Tumgik
#এক যুগ পরে আবারও
lifeis-art · 9 months
Text
Tumblr media Tumblr media
আজ বিশ্ব শাড়ী দিবস
আমি সেরকম ভাবে শাড়ি-প্রেমী নই। নিজের সংগ্রহে নানা ধরনের শাড়ি থাকা তো দূরের কথা, বেশীরভাগ শাড়িই আমি চিনিনা-নামও জানিনা। সংগ্রহে নানা ধরনের শাড়ি না থাকায় বিন্দুমাত্র আফসোস না হলেও শাড়ির বিষয়ে ন্যূনতম জ্ঞান না থাকায় খারাপলাগা আছে বৈকি!
শাড়ির কথা উঠলেই যে কয়েকজন মানুষের কথা মনে পড়ে, তাদের মধ্যে একজন হলেন আমার ঠাম্মি। আমার ঠাম্মির দুই আলমারি ভর্তি শাড়ি থাকার পরেও নিত্য-নতুন শাড়ি কেনা, জমানো আর বিশেষ করে তাদের যত্ন নেওয়ার বহর দেখে আত্মীয়স্বজন- বন্ধুবান্ধবমহলে আলোচনা-সমালোচনা চলতেই থাকতো। সামনাসামনি না পারলেও পেছনে সবাইই বলতো 'শাড়ি তো নয়! যেন যকের ধন! শাড়ির আবার অত যত্নের কি আছে শুনি! দুদিন পরবে, তারপর ফেলে দেবে তা নয়, সব শাড়িই যেন যুগ যুগ ধরে রেখে দেবার পরিকল্পনা!'
আমার ঠাম্মি সেসব পাত্তা না দিয়ে বলতেন 'এক একটা শাড়ি আসলে এক একটা মানুষ। মানুষকে কাছে পেতে হলে যেমন তাকে জানতে-চিনতে-বুঝতে হয়, ভালোবাসতে হয়, আদর-যত্নে ভরিয়ে দিতে হয়, ঠিক তেমনি শাড়িরও যত্ন করতে হয়।'🙂
শাড়িতে ঘামের দাগ পড়ছে কিনা, বর্ষার দিনে শাড়ি পরে বেরোলে নীচের পাড়ের কাছে কাদা-জলের দাগ লাগছে কিনা বা খাবারের দাগ-পানের পিক একটুও লেগে যাচ্ছে কিনা সেসব ব্যাপারে সদা তটস্থ থাকতেন। তিনি সিল্কের সব শাড়ি রাখতেন পাতলা সুতির কাপড়ের একটি ব্যাগে। পরবর্তীকালে ওডোলিন বা ন্যাপথালিন, তার আগে নিমপাতা-কালোজিরে এসব একটি পাতলা কাপড়ের তৈরি ছোট্ট পুঁটলিতে ভরে পুঁটলিটা সেই ব্যাগে রাখতেন। প্রতি ভাদ্রের রৌদ্রে উল্টেপাল্টে সব শাড়ি নিজের হাতে রোদে দিতেন। ঘড়ি ধরে সেসব শাড়ি রোদে রেখে আবার নিজের হাতেই নিয়ে আসতেন পাছে আমরা দেরি করায় শাড়ির রঙ জ্বলে যায়! একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর শাড়ি পালিশ করতে দেওয়ার ব্যাপার তো ছিলোই।
আমাদের বাড়িতে এক কাকু বহু বছর ধরে শাড়ি বিক্রি করতে আসতেন। ঠাম্মী তাঁর বেশীরভাগ শাড়ি সেই কাকুর কাছ থেকেই নিতেন। শেষ কয়েকটা বছর ঠাম্মী কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। মারা যাওয়ার মাসখানেক আগেও কাকু আসায় ঠাম্মী বিছানায় শুয়ে শুয়েই কাকুর দেখানো শাড়ি পছন্দ করছিলেন। রেখেওছিলেন একটা। আমাদের মধ্যেই কেউ কেউ বলে ফেলেছিলাম, 'তুমি আবারও শাড়ি কিনছ? কোনও শাড়িই তো পরা হয় না তোমার। কী করবে এত শাড়ি দিয়ে?'
ঠাম্মী তাঁর সেই পরিচিত গাম্ভীর্যভরা গলায় বলেছিলেন, 'এখন কিনছি। একমাস বাদে হয়তো থাকবো না। তখন কিনবোও না।'
একটু থেমে আবারও বলেছিলেন, 'কে বলেছে শাড়ি শুধু পরার জন্য? এই যে এত অসুস্থ শরীরেও শাড়ি কিনতে ইচ্ছে করে, এই ইচ্ছেটাই জানান দেয় আমি এখনও বেঁচে আছি। যেদিন এই ইচ্ছেরা থাকবে না, আমিও থাকব না।'
আমি যেই শাড়িটা পরে আছি এটা ঠাম্মীর শাড়ি। শাড়িটা কতদিনের পুরনো জানিনা। ঠাম্মী মারা যাওয়ার অনেকটা সময় পরে কোনও এক অনুষ্ঠানে পরেছিলাম। শাড়িটা পরে ভালো করে তোলা কোনও ছবি নেই। খুঁজেপেতে একটা পেলাম, সেটাই পোস্টের সঙ্গে দিলাম। এই পোস্টে আমাকে কেমন লাগছে, আমার ছবিটা কতটা স্পষ্ট তার থেকেও অনেক বড় বিষয় হল ঠাম্মীর শাড়ি, যা নিজেই আস্ত একখানা গল্প।
সত্যিই, শাড়িরা এক-একটা মানুষ, যারা হাত ধরে এক প্রজন্মের মানুষকে অন্য প্রজন্মের মানুষের গল্প বলে। গল্প বলে বিভিন্ন প্রদেশের। গল্প বলে সেইসব খেটে-খাওয়া মানুষের, যারা সুতো বুনে একফালি রঙিন স্বপ্ন তৈরি করতে পারে। 🙂
লেখা : সোহিনী দেবরায়
6 notes · View notes
srkshaju · 4 years
Text
হাজিব আল মানসুর : যে সেনাপতি পরাজিত হননি একটি যুদ্ধেও - ইমরান রাইহান
একজন শাসক। একজন যোদ্ধা। একজন সেনাপতি। জীবনে তিনি ৫৪টি জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন কিন্তু কখনোই পরাজিত হননি। তাঁর পতাকা কখনো ভূলুণ্ঠিত হয়নি। জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যানে তিনি ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত সেনাপতির চেয়ে এগিয়ে থাকবেন। যুদ্ধের ময়দানে তিনি সাথে রাখতেন নিজ হাতে লেখা কুরআনুল কারিম। যখনই সময় পেতেন কুরআনুল কারিম তিলোয়াত করতেন। তাঁর ভয়ে ইউরোপ ছিল তটস্থ। তাঁর মৃত্যুতে তারা ফিরে পেয়েছিল স্বস্তি। তাঁর মৃত্যুও হয়েছিল জিহাদের ময়দানে।
Tumblr media
তিনি মুহাম্মদ ইবনু আবদিল্লাহ ইবনু আবি আমের। ইতিহাস তাঁকে চেনে হাজিব আল মানসুর নামে। হাজিব আল মানসুরের জন্ম দক্ষিণ আন্দালুসের জাজিরাতুল খাদরায়। সময়টা ছিল ৩২৬ হিজরি। খ্রিষ্টীয় হিসেবে ৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দ। এই গ্রামটি ছিল কুরতুবার কাছেই। এই গ্রামের পথ ধরেই মুসলমানরা প্রবেশ করেছিলেন আন্দালুসে। এই পথ অতিক্রম করেছিলেন তারিক বিন যিয়াদ, মুসা বিন নুসাইর ও আবদুর রহমান আদ-দাখিলের মতো বরেণ্য সেনানায়করা। এখানেই বেড়ে ওঠেন হাজিব আল মানসুর। বাল্যকালেই তাঁর শিক্ষাদীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি হাদিস শাস্ত্রে দক্ষ হয়ে ওঠেন। এ ছাড়া তাঁর আগ্রহ ছিল সাহিত্যচর্চায়। পরে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য কুরতুবায় গমন করেন। সেখানে পড়াশোনা সেরে কাজি মুহাম্মদ বিন ইসহাক বিন সালিমের সহকারীর পদে কাজ শুরু করেন। এখানে তিনি তাঁর মেধা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে অনেকের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হন। ইতিমধ্যে আন্দালুসের খলিফা হাকাম আল মুস্তানসিরের সন্তান আবদুর রহমানের জন্ম হয়। খলিফা তাঁর পুত্রের দেখাশোনা ও পড়াশোনার জন্য একজন উপযুক্ত লোক সন্ধান করছিলেন। এ দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয় ইবনু আবি আমেরকে। সে সময় তাঁর বয়স মাত্র ৩০ বছর। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি খলীফার দরবারে অবস্থান মজবুত করে ফেলেন। এক পর্যায়ে তাঁকে টাকশালের পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর সেভিলের কাজির পদ দেয়া হয়। কিছুদিন তিনি উপকূলীয় অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বেও ছিলেন। পরে খলিফা তাঁকে উত্তর আফ্রিকার প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন। তবে ইন্তেকালের কিছুদিন পূর্বে খলিফা তাঁকে আন্দালুসে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। ৩৬৬ হিজরিতে খলিফা হাকাম আল মুস্তানসির ইন্তেকাল করেন। এরপর কিছু রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ইবনু আবি আমের ক্ষমতার মসনদে আসীন হন। ইবনু আবি আমের তাঁর শাসনের শুরুতেই বড় ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হন। সে সময় আন্দালুসের উত্তর সীমান্তে খ্রিষ্টানরা একের পর এক হামলা চালাচ্ছিল। ৩৬৬ হিজরির রজব মাসে ইবনু আবি আমের তাঁর বাহিনীসহ উত্তরাঞ্চলে অভিযানে বের হন। ৫২ দিনের এই অভিযানে তিনি হামা ও রাবজা দুর্গ জয় করেন। প্রচুর যুদ্ধলব্দ সম্পদ ও যুদ্ধবন্দীসহ তিনি কুরতুবায় ফিরে আসেন। প্রথম অভিযানেই জয়ের মাধ্যমে ইবনু আবি আমের প্রজাদের আস্থা লাভ করেন। একই বছর ঈদুল ফিতরের দিন তিনি আবারও অভিযানে বের হন। এবার তিনি ক্যাস্টোলার মুলা দুর্গ জয় করেন। এরপর নজর দেন প্রশাসনের দিকে। নতুন করে ঢেলে সাজান পুরো রাষ্ট্রের কাঠামো। দুর্বল, ভীরু ও অযোগ্যদের বাদ দিয়ে নতুন ও কর্মঠদের নিয়োগ দেয়া হয়। এভাবেই তিনি আমিরিয়া সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। আমিরিয়া সাম্রাজ্য ছিল মুসলিম আন্দালুসের প্রতাপের যুগ। রাষ্ট্রের ভিত মজবুত করে ইবনু আবি আমের নজর দেন আন্দালুসের পাশে অবস্থিত খ্রিষ্টান রাষ্ট্রগুলোর দিকে। শুরু করেন এক দীর্ঘমেয়াদী অভিযানের, যা চালু ছিল পরবর্তী ২৭ বছর ধরে। এই সময়ে প্রতিটি যুদ্ধেই ইবনু আবি আমের জয়লাভ করেছেন। কখনো তাঁর বাহিনী পরাজিত হয়নি, কখনো তাঁর বাহিনীর পতাকা অবদমিত হয়নি। তিনি ঘোড়া দাপিয়েছেন উত্তরে বিস্কে উপসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূল পর্যন্ত। তাঁর বাহিনী অতিক্রম করেছিল এমনসব এলাকা, তাঁর আগে কোনো সেনাপতি বা শাসক যে পর্যন্ত যেতে পারেনি। তিনি কখনো জয় করেছিলেন সাখরা অঞ্চল, আবার কখনো ��ুটে গিয়েছেন সেন্ট ইয়াকুব নগরীতে। কখনো তাঁর বাহিনী ঝড়ের গতিতে আছড়ে পড়েছে সান স্টিফেন দুর্গে। তিনি অতিক্রম করেছিলেন পার্বত্য এলাকা, তাঁর সামনে বাধা হতে পারেনি দুর্গম বন্ধুর পথ। প্রতিবছর দুবার তিনি সামরিক অভিযান পরিচালনা করতেন। একবার গ্রীষ্মকালে, আরেকবার শীতকালে। এর আগ পর্যন্ত আন্দালুসের মুসলমানদের মধ্যে শুধু গ্রীষ্মকালে অভিযানে যাওয়ার প্রচলন ছিল। প্রতিটি অভিযান থেকে ফিরে তিনি পরনের পোষাক ঝেরে ধুলোবালি সংগ্রহ করতেন। তারপর তা একটি বোতলে জমা করে রাখতেন। তিনি অসিয়ত করে গিয়েছিলেন, তাঁর কাফনের সাথে যেন এই ধুলোবালিও দিয়ে দেয়া হয়। মূলত তিনি একটি হাদিসে বর্ণিত সুসংবাদের প্রতি লক্ষ রেখেই এমনটা করেছিলেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর পথের ধুলো ও জাহান্নামের আগুন একত্রিত হবে না। ৩৭১ হিজরিতে তিনি হাজিব আল মানসুর উপাধি ধারণ করেন। একবার তিনি সংবাদ পান নাফার রাষ্ট্রে তিনজন মুসলিম নারীকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। দ্রুত তিনি বিশাল বাহিনী প্রস্তুত করে ফেলেন। এই বাহিনী উপস্থিত হয় নাফার
0 notes
paathok · 4 years
Photo
Tumblr media
New Post has been published on https://paathok.news/108058
আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল, 'ম্যারি এন' ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতি এখনও কাঁদায়
.
আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল। ১৯৯১ সালের এ দিনে ‘ম্যারি এন’ নামক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে নেমে এসেছিল ভয়াবহ দুর্যোগ। প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস তছনছ করে দিয়েছিল উপকূলের জনপদ। মৃত্যু হয়েছিল কয়েক লাখ মানুষের। ভেসে গিয়েছিল খেতের ফসল, লাখ লাখ গবাদি পশু। সেই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডবে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফসহ আট উপজেলা ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, বাঁশখালী-আনোয়ারাসহ উপকূলের হাজার হাজার গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ক্ষতি হয় কোটি কোটি টাকার সম্পদ। ভয়াল সেই ২৯ এপ্রিল ২৪ বছরে পা রাখলেও সামগ্রিক ঝুঁকিমুক্ত হয়নি উখিয়া-টেকনাফ ৮০ কিলোমিটার জনপদ।
এ দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। দুঃসহ সে স্মৃতি এখনো কাঁদায় স্বজনহারা মানুষগুলোকে। আজ থেকে ২৯ বছর আগে ১৯৯১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের উপকূল দিয়ে দুঃস্বপ্নের মতো বয়ে গিয়েছিল এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস। ২৯ এপ্রিলের সেই ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতি বয়ে নিয়ে আবারও উপকূলীয় মানুষের কাছে দিনটি ফিরে এসেছে।
.
২৯ বছর আগের সেই ২৯ এপ্রিলের মধ্যরাতে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গিয়েছিল কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, উখিয়া-টেকনাফ উপকূলীয় এলাকা।
এছাড়া লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড,আনোয়ারা, বাঁশখালীসহ দেশের ১৩টি উপকূলীয় জেলার শত শত ইউনিয়ন। ঘণ্টায় ২০০ থেকে ২২৫ কিলোমিটার গতিবেগের ঘূর্ণিঝড় এবং ২৫ থেকে ৩০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে দেশের উপকূলীয় এলাকা পরিণত হয়েছিল বিরাণভূমিতে। ভয়াবহ ওই ঘূর্ণিঝড়ে মারা যায় প্রায় একলাখ ৬০ হাজার মানুষ। যদিও সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ছিল একলাখ ৩৮ হাজার। সম্পদহানি হয়েছিল চার হাজার কোটি টাকারও বেশি। বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ৬০ লাখ মানুষ।
  ঘূর্ণিঝড়ের পর সামর্থ্যবান মানুষ দ্বীপ ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। অধিকাংশ বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ করা হয়নি। সব ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি ও লুটপাটের ফলে একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মিত হচ্ছে না। তাছাড়া উপকূলীয় এলাকায় প্যারাবন নিধন করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ করায় যে কোনোসময় ঘূর্ণিঝড় হলে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও বেশি ভয়াবহ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
৯১-এর ঘূর্ণিঝড়ের পর ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় বাঁধসমূহ বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এমনকি চট্টগ্রাম শহর রক্ষাবাঁধের বিরাট অংশ এখন বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের পরে নেয়া পরিকল্পনার মধ্যে স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনার কিছু বাস্তবায়ন হলেও মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাসমূহের বেশির ভাগই বাস্তবায়ন হয়নি। উপকূলীয় এলাকা ও দ্বীপাঞ্চলে যে পরিমাণ সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল তাও করা হয়নি। তার ওপর বিদ্যমান সাইক্লোন শেল্টারগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহার অনুপযোগী। কোথাও কোথাও সাইক্লোন শেল্টার সাগর ও নদী ভাঙনের কারণে অস্তিত্ব হারিয়েছে। যার কারণে ২৯ বছর পরেও উপকূল আজও নিরাপদ নয়।
.
ভয়াল সেই দুঃসহ স্মৃতির দুই যুগ পেরিয়েও এসব ভাগ্যহত মানুষ কান্নায় বুক ভারী করেন আর একটি স্থায়ী বসতভিটার আশায় দিন গোনেন।
এদিকে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত মানুষের নিরাপদ জীবন যাপনের জন্য তৎকালীন জেলা প্রশাসক কক্সবাজারে বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় ঝাউ ও নারিকেল চারা রোপণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় উখিয়া-টেকনাফ উপকূলে সৃজিত ঝাউবাগান পর্যটকদের জন্য দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও এখন সেই পরিবেশ আর নেই।
বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকার ঝাউবাগান দখল করে বসবাস করছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। যাদের মধ্যে বেশির ভাগই রোহিঙ্গা নাগরিক। এসব রোহিঙ্গা নির্বিচারে ঝাউগাছ কর্তনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ফলে উপকূলীয় এলাকা ফের অরক্ষিত হয়ে পড়ে।
.
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর জেলায় ৪৫০টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের ফলে প্রায় ১৫টি সাইক্লোন শেল্টার সমুদ্রে তলিয়ে যায়। অর্ধশতাধিক সাইক্লোন শেল্টার বেদখল হয় এবং ২০টি নির্মাণজনিত ত্রুটির ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার গোস্বামী জানান, কক্সবাজারের ৫৯৬ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধের মধ্যে ৮০০ মিটার এখনো খোলা। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ১৭৩০ মিটার। তবে ১১টি পয়েন্ট দ্রুত কাজ শুরু হবে।
এ সবের সঙ্গে যোগ হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। ফলে উপকূলবাসী এখনো অরক্ষিত। সেই সঙ্গে করোনা ভাইরাসের কারণে উপকূলের জেলে, লবণচাষি ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলো বিপাকে রয়েছে।
এদিকে দিনটি উপলক্ষে চট্টগ্রাম স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবছর দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকলেও দেশে করোনা সংকটের কারণে এবার কোনো আয়োজন নেই। তবে মসজিদ মন্দির ও গির্জায় সীমিত আকারে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে বলে জনান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন। তিনি বলেন, সরকার জেলার উপকূল রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
0 notes
newsroom-bd-blog · 7 years
Photo
Tumblr media
মহা ধুমধামেই হচ্ছে হাবিবার বিয়ে হাবিবার মা-বাবা নেই। ছয় বছর বয়স থেকে সরকারি শিশু পরিবারে বড় হয়েছেন। এটাই তাঁর পরিবার। এই পরিবারের সদস্যরাই তাঁর আপনজন। ১৮ বছর বয়সী হাবিবা আক্তারের বিয়ের অনুষ্ঠানও তাঁদের নিয়েই। শুধু তা-ই নয়, হাবিবার বিয়েতে থাকছেন অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর গায়েহলুদ। কাল শুক্রবার বিয়ে। বিয়েটা মহা ধুমধামেই হচ্ছে। শিশু পরিবারের উপতত্ত্বাবধায়ক রওশন আরার তত্ত্বাবধানে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সহায়তায় হাবিবার জাঁকজমক বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। গায়েহলুদ পর্বে থাকছে ছিল স্থানীয় শিল্পীদের সংগীত পরিবেশনা। হাবিবার বিয়ে উপলক্ষে কনের গলার হার, কানের দুল ও হাতের চুড়ি দেবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বর-কনের আবাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদরের সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। বরের জামাকাপড়, কনের সোনার চেইন ও টেলিভিশন দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক। পুলিশে কনস্টেবল পদে বরের চাকরির ব্যবস্থা, বিয়ের সাজসজ্জা ও অতিথিদের খাবারের আয়োজন করেছেন পুলিশ সুপার। আর কনে সাজানোর দায়িত্ব পুলিশ সুপারের স্ত্রীর। এভাবেই জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে হাবিবার গায়েহলুদ ও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার। সরেজমিনে দেখা গেছে, গায়েহলুদ ও বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য সরকারি শিশু পরিবারের মাঠে বিশাল প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে। প্রধান ফটকে নির্মাণ করা হয়েছে বিয়ের তোরণ। জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা এসব তদারকি করছেন। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, আজ সন্ধ্যায় গায়ে হলুদের স্থানে কাল দুপুর সাড়ে ১২টায় হাবিবার বিয়ের অনুষ্ঠান হবে। হাবিবার বিয়েতে উপস্থিত থাকবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাংসদ উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, পৌর মেয়র নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারসহ অনেকেই। জন্মের আগেই হাবিবার বাবা নুরু মিয়া মারা যান। চার বছর বয়সে মা খোদেজা বেগমও চলে যান না-ফেরার দেশে। ছয় বছর বয়সে মামা মোশারফ হোসেন ও মামি লুৎফা বেগম তাঁকে সরকারি শিশু পরিবারে ��েখে আসেন। সেখানেই দীর্ঘ এক যুগ কাটিয়েছেন হাবিবা। হাবিবা সেলাই, বুটিক ও কম্পিউটারের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সরকারি শিশু পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের শেষের দিকে হাবিবার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, বয়স ১৮ হলে তাঁকে শিশু পরিবার ছাড়তে হবে। এ কারণে মামা-মামিকে ডেকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় হাবিবাকে। কিন্তু হাবিবার মায়া মায়া দৃষ্টি শিশু পরিবারের উপতত্ত্বাবধায়ক রওশন আরাকে ভাবিয়ে তোলে। তিনি হাবিবার পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে দুই মাস পরে আবারও হাবিবাকে শিশু পরিবারে নিয়ে আসেন তিনি। সরকারি শিশু পরিবার জানায়, পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ভাবনা থেকে হাবিবার বিয়ে দেওয়ার চিন্তা করেন রওশন আরা। বিষয়টি নিয়ে তিনি এসপি মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। বর হিসেবে কোনো ভালো ছেলের খোঁজ পাওয়া গেলে তাঁকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে সম্মত হন এসপি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এগিয়ে আসেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আইনমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সরকারি শিশু পরিবারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। জানা গেছে, কসবার খাড়েরার সোনারগাঁও গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আলমের সঙ্গে হাবিবার বিয়ের দিন পাকা করা হয়। গত বছর পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন জাকারিয়া। এসপির সহায়তায় ছয় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে বর্তমানে তিনি কুমিল্লায় কর্মরত আছেন। সরকারি শিশু পরিবারের উপতত্ত্বাবধায়ক রওশন আরা বলেন, ‘মেয়েটির জন্য কিছু করার আমার এই ছোট ইচ্ছার বিষয়টি পরিপূর্ণতা পাওয়ায় মানসিক তৃপ্তি পাচ্ছি।’ /প্রথম আলো
0 notes
dailynobobarta · 7 years
Text
বাংলাদেশকে অবিস্মরণীয় জয় উপহার দিলেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ
এক যুগ পরে সেই কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে আবারও উড়ল বাংলাদেশের বিজয় নিশান। দুই টাইগার সাকিব আল হাসান আর মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ লিখলেন লাল-সবুজের বিজয়গাঁথা। এমন অনন্য অসাধারণ বিজয় ক্রিকেট বিশ্ব মনে রাখবে অনেকদিন। দারুণ বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে নেমে ম্যাচটা প্রায় হেরেই যাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিলেন দুই ক্রিকেট শিল্পী। পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের জুটি হলো। জোড়া সেঞ্চুরি করলেন সাকিব-রিয়াদ।…
View On WordPress
0 notes
dailylivesport-blog · 7 years
Text
ইংল্যান্ডের মাটিতে রচিত হলো লাল-সবুজের মহাকাব্য
ইংল্যান্ডের মাটিতে রচিত হলো লাল-সবুজের মহাকাব্য
এক যুগ পরে সেই ইংল্যান্ডের কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে আবারও উড়ল বাংলাদেশের বিজয় নিশান। দুই টাইগার সাকিব আল হাসান আর মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ লিখলেন লাল-সবুজের বিজয়গাঁথা।
এমন অনন্য অসাধারণ বিজয় ক্রিকেট বিশ্ব মনে রাখবে অনেকদিন। দারুণ বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে নেমে ম্যাচটা প্রায় হেরেই যাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিলেন দুই ক্রিকেট শিল্পী। পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের জুটি হলো। জোড়া সেঞ্চুরি করলেন…
View On WordPress
0 notes
paathok · 5 years
Photo
Tumblr media
New Post has been published on https://paathok.news/88082
নায়ক সালমান শাহ’র মৃত্যুঃ হত্যা না আত্মহত্যা ২৩ বছরেও উম্মোচন হল না
.
নব্বইয়ের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের সাড়া জাগানো চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র আজ মৃত্যু বার্ষির্কী। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তাঁর রহস্যজনক মৃত্যুর পর দীর্ঘ ২৩ বছর কেটে গেলেও এখনো এটি হত্যা না আত্মহত্যা সে রহস্যের উম্মোচন করতে পারে নি পুলিশ।
চলচ্চিত্রের মাফিয়া ডন ও বিতর্কিত অবাঙালী শিল্পপতি আজিজ মোহাম্মদ ভাই, তার সাবেক স্ত্রী সামিরাসহ এই মামলার অভিযুক্ত আসামির সংখ্যা ১১। অভিযুক্তরা বিদেশে পলাতক। এক সময়ের বিউটিশিয়ান যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী রাবেয়া সুলতানা রুবি ওই ভিডিও বার্তায় প্রথমে সালমানের মৃত্যুকে হত্যা বলে আখ্যা দেন। ওই ভিডিও বার্তা ধরে সালমান শাহ মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বহুল আলোচিত সালমান শাহ মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে এখন তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত তারিখ ছিল গত ১ সেপ্টেম্বর রবিবার। ।কিন্তু এদিন তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তা দাখিল করেনি।
ফলে আদালত অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন। ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
.
জানাগেছে, জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে আজিজ মোহাম্মদ ভাই, সামিরা হক, লতিফা হক লুসি, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, নজরুল শেখ, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়��� সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও মনোয়ারা বেগম। ’৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর লাশ ১১/বি নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার বাসার নিজ কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রথমে হলি ফ্যামিলি ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সালমানের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করা হয়।
’১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর আলোচিত এ মামলাটি তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেয় আদালত। এর আগে বিচার বিভাগীয় তদন্তের ওপর নারাজির প্রেক্ষিতে ’১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিএমএম আদালত র‌্যাবকে মামলাটি আবারও তদন্তের নির্দেশ দেয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ রিভিশন করলে র‌্যাবকে দেয়া তদন্তের আদেশ বেআইনী ঘোষণা করা হয়। কয়েক দফা তদন্তে সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হলেও। তা এখনো মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার ও ভক্তরা।
১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদনের পর অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকা-ের অভিযোগের বিষয়টি আদালত একসঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেয় সআইডিকে। তদন্ত শেষে ৯৭ সালের ৩ নবেম্বর আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। সেখানে সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে রিভিশন মামলা করা হলে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত। দীর্ঘ এক যুগ মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তাধীন ছিল। ’১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনেও সালমানের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ’১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।
’১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন করেন। নারাজি আবেদনে আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন সালমান শাহর হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বলা হয়। আদালত নারাজি আবেদনটি মঞ্জুর করে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। এরপর মামলাটিতে র‌্যাবকে তদন্ত দেয়ার আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন। ওই বছরের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করে র‌্যাব মামলাটি আর তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন। এরপর ৭ ডিসেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট লস্কার সোহেল রানা মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। বর্তমানে পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছে।
সালমান শাহের মৃত্যুর ১০ মাস পর তদন্তে এক নাটকীয় মোড় নেয়। সালমানের বাবা কমরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ’৯৭ সালের ১৯ জুলাই রিজভি আহমেদ নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে বাসায় অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ এনে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে রিজভি আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে সালমানকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেন। তার দাবি, এই হত্যার পেছনে আছেন সালমানের স্ত্রী সামিরা হক, তার শাশুড়ি লতিফা হক, চলচ্চিত্রের খল চরিত্রের অভিনেতা ও সালমানের বন্ধু আশরাফুল হক ওরফে ডন ও চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই। এদের সঙ্গে তিনি (রিজভি) নিজেও ভাড়াটে খুনী হিসেবে যুক্ত হন। তবে তদন্ত শেষে পুলিশ বলেছে, রিজভির জবানবন্দী মিথ্যা।
’১৬ সালের শেষের দিকে পিবিআইকে নতুন করে মামলার তদন্তভার দেয়া হয়েছে। তবে এত দীর্ঘ সময়ে মামলার অসংখ্য আলামত নষ্ট হয়ে গেছে। একই সঙ্গে সম্পৃক্তদের অনেকেরই জবানবন্দী নেয়া সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় অধিকতর তদন্তে কতটুকু অগ্রগতি হবে তা নিয়ে খোদ তদন্ত সংশ্লিষ্টরাই সন্দিহান। তদন্ত সংস্থা পিবিআই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়েছে। মামলাটি বেশ পুরনো বিধায় এ মামলার নতুন করে কোন আলামত পাওয়া অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়েছে। যেসব আলামত ছিল তারও অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। অধিকাংশ সাক্ষী ও আসামি বিদেশ থাকায় মামলার তদন্ত নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কবেনাগাদ এ তদন্ত শেষ হতে পারে তা বলা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যেই মামলার সাক্ষী হিসেবে নতুন করে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ও সালমানের মামার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া এ মামলার আসামি রুবির দুটি ভিডিও বার্তা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। তবে দুই ভিডিওবার্তায় দুই রকম কথা বলেছেন রুবি।
এক সময়ের বিউটিশিয়ান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী রাবেয়া সুলতানা রুবি সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় প্রথমে সালমানের মৃত্যুকে হত্যা বলে আখ্যা দিলেও। তিন দিনের মাথায় ভোল পাল্টে ফেলেন তিনি। ভিডিওবার্তায় তিনি প্রথম বলেছিলেন ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি, তাকে খুন করা হয়েছিল। আমার স্বামী তার খুনের সঙ্গে জড়িত। রুবির এমন ভিডিও বার্তা ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার তিন দিন পর নতুন আরেকটি ভিডিও বার্তা পাঠান তিনি। এতে তিনি বলেছেন, ‘আমি বলব না যে এটা আত্মহত্যা বা হত্যা। এটা আমার বলা উচিত না। আমি আগেরবার যেটা বলেছি সেটাতে আমার ‘রং’ ছিল। আমি ইমোশনাল ছিলাম বেশি, যার জন্য আমি বলেছিলাম হত্যা। হত্যা নাকি আত্মহত্যা-এটা সামিরা ও তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বের হবে।
সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী বলেছেন, এতদিন পর এক নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সালমান শাহ হত্যার বিচার হবে বলে প্রধানমন্ত্রীও আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিচার এখন দ্বারপ্রান্তে। আসামি (রুবি) নিজেই স্বীকার করেছেন। রুবিকে দেশে এনে সাক্ষী নেয়ার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানিয়েছেন নীলা চৌধুরী।
0 notes