Matri Shakti Sharad Shamman 2022 : মাতৃশক্তি শারদ সম্মানে কার মাথায় উঠলো সেরার সেরা মুকুট
পৃথা মন্ডল: 24x7 news Bengal মাতৃ শক্তি শারদ সম্মান ২০২২ এই বছর ৮ বছরে পূর্ণ হল আশা রাখছি গত আট বছর আপনাদের সকলের ভালোবাসা সহযোগিতায় আমরা মাতৃভাষা শক্তির শারদ সম্মানের হাত ধরে আপনাদের কাছে পৌঁছেছি। আগামী দিনগুলোতেও ঠিক একই ভাবে সৎ ও নিষ্ঠা ভাবে আপনাদের ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় আমরা এগিয়ে যাব আশা রাখছি। করোনার মতো মহামারী এবং নানা বাধা বিঘ্ন পেরিয়ে মাতৃশক্তি শারদ সম্মান আজ এক এবং অনন্য। হয়তো কিছু সময়ের জন্য কিছু অসাধু ব্যক্তি মাতৃশক্তি নামটায় কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমরা মাতৃশক্তি টিম এবং আপনাদের সকলের সহযোগিতায় মাতৃশক্তিকে অনন্য রাখতে পেরেছি এবং আগামী দিনেও এরকম ভাবেই স্বচ্ছ রাখবো।
মাতৃ শক্তি শারদ সম্মান ২০২২ এই বছরে আমাদের সাথে প্রায় তিনশোর বেশি পুজো যুক্ত হয়েছে। শুধুমাত্র শহরতলী নয় জেলায় জেলায়ও আমাদের মাতৃশক্তি পৌঁছে গিয়েছিল। আমরা এই ৩০০ পুজো থেকে তিনটি রাউন্ডে প্রতিযোগিতার পর বেছে নিয়েছি মোট 12 টি বিভাগকে। এছাড়াও বিচারকের পছন্দ ছিল বেশ কয়েকটি পুজো প্যান্ডেলেও।
1. মাতৃশক্তি বছরের সেরা সেরা পেয়েছে টালা প্রত্যয় তাদের এই বছরের থিম ছিল ঋতি the motion। সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই চলমান আর যা কিছু চালনা সবটা আমাদের মানব জাতির হাত ধরেই হয়ে থাকে তাদের ডিমের মূল বক্তব্য ছিল এটাই।
2. সেরা প্রতিমায় পুরস্কৃত হয়েছে চোরবাগান সার্বজনীন। তাদের এই বছরের থিম ছিল অন্তরশক্তি কাঁচের ভেঙে যাওয়া টুকরো ব্যবহার করে তাদের প্যান্ডেল আর সেখানে রানী রূপে বিরাজ করছেন দেবী দুর্গা। যা মন কেড়েছে সকলের।
3. সেরা আলোক সজ্জায় বেলেঘাটা 33 পল্লী এই বছরের তাদের থিম ছিল চুপ কথা। আমরা অনেক সময় অনেক অন্যায় দেখে চুপ থাকি পরিস্থিতি বুঝে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারি না এই নিয়েই ছিল তাদের থিম।
4. সেরা মন্ডপ হিসেবে এবারের পুরস্কৃত হয়েছে হরিদেবপুর আদর্শ সমিতি মহেঞ্জোদারো সভ্যতাকে তুলে ধরেছেন তারা তাদের থিমের মাধ্যমে তাই তাদের থিমের নাম মহেঞ্জোদারো।
5. সেরা পরিবেশ সচেতনতায় পুরস্কৃত হয়েছে রাজডাঙ্গা নব উদয় সংঘ তাদের এই বছরের থিম অশনি সংকেত। দৈনন্দিন জীবনে আমরা মানব জাতি প্লাস্টিকের উপর কতটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি এবং সেই প্লাস্টিকে যে আমাদের জীবনে কতটা ক্ষতিকর সেটা আমরা চিন্তাও করি না। এই প্লাস্টিক পরিবেশ পরিবেশ থেকে বর্জন করার বার্তা দিয়ে তাদের এইবারের ভাবনা অশনি সংকেত। যেখানে মা দুর্গার পায়ের তলায় অসুরকে প্লাস্টিক আকারে দেখানো হয়েছে। যা পরবর্তীকালে সংরক্ষিত করা হবে।
6. সেরা ভাবনায় বেহালা বুড়ো শিবতলা তাদের এই বছরের ভাবনা আপনার দৃষ্টি আমাদের সৃষ্টি যেখানে তারা সব শ্রেণীর শিল্পীদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। সাথে নিউজ চ্যানেল এবং শারদ সম্মানদের ও সম্মান জানিয়েছেন।
7. কম বাজেটে সেরা পুজো এবারে পল্লী উন্নয়ন সমিতি সেরা তাদের এবারের থিম ছিল পত্রপাঠ। কম বাজেটে সুক্ষ এবং সুন্দর কাজ করে তারা জিতে নিয়েছে এই সম্মান।
8. উদ্ভাবনায় সেরা কাশি বোস লেন সর্বজনীন। তাদের এই বছরের থিম মা। বিভিন্ন রকমের মাটি দিয়ে তাদের কাজ আর মায়ের সুন্দর রূপ শোভা বাড়িয়েছে তাদের পুজোর।
9. সেরা সৃজনশীল চিন্তায় লালা বাগান সর্বজনীন।
10. নিরাপত্তায় সেরা দক্ষিণপাড়া দুর্গোৎসব কমিটি তাদের এই বছরের থিম ছিল তাপাতঙ্ক।
11. সামাজিক কাজে সেরা বিবেকানন্দ মিলন সংঘ ক্লাব। তাদের সারা বছর মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং সামাজিক কাজের দরুন তারাএই পুরস্কারের প্রাপ্তি পেয়েছে।
12. সেরা আবাসনে এ বছর এসবিপিএস ওয়াটার ভিউ রেসিডেন্ট।
এছাড়াও বিচারকের পছন্দ ছিল আরো নানা পুজো।
নলিন সরকার স্ট্রীট,
শিবপুর ষষ্ঠীতলা বারোয়ারি,
শ্যামাপল্লী শ্যামা সংঘ,
জে কে গার্ডেন অ্যাসোসিয়েশন অফ এপার্টমেন্�� ওনার্স,
ট্যাংরা যুবক সংঘ,
ফুলবাগান আঞ্চলিক সর্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা পূজা কমিটি,
জাগরী,
পাতিপুকুর সরকারি আবাসন শারদ উৎসব,
এজি ব্লক দুর্গোৎসব।
Read the full article
0 notes
প্রিয় নায়িকাকে দেখতে পাঁচ রাত ফুটপাতে যুবক
New Post has been published on https://is.gd/rYBclq
প্রিয় নায়িকাকে দেখতে পাঁচ রাত ফুটপাতে যুবক
প্রিয় নায়িকাকে দেখতে ভক্তদের কারসাজির অন্ত নেই। এবার এক ভক্ত প্রিয় নায়িকাকে দেখার জন্য নায়িকার বাড়ির সামনে পাঁচ রাত ফুটপাথে কাটালেন। আর ভক্তের এমন কাণ্ডে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন নায়িকা পূজা হেগড়ে। মুম্বাইয়ে এসে নায়িকার বাড়ির সামনে ৫ রাত ফুটপাতে শুয়ে কাটিয়েছেন ওই যুবক। পূজা নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন ফ্যানের সঙ্গে তার ভিডিও। তবে ফ্যানের এমন কষ্টসাধন নিয়ে চিন্তিত অভিনেত্রী। লিখেছেন, ‘আমি চাই না কেউ এত কষ্ট পাক।’ পূজা তার ইনস্টাগ্রামে ফ্যানের সঙ্গে দেখা করার ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘বম্বে এসে ৫ দিন ধরে আমার অপেক্ষা করার জন্য ভাস্কর রাওকে অনেক ধন্যবাদ। আমি বাকরুদ্ধ আমার ফ্যানের এমন কাণ্ড দেখে। এতটা কষ্ট সহ্য করেছেন তিনি। আমি চাই না আর কোনো দিন আপনাকে ফুটপাতে ঘুমোতে হোক। আমি আপনাকে প্রমিস করছি আপনি যেখানেই থাকুন আমি আপনার ভালোবাসা অনুভব করব।’ সম্প্রতি দক্ষিণের একটি ছবিতে কাজ করেছেন পূজা। ছবিতে ছিলেন তাবু, আল্লু অর্জুন, নিবেতা পেথুরাজ। ছবিটি বেশ ভালোই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। ভবিষ্যতে তাকে দেখা যাবে কে কে রাধা কৃষ্ণস জান। বিপরীতে রয়েছেন প্রভাস। এটি একটি রোম্যান্টিক ড্রামা। এ বছরই মুক্তি পাবে ছবি। বলিউডে হাউসফুল ফোর, মহেঞ্জোদারো ছবিতে কাজ করেছেন পূজা।
0 notes
জলের শব্দ
আমাদের চারপাশের অসংখ্য জলাশয়। এদের আবার অনেক নাম আছে। পুকুর, দিঘি, ডোবা, খাল, বিল, নদী, উপসাগর, সাগর ইত্যাদি। মাঝারি আকৃতির জলাশয়গুলোকে আমরা নদী বলি। সার�� বিশ্বে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য ছোট-বড় নদী। মানুষের সঙ্গে নদীর সখ্য র্দীঘ দিনের। নদী মানুষের জীবনকে করেছে গতিশীল। আবার কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু। মানব সভ্যতার ইতিহাসে নদীর অবদান অপরিসীম।
অনেক নদ-নদী মমতার আচঁলে জড়িয়ে রেখেছে আমাদের--এই দেশটাকে। তাই এ দেশকে আমরা নদীমাতৃক দেশ বলি। বাংলাদেশের কথা বললেই নদীর কথা চলে আসে। নদীর কথা বললেই বাংলাদেশের শ্যামল প্রান্তর ভেসে ওঠে মানসপটে। নদী বাঙালী জীবনের অবিচ্ছেন্দ্য অংশ। নদীর কথা বাদ দিলে আমাদের সভ্যতা-সংস্কৃতির অনেক কিছুই হাড়িয়ে যায়।
সব নদ-নদীর নাম-পরিচয় আছে। ইছামতি, সুরমা, জলঢাকা, মহানন্দা, কপোতাক্ষ--আরো কত নাম। এদের জন্মপরিচয়ও আছে। বেশির ভাগ নদীর জন্ম পাহাড় থেকে। তবে জন্ম যেখানেই হোক না কেন, সবার উদ্দেশ্য এক ও অভ্ন্নি। ঘুরেফিরে সাগরের কাছে ছুটে যাওয়া। উৎস (জন্মস্থান) থেকে মোহনা অবধি বিরামহীন ভাবে ছুটে চলে নদী। সে তার চলার পথ নুড়ি, বালি, পলি প্রভৃতি আহরণ করে স্রোতের সঙ্গে সাগড়ে নিয়ে যায়।
নদী এভাবে আবহমানকাল ধরে পৃথিবীর পিঠ ক্ষয় করে চলেছে। তার এই কাজকে মানুষের জীবনের সঙ্গে তুলনা করা হয়। মানুষের জীবন--যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব ও বার্ধক্য--এই তিনটি পর্যায় আছে। প্রাথমিক অবস্থায় নদীর প্রধান কাজ ক্ষয় ও বহন। প্রৌঢ় অবস্থায় একটু স্তিমিত হয়। বৃদ্ধ অবস্থায় নদীর ক্ষয় করার ক্ষমতা থাকে না বললেই চলে। তখন নদীর বুকে জেগে ওঠে বিশাল চর। নদীর বিরামহীন ছুটে চলার সঙ্গে মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। তাই নদীকে মানুষের জীবনের সঙ্গে তুলনা করা হয়। নদীর উদারতা ও উপকারিতা থেকে মানুষের অনেক কিছু শেখার আছে। সময়ের সঙ্গেও নদীর স্রোতের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যে সময় থেকে মানুষ নদীকে বন্ধু ভাবতে শুরু করেছে, সে সময়টা থেকেই মানুষ শিখে ফেলেছে অনেক কিছু। নদীর জীবনের সঙ্গে মানুষের জীবন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
আচ্ছা, নদীর সঙ্গে মানুষের জীবনের এত মিল; নদী কি মানুষের মতো হাটঁতে পারে, কথা বলতে পারে, খেতে পারে? একটু ভাবলেই ব্যাপারটা সবাই ধরতে পারবে। রাশিয়ার একটা শিশুতোষ গল্পে এ সম্পর্কে চমৎকার বর্ণনা পাওয়া যায়। এক বালক একদিন নদীর কূলে ধরে হাঁটছিল, আর অবাক বিস্ময়ে দেখছিল নদীর খেলা। সে হঠাৎ নদীকে প্রশ্ন করল, আচ্ছা তুমি কি হাঁটতে পারো? নদী হেসে বলল, হ্যা আমিও হাঁটতে পারি। ছেলেটি বলল, সেটা বুঝব কীভাবে? নদী বলল, কাল আবার ঠিক এখানটায় এসো, তাহলে বুঝতে পারবে। ছেলেটি পরের দিন একই জায়গায় গিয়ে দেখল, নদী সেখান থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আগামিকাল যেখানে দাড়িয়ে কথা বলেছিল আজ সেখানে নেই। নদী হেসে ছেলেটিকে বলল, দেখছো, আমি হেঁটে অনেক দূরে চলে এসেছি। নদী আরো বলল, আমার ছলাৎছল শব্দ শুনতে পাচ্ছ, এখানে আমার সব কথা লুকিয়ে আছে। আর আমার খাদ্যের কথা বলছ? আমি বলি, কাঁকর আর পানি খেয়েই তো বেঁচে আছি।
নদীর জন্ম বা উৎপত্তি জানার দূরের কথা, প্রাচিনকালে মানুষ নদী দেখলে ভয়ে দূরে পালিয়ে যেত। নদীর পার হওযাকে তারা ভয়ের এবং অশুভ মনে করত। এই সেদিনও আমাদের দেশের অনেক মানুষ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বিদেশে যাওয়াকে জাত বিসর্জন দেওয়া মনে করত। প্রাচীন বনচারী মানুষ নদীকে ভয় পেত তার স্রোতের জন্য। সাঁতার জানত না বলে। নদীকে তারা দেবতা মনে করত। প্রচন্ড শক্তি হিসেবে কল্পনা করত। তবে নদীর যে শক্তি আছে তা আমরা এখন স্বীকার করি। তার প্রমত্ত রুপকে আমরা আজও ভয় পাই। আবার শুকনো মৌসুমে নদী হয় স্থবির। আমাদের দেশের অনেক নদী এখন মরার মতো। শুধু বর্ষাকালে সেসব নদীতে নৌকা চলে। লঞ্চ যাতায়াত করে, আবার বন্যাও হয়।
বাংলাদেশের অধিকাংশ নদীর উৎপত্তি হয়েছে ভারতে। একমাত্র ব্রহ্মপুত্র এসেছে তিব্বত থেকে। এছাড়া বান্দরবান জেলার কিছু ছোট নদী মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে। উত্তরবঙ্গে দু-একটি ছোট নদী এসেছে ভুটান থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এজন্য বড় নদীগুলোর উৎস খুঁজতে হলে আমাদের যেতে হবে ভারত ও তিব্বতে। কিন্তু সবার পক্ষে এভাবে সব নদীর উৎস খোঁজা সম্ভব নয়। বই পড়ে, মানচিত্র দেখে আমরা নদী সম্পর্কে জানার তৃষ্ণা মেটাতে পারি।
গ্রীষ্মে নদীর পানি যখন শুকিয়ে যায় তখন নদী অসহায় হয়ে পড়ে। স্রোত কমে যায়। দেখতে খুব একটা ভালো লাগে না। বর্ষায় নদী আবার প্রাণ ফিরে পায়। বৃষ্টির পানি নদীর পানিতে গতি সঞ্চার করে। নদী হয় খরস্রোতা। দু-কুল ছাপিয়ে নদী বয়ে যায় একবারে মোহনা অবদি। এ সমায় নদী দেখতে ভারি সুন্দর। বাতাসে নদীর বুকে বিশাল ঢেউ জাগে। এ ঢেউ আপন নিয়মে ভাসতে ভাসতে চলে যায় তীরে। সূর্যের আলো নদীর টলটলে পানিতে ঝিলিক দিয়ে ওঠে। সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত এ দৃশ্য রুপময়, মনোহর। আবার মধ্য রুপালি জ্যোৎস্নার ঝিলিক নদীর বুকে এক মায়াময় পরিবেশ সৃষ্টি করে। বর্ষার জলে টইটম্বুর নদী হাজার বছর ধরে আমাদের মনে এক স্বপ্নের জগৎ তৈরি করেছে।
মাঝে মাঝে অতিরিক্ত বর্ষায় নদী হয়ে ওঠে বিপজ্জনক, অত্যাচারী, নিষ্ঠুর। মাইলের পর মাইল বসতি ভেঙ্গে দেয় নিষ্ঠুরভাবে। বাড়িঘর, সহায়সম্পদ হারিয়ে মানুষ দিশেহারা হয়ে যায়। কোনো কোনো সমায় হয় বন্যা। বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় ফসলের মাঠ, গৃহস্থের বাড়ি। রাস্তাঘাট, ধানের গোলা, গবাদিপশু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বাড়িঘর, ফসল, সম্পদ হারিয়ে মানুষ একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা হয় শোচনীয়। বন্যা কিংবা নদীর ভাঙন যে কোনো দেশের জন্যই অত্যন্ত ক্ষতিকর। নদী তার আপন নিয়মে ভাঙবেই। তবে ভাঙন রোধেও অনেক কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া যায়। আমাদের দেশে ঘন ঘন বন্যা হওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে। সে প্রসঙ্গে একটু পরে আসছি।
এটুকু ক্ষতি ছাড়া নদী আমাদের অনেক উপকার করে। নদীর পানি আমরা পান করি। শহরের মানুষও নদীর পানি শোধন করে পান করে। নদীর পানি সেচের মাধ্যমে মানুষ চাষাবাদের কাজে লাগায়, ফসল ফলায়। সে ফসল আমাদের খাদ্য চাহিদা মেটায়। জেলেরা নদীতে মাছ ধরে, বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। নদীর পলি ফসলের মাঠকে উর্বর করে।
সুপ্রাচীনকাল থেকে মানুষ নদীর তীরে বসতি গড়ে তুলেছে। কারণ, নদীর পানি তৃষ্ণা মেটায়। শষ্য ফলাতে সাহায্য করে। এক সময় নদী পথে যাতায়াতেও বেশ সুবিধা ছিল। এই কারণে পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতাগুলো নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। গড়ে উঠেছে বসতি ও কলকারখানা। পৃথিবীর অধিকাংশ পন্য এখনো নদী ও সমুদ্রপথেই আমদানি-রপ্তানি হয়। পৃথিবীর বড় বড় বন্দর নদীর মোহনায় সমুদ্রের কূলে গড়ে উঠেছে। নদীর তীরের প্রধান প্রধান সভ্যতাগুলো হচ্ছে- ইরাকের ইউফ্রেতিস, তাইগ্রিস নদের সুমেরীয় সভ্যতা, সিন্ধু নদের মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা সভ্যতা, চীনের হোয়াংহো ও ইয়াংসী নদী সভ্যতা এবং মিশরীয়দের নীল নদের সভ্যতা।
নদীর বুকে বাঁধ দিয়ে মানুষ বিদ্যুৎ উৎপাদন। নদীর পানি বড় বড় কারখানা ও আণবিক শক্তি কারখানাকে ঠান্ডা পানি সরবরাহ করে। প্রাকৃতিক বর্জ্যপদার্থ বয়ে নিয়ে নদী সবচেয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। আমরা একটু ভালোভাবে লক্ষ করলেই বুঝতে পারি। নদীর উপরিভাগে সব সমায় এক ধারনের হালকা ধোঁয়াটে আবরণ দেখা যায়। এ আবরণটাই হচ্ছে জলীয় বাষ্প। এই জলীয় বাষ্প ভাসতে ভাসতে একেবারে ওপারে উঠে গিয়ে মেঘে পরিণত হয়। এই মেঘ থেকেই বৃষ্টি হয়। আর এই বৃষ্টি বসুন্ধরাকে করে সুজলা-সুফলা। নিয়মমাফিক বৃষ্টি সব ধরণের পরিবেশের জন্যই সুখবর। নদীর এই অবদান ছাড়া আমাদের নৈসর্গিক সৌন্দর্য টিকে থাকতে পারে না। এ কারণেই আমরা দেখতে পাই, যেসব স্থানে নদী বা গাছ পালা কম সেসব স্থান অপেক্ষাকৃত রুক্ষ।
শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে আছে অসংখ্য নদী। এসব নদীর সঠিক পরিসংখ্যান কারো জানা নেই। কোনো কোনো নদীর উৎস সম্পর্কে মানুষ এখনো ভালো করে জানে না। নদী কম সৌদি আরব, ইরান ও আফ্রিকার উত্তর অংশে। গ্রিনল্যান্ড প্রায় সারা বছর বরফে ঢাকা থাকে। এখানে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো নদী নেই বললেই চলে। আবার অ্যান্টার্কটিকায় নদী নেই। পৃথিবীর দীর্ঘতম নদ নীলের দীর্ঘ চলার পথে কোনো উপ-নদী নেই। মহাদেশ হিসেবে অস্ট্রোলিয়ার তুলনামূলকভাবে নদী কম। আবার পৃথিবীর যে যে অংশে নদী আছে তার সঠিক সংখ্যাও এখনো জানা যায়নি।
পৃথিবীর কয়েকটি দীর্ঘ নদ-নদীর মধ্যে নীল, আমাজান, মিসিসিপি মিসৌরি, ইয়াংসি, হোয়াংহো, পারানা কঙ্গো বা জায়ারে, আমুর লেনা, ইরতিস, ম্যাকেঞ্জি, নািইজার, ইয়েনিসি, মেকং, ভোলগা, ওবকাতুন, মদেইরা, পুরুস, সাও-ফ্রান্সিসকো, ইউকন, সেন্ট লরেন্স, রিওগ্রান্ড, ব্রহ্মপুত্র, সিন্দু, গঙ্গা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পানি বহন করে আমাজান।
জীবনের সঙ্গে নদীর এত ঘনিষ্ঠতা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য কাব্য, উপাখ্যান, গল্প, উপন্যাস। নদী বিষয়ক এসব সৃষ্টিকর্ম আমাদের সাহিত্য ভান্ডারকে করেছে সমৃদ্ধ। রবীন্দ্রনাথের সমগ্র সাহিত্যকর্মে অসংখ্যবার নদী এসছে। তাঁর নদী শিরোনামের কবিতাটি 300 পঙক্তি সংবলিত।
‘ওরে তোরা কি জানিস কেউ
জলে কেন ওঠে এত ঢেউ
ওরা দিবস-রজনী নাচে,
তাহা শিখেছে কাহার কাছে।
আবার নদীর বর্ণনায় আমাদের ছোট্র নদী একেবারে জীবন্ত হয়ে ধরা দেয়।
‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে,
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
পার হয়ে যায় গরু পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার ফ=ঢালু তার পাড়ি।‘
বিভিন্ন কারণে আমাদের দেশে দিন দিন নদীর সংখ্যা কমে আসছে। অর্থাৎ নদীগুলো মরে গিয়ে বিশাল আয়তনের চরাঞ্চল সৃষ্টি করেছে। নদীর উৎসমুখে বাঁধ দিলে কিংবা নদীতে পানির প্রবাহ কমে গেলেই নদীর মৃত্যু ঘটে। পানির প্রবাহ কমে যাওয়াতেই আমাদের দেশের নদীগুলো মরে যাচ্ছে। নদী ছুটে আসার পথে যেসব বালি, নুড়ি, পাথর বুকে নিয়ে প্রবাহিত হয়, সেসব বালি, নুড়ি পাথর পানি স্বল্পতা দেখা দিলে সাগরের দিকে ভেসে যেতে পারে না, তখনই নদীর বুকে চর জাগে। তবে নদীর মৃত্যু এবং গতিপথ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আবহাওয়া এবং পরিবেশের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। নদীর নাব্য কমে গেলে অনেক ধারণের সমস্যা দেখা দেয়। এর প্রধান সমস্যা হচ্ছে বন্যা। বৃষ্টির পানি বুকে ধারন করার মতো যথেষ্ট স্থান থাকে না এবং মোহনার দিকে ছুটে যাওয়ার গতিও থাকে ধীরস্থির। ফলে পানি জমে বন্যা হয়। নদী মরে গেলে জলীয়বাষ্পের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ হয় না। ফলে অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। এক সময়ের সুজলা-সুফলা শস্য হয়ে যায় নিষ্প্রাণ মরুভূমি। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে নদীর অবদান বেশ জোরালো।
হাজার নদীর দেশ বাংলাদেশ। এ দেশে আমরা এক সময় পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, মধুমতী, ইছামতীর কলকল ছুটে চলা দেখেছি। দেখেছি নদীর ভরা যৌবন। কিন্তু বর্তমানে এসব নদীর মৃতপ্রায়। নদীর বুকে এখন রুপালি ইলিশের ঝিলিক নেই। পালতোলা নৌকা ছুটে যায় না দূর-সুদূরে। মরা নদীর চরায় প্রতিবছর বান ডাকে। বানের পানিতে ভেসে যায় ফসলের মাঠ, কৃষকের ঘর। গৃহহীন, অন্নহীন হয়ে মানুষ হয় নিঃস্ব রিক্ত।
নদীতে যখন প্রয়োজনীয় পানি প্রবাহিত হয় না তখন দু-পাশের ফসলের মাঠের চাহিদা মেটে না। পলি জমে উর্বর হয় না। প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয় না। কিন্তু এ অবস্থায় মোটেও আমাদের কাম্য নয়। আমরা চাই, আবারও হাজার নদীর কলকালিতে মুখরিত হোক আমাদের এ দেশ।
0 notes
দীর্ঘদিন লিভ ইন করেছিলেন বিয়ে করলেন ষাট পেরিয়ে
New Post has been published on https://sentoornetwork.com/bollywood-actress-suhasini-mulay/
দীর্ঘদিন লিভ ইন করেছিলেন বিয়ে করলেন ষাট পেরিয়ে
নিজস্ব সংবাদদাতা: মডেলিং থেকে ছবিতে এসেছিলেন সুহাসিনী মুলে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি মডেলিং শুরু করেন সুহাসিনী। পিয়ার্স গ্লিসারিন সাবানের বিজ্ঞাপন দেখে মৃণাল সেন তাকে ‘ভুবন সোম’ ছবির গৌরীর ভূমিকায় পছন্দ করেন। কিন্তু ছবির দুনিয়ায় থাকেননি তিনি। চলে যান উচ্চশিক্ষার জন্য।
১৯৫০-এর ২০ নভেম্বর জন্ম পাটনায়। বাবা যখন প্রয়াত হন সুহাসিনীর তখন মাত্র তিন বছর বয়স। তাঁকে বড় করে তোলেন মা বিজয়া মুলে। বিজয়াও ছিলেন সিনেমাজগতের নামী ব্যক্তিত্ব।
ব্যক্তিগত জীবনকে কোনওদিন সামনে আনেননি সুহাসিনী। তিনি দীর্ঘদিন ছিলেন লিভ ইন-এ। তা ভেঙে যায় ১৯৯০-এ। এরপর ২১ বছর জীবন কাটে একাকী। ২০১১-য় ষাট বছর বয়সে সুহাসিনী বিয়ে করেন নামী বিজ্ঞানী অতুল গুর্তুকে। ওঁদের আলাপ ফেসবুকে। ২০১১-র ১৬ জানুয়ারি আর্য সমাজে বিয়ে করেন ৬৫ বছর বয়সি অতুল এবং ৬১ বছর বয়সি সুহাসিনী।
সুহাসিনী জানান, তাঁদের দু’জনের কর্মক্ষেত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিজ্ঞানী অতুল সিনেমা নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নন। তাঁরা বিপরীত মেরুর বলেই কাছাকাছি এসেছেন।
প্রাথমিক ভাবে সুহাসিনীর সিদ্ধান্তে সকলেই বিস্মিত হন। পরে সবাই তাঁর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।
সত্তরের দশকের শুরুতে সুহাসিনী দেশে ফেরেন। তবে ক্যামেরার সামনে নয়, তিনি এলেন ক্যামেরার পিছনে। ‘জনঅরণ্য’ ছবিতে তিনি ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের সহকারী। মৃণাল সেনকে সাহায্য করেন ‘মৃগয়া’ ছবিতে।
সুহাসিনী করেন গোটা ষাটেক তথ্যচিত্র। চারটির জন্য পান জাতীয় পুরস্কার। ‘ভুবন সোম’-এর প্রায় ৩০ বছর পরে সুহাসিনী ফিরে আসেন হিন্দি ছবির মূলস্রোতে। গুলজারের ‘হু তু তু’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্বঅভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার পান।
‘লগন’, ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ‘যোধা-আকবর’ এবং ‘মহেঞ্জোদারো’-সহ বেশ কিছু ছবিতে সুহাসিনী অভিনয় করেছেন চরিত্রাভিনেতা হিসেবে।
0 notes