমতা ভোগ-ব্যবহার ও শক্তির মানদণ্ড নয়। মুহাম্মদ ইবনে নাসর স্পেনে তাঁর বসবাসের জন্য ‘আল হামরা’ প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করেন। বিজয়ী বেশে গ্রানাডায় প্রবেশকালে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সমবেত জনতার উল্লাস ধ্বনি ছিল ‘মারহাবান লিন-নাসর অর্থাৎ আল্লাহর কৃপায় বিজয়ীকে স্বাগত।’ জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘লা গালিবা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ যদি আল্লাহ না চান, কেউ বিজয়ী নয়।’
দেখা যায়, ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির স্বাধীন সুলতান হিসেবে অভিষিক্ত হন। ‘সালতানাত’ যুগের প্রথম দিকের শাসনকে ‘মামলুক’ বা ক্রীতদাসের যুগ বলা হতো। এমনকি সম্রাজ্ঞী নুরজাহানও ছিলেন ভারতে বিক্রি হওয়া একজন ইরানি ক্রীতদাসী।
১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দের শীতকালে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি ঝাড়খণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল দিয়ে দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করেন, তখন লক্ষ্মণ সেনের পাহারাদাররা স্রেফ ‘ঘোড়া বিক্রেতা’ ছাড়া আর কিছুই তাঁকে মনে করেনি। ইখতিয়ার হলেন বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক। এভাবেই ভারতের বুকে সাড়ে ৫০০ বছরের (১২০৪-১৭৫৭ খ্রি.) মুসলিম শাসনের অধ্যায় রচিত হয়েছিল।
ক্ষমতা চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মানুষ ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, রাজ্য জয়ের জন্য, দেশ দখলের জন্য ক্ষমতাপাগল মানুষগুলো দানবের রূপ ধারণ করে। ক্ষমতান্ধদের লড়াইয়ে কেউ না কেউ জয়ী হয়। তবে সব সময় পরাজিত হয় মানবতা ও সাধারণ জনগণ। ক্ষমতার মদমত্ত মানুষগুলো ভুলে যায় ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বস্তু নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই দিনগুলোর (সুদিন-দুর্দিন ও জয়-পরাজয়) পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
মহান আল্লাহ উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন।      
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন | আর যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন 
youtube
আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব/সম্মান দান করেন 
youtube
নৌকা ডুবে গেছে ক্ষমতা দেখিয়ে ঝুলুম করে বেচে থাকার চেষ্টা করবেন না |
youtube
দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ে নিতে নেই
Do not seek responsibility and power
0 notes
quran-translation · 3 months
Text
youtube
সূরা আন-নাসর Ayah: 1 إِذَا جَآءَ نَصۡرُ ٱللَّهِ وَٱلۡفَتۡحُ যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় [১] ১১০- সূরা আন-নাসর ৩ আয়াত, মক্কী [১] আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, যখন এ সূরা নাযিল হলো তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূরাটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লেন এবং বললেন, “মক্কা বিজয়ের পর আর কোনো হিজরত নেই।” [মুস্তাদরাকে হাকিম ২/২৫৭] এ সূরায় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাত নিকটবর্তী হওয়ার ইঙ্গিত আছে। এক বর্ণনায় আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা উবায়দুল্লাহ্ ইবন উতবাকে প্রশ্ন করে বলেন, কোন পূর্ণাঙ্গ সূরা সবশেষে নাযিল হয়েছে? উবায়দুল্লাহ্ বলেন, আমি বললাম: ‘ইযা জাআ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহ’। তিনি বললেন, সত্য বলেছ। [মুসলিম ৩০২৪] ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, সূরা আন-নাসর বিদায় হজে অবতীর্ণ হয়েছে। এরপর اَلْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ [সূরা আল-মায়িদাহ ৩] আয়াত অবতীর্ণ হয়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাত্র আশি দিন জীবিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের যখন মাত্র পঞ্চাশ দিন বাকি ছিল, তখন কালালাহ্ সংক্রান্ত [সূরা আন-নিসা ১৭৬] আয়াত অবতীর্ণ হয়। অতঃপর পঁয়ত্রিশ দিন বাকী থাকার সময় لَقَدْ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ اَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْ مِنِيْنَ رَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ আয়াত অবতীর্ণ হয় এবং একুশ দিন বাকি থাকার সময় وَاتَّقُوا يَوْمًا تُرْجَعُونَ فِيهِ إِلَى اللَّهِ ۖ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ [সূরা আল-বাকারাহ ২৮১] আয়াত অবতীর্ণ হয়। [১] এ ব্যাপারে প্রায় সকলেই একমত যে, এখানে বিজয় বলে মক্কা বিজয় বোঝানো হয়েছে। [মুয়াসসার, ইবন কাসীর] আর বিজয় মানে কোনো একটি সাধারণ যুদ্ধে বিজয় নয়। বরং এর মানে হচ্ছে এমন একটি চুড়ান্ত বিজয় যার পরে ইসলামের সাথে সংঘর্ষ করার মতো আর কোনো শ���্তির অস্তিত্ব দেশের বুকে থাকবে না এবং একথাও সুস্পষ্ট হয়ে যাবে যে, বর্তমানে আরবে এ দীনটিই প্রাধান্য বিস্তার করবে। [দেখুন, আদ্ওয়াউল বায়ান] Ayah: 2 وَرَأَيۡتَ ٱلنَّاسَ يَدۡخُلُونَ فِي دِينِ ٱللَّهِ أَفۡوَاجٗا আর আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবেন [১] [১] অর্থাৎ লোকদের একজন দু’জন করে ইসলাম গ্ৰহণ করার যুগ শেষ হয়ে যাবে। তখন এমন এক যুগের সূচনা হবে যখন একটি গোত্রের সবাই এবং এক একটি বড় বড় এলাকার সমস্ত অধিবাসী কোনো প্রকার যুদ্ধ-বিগ্রহ ও চাপ প্রয়োগ ছাড়াই স্বতস্ফুৰ্তভাবে মুসলিম হয়ে যেতে থাকবে। মক্কা বিজয়ের পূর্বে এমন লোকদের সংখ্যাও প্রচুর ছিল, যারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রেসালত ও ইসলামের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত বিশ্বাসের কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল। কিন্তু কুরাইশদের ভয়ে অথবা অন্য কোনো কারণে তারা ইসলাম গ্রহণ থেকে বিরত ছিল। মক্কাবিজয় তাদের সেই বাধা দূর করে দেয়। সেমতে তারা দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করতে শুরু করে। সাধারণ আরবরাও এমনিভাবে দলে দলে ইসলামে দাখিল হয়। আমর ইবন সালামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “মক্কা বিজয়ের পরে প্রতিটি গোত্রই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে ঈমান আনার ব্যাপারে প্ৰতিযোগিতা শুরু করে। মক্কা বিজয়ের আগে এ সমস্ত গোত্রগুলো ঈমান আনার ব্যাপারে দ্বিধা করত। তারা বলত, তার ও তার গোত্রের অবস্থা পর্যবেক্ষণ কর। যদি সে তার গোত্রের উপর জয়লাভ করতে পারে তবে সে নবী হিসেবে বিবেচিত হবে।” [বুখারী ৪৩০২] [বাগাভী] Ayah: 3 فَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّكَ وَٱسۡتَغۡفِرۡهُۚ إِنَّهُۥ كَانَ تَوَّابَۢا তখন আপনি আপনার রবের প্ৰশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন, নিশ্চয় তিনি তাওবা কবুলকার��� [১]। [১] একাধিক হাদীস ও সাহাবীর উক্তিতে আছে যে, এ সূরায় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাত নিকটবর্তী হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত আছে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আমাকে বদরী সাহাবীগণের সাথে তার কাছে প্রবেশাধিকার দিয়েছিলেন। তারা এটাকে মনে-প্ৰাণে মেনে নিতে পারছিলেন না। তারা বলেই ফেলল, একে আবার আমাদের সাথে কেন? আমাদের কাছে তার সমবয়সী সন্তান-সন্ততি রয়েছে। তখন উমর বললেন, তোমরা তো জান সে কোথেকে এসেছে। তারপর একদিন তিনি তাদের মজলিসে তাকে ডেকে পাঠালেন। আমি বুঝতে পারলাম যে, তিনি আমাকে তাদের মাঝে ডেকে আমাকে তাদের সাথে রাখার ব্যাপারটি স্পষ্ট করারই ইচ্ছা পোষণ করেছেন। অতঃপর উমর বললেন, তোমরা মহান আল্লাহর বাণী, “ইযা জাআ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহ” সম্পর্কে কী বল? তাদের কেউ বলল, আমাদের বিজয় লাভ হলে যেন আমরা আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর কাছে ক্ষমা চাই তা-ই বলা হয়েছে। আবার তাদের অনেকেই কিছু না বলে চুপ ছিল। তখন তিনি আমাকে বললেন, হে ইবন আব্বাস! তুমি কি অনুরুপ বল?
0 notes
sukantakrmondal · 11 days
Text
হিন্দু ধর্মের মানুষ হয়েও আদ্ধাত্তিক ত্বত্ত্ব জ্ঞান জানার আগ্রহ হয় না কেন। অথচ সারাক্ষণ সারা বিশ্বের সাথে সুর মিলিয়ে চেঁচাচ্ছি সনাতনী ধর্ম আমাদের পরম্পরা। শ্রাস্ত্রানুকুল সাধনা মতে গীতা চার বেদ ও আঠারো পুরানের প্রমান সহ আলোচনা তে মূর্তি পূজার বিধান নাই। তবু আমরা অজ্ঞান বশত অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে শ্রাস্ত্রবিরুদ্ধ ভুল সাধনা করে জীবন মরনের রোগ থেকে মুক্তি লাভ করতে আগ্রহী হতে চাইছি না। প্রমান সহিত শ্রাস্ত্রানুকুল সৎ সাধনার আসল জ্ঞান আমাদের বোধগম্য হয় না।নূতন কিছু জানার আগ্রহ ও হয় না। পূর্ব পুরুষেরা যা করে জীবন নষ্ট করছেন তা তেই আমাদের রুচি। যুগ পরিবর্তন হয়েছে বিজ্ঞান প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে । আমরাও খুব শিক্ষিত হয়েছি। আমরা এখন সংকৃত পড়িনা ইংরেজি ভাষায় পড়ি ও কথা বলি। আপনারা ও এতোটা শিক্ষিত হয়েছেন বলে পরমেশ্বর পরমপিতা ও আপডেট হয়ে গেছেন। এই একুশ ব্রম্ভান্ডে এক মাত্র মহান সন্ত রামপাল জী মহারাজ ব্যাতিত আর কোন গুরু পরমেশ্বর পরমপিতা র আপডেট প্রমান সহ আলোচনা দিতে পারেন না। 🙏🙏
https://www.jagatgururampalji.org/gyan_ganga_english.pdf
0 notes
guardianpubs17 · 3 months
Text
হায় আল্লাহ! নবিজি ﷺ মাত্র নয় বছরের মেয়ের সঙ্গে একান্তে সময় কাটিয়েছেন!’
Tumblr media
এই ধরণের উক্তি আমাদের অজ্ঞতাকেই প্রকাশ করে। কেননা, নয় বছর বয়সে বিয়ে করাতে কোনো সমস্যা নেই। সে যুগের জন্য এটাই ঠিক ছিল। আমরা যদি নিজেদের দাদি-নানিদের বিয়ের খোঁজ নিই, তবে অনেকেই দেখব তাদের বিয়েও হয়েছে ০৯-১০ বছর বয়সে। তৎকালে এমন বয়সে বিয়ে হওয়ার প্রচলন ছিল।
ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত যে, সময় ও সংস্কৃতির পরিবর্তন অনুযায়ী বয়ঃসন্ধিকাল দেরিতে শুরু হচ্ছে। বুদ্ধিমত্তার বিকাশও দেরিতে হচ্ছে। আর নয় বছর বয়সে আয়িশা (রা) যদি শারীরিক ও বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে পরিপূর্ণ হয়ে থাকেন, তাহলে নবিজি ﷺ তাঁর সাথে একান্ত সময় কাটিয়ে কোনো অন্যায় করেননি। সুতরাং এ ক্ষেত্রে তাঁর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই।
বর্তমানে একটি প্রচলিত শব্দ হলো, ‘কিশোর-কিশোরী’। এর দ্বারা কেউ যৌন বিষয়ে পরিণত কীনা, তা বোঝা দায়। বয়ঃসন্ধি হলো পরিপক্বতার লক্ষণ। তাই ইসলাম বয়ঃসন্ধি তথা বালেগ-বালেগা হওয়াকেই বিয়ের উপযুক্ততার মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে।
বয়ঃসন্ধির ধরন যুগ থেকে যুগান্তরে এবং সংস্কৃতি ভেদে ভিন্ন হয়। তাই অতীতের কোনো ঘটনা সম্পর্কে মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সেই সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করতে হবে। মাথায় রাখতে হবে আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও রীতিনীতি এবং সেই সময়ের রীতিনীতি এক নয়।
এটি সর্বজন বিধিত যে, বাল্যকালে বিয়ের প্রচলনটি অতীতে কেবল আরবে নয়; সারা পৃথিবীজুড়ে প্রথাসিদ্ধ ছিল। মানবজাতির ইতিহাসের গোড়া থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত বাল্যকালে বিয়ের প্রচলন ছিল, বিশেষ করে বিখ্যাত ব্যক্তিদের বিয়ের ক্ষেত্রে। রাজাদের কন্যা বা মহান ব্যক্তিদের কন্যাদের খুবই অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া হতো। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাদের পূর্ণ সম্মতিও নেওয়া হতো না।
রাজনৈতিক কারণেও অল্পবয়সে বিয়ে দেওয়া হতো। দুটি পরিবার, দেশ বা অঞ্চলের মধ্যকার কোনো চুক্তির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে, চুক্তিকে মজবুত করতে এ রকম বিয়ে অনুষ্ঠিত হতো। দুটি বিবাদমান রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যেও অল্পবয়সে বিয়ে হতো।
উদাহরণস্বরূপ আমরা স্পেনের বিবাদমান দুটি অঞ্চলের মিলের জন্য ফার্ডিনান্দ ও ইসাবেলার কথা আনতে পারি। এটি ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কেননা, এ বিয়ের মাধ্যমে বিবদমান দুটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র এক হয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে এবং স্পেন থেকে মুসলিমদের বিতাড়নে সমর্থ হয়। এটি রাজনৈতিক বিয়ের একটি স্পষ্ট উদাহারণ।
এ ক্ষেত্রে ভালোবাসা বা অন্য কোনো ব্যাপার ছিল না; এটা ছিল দুটি রাষ্ট্রের ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে পরিণত হওয়ার ব্যাপার। সে সময় এ ধরনের রাজনৈতিক বিয়ের প্রচলন ছিল।
তা ছাড়া সে সময়ে প্রত্যাশিত গড় আয়ু কম ছিল। বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হতো অল্প বয়সেই। সংস্কৃতি ও প্রচলিত রীতি-পদ্ধতি ছিল বর্তমান যুগ থেকে ভিন্ন। এজন্যই এতদিন কট্টর ইসলামবিরোধী শক্তিও নবিজি ﷺ-এর জীবনের এ ঘটনাকে সমস্যা হিসেবে চিত্রায়িত করেনি। এটা নতুন উত্থাপিত ইস্যু। মাত্র ৩০-৪০ বছর আগ থেকে এ বিষয়টিকে সমস্যা হিসেবে চিত্রায়িত করা শুরু হয়েছে।
আর ২০০ বছর আগেও যখন পশ্চিমা লেখকরা নবিজি ﷺ সম্পর্কে লিখেছেন, তারা এ বিষয়টিকে সমস্যা হিসেবে চিত্রায়ণ করেননি। কেননা, ২০০ বছর আগেও এ রকম অল্প বয়সে বিয়ে সংঘটিত হতো।
সুতরাং যারা নবিজি ﷺ ও আয়িশা (রা.)-এর বিয়ের বয়স নিয়ে বাজে মন্তব্য করে নবিজি ﷺ-এর চরিত্রের ওপর কলঙ্ক লেপনের অপচেষ্টা করে, তারা মূলত ‘অ্যাকাডেমিক্যালি’ শিক্ষিত নয়। তারা হয়তো হাইস্কুল বা কলেজে পড়েছে (রা.) অন্য কোথাও পড়ালেখা করলেও তাদের জ্ঞান আহরণ ও বিশ্লেষণ পদ্ধতি এই পর্যায়ের); কিন্তু তারা ইতিহাস ভালো করে পড়েনি।
কেননা, ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করলে এ বিষয়টি জানা থাকবে যে, বিয়ের বয়স ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে।
আমি কিছু ইতিহাসের চিত্র তুলে ধরতে চাই; যেন এর মাধ্যমে অজ্ঞ সমালোচনাকারীরা জবাব পেয়ে যায়।
পশ্চিমা বিশ্বে প্রথমবারের মতো বিয়ের বয়স নিয়ে আইনগত সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা শুরু হয় সিজার অগাস্টাস-এর শাসনামলে। তখন ঠিক করা হয়, বিয়ের সময় মেয়েদের বয়স ১০ বছর হতে হবে। তিনি এ আইন করেছিলেন বটে, কিন্তু এজন্য জনগণকে বাধ্য করেননি। আর আয়িশা (রা.) নবিজি ﷺ-এর সাথে একান্তে রাত্রিযাপন শুরু করেন নয় বছর বয়সে।
সুতরাং এখানে সমস্যার কী কারণ থাকতে পারে? যারা ১০ বছর আর নয় বছর বয়সের গুণগত পার্থক্য নিয়ে হাজির হবেন, তাদের জেনে রাখা উচিত, ইউরোপীয় ও আরবদের ভ’প্রকৃতি ও সংস্কৃতি আলাদা ছিল।
তা ছাড়া মধ্যযুগীয় ইউরোপে গ্রেশন দ্যা ক্লেরিক ছিলেন ক্যানন ল (রা.) ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের শরিয়ত-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ক্যানন ল-এর রূপদান করা হয় ১২ শতাব্দীতে। তিনি ক্যানন ল-তে লিখেন, বয়ঃসন্ধির সময় হলো ১২-১৪ বছর। আর এটাই বিয়ের জন্য ন্যূনতম আইনসংগত বয়স হওয়া উচিত। তবে তিনি স্বীকার করেন, এ বয়সসীমার আগেও বিয়ে হতে পারে। তিনি এখানে ৯০০ বছর আগের প্রচলন ও সংস্কৃতি অনুযায়ী বলেছেন, ১২-১৪ হতে পারে বিয়ের আইনসংগত বয়স।
শেক্সপিয়র রোমিও ও জুলিয়েট লিখেছেন ৫০০ বছর আগে। এ নাটকের মঞ্চায়নের সময় জুলিয়েট চরিত্রে যে নায়িকা অভিনয় করেছে, তার বয়স ছিল ১৩-১৪ বছর। এর কারণ কী? কারণ হলো-‘বায়োলজিক্যালি’ ও বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে ৫০০ বছর আগে ১৩-১৪ বছরের মেয়েকে বর্তমান যুগের ১৭ বছর বয়সি মেয়ের সমান জ্ঞান করা হতো। আমাদের সময়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভালোবাসার আবেগ দেখা যায় ১৪-১৫ বছর বয়সে।
আর ৫০০ বছর আগে জুলিয়েট ছিল ১৩ বছর বয়সের। এর মাধ্যমে আমরা কী বুঝতে পারি? বুঝতে পারি-এ বিষয়টি সময় ও কালের পরিক্রমায় পরিবর্তন হয়।
ফ্রান্সের আইন প্রণয়নের ইতিহাসে ‘নেপোলিয়নিক কোড’ নামের একটি আইন রয়েছে। এটি মাত্র ২০০ বছর আগের আইন। এতে মেয়েদের বিয়ের আইনসংগত বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ১৩ বছর।
এখানে আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, এ বয়সসীমা ছিল আইনসংগত বয়সসীমা। ফলে সে যুগের মেয়েদের বয়ঃসন্ধি ও বিয়ের বয়স আরও আগেই হয়ে যেত বলে আমরা বুঝতে পারি।
১৫, ১৬, ১৭ শতাব্দীর ইংল্যান্ডে এমন অল্প বয়সে বিয়ে সংঘটিত হওয়ার শত শত ‘কোর্ট রেকর্ড’ আছে। এমনকী ‘প্রি-কলোনিয়াল’ আমেরিকায়ও ১৬, ১৭ শতাব্দীতে ১০, ১১, ১২ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার ‘কোর্ট রেকর্ড’ পাওয়া যায়।
ম্যাসাচুসেটসের একটি বিখ্যাত কেইসে আমরা দেখতে পাই—১০ বছরের স্ত্রী তার স্বামীর নিকট তালাক চাইছে! তাহলে তার বিয়ে কখন হয়েছে? আপনারাই চিন্তা করু���। অবশ্যই তালাক চাওয়ার আগে! এটা ছিল ৩০০ বছর আগে ‘প্রি-কলোনিয়াল’ আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের ঘটনা।
সুতরাং আমাদের কাছে যখন নবিজি ﷺ ও আয়িশা (রা.)-এর বিয়ের বয়স অগ্রহণযোগ্য মনে হবে, তখন মাথায় আনতে হবে, বিষয়টি সে যুগের মানুষের জন্য মোটেই অগ্রহণযোগ্য কিছু ছিল না।
ঐতিহাসিকভাবে বিষয়টি প্রমাণিত যে, সময় ও সংস্কৃতির পরিবর্তন অনুযায়ী বয়ঃসন্ধিকাল দেরিতে শুরু হচ্ছে। বুদ্ধিমত্তার বিকাশও দেরিতে হচ্ছে—আমরা সকলেই তা জানি। আর নয় বছর বয়সে আয়িশা (রা.) যদি শারীরিকভাবে ও বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে পরিপূর্ণ হয়ে থাকেন, তাহলে নবিজি ﷺ তাঁর সাথে একান্ত সময় কাটিয়ে কোনো অন্যায় করেননি।
সুতরাং এ ক্ষেত্রে তাঁর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, আয়িশা (রা.)-এর বিয়ের বয়স তাঁর সময়কালে এবং অতীতে সমস্যার কিছু ছিল না। কেবল বর্তমানেই এটাকে সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা না করেই।
আর আমি এটাও বলছি না যে অতীতের এ ঘটনাকে কাট-পেস্ট করে বর্তমানেও তেমনটাই করতে হবে। এখন আমাদের সময়ের চাহিদার আলোকে বিয়ের ন্যূনতম বয়স নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কারণ, আমাদের যুগের নারী-পুরুষ আর অতীতের নারী-পুরুষ এক নয়।
শারীরিক ও জৈবিক গঠন, বুদ্ধিমত্তা কোনো দিক থেকেই সমান নয়। সুতরাং ইসলামি সমাজ যৌক্তিকভাবে বিয়ের ন্যূনতম বয়স প্রবর্তন করতে চাইলে এতে সমস্যা নেই। শরিয়াহ কখনো এটা বলে না, সময়ের চাহিদার আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
হারাম হলো—নবিজি ﷺ তাঁর সময় ও যুগে যেসব কাজ করেছেন, সেগুলোর সমালোচনা করা। এটা কুফুরি। সেগুলোকে অনৈতিক মনে করা কুফুরি।
তবে এটাও কেউ বলছে না যে আয়িশা (রা.)-এর বিয়ের বয়সকে আমাদের সময়ে অনুসরণ করে অতি অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিতে হবে। আর সময় ও যুগের চাহিদার ভিত্তিতে বিয়ের বয়সসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়াতে বাধা নেই।
যদি মনে হয় স্থান, কাল ও পাত্রভেদে বিয়ের ন্যূনতম বয়স বাড়ানো উচিত, আমরা তা বাড়াতে পারি। বর্তমানে আমেরিকার অনেক অঞ্চলেই বিয়ের ন্যূনতম বিয়স ১৫-১৬ বছর বয়স। আমেরিকায় শর্তসাপেক্ষে ১২-১৩ বছর বয়সে বিয়ের অনুমোদন দেওয়া কেসের সংখ্যা সম্ভবত ১ ডজনের বেশি হবে। বর্তমান যুগেই এত কম বয়সে বিয়ে হচ্ছে। আজকাল আমেরিকার মিডল স্কুল ও হাইস্কুলের বাচ্চারা তো অনেক আগেই যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে (রা.) সব ক্ষেত্রে হয় না হয়তো)।
সুতরাং কেউ যদি নবিজি ﷺ-কে আয়িশা (রা.)-এর বিয়ের বয়স নিয়ে দোষারোপ করে, তবে সেটা তার মূর্খতার পরিচয় বহন করে।
ড. ইয়াসির কাদি রচিত নবিজির স্ত্রীগণের জীবনী নিয়ে বই ‘বিশ্বাসীদের মা’-এ এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।
1 note · View note
nahimnopur · 5 months
Text
বাংলাদেশে কালো মেয়েদের কি বলে ডাকে !!
আপনি হয়তো বলবেন মায়াবতী। মায়াবতী বললেও রুপবতী কিন্তু বলেনা। খেয়াল করে দেখুন মায়াবতী বলা হলেও তা খুব খুশি হয়ে বলা হয়না, কোথায় যেনো একটা করুণা করা হয়েছে বলে মনে হয়।
নাটকে, সিনেমায়, অনুষ্ঠান উপস্থাপনায়, সংবাদ পাঠে; সব জায়গায় কিন্তু ফর্সা মেয়ে। গায়ের রঙ ফর্সা না অথচ খুব যোগ্যতা রাখে এই সকল বিষয়ে, এমন কেউ কালেভদ্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে দেখেছেন কি?
একজন সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে আর একজন লেখকের দৃষ্টিকোণ থেকে কালো মেয়ে আসলে কেমন। রবীন্দ্রনাথ ঠা���ুর কালো রঙকে গ্লোরিফাই করে লিখেছিলেন- "কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি!" অথচ তার উপন্যাসের নায়িকাদের গায়ের রঙ কি আসলেই কালো ছিল? রবীন্দ্রনাথের চোখে কালো রঙের অর্থ কি দাঁড়ায়।
অনেকে বলতে পারেন রবীন্দ্রনাথ ছিলেন আগের মানুষ,তার সমাজ অন্যরকম ছিল, চিন্তাজগত অন্যরকম ছিল। সেই সমাজ আর বর্তমানকালের মধ্যে অনেক তফাত। তাহলে কাজী নজরুল ইসলামের সেই সংগীত, ‘‘আমার কালো মেয়ের পায়ের তলায়, দেখে যা আলোর নাচন।'' অথবা শামসুর রাহমানের "কালো মেয়ের জন্যে পংক্তিমালা" যা বার বার পড়লেও তৃপ্তি মেটেনা। সবটাই কি তাহলে তুচ্ছ ছিল?
আচ্ছা নিরপেক্ষ ভাবে দেখুন তো, ঘুম ভেঙ্গেই কোনো কৃষ্ণকলিকে পাশে শুয়ে থাকতে দেখলে আপনার কেমন লাগবে? গভীর আবেগে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে পারবেন? সমুদ্রতটে বসে কোনো কৃষ্ণ সুন্দরীর চোখে চোখ রেখে আবেগ ভরা কথা ভাবতে পারবেন? যদি সবগুলো প্রশ্নের উত্তর ' হ্যাঁ ' হয় তাহলে আপনি আসলেই প্রেমিক। একজন বর্ণ গবেষক প্রেমিক হতে পারে না।
আমাদের সমাজে কালো মেয়ে জন্মাতে না জন্মাতেই তার গায়ের রঙের কারণে হীনমন্যতায় ভুগতে হয়। রবীন্দ্রনাথের যুগ না হয় বাদ দিলাম,এই একুশ শতকেও গায়ের রং কালো হলে "মেয়ের বিয়ে কী করে হবে, একে আদো পার করা যাবে কি যাবেনা " এই ভাবনায় কাহিল হতে হয় বাবা-মাকে।
জন্মের পর থেকেই এক অসমাপ্ত যুদ্ধ চলে মেয়েকে ফর্সা করার পেছনে। কাঁচা হলুদ, দুধের সর, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী, শত রকমের এইবাটা সেইবাটা এর কোনো শেষ নেই। হাজার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয় কাল রঙের চামড়ার আরালে।
ভেবে দেখেন, এই পিতাই যদি তার কন্যার কালো কপালে চুমু খেয়ে বলতেন, "নীল রঙের শাড়ি পরলে আমার ব্ল্যাক প্রিন্সেসটাকে জলপরীর মতো লাগে। " এই মা যদি তার কালো মেয়েকে বলতেন " ঝিলের টোল খাওয়া পানির মত তার মায়াময় মুখ।" তাহলে মেয়েটা হয়তো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অকারণেই বিষণ্ণ হতো না। বিষণ্ণ জলপরী হয়তো আট-দশটা মেয়ের মত বেড়ে উঠতো।
ভালবাসা যে দিতে জানে সে কেনো ভালবাসা পাবেনা। সারাটি জীবন "কালো মেয়ে" নামক এক জল ছাপ পিঠে লাগিয়ে অন্যকে ভালবেসে গেছে হয়তো একটু ভালবাসার দৃষ্টি তার উপরে কেউ রাখবে বলে। হয়তো বলা হয়না তার মুখ ফুটে, সমাজ তাকে শিখিয়েছে, দেখিয়েছে এত বঞ্চনা, এত লাঞ্ছনা।
তবু সে ভালবাসে। ফেরার পথে ভালবাসার সেই বেকার মানুষটির হাতে যখন দুটো পাঁচশো টাকার নোট গুঁজে দিয়ে বলে- "সিগারেটটা কম খেয়ো!" তখন দুনিয়ার কোনো শক্তি নেই সেই মায়াময় চেহারাটাকে অগ্রাহ্য করার।
একটা কথা মনে পরে গেলো- "অন্ধকারে একটা সুন্দরী মেয়ে যেমন, কালো মেয়েও তেমন; পার্থক্যটা শুধু আলোতে!"
সংগৃহীত
0 notes
quransunnahdawah · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সূরাতুল আসর এর শিক্ষা কি?
থিম এবং বিষয়বস্তু। এই সূরাটি শেখায় যে সমস্ত মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে, যারা ইমান (ইসলামে বিশ্বাসী), সৎ কাজ করে এবং অন্যদেরকে হক (সত্য, অধিকার, বাস্তবতা) স্মরণ করিয়ে দেয় এবং অন্যদেরকে সবর (ধৈর্য) স্মরণ করিয়ে দেয়।
সূরা আসরের গুরুত্ব?
সূরা আল-আসর জীবনের দর্শনকে সংক্ষিপ্ত করে এবং আমাদের শেখায় যে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয় যদি না সে বিশ্বাস করে এবং ভাল কাজ করে । এটি ধৈর্য, ​​সততা, নম্রতা এবং ভাল কাজগুলিকে উত্সাহিত করে।
 
সুরা আসর: ৩টি শিক্ষা ও নির্দেশনা
সুরা আসর কোরআনের ১০৩তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা ৩টি রুকু ১টি। সুরা আসর কুরআনের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সুরাগুলোর একটি। তবে এর অর্থ ব্যাপক ও তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা এ সুরায় মাত্র তিনটি আয়াতে মানুষের মুক্তির উপায় বলে দিয়েছেন। ইমাম শাফেঈ (রহ.) বলেন, আল্লাহ যদি কুরআনের শুধু এই সুরাটিই নাজিল করতেন, তাহলে এটিই মানুষের জন্য যথেষ্ট হতো।
এ সুরায় আল্লাহ যুগের কসম করে বলেছেন, মানুষের মধ্যে যারা ঈমান বা স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস রাখে না, সৎকর্ম ও অপরের কল্যাণ কামনা করে না, সদুপদেশ দেয় না, তারা ক্ষতিগ্রস্ত।
সুরা আসর (১) মহাকালের শপথ! (২) মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। (৩) কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্য ধারণে পরস্পরকে উদ্ধুদ্ধ করে।
৩টি শিক্ষা ও নির্দেশনা ১. মানুষ দুনিয়ায় প্রচুর সাফল্য, সম্মান ও অর্থবিত্ত অর্জন করলেও সে ক্ষতিগ্রস্ত যদি সে কুফর ও মন্দ আমলের মধ্যে থাকে।
২. যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে তারাই সত্যিকার কৃতকার্য ও সফলকাম।
৩. মুমিনদের একটি আবশ্যিক গুণ হলো তারা পরস্পরের কল্যাণকামী হবে; পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেকে, ধৈর্যের উপদেশ দেবে।
সূরা আসর থেকে শিক্ষা
ইমাম শাফেয়ি রহিমাহুল্লাহ বলেন, সুরা আসর ব্যতীত অন্য কোনো সুরা যদি অবতীর্ণ না হতো, তাহলে মানুষের হিদায়াতের জন্য এটিই যথেষ্ঠ হতো।-রুহুল মাআনি
‘যদি কেউ এ সুরায় গভীরভাবে দৃষ্টি দেয় তাহলে সে তাতে একটি উন্নত, সুন্দর, শান্তিময়, পরিপূর্ণ এবং সবার জন্য কল্যাণকর সমাজের চিত্র দেখতে পাবে।’ -আদওয়াউল বায়ান ৯: ৫০৭
সময় বা যুগ অত্যন্ত মুল্যবান। যুগের গর্ভেই এক জাতির উত্থান ঘটে, অন্য জাতির আসে পতন। রাত আসে। দিন যায়। পরিবর্তিত হয় পরিবেশ ও মানব সমাজ। কখনো এমন সব পরিবর্তন আসে যা মানুষ কল্পনাও করতে পারে না। কখনো বা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পরিবর্তন আসে এ সময়ের ব্যবধানেই। তাই এ যুগ বা সময় বড় বিস্ময়কর।
সুরার শুরুতে শপথ করলেন কেন? কোনো বস্তু বা বিষয়ের শপথ করলে তার গুরুত্ব বেড়ে যায়। সময় এমনই এক বিস্ময়ের আধার, আমরা জানি না অতীতকালে এটা কী কারণে হয়েছে। আমরা জানি না ভবিষ্যতে কী ঘটতে যাচ্ছে। এমনকি আমাদের নিজেদের জীবন, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সম্পর্কে আমরা বলতে পারি না, আগামী কালের পরিবশে ঠিক আজকের মত থাকবে কি থাকবে না! দেখা যায়, মানুষ একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে; যা আগামীকাল সে বাস্তবায়ন করবে, অর্জন করবে এটা সেটা অনেক কিছু। সে দৃঢ় প্রত্যয়ী থাকে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের। সব উপকরণ থাকে হাতের নাগালে। সব মাধ্যম থাকে নখদর্পনে। অভাব নেই কোনো কিছুর। তবুও এ ‘সময়’ নামক বস্তুটির ব্যবধানে এমন কিছু ঘটে যায়, যা তার সব কিছু তছনছ করে দেয়। সে ভাবতেই পারে না- কেন এমন হল। অনেক বড় বড় হিসাব সে মিলিয়েছে কিন্তু এর হিসাব মেলাতে পারছে না। এটাই হল ‘সময়’। আল্লাহ তাআলা এর প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই বলেছেন, ‘ওয়াল আসর’ – শপথ সময়ের।
দ্বিতীয় আয়াত : ‘অবশ্যই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে’ যদিও এখানে পুরো মানব জাতিকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ পুরো মানবগোষ্ঠি ক্ষতিগ্রস্ত। তারা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে যাদের মধ্যে চারটি গুণ আছে তারা ব্যতীত। এ চারটি গুণের অধিকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত নয়। তারা সর্বদা লাভবান। মর্যাদাবান ইহকাল ও পরকালে। পরবর্তী আয়াতে এ চারটি গুণের কথাই বর্ণিত হয়েছে।
তৃতীয় আয়াত : ‘তবে তারা নয়; যারা ইমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।’
চারটি গুণ যাদের মধ্যে থাকবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না- এক. ইমান। দুই. সৎকাজ বা আমালে সালেহ। তিন. অন্যকে সত্যের পথে আহবান। চার. অন্যকে ধৈর্যের উপদেশ দান প্রথম দুটো আত্মগুণ, আর অপর দুটো পরোপকার গুণ। প্রথম গুণদুটি দ্বারা একজন মুসলিম নিজেকে পরিপূর্ণ করে, আর অপর দুইগুণ দ্বারা অন্যকে পরিপূর্ণ করার সুযোগ পায়।
প্রথম গুণটি হল ইমান। ইমানের পর নেক আমল বা সৎকর্মের স্থান। সৎকর্ম কম বেশি সব মানুষই করে থাকে। তবে ইমান নামক আদর্শ সবাই বহন করে না। ফলে তাদের আমল বা কর্মগুলো দিয়ে লাভবান হওয়ার পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। সৎকর্মশীল মানুষ যদি ইমান নামের আদর্শকে গ্রহণ করে; তাহলে এ সৎকর্ম দ্বারা তারা দুনিয়াতে যেমন লাভবান হবে আখেরাতেও তারা অনন্তকাল ধরে এ লাভ ভোগ করবে।
এ জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রথমে ইমানের কথা বলেছেন। যখন মানুষ ইমান স্থাপন করল, তারপর সৎকর্ম করল, তখন সে নিজেকে পরিপূর্ণ করে নিল। নিজেকে লাভ, সফলতা ও কল্যাণের দিকে পরিচালিত করল। কিন্তু ইমানদার হিসাবে তার দায়িত্ব কি শেষ হয়ে গেল? সে কি অন্য মানুষ সম্পর্কে বে-খবর থাকবে? অন্যকে কি সে তার যাপিত কল্যাণকর, সফল জীবনের প্রতি আহবান করবে না? সে তো মুসলিম। তাদের আভির্ভাব ঘটানো হয়েছে তো বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য। আর এ জন্যই তো মু���লিমরা শ্রেষ্ঠ।
আল্লাহ তাআলা তো বলেই দিয়েছেন: ‘তোমরা হলে সর্বোত্তম জাতি, যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ইমান আনবে।’ -আলে ইমরান : ১১০
অতএব নিজেকে ঠিক করার পর তার দায়িত্ব হবে অন্যকে সত্য ও কল্যাণের পথে আহবান করা। এ আহবান করতে গিয়ে ও আহবানে সাড়া দিতে গিয়ে যে বিপদ-মুসিবত, অত্যাচার-নির্যাতন আসবে তাতে ধৈর্য ধারণের জন্য একে অন্যকে উপদেশ দেয়া কর্তব্য।
সূরা আসরের ৪ টি আয়াতের ব্যাখ্যা
youtube
Bangla Tafseer Surah Asr
সূরা আসর বাংলা তাফসীর
https://www.youtube.com/watch?v=Y9jKfde9Nmc
 
সূরা আসরের সম্পূর্ণ তাফসির
youtube
সূরা আসর নিয়ে চমৎকার একটি প্রশ্ন
youtube
সুরা আসর তাফসীর
https://www.youtube.com/watch?v=iXpqc2d2hbM&t=224s
জান্নাতে যাওয়ার চারটি শর্ত 
https://www.youtube.com/watch?v=4VyzWJ-u6x4
এটা কি সত্য যারা মুসলিম তারাই জান্নাতে যাবে আর যারা অমুসলিম তারা জাহান্নামে যাবে?
https://www.youtube.com/watch?v=_wN7BUErcOA&t=1s
 
 
সূরা আসর জান্নাতের পথ দেখায়
মানুষ যখন ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, এবং সৎকাজ করে, তখন সে নিজেকে পরিপূর্ণ করে তোলে। তিনি নিজেকে লাভ, সাফল্য এবং কল্যাণের দিকে নিয়ে যান। কিন্তু বিশ্বাসী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব শেষ হয়না । তিনি অন্যদেরও ডাকবেন একটি সমৃদ্ধ, সফল জীবনের দিকে। মুসলমানদের উত্থান হয়েছে বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য। তাঁর দায়িত্ব হলো নিজের সাথে অন্যকেও সত্যের দিকে ডাকা।
youtube
youtube
youtube
সুরা আসরের শিক্ষা
সূরা আসর এ আল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু শিক্ষা ও চমৎকার হেদায়েত রেখেছেন। মাত্র তিন আয়াত বিশিষ্ট ছোট্ট এ সূরাটি ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির স্পষ্ট সনদ। ‘আল্লাহ যদি কুরআনে অন্য কোনো সূরা নাযিল না করে শুধু সূরা আল আসর নাযিল করতেন তাহলে এটা মানুষের হেদায়াতের জন্য যথেষ্ট হত।'(মিফতাহুস সাআদাহ : ইমাম শাফেয়ি) যদি কেউ এ সূরায় গভীরভাবে দৃষ্টি দেয় তাহলে সে তাতে একটি উন্নত, সুন্দর, শান্তিময়, পরিপূর্ণ এবং সবার জন্য কল্যাণকর সমাজের চিত্র দেখবে।  (আদওয়াউল বায়ান : ৯/৫০৭)
সূরা আসর জান্নাতের পথ দেখায়
সুরা আসরের শিক্ষা
সুরা আসর: শিক্ষা ও নির্দেশনা
0 notes
tawhidrisalatakhirah · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সূরাতুল আসর এর শিক্ষা কি?
থিম এবং বিষয়বস্তু। এই সূরাটি শেখায় য�� সমস্ত মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে, যারা ইমান (ইসলামে বিশ্বাসী), সৎ কাজ করে এবং অন্যদেরকে হক (সত্য, অধিকার, বাস্তবতা) স্মরণ করিয়ে দেয় এবং অন্যদেরকে সবর (ধৈর্য) স্মরণ করিয়ে দেয়।
সূরা আসরের গুরুত্ব?
সূরা আল-আসর জীবনের দর্শনকে সংক্ষিপ্ত করে এবং আমাদের শেখায় যে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয় যদি না সে বিশ্বাস করে এবং ভাল কাজ করে । এটি ধৈর্য, ​​সততা, নম্রতা এবং ভাল কাজগুলিকে উত্সাহিত করে।
 
সুরা আসর: ৩টি শিক্ষা ও নির্দেশনা
সুরা আসর কোরআনের ১০৩তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা ৩টি রুকু ১টি। সুরা আসর কুরআনের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সুরাগুলোর একটি। তবে এর অর্থ ব্যাপক ও তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা এ সুরায় মাত্র তিনটি আয়াতে মানুষের মুক্তির উপায় বলে দিয়েছেন। ইমাম শাফেঈ (রহ.) বলেন, আল্লাহ যদি কুরআনের শুধু এই সুরাটিই নাজিল করতেন, তাহলে এটিই মানুষের জন্য যথেষ্ট হতো।
এ সুরায় আল্লাহ যুগের কসম করে বলেছেন, মানুষের মধ্যে যারা ঈমান বা স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস রাখে না, সৎকর্ম ও অপরের কল্যাণ কামনা করে না, সদুপদেশ দেয় না, তারা ক্ষতিগ্রস্ত।
সুরা আসর (১) মহাকালের শপথ! (২) মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয���েছে। (৩) কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্য ধারণে পরস্পরকে উদ্ধুদ্ধ করে।
৩টি শিক্ষা ও নির্দেশনা ১. মানুষ দুনিয়ায় প্রচুর সাফল্য, সম্মান ও অর্থবিত্ত অর্জন করলেও সে ক্ষতিগ্রস্ত যদি সে কুফর ও মন্দ আমলের মধ্যে থাকে।
২. যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে তারাই সত্যিকার কৃতকার্য ও সফলকাম।
৩. মুমিনদের একটি আবশ্যিক গুণ হলো তারা পরস্পরের কল্যাণকামী হবে; পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেকে, ধৈর্যের উপদেশ দেবে।
সূরা আসর থেকে শিক্ষা
ইমাম শাফেয়ি রহিমাহুল্লাহ বলেন, সুরা আসর ব্যতীত অন্য কোনো সুরা যদি অবতীর্ণ না হতো, তাহলে মানুষের হিদায়াতের জন্য এটিই যথেষ্ঠ হতো।-রুহুল মাআনি
‘যদি কেউ এ সুরায় গভীরভাবে দৃষ্টি দেয় তাহলে সে তাতে একটি উন্নত, সুন্দর, শান্তিময়, পরিপূর্ণ এবং সবার জন্য কল্যাণকর সমাজের চিত্র দেখতে পাবে।’ -আদওয়াউল বায়ান ৯: ৫০৭
সময় বা যুগ অত্যন্ত মুল্যবান। যুগের গর্ভেই এক জাতির উত্থান ঘটে, অন্য জাতির আসে পতন। রাত আসে। দিন যায়। পরিবর্তিত হয় পরিবেশ ও মানব সমাজ। কখনো এমন সব পরিবর্তন আসে যা মানুষ কল্পনাও করতে পারে না। কখনো বা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পরিবর্তন আসে এ সময়ের ব্যবধানেই। তাই এ যুগ বা সময় বড় বিস্ময়কর।
সুরার শুরুতে শপথ করলেন কেন? কোনো বস্তু বা বিষয়ের শপথ করলে তার গুরুত্ব বেড়ে যায়। সময় এমনই এক বিস্ময়ের আধার, আমরা জানি না অতীতকালে এটা কী কারণে হয়েছে। আমরা জানি না ভবিষ্যতে কী ঘটতে যাচ্ছে। এমনকি আমাদের নিজেদের জীবন, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সম্পর্কে আমরা বলতে পারি না, আগামী কালের পরিবশে ঠিক আজকের মত থাকবে কি থাকবে না! দেখা যায়, মানুষ একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে; যা আগামীকাল সে বাস্তবায়ন করবে, অর্জন করবে এটা সেটা অনেক কিছু। সে দৃঢ় প্রত্যয়ী থাকে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের। সব উপকরণ থাকে হাতের নাগালে। সব মাধ্যম থাকে নখদর্পনে। অভাব নেই কোনো কিছুর। তবুও এ ‘সময়’ নামক বস্তুটির ব্যবধানে এমন কিছু ঘটে যায়, যা তার সব কিছু তছনছ করে দেয়। সে ভাবতেই পারে না- কেন এমন হল। অনেক বড় বড় হিসাব সে মিলিয়েছে কিন্তু এর হিসাব মেলাতে পারছে না। এটাই হল ‘সময়’। আল্লাহ তাআলা এর প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই বলেছেন, ‘ওয়াল আসর’ – শপথ সময়ের।
দ্বিতীয় আয়াত : ‘অবশ্যই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে’ যদিও এখানে পুরো মানব জাতিকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ পুরো মানবগোষ্ঠি ক্ষতিগ্রস্ত। তারা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে যাদের মধ্যে চারটি গুণ আছে তারা ব্যতীত। এ চারটি গুণের অধিকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত নয়। তারা সর্বদা লাভবান। মর্যাদাবান ইহকাল ও পরকালে। পরবর্তী আয়াতে এ চারটি গুণের কথাই বর্ণিত হয়েছে।
তৃতীয় আয়াত : ‘তবে তারা নয়; যারা ইমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।’
চারটি গুণ যাদের মধ্যে থাকবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না- এক. ইমান। দুই. সৎকাজ বা আমালে সালেহ। তিন. অন্যকে সত্যের পথে আহবান। চার. অন্যকে ধৈর্যের উপদেশ দান প্রথম দুটো আত্মগুণ, আর অপর দুটো পরোপকার গুণ। প্রথম গুণদুটি দ্বারা একজন মুসলিম নিজেকে পরিপূর্ণ করে, আর অপর দুইগুণ দ্বারা অন্যকে পরিপূর্ণ করার সুযোগ পায়।
প্রথম গুণটি হল ইমান। ইমানের পর নেক আমল বা সৎকর্মের স্থান। সৎকর্ম কম বেশি সব মানুষই করে থাকে। তবে ইমান নামক আদর্শ সবাই বহন করে না। ফলে তাদের আমল বা কর্মগুলো দিয়ে লাভবান হওয়ার পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। সৎকর্মশীল মানুষ যদি ইমান নামের আদর্শকে গ্রহণ করে; তাহলে এ সৎকর্ম দ্বারা তারা দুনিয়াতে যেমন লাভবান হবে আখেরাতেও তারা অনন্তকাল ধরে এ লাভ ভোগ করবে।
এ জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রথমে ইমানের কথা বলেছেন। যখন মানুষ ইমান স্থাপন করল, তারপর সৎকর্ম করল, তখন সে নিজেকে পরিপূর্ণ করে নিল। নিজেকে লাভ, সফলতা ও কল্যাণের দিকে পরিচালিত করল। কিন্তু ইমানদার হিসাবে তার দায়িত্ব কি শেষ হয়ে গেল? সে কি অন্য মানুষ সম্পর্কে বে-খবর থাকবে? অন্যকে কি সে তার যাপিত কল্যাণকর, সফল জীবনের প্রতি আহবান করবে না? সে তো মুসলিম। তাদের আভির্ভাব ঘটানো হয়েছে তো বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য। আর এ জন্যই তো মুসলিমরা শ্রেষ্ঠ।
আল্লাহ তাআলা তো বলেই দিয়েছেন: ‘তোমরা হলে সর্বোত্তম জাতি, যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ইমান আনবে।’ -আলে ইমরান : ১১০
অতএব নিজেকে ঠিক করার পর তার দায়িত্ব হবে অন্যকে সত্য ও কল্যাণের পথে আহবান করা। এ আহবান করতে গিয়ে ও আহবানে সাড়া দিতে গিয়ে যে বিপদ-মুসিবত, অত্যাচার-নির্যাতন আসবে তাতে ধৈর্য ধারণের জন্য একে অন্যকে উপদেশ দেয়া কর্তব্য।
সূরা আসরের ৪ টি আয়াতের ব্যাখ্যা
youtube
Bangla Tafseer Surah Asr
সূরা আসর বাংলা তাফসীর
https://www.youtube.com/watch?v=Y9jKfde9Nmc
 
সূরা আসরের সম্পূর্ণ তাফসির
youtube
সূরা আসর নিয়ে চমৎকার একটি প্রশ্ন
youtube
সুরা আসর তাফসীর
https://www.youtube.com/watch?v=iXpqc2d2hbM&t=224s
জান্নাতে যাওয়ার চারটি শর্ত 
https://www.youtube.com/watch?v=4VyzWJ-u6x4
এটা কি সত্য যারা মুসলিম তারাই জান্নাতে যাবে আর যারা অমুসলিম তারা জাহান্নামে যাবে?
https://www.youtube.com/watch?v=_wN7BUErcOA&t=1s
 
 
সূরা আসর জান্নাতের পথ দেখায়
মানুষ যখন ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, এবং সৎকাজ করে, তখন সে নিজেকে পরিপূর্ণ করে তোলে। তিনি নিজেকে লাভ, সাফল্য এবং কল্যাণের দিকে নিয়ে যান। কিন্তু বিশ্বাসী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব শেষ হয়না । তিনি অন্যদেরও ডাকবেন একটি সমৃদ্ধ, সফল জীবনের দিকে। মুসলমানদের উত্থান হয়েছে বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য। তাঁর দায়িত্ব হলো নিজের সাথে অন্যকেও সত্যের দিকে ডাকা।
youtube
youtube
youtube
সুরা আসরের শিক্ষা
সূরা আসর এ আল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু শিক্ষা ও চমৎকার হেদায়েত রেখেছেন। মাত্র তিন আয়াত বিশিষ্ট ছোট্ট এ সূরাটি ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির স্পষ্ট সনদ। ‘আল্লাহ যদি কুরআনে অন্য কোনো সূরা নাযিল না করে শুধু সূরা আল আসর নাযিল করতেন তাহলে এটা মানুষের হেদায়াতের জন্য যথেষ্ট হত।'(মিফতাহুস সাআদাহ : ইমাম শাফেয়ি) যদি কেউ এ সূরায় গভীরভাবে দৃষ্টি দেয় তাহলে সে তাতে একটি উন্নত, সুন্দর, শান্তিময়, পরিপূর্ণ এবং সবার জন্য কল্যাণকর সমাজের চিত্র দেখবে।  (আদওয়াউল বায়ান : ৯/৫০৭)
সূরা আসর জান্নাতের পথ দেখায়
সুরা আসরের শিক্ষা
সুরা আসর: শিক্ষা ও নির্দেশনা
0 notes
ilyforallahswt · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
সূরাতুল আসর এর শিক্ষা কি?
থিম এবং বিষয়বস্তু। এই সূরাটি শেখায় যে সমস্ত মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে, যারা ইমান (ইসলামে বিশ্বাসী), সৎ কাজ করে এবং অন্যদেরকে হক (সত্য, অধিকার, বাস্তবতা) স্মরণ করিয়ে দেয় এবং অন্যদেরকে সবর (ধৈর্য) স্মরণ করিয়ে দেয়।
সূরা আসরের গুরুত্ব?
সূরা আল-আসর জীবনের দর্শনকে সংক্ষিপ্ত করে এবং আমাদের শেখায় যে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয় যদি না সে বিশ্বাস করে এবং ভাল কাজ করে । এটি ধৈর্য, ​​সততা, নম্রতা এবং ভাল কাজগুলিকে উত্সাহিত করে।
 
সুরা আসর: ৩টি শিক্ষা ও নির্দেশনা
সুরা আসর কোরআনের ১০৩তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা ৩টি রুকু ১টি। সুরা আসর কুরআনের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সুরাগুলোর একটি। তবে এর অর্থ ব্যাপক ও তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা এ সুরায় মাত্র তিনটি আয়াতে মানুষের মুক্তির উপায় বলে দিয়েছেন। ইমাম শাফেঈ (রহ.) বলেন, আল্লাহ যদি কুরআনের শুধু এই সুরাটিই নাজিল করতেন, তাহলে এটিই মানুষের জন্য যথেষ্ট হতো।
এ সুরায় আল্লাহ যুগের কসম করে বলেছেন, মানুষের মধ্যে যারা ঈমান বা স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস রাখে না, সৎকর্ম ও অপরের কল্যাণ কামনা করে না, সদুপদেশ দেয় না, তারা ক্ষতিগ্রস্ত।
সুরা আসর (১) মহাকালের শপথ! (২) মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। (৩) কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্য ধারণে পরস্পরকে উদ্ধুদ্ধ করে।
৩টি শিক্ষা ও নির্দেশনা ১. মানুষ দুনিয়ায় প্রচুর সাফল্য, সম্মান ও অর্থবিত্ত অর্জন করলেও সে ক্ষতিগ্রস্ত যদি সে কুফর ও মন্দ আমলের মধ্যে থাকে।
২. যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে তারাই সত্যিকার কৃতকার্য ও সফলকাম।
৩. মুমিনদের একটি আবশ্যিক গুণ হলো তারা পরস্পরের কল্যাণকামী হবে; পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেকে, ধৈর্যের উপদেশ দেবে।
সূরা আসর থেকে শিক্ষা
ইমাম শাফেয়ি রহিমাহুল্লাহ বলেন, সুরা আসর ব্যতীত অন্য কোনো সুরা যদি অবতীর্ণ না হতো, তাহলে মানুষের হিদায়াতের জন্য এটিই যথেষ্ঠ হতো।-রুহুল মাআনি
‘যদি কেউ এ সুরায় গভীরভাবে দৃষ্টি দেয় তাহলে সে তাতে একটি উন্নত, সুন্দর, শান্তিময়, পরিপূর্ণ এবং সবার জন্য কল্যাণকর সমাজের চিত্র দেখতে পাবে।’ -আদওয়াউল বায়ান ৯: ৫০৭
সময় বা যুগ অত্যন্ত মুল্যবান। যুগের গর্ভেই এক জাতির উত্থান ঘটে, অন্য জাতির আসে পতন। রাত আসে। দিন যায়। পরিবর্তিত হয় পরিবেশ ও মানব সমাজ। কখনো এমন সব পরিবর্তন আসে যা মানুষ কল্পনাও করতে পারে না। কখনো বা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পরিবর্তন আসে এ সময়ের ব্যবধানেই। তাই এ যুগ বা সময় বড় বিস্ময়কর।
সুরার শুরুতে শপথ করলেন কেন? কোনো বস্তু বা বিষয়ের শপথ করলে তার গুরুত্ব বেড়ে যায়। সময় এমনই এক বিস্ময়ের আধার, আমরা জানি না অতীতকালে এটা কী কারণে হয়েছে। আমরা জানি না ভবিষ্যতে কী ঘটতে যাচ্ছে। এমনকি আমাদের নিজেদের জীবন, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সম্পর্কে আমরা বলতে পারি না, আগামী কালের পরিবশে ঠিক আজকের মত থাকবে কি থাকবে না! দেখা যায়, মানুষ একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে; যা আগামীকাল সে বাস্তবায়ন করবে, অর্জন করবে এটা সেটা অনেক কিছু। সে দৃঢ় প্রত্যয়ী থাকে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের। সব উপকরণ থাকে হাতের নাগালে। সব মাধ্যম থাকে নখদর্পনে। অভাব নেই কোনো কিছুর। তবুও এ ‘সময়’ নামক বস্তুটির ব্যবধানে এমন কিছু ঘটে যায়, যা তার সব কিছু তছনছ করে দেয়। সে ভাবতেই পারে না- কেন এমন হল। অনেক বড় বড় হিসাব সে মিলিয়েছে কিন্তু এর হিসাব মেলাতে পারছে না। এটাই হল ‘সময়’। আল্লাহ তাআলা এর প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই বলেছেন, ‘ওয়াল আসর’ – শপথ সময়ের।
দ্বিতীয় আয়াত : ‘অবশ্যই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে’ যদিও এখানে পুরো মানব জাতিকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ পুরো মানবগোষ্ঠি ক্ষতিগ্রস্ত। তারা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে যাদের মধ্যে চারটি গুণ আছে তারা ব্যতীত। এ চারটি গুণের অধিকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত নয়। তারা সর্বদা লাভবান। মর্যাদাবান ইহকাল ও পরকালে। পরবর্তী আয়াতে এ চারটি গুণের কথাই বর্ণিত হয়েছে।
তৃতীয় আয়াত : ‘তবে তারা নয়; যারা ইমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।’
চারটি গুণ যাদের মধ্যে থাকবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না- এক. ইমান। দুই. সৎকাজ বা আমালে সালেহ। তিন. অন্যকে সত্যের পথে আহবান। চার. অন্যকে ধৈর্যের উপদেশ দান প্রথম দুটো আত্মগুণ, আর অপর দুটো পরোপকার গুণ। প্রথম গুণদুটি দ্বারা একজন মুসলিম নিজেকে পরিপূর্ণ করে, আর অপর দুইগুণ দ্বারা অন্যকে পরিপূর্ণ করার সুযোগ পায়।
প্রথম গুণটি হল ইমান। ইমানের পর নেক আমল বা সৎকর্মের স্থান। সৎকর্ম কম বেশি সব মানুষই করে থাকে। তবে ইমান নামক আদর্শ সবাই বহন করে না। ফলে তাদের আমল বা কর্মগুলো দিয়ে লাভবান হওয়ার পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। সৎকর্মশীল মানুষ যদি ইমান নামের আদর্শকে গ্রহণ করে; তাহলে এ সৎকর্ম দ্বারা তারা দুনিয়াতে যেমন লাভবান হবে আখেরাতেও তারা অনন্তকাল ধরে এ লাভ ভোগ করবে।
এ জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রথমে ইমানের কথা বলেছেন। যখন মানুষ ইমান স্থাপন করল, তারপর সৎকর্ম করল, তখন সে নিজেকে পরিপূর্ণ করে নিল। নিজেকে লাভ, সফলতা ও কল্যাণের দিকে পরিচালিত করল। কিন্তু ইমানদার হিসাবে তার দায়িত্ব কি শেষ হয়ে গেল? সে কি অন্য মানুষ সম্পর্কে বে-খবর থাকবে? অন্যকে কি সে তার যাপিত কল্যাণকর, সফল জীবনের প্রতি আহবান করবে না? সে তো মুসলিম। তাদের আভির্ভাব ঘটানো হয়েছে তো বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য। আর এ জন্যই তো মুসলিমরা শ্রেষ্ঠ।
আল্লাহ তাআলা তো বলেই দিয়েছেন: ‘তোমরা হলে সর্বোত্তম জাতি, যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ইমান আনবে।’ -আলে ইমরান : ১১০
অতএব নিজেকে ঠিক করার পর তার দায়িত্ব হবে অন্যকে সত্য ও কল্যাণের পথে আহবান করা। এ আহবান করতে গিয়ে ও আহবানে সাড়া দিতে গিয়ে যে বিপদ-মুসিবত, অত্যাচার-নির্যাতন আসবে তাতে ধৈর্য ধারণের জন্য একে অন্যকে উপদেশ দেয়া কর্তব্য।
সূরা আসরের ৪ টি আয়াতের ব্যাখ্যা
youtube
Bangla Tafseer Surah Asr
সূরা আসর বাংলা তাফসীর
https://www.youtube.com/watch?v=Y9jKfde9Nmc
 
সূরা আসরের সম্পূর্ণ তাফসির
youtube
সূরা আসর নিয়ে চমৎকার একটি প্রশ্ন
youtube
সুরা আসর তাফসীর
https://www.youtube.com/watch?v=iXpqc2d2hbM&t=224s
জান্নাতে যাওয়ার চারটি শর্ত 
https://www.youtube.com/watch?v=4VyzWJ-u6x4
এটা কি সত্য যারা মুসলিম তারাই জান্নাতে যাবে আর যারা অমুসলিম তারা জাহান্নামে যাবে?
https://www.youtube.com/watch?v=_wN7BUErcOA&t=1s
 
 
সূরা আসর জান্নাতের পথ দেখায়
মানুষ যখন ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, এবং সৎকাজ করে, তখন সে নিজেকে পরিপূর্ণ করে তোলে। তিনি নিজেকে লাভ, সাফল্য এবং কল্যাণের দিকে নিয়ে যান। কিন্তু বিশ্বাসী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব শেষ হয়না । তিনি অন্যদেরও ডাকবেন একটি সমৃদ্ধ, সফল জীবনের দিকে। মুসলমানদের উত্থান হয়েছে বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য। তাঁর দায়িত্ব হলো নিজের সাথে অন্যকেও সত্যের দিকে ডাকা।
youtube
youtube
youtube
সুরা আসরের শিক্ষা
সূরা আসর এ আল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু শিক্ষা ও চমৎকার হেদায়েত রেখেছেন। মাত্র তিন আয়াত বিশিষ্ট ছোট্ট এ সূরাটি ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির স্পষ্ট সনদ। ‘আল্লাহ যদি কুরআনে অন্য কোনো সূরা নাযিল না করে শুধু সূরা আল আসর নাযিল করতেন তাহলে এটা মানুষের হেদায়াতের জন্য যথেষ্ট হত।'(মিফতাহুস সাআদাহ : ইমাম শাফেয়ি) যদি কেউ এ সূরায় গভীরভাবে দৃষ্টি দেয় তাহলে সে তাতে একটি উন্নত, সুন্দর, শান্তিময়, পরিপূর্ণ এবং সবার জন্য কল্যাণকর সমাজের চিত্র দেখবে।  (আদওয়াউল বায়ান : ৯/৫০৭)
সূরা আসর জান্নাতের পথ দেখায়
সুরা আসরের শিক্ষা
সুরা আসর: শিক্ষা ও নির্দেশনা
0 notes